মৃত্যুঘণ্টা – ১৪

চোদ্দ

নিস-এর অত্যন্ত ব্যস্ত বাণিজ্য এলাকায় মুর ফার্মাসিউটিকালের আকাশছোঁয়া বিশাল ভবন। আটত্রিশ তলায় নিজ অফিসে পা রাখলেন আর্নল্ড মুর ফি। আমেরিকান তিনি, কিন্তু নিজেকে মনে করেন বিশ্ব নাগরিক। ঊনত্রিশ বছর বয়সে আশি বছরের বাবার কাছ থেকে বুঝে নিয়েছিলেন ব্যবসা। তারপর প্রচণ্ড পরিশ্রম করে প্রায় ঘুমন্ত ড্রাগস ডিসট্রিবিউশন কোম্পানিকে পাল্টে নিয়েছেন আন্তর্জাতিক সংগঠনে। চারটে দুর্দান্ত ওষুধের গুণে বড়, এবং নামকরা কয়েকটি ফার্মাসিউটিকালের একটি হয়ে উঠেছে মুর ফার্মাসিউটিকাল কর্পোরেশন। প্রতি বছর প্রায় তিন বিলিয়ন ডলার আয় করছে এমপিসি। এক্সচেঞ্জ রেট অনুযায়ী এ বছর কমবেশি মুনাফার পরিমাণ হবে দু’ শ’ মিলিয়ন।

অস্বাভাবিক বিত্তবান বলেই আন্তর্জাতিক প্লেবয় হয়ে উঠেছেন আর্নল্ড। মায়ামি ও মোনাকোর জেটিতে সবসময় দুটো বিলাসবহুল ইয়ট থাকে তাঁর জন্যে। কয়েক বছর আগে কিনে নিয়েছেন পুরনো এক ছোট দুর্গ, ওটাকে বদলে নিয়েছেন তিরিশ হাজার স্কয়্যার ফুটের অপূর্ব সুন্দর এক বাড়িতে। ওখানেই ক’দিন পর পর পার্টি দেন তিনি। সেসব পার্টিতে যোগ দেন সুপারমডেল, মুভি স্টার, ফরমুলা ওয়ান ড্রাইভার, ফুটবল ও টেনিস তারকারা। কিছু দিন হলো তাঁর মগজে ঘুণপোকার মত কিরকির শব্দ তুলছে একটা বিষয়: আসলে তাঁর কোনও রাজকীয় পদবী নেই! আর তাই ভাবছেন, কোনও দেশের রাজা বা রানির কাছ থেকে টাকা দিয়ে কিনে নেবেন ডিউক, প্রিন্স বা কাউণ্ট উপাধি।

টাকার অভাব নেই, কিন্তু তাঁর জীবন থেকে দূর হয়নি বড় ধরনের একটা সমস্যা। তাঁর কোম্পানির শতকরা ৯৫% মুনাফা আসছে চারটে ব্লকব্লাস্টার ড্রাগের বিক্রি থেকে। কিন্তু আগামী বছর ওগুলোর ভেতর তিনটে আইন অনুযায়ী জেনেরিক হবে। তখন অন্য কোম্পানি একই জিনিস তৈরি করবে। তাঁকে নির্দিষ্ট পরিমাণের মুনাফা দিলেও তা আর কতই বা! তার দু’এক বছর পরে চতুর্থটাও হাত ছাড়া হবে। বুজে আসবে এমপিসি। অর্ধেক হয়ে যাবে মুনাফা। তখন বাধ্য হয়েই হাজার হাজার কর্মচারীর ঘাড়ে নামাতে হবে খাঁড়া। সব বিষয়ে কমিয়ে আনতে হবে ব্যয়। বিশেষ করে হোঁচট খাবে অত্যন্ত দামি সব রিসার্চ প্রোগ্রাম ও ডেভেলপমেণ্ট বাজেট। ফলে ভবিষ্যতে শূন্যের কোঠায় নামতে পারে মুনাফা। এক কথায় সর্বনাশ হবে মুর ফার্মাসিউটিকালের। এসব ভাবতে গেলে ঘাম ছুটে যায় মিস্টার মুরের টাকমাথায়।

