একুশ
হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যেতেই বাধা পড়েছে ভিডিয়ো প্রেযেণ্টেশনে। বলরুমে জলতরঙ্গের মিউযিক নেই, হৈ-চৈ করছে অন্তত বিশজন ব্যবসায়ী ও সুন্দরী মডেল। কিন্তু তাদের গলা ছাপিয়ে উঠল অটোমেটিক অস্ত্রের হুঙ্কার। শুরু হয়েও থামল ক’জনের করুণ আর্তচিৎকার।
‘বাইরে এসব কী চলছে?’ আবারও জানতে চাইল মোনা।
ভাল করেই জানো কী হচ্ছে, ভাবল রানা। নিচু স্বরে বলল, ‘ভুল না হয়ে থাকলে এদের হয়েই কাজ করছিলেন তোমার বাবা।’
আরেক পশলা গুলি হতেই করিডোর কাঁপল প্রতিধ্বনিতে।
‘এরা মানুষ মেরে ফেলছে,’ বেসুরো কণ্ঠে বলল মোনা।
কোনও সন্দেহ নেই রানার। মুখে বলল, ‘মনে হয় না। আসলে ওরা খুঁজছে তোমাকে।’
‘আমাকে?’
তোমার বাবাকে তুলে নেয়ার পর তাঁর ল্যাবে গিয়েছিল। ওখানে সবকিছু পায়নি।’
‘তাই এরা ভাবছে সেসব থাকবে আমার কাছে?’ কাঁপা গলায় জানতে চাইল মোনা। আগেও এই সুরে কথা বলেছে, মনে পড়ল রানা। তখন রিপাবলিক অভ দ্য কঙ্গো ত্যাগের আগে এমনই ভয় পেয়েছিল।
রানা নিজেকে চেনে। মোনাকে অবিশ্বাস করছে, কিন্তু কোনও মতেই ওই কাল্টের হাতে ওকে পড়তে দেবে না। ছবিতে দেখেছে মেয়েটার বাবাকে কী করেছে তারা।
বলরুম থেকে এল ছোট একটা বিস্ফোরণের আওয়াজ। ‘এখানে লুকিয়ে থাকতে পারব না আমরা,’ বলল মোনা। একই কথা ভাবছে রানা। একটু পর চালমাত হবে, ছুটে আসবে হোটেল সিকিউরিটি, তার কিছুক্ষণের ভেতর পৌঁছুবে দুবাইয়ের অ্যান্টি-টেরোরিস্ট ফোর্স। তার আগেই মোনাকে চাই এদের, প্রথম সুযোগে নিজেদের হেলিকপ্টারে তুলবে ওকে।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে: বলরুমের আশপাশের করিডোর ও দু’ পাশের ঘর দেখার পর এদের বেশিক্ষণ লাগবে না মোনাকে খুঁজে বের করতে।
অস্ত্রের খোঁজে চারপাশে চোখ বোলাল রানা। দেখল দেয়ালের কাছে দীর্ঘ, সরু এক প্যানেলে বাতি— জায়গাটা রেকর্ডিং স্টুডিয়োর মিক্সিং রুম। অডিয়োভিয্যুয়াল ডিসপ্লের কন্ট্রোল এখনও আলোকিত। বিদ্যুৎ যায়নি।
কাল্টের লোক কেটে দিতে পেরেছে বাতির লাইন, অথবা সহজেই অফ করেছে মেইন সুইচ। কিন্তু যত প্ল্যানই করা হোক, বুর্জের মত বড় হোটেলের সব বৈদ্যুতিক সংযোগ কেটে দেয়া খুবই কঠিন কাজ।
‘চাই না আমার জন্যে অন্যরা মরুক,’ বলল মোনা।
একবার তোমাকে হাতে পেলে তোমার মাধ্যমে কোটি মানুষ খুন করবে ওরা,’ বলল রানা, ‘কথাটা ভেবে দেখেছ?