নানানভাবে চেষ্টা করেছেন, কিন্তু নতুন কোনও দামি ওষুধ আবিষ্কার করাতে পারেননি। এদিকে রিসার্চ ও ডেভেলপমেন্ট বাজেট কমিয়ে দিলেই শুকিয়ে মরবে এত বড় কর্পোরেশন।

এসব এক ধরনের সমস্যা, অন্যান্য ঝামেলারও শেষ নেই। সুইচ টিপে বিশাল অফিসের বাতি জ্বেলে নিলেন মুর। নিজের সিটে বসার তিন সেকেণ্ড পর বুঝলেন, তাঁর দ্বিতীয় বড় সমস্যা হাজির হয়েছে সামনে।

‘হ্যালো, মুর,’ বলল নিষ্ঠুর একটা কণ্ঠ।

ছোট্ট কিচেনেট ও ওয়েট বার-এর পাশে আরামদায়ক এক কাউচে বসে আছে লোকটা। শেভ করা মাথা। অর্ধেক ঘাড় পেঁচিয়ে আছে গাঢ় রঙের আয়তাকার এক উলকি। দেখলে মনে হবে ওটা কোনও কলার।

মনটা দমে গেল মিস্টার মুরের। ওই কণ্ঠ, ওই উলকি আর লোকটার নোংরা দৃষ্টি তাঁর ভাল করেই চেনা।

‘তুমি এখানে কী করছ?’ চাঁছাছেলা কণ্ঠে বললেন তিনি।

‘নতুন খবর দিতে এলাম,’ বলল লোকটা।

চট্ করে দরজা দেখলেন মুর। বুঝে গেলেন, তাঁর অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া খেয়াল করেছে লোকটা।

‘চেষ্টা করে লাভ নেই.’ সতর্ক করার সুরে বলল ভারী কণ্ঠের লোকটা। হুমকি আছে বলার ভঙ্গিতে। ‘যা বলব, সেটা তোমার জেনে নেয়া উচিত।’

রাগে গা জ্বলে গেল মিস্টার মুরের। এ দেশের সেরা সিকিউরিটি সার্ভিসকে কাজ দিয়েছেন, তারা বাইরের রাস্তা থেকে শুরু করে তাঁর অফিস পর্যন্ত নিরাপত্তার দুর্ভেদ্য জাল পেতে রেখেছে। প্রতিটি করিডোর, লিফট, ঘরে ক্যামেরা ও স্ক্যানার। তাঁর অফিসের দরজায় বসিয়ে দেয়া হয়েছে কি- কোডেড লক। তিনি ছাড়া কেউ ঢুকতে বা বেরোতে পারবে না। এসবই করা হয়েছে ঝামেলা দূরে রাখতে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, এসব মোটেও যথেষ্ট নয়।

কাউচ ছেড়ে উঠে দাঁড়াল মাথা শেভ করা লোকটা।

‘তুমি ঢুকলে কী করে?’ জানতে চাইলেন মুর।

কর্কশ হাসল উলকি মানব। ‘তুমি কি ভেবেছ সস্তা এসব সিকিউরিটি গ্যাজেট আমাকে ঠেকিয়ে দেবেঃ জীবনের অর্ধেক সময় পার করেছি এসব সিস্টেম নিয়ে গবেষণা করে। সেগুলোর বেশিরভাগই ছিল তোমার সিকিউরিটি সিস্টেমের চেয়ে অনেক আধুনিক। তুমি বস্তির ঘরে বেড়ার দরজায় শেকল দিয়ে খুশি, কেউ ঢুকতে পারবে না!’

সিটে নড়েচড়ে বসলেন মুর। কী ধরনের বিপদ, ভাল করেই বুঝতে পারছেন। ওই লোকের ব্যাকগ্রাউণ্ড এমনই, ভাবতে গেলে গলা শুকিয়ে যেতে চায়।

‘একবার নিজের সিকিউরিটির ব্যাপারে সতর্ক ছিলাম না, তাই মস্ত ক্ষতির মুখে পড়ি,’ বলল উলকি মানব, ‘সেজন্যে কম শাস্তি হয়নি। তাই বলছি, বড় কোনও ভুল করতে যেয়ো না। অন্যের নাগালের বাইরে নও তুমি। …কেউ তা নয়।

কথাটা ঠিক, বুঝলেন মুর। এই লোক একসময় ছিল অত্যন্ত সম্মানিত এবং ক্ষমতাশালী আমলা। আর সে কারণেই প্রথমবার তার সঙ্গে আলাপ করতে রাজি হয়েছিলেন। পরে একই কারণে জোট বেঁধে এক সঙ্গে কাজ করেন দু’জন। কথাটা বোধহয় ঠিক হলো না। আসলে মরিয়া হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তখন বুঝতে পারেননি এর অন্তরটা কালো পাষাণের মত। এর মত ভয়ঙ্কর মানুষ আর হয় না। পরে সম্মান ও ক্ষমতা হারিয়ে বসল সে। নিজের নাম দিল: কাউণ্ট। কথাবার্তা তখনও থাকল উদ্ধত, বেয়াদবের মত। কসমেটিক অপারেশন করে পাল্টে ফেলল চেহারা। হয়ে গেল অশুভ, অন্ধকারের এক প্রাণী। তারপর একের পর এক খুন করেছে স্যাডিস্টের মত। কখন যে কার কী ক্ষতি করবে, আগে থেকে বলতে পারবে না কেউ।

আসলে অত ওপরের আমেরিকান সরকারি পদ থেকে পতনের ফলেই খেপে গিয়ে বদ্ধ উন্মাদ হয়ে গেছে। তাই বলে তার ভয়ঙ্কর কোনও পাগলামি দেখতে রাজি নন মুর।

‘কী ধরনের খবর নিয়ে এসেছ?’ জানতে চাইলেন তিনি।

‘আমার আরও টাকা দরকার,’ বলল কাউণ্ট।

‘এটা কোনও খবর নয়!’

‘আমার অ্যাকাউন্টে আরও দশ লাখ ডলার পাঠিয়ে দাও,’ বলল কাউণ্ট। গলার সুরে মনে হলো তার চাকরি করেন মুর।

‘আরও এক মিলিয়ন? নতুন কী করেছ যে আরও টাকা দিতে হবে? যে স্যাম্পল চেয়েছি, সেটা পেয়েছ? তোমার হাতে এসেছে দরকারী প্রোটিন বা কোডিং?’

‘স্যাম্পল পেয়েছি, কিন্তু তুমি তো চাও স্যাম্পলের চেয়েও অনেক বেশি কিছু।’

ভুরু কুঁচকে ফেললেন মুর।

দু’আঙুলে ধরে ছোট একটা ভায়াল দেখাল কাউণ্ট। জিনিসটা সিল করা, কিন্তু কোনও লেবেল নেই।

‘চুক্তি অনুযায়ী ডক্টর মোবারকের মিরিকল ড্রাগ এনে দেয়ার কাজ তোমার। ভায়ালের ভেতর কি সেই জিনিস?’

‘আংশিক ডেলিভারি,’ বলল কাউণ্ট, ‘এ ভায়ালের ভেতর মোবারকের নতুন এক্সপেরিমেন্টের সামান্য অংশ। এটা পেলেই বুঝবে কী ধরনের জিনিস নিয়ে কাজ করছিল সে।

‘কী করছিল তা বড় কথা নয়, ওই কাজ কি শেষ করেছিল সে? সেসব না বুঝে তোমাকে আর এক পয়সাও দেব না।’ কঠোর হয়ে গেল মুরের চোখ। রাগে কাঁপছেন বলেই ভয়কে জয় করে নিয়েছেন। ‘কথামত ওই ড্রাগ এনে দেবে। ওটার জন্যে আগেই তোমাকে দেয়া হয়েছে দশ লাখ ডলার। এরপর আর কোনও কথা হবে না।’