রানার বক্তব্য যেন বুঝতে পারেনি মোনা, অসহায়ভাবে মাথা নাড়ল। আবছা আলোয় ওকে দেখল রানা। মনে হলো না অভিনয় করছে মেয়েটা।
বাইরের করিডোরে বেশ কয়েকজনের চিৎকার। ক্রল করে প্যানেলের কাছে গেল রানা। বুঝে পেল না, কীভাবে ব্যবহার করবে সামনের প্যানেল। আন্দাজে অন করল আট-দশটা সুইচ, চাপ দিল কয়েকটা বাটনে। ভাবল, ডানের পাশাপাশি দুই লিভার চালু করবে স্পিকার ও বাতি। লিভার ওপরে তুলে দিল ও।
বলরুমে আবারও চালু হলো জলতরঙ্গের মত বাজনা। লিভার পুরো ওপরে ঠেলে দিল রানা। পাশেই দানবীয় এক ডিভিডি প্লেয়ার পেয়ে টিপে দিল প্লে বাটন।
অন্তত এক শ’ গুণ জোরে বাজতে লাগল জলতরঙ্গের বাজনা, তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে গমগমে গলায় বলতে লাগল সেই লোক: ‘ওয়েলকাম টু দ্য সিটি অভ দ্য ফিউচার!’
যেন ফাটিয়ে দেবে কান।
আরও কয়েকটা লিভার ও বাটন টিপে মোনার হাত ধরে উঠে দাঁড়াল রানা। ‘এসো!’
বলরুমের মেঝেতে চিত হয়ে শুয়ে আছে গেস্টরা। এরই ভেতর খুন হয়ে গেছে তিনজন। মার্বেলের মেঝেতে রক্তের পুকুরে লাশ। প্রচণ্ডভাবে পেটানো হয়েছে কয়েকজনকে।
সবাইকে ঘিরে আছে কালো ফ্যাটিগ ও স্কি মাস্ক পরা একদল ডাকাতের মত লোক। সহজেই এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তারা। সবার হাতে আগ্নেয়াস্ত্র। তাক করেছে অসহায় মানুষগুলোর বুকে।
মস্ত ঘরের মাঝে তাদের দলের দু’জন। একজনের হাতে অস্ত্র তৈরি। অন্যজনের মুখে মুখোশ নেই। অন্ধকারে কেউ দেখবে না, তার পনিটেইল সোনালি রঙের। জিম্মিদের ভেতর খ্যাপা নেকড়ের মত ঘুরে বেড়াচ্ছে সে।
কয়েক পা গিয়ে আবারও থামল সে। ‘অ্যাই, তুমি!’ মার্ভেল ড্রাগ্স্ কর্পোরেশনের এক কর্মচারীর দিকে আঙুল তাক করল। ‘উঠে দাঁড়াও!’
ভীত লোকটা উঠতেই তার গলা খামচে ধরল সন্ত্রাসী-নেতা। ‘তুমি তো কর্পোরেশনের মুখপাত্র?’
কাঁপতে কাঁপতে মাথা দোলাল কর্মচারী।
‘তা হলে মুখ চালাও! ওই মেয়ে কোথায়?’
‘কার কথা বলছেন?’
‘মোনা মোবারক। ‘
গলা শুকিয়ে যেতে বড় করে ঢোক গিলল মুখপাত্র। কয়েক সেকেণ্ড দ্বিধা নিয়ে বলল, ‘মিস্টার হ্যানসনের সঙ্গে গেছে পুবের করিডোরে।’
‘হ্যানসন মানে ওই বুড়ো লোকটা?’
মাথা দোলাল মুখপাত্র।
আপত্তির সুরে মাথা নাড়ল পনিটেইল। ‘আমরা ওকে খুন করেছি। ওর সঙ্গে মেয়েটা ছিল না।’
করুণ সুরে বলল লোকটা, ‘শপথ করে বলছি, নিজ চোখে দেখেছি যেতে; এই তো আপনারা আসার কয়েক মিনিট আগে।’
পিস্তল তুলে তার কপালে ঠেকাল পনিটেইল, পরক্ষণে কক করল হ্যামার।
‘শপথ করছি! নিজ চোখে দেখেছি যেতে! আর কিছু জানি না, স্যর!’
‘তা হলে তোমাকে দরকার নেই আমার,’ বলল পনিটেইল। টিপে দিল ট্রিগার।
বিস্ফোরিত হলো কর্মচারীর মাথা। পিছিয়ে ছিটকে মেঝেতে পড়ল লাশ। ভীষণ ভয়ে চিৎকার করে উঠল কয়েকজন। পরক্ষণে হাত চাপা দিল মুখে।
‘আর কেউ নতুন কোনও তথ্য দিতে পারবে?’ চিৎকার করে বলল পনিটেইল, ‘এমন তথ্য, যেটার কারণে তোমাদেরকে মেরে ফেলব না?
কেউ টুঁ শব্দ করার আগেই জ্বলে উঠল বিশাল দুই প্লাযমা স্ক্রিন,হাইড্রলিক স্লাইডে ভর করে ধীরে ধীরে নেমে আসছে ছাত থেকে। এক সেকেণ্ড পর শুরু হলো কান ফাটিয়ে দেয়া মিউযিক। ওই বিকট আওয়াজের ওপর দিয়ে এল গমগমে কণ্ঠ। এতই জোরে ভলিউম দেয়া, স্পিকারে বিকৃত হয়ে গেল সব।
‘ওয়েলকাম টু দ্য সিটি অভ দ্য ফিউচার!’
ভয়ানক আওয়াজের কারণে হঠাৎ করেই নার্ভাস হয়ে গেছে পনিটেইলের সঙ্গীরা। তাদের একজন পিছিয়ে গেল কয়েক পা। অন্যরা শক্ত হাতে ধরল অস্ত্র।
‘আপনারা এবার দেখবেন কী হতে চলেছে ভবিষ্যৎ…’
দপ-দপ করছে স্ক্রিন, ফলে অস্বাভাবিক হয়ে উঠল বলরুমের আবছা অন্ধকার।
‘এসব কী শুরু হলো?’ চিৎকার করে জিজ্ঞেস করল এক খুনি।
জবাব দিল না তার নেতা। মাথা ঠাণ্ডা। খপ করে ধরল হোটেলের এক স্টাফের গলা। পিস্তল ঠেসে ধরল গালে। ‘কন্ট্রোল রুম কোথায়?’
পুবের করিডোর দেখিয়ে দিল লোকটা।
ওদিকেই গেছে মোনা মোবারক।
ঘাড় ধাক্কা দিয়ে স্টাফকে মেঝেতে ফেলল সন্ত্রাসী নেতা। হাতের ইশারা করল দলের দু’জনের উদ্দেশে। ড্যান্স ফ্লোর মাড়িয়ে ঝড়ের গতি তুলে অন্ধকারে চলল পুব করিডোরের দিকে।
.
হাতে হাত রেখে কন্ট্রোল রুম থেকে বেরিয়ে এসেছে রানা ও মোনা। পুবের করিডোর পেরিয়ে পৌঁছল পশ্চিমের করিডোরে। দালানের এই তলার সেটআপ খুব সহজ। মাঝে প্রকাণ্ড ঘোড়ার নালের মত বলরুম, পুব করিডোর মিশেছে পশ্চিমের করিডোরে।
বলরুমে প্রচণ্ড আওয়াজ তুলছে সাউণ্ড সিস্টেম। আবছা আঁধার ঘরে দপ-দপ করছে প্লাযমা স্ক্রিনের আলো। খুব কঠিন হবে কাউকে অন্ধকারে খুঁজে বের করা। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, রানা বা মোনাও চট্ করে বুঝবে না কোথায় আছে শত্রু।
করিডোরের দূরে চোখ বোলাল রানা।
স্ক্রিনের আলো একবার বেড়ে যেতেই দেখল, একটু দূরেই জ্যানিটরের ক্লটি। মোনাকে ওদিকে নিয়ে দরজা খুলল রানা। ছোট্ট ক্লযিটের ভেতর বালতি, মেঝে মোছার কাপড়, তারপুলিন ও নানান পরিষ্কারের জিনিসপত্র। ভাল জায়গা।
‘ঢুকে পড়ো,’ প্রায় ঠেলে মোনাকে ভেতরে ঢুকিয়ে দিল রানা। ‘জিনিসপত্রের ওদিকে মেঝেতে চুপ করে শুয়ে থাকবে। যা-ই হোক, নড়বে না বা শব্দ করবে না। ওরা হয়তো খুঁজতে আসবে। মনে করো আবারও কঙ্গোতে ফিরেছি আমরা। বুঝতে পেরেছ?’