ঘাড় কাত করল কাউণ্ট। গলায় ভাঁজ পড়তেই অদ্ভুত দেখাল উলকিটা। চাপা শোনাল তার কণ্ঠ: ‘টাকাগুলো দিয়ে দাও, মুর। আমি খুঁজে বের করব ওই ড্রাগ।’

রাগে থরথর করে কাঁপছেন মুর। ফালতু লোকটা বলছে, সে খুঁজে বের করবে ওই ড্রাগ! আসলে পারবে না কিছুই! খুন হয়ে গেছে ডক্টর মোবারক। উড়ে গেছে তার বাড়ি। কোথাও কোনও এক্সপেরিমেন্টের কাগজপত্র নেই। এখন হাজির হয়ে মিথ্যার পর মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে এই লোক!

‘তোমার সঙ্গে আর কোনও সম্পর্ক রাখছি না,’ বললেন মুর।

 ‘তা-ই?’ নরম সুরে বলল কাউণ্ট। ‘রাখবে না?’

‘কী ভেবেছ তুমি নিজেকে?’ তিক্ত কণ্ঠে বললেন মুর। ‘খুন করবে আমাকে? সেক্ষেত্রে বেরোতে পারবে না। কোনও পথ নেই বেরিয়ে যাওয়ার।’

মুরের দিকে পা বাড়াল কাউণ্ট।

বিপদ বুঝলে ডেস্কের ডানের লাল বাটনে চাপ দেবেন মুর। বললেন, ‘এটা একবার স্পর্শ করলে চারপাশ থেকে বন্ধ হবে এই ঘর। চাইলেও স্টিলের পাত ভাঙতে পারবে না। আমি তোমার সঙ্গে বেরিয়ে না গেলে আটকা পড়বে।’

যেন আনমনে হাঁটছে কাউন্ট। প্রকাণ্ড ডেস্কে ব্যবসায়ীর সামনে রাখল ভায়াল। ‘এক সপ্তাহ আগে এটার ভেতরের ভাইরাস পাঠিয়ে দিয়েছি ইউএন অফিসে। এটাই মোবারকের প্রোটোটাইপ। ওরা বুঝছে না এটা আসলে কী। তোমার কাছ থেকে পাওয়া ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করে তৈরি করেছি, এটা জানলে ওরা ছাড়বে না তোমাকে।’

‘কিছুই প্রমাণ করতে পারবে না।’

‘তুমি বাধ্য করলে তাদের হাতে প্রমাণ তুলে দেব।’

লাল বাটনের কাছ থেকে হাত সরিয়ে নিলেন মুর।

‘তুমি তো অফিসে আর বাসায় আরাম করো, এদিকে মানুষ খুন করা, বাড়ি উড়িয়ে দেয়ার কাজে আমি ব্যস্ত। তোমার সঙ্গে আলাপের প্রতিটা কথা রেকর্ড করেছি। চুক্তিমত কত টাকা দিয়েছ তার সব প্রমাণ রেখেছি। সব তুলে দেব ওদের হাতে। আমার কিছুই হবে না। এমনিতেই পলাতক অপরাধী। কিন্তু চিন্তা করো তোমার অবস্থা কী হবে!’

অসহায় চোখে কাউণ্টের চোখ দেখলেন মুর। তবে জেদ করে বললেন, ‘তোমার পেছনে এমন লোক লাগিয়ে দেব, কোথাও গিয়ে বাঁচতে পারবে না।’

‘চেষ্টা করবে,’ মাথা দোলাল কাউণ্ট। ‘ঝুঁকি নিতেও আপত্তি থাকবে না তোমার। জেনে গেছি, তলায় তলায় কী ভাবছ। কিন্তু ভুলেও জানো না, তোমার মুখোশ খুলে গেলে কীসের ভেতর পড়বে।’ মুরের দিকে ভায়াল ঠেলে