দর-দর করে অশ্রু ঝরছে চোখ থেকে, মাথা দোলাল মোনা।
‘ভয় পেয়ো না,’ মৃদু হেসে বলল রানা। ‘একটু পর ফিরব।’
ক্লযিট থেকে বেরিয়ে দরজা বন্ধ করে ভাবল রানা, সত্যি প্রাণ হাতে নিয়ে ফিরব কি না, ঠিক নেই। প্রথম কাজ এখন অস্ত্র সংগ্রহ করা।
.
বিকট বাজনা ও বিকৃত গলার আওয়াজ, সেই সঙ্গে প্লাযমা স্ক্রিনের ঝাঁকি খাওয়া ফ্ল্যাশলাইটের মত আলো। সব উপেক্ষা করে দলের দু’জনকে নিয়ে পুবের করিডোরে ঢুকে পড়েছে পনিটেইল। সব মিলে বিপদের গন্ধ পাচ্ছে সে। অথচ খুব সহজেই কাজটা শেষ করে বেরিয়ে যাওয়ার কথা ছিল।
সামনে বামের দেয়ালে অস্ত্র তাক করে বলল সে, ‘সাবধানে এগোও।’
তার মত একই কাজ করছে অন্য দু’জন। কিন্তু হামলে পড়ল না কেউ। এভি রুমের সামনে পৌঁছল বিপদ ছাড়াই। দু’জনের একজন ধাক্কা দিয়ে খুলতে চাইল দরজা।
‘লক করা।’
হ্যাণ্ডেলের দিকে পিস্তল তুলে কয়েকটা গুলি করল পনিটেইল। টুকরো হয়ে ভেঙে পড়ল ডোরজ্যাম। পাশের জনের লাথি খেয়ে দড়াম করে অন্ধকারে খুলে গেল দরজা।
ঘরে ঢুকে কাউকে দেখল না তারা।
পেছনের দিকে দরজা।
দলের দু’জনকে করিডোর ধরে এগোতে ইশারা করল পনিটেইল। ‘মেয়েটাকে খুঁজে বের করো!’
তারা চলে যেতেই ভাল করে ঘরটা দেখল পনিটেইল। কোথাও নেই মেয়েটা। গলা ফাটিয়ে ডাকল: ‘মোনা!’
জবাব দিল না কেউ।
কোথাও নেই মেয়েটা।
অডিয়োভিয্যুয়াল কন্ট্রোলের সামনে থামল সন্ত্রাসীদের নেতা। উঁচু করে ধরল রাইফেল, পরক্ষণে গুলি করে চুরমার করল প্যানেল। ‘তুমি আমাকে রাগিয়ে দিচ্ছ, মেয়ে,’ বিড়বিড় করে বলল সে।
গুলির শব্দের প্রতিধ্বনি থেমে যেতেই নতুন করে আবারও নীরব হলো হোটেলের একাশিতম তলা। একবার হাতঘড়ি দেখল পনিটেইল। হাতে সময় নেই।
.
এক পা এক পা করে করিডোর ধরে চলেছে রানা। হাত তুলে রেখেছে মাথার ওপর। কেউ দেখলে ভাববে, ভিতু কর্মচারী ও। কান ফাটানো আওয়াজে সমস্যা হচ্ছে না ওর। কিন্তু তখনই শুনল রাইফেলের গুলির আওয়াজ। থেমে গেল স্পিকার ও প্লাযমা স্ক্রিন।
যাহ্, গেল প্ল্যান ‘এ’, ভাবল রানা। পুরো অন্ধকারে বিড়ালের মত দেখতে চাইল দূরে। ওই যে, একটু চিকচিক করছে একটা সাইন: ফায়ার অ্যালার্ম।
কনুইয়ের গুঁতো মেরে ওটার কাঁচের ঢাকনি ভাঙল রানা, পরক্ষণে হ্যাচকা এক টানে নামিয়ে দিল হ্যাণ্ডেল।
শুরু হলো পুরো ফ্লোর জুড়ে কর্কশ, তীক্ষ্ণ আওয়াজ। কান চাপা দেয়ার মত প্রচণ্ড সাইরেন শেষ হতে না হতেই এল ছোট ছোট চারটে হুঙ্কার। দপ-দপ করে জ্বলে উঠল লাল ইমার্জেন্সি বাতিগুলো।
অ্যালার্মের ভয়ঙ্কর শব্দের ভেতর রানা দেখল, করিডোরের শেষমাথায় এক লোক। উল্টো দিকের দেয়ালের কাছে ঝাঁপিয়ে পড়ল ও। এক সেকেণ্ড আগে যেখানে ছিল, সেখানে বিঁধল একরাশ গুলি। ‘বিঈং’ শব্দ তুলে পিছলে গেল কিছু বুলেট। অস্ত্রের আওয়াজ, অ্যালার্ম ও দপদপে লাল বাতির কারণে নরক হয়ে উঠেছে চারপাশ।
পরক্ষণে গুলি করল আরেক লোক। সে গুলি করেছে রানার পেছন থেকে সামনের ওই লোকের দিকে।
অন্ধকারে অস্থির লোকদু’জন গুলি করছে পরস্পরকে লক্ষ্য করে। বলরুমের কাছের লোকটা গুলি খেয়ে পড়ে গেল মেঝেতে।
ঘুরে তাকাল রানা। পরক্ষণে এক দৌড়ে পৌঁছে গেল আহত লোকটার পাশে। ঝাঁপিয়ে পড়ে তুলে নিল রাইফেল। সামনে থেকে এল এক পশলা গুলি। খুবলে তুলল চারপাশের দেয়াল। মার্বেলের মেঝেতে লেগে পিছলে গেল কয়েকটা গুলি। অ্যালার্মের বাতির আলোয় আততায়ীকে পরিষ্কার দেখল রানা, ব্যারেল ঘুরিয়ে পাল্টা গুলি পাঠাল করিডোরের ওদিকে।
পুরো ফ্লোর জুড়ে শুরু হলো তুমুল গোলাগুলি। আতঙ্কিত হয়ে উঠেছে কয়েকজন জিম্মি, দেরি না করে লাফিয়ে উঠে ছুটল স্টেয়ারওয়েলের দিকে। অন্যরা এখনও মেঝেতে। ভিড়ের ওপর গুলি চালাল এক সন্ত্রাসী। ওখানে কয়েকজনকে আহত হয়ে পড়ে যেতে দেখল রানা।
লক্ষ্যস্থির করে ওই সন্ত্রাসীকে ফেলে দিল ও। কিন্তু ওকে চিনে ফেলল আরেকজন। গুলি এল ওর করিডোরে।
মেঝেতে ঝাঁপিয়ে পড়ল রানা। কানের খুব কাছ দিয়ে গেল গুলি। হঠাৎ করেই ব্যস্ত হয়ে পালাতে শুরু করেছে সন্ত্রাসীরা। সবাই ছুটছে পুব করিডোর লক্ষ্য করে। মাঝে মাঝে থেমে গুলি ছুঁড়ছে পেছনের ভিড়ে। স্টেয়ারওয়েলের দিকে চলেছে, উধাও হবে হেলিকপ্টারে উঠে।
গুলি না ছুঁড়ে সন্ত্রাসীদেরকে যেতে দিল রানা, উঠে এক দৌড়ে ঘুরল পশ্চিম করিডোরের কোণ। ভিড়ের মাঝ দিয়ে ছুটে পৌঁছল জ্যানিটরের ক্লযিটের দরজায়।
ভেতরে থাকার কথা মোনার।
হ্যাঁচকা টানে দরজা খুলল রানা। ‘মোনা!‘
জবাব দিল না কেউ!
‘মোনা?’
ক্লযিটে ঢুকল রানা। কোথাও নেই মেয়েটা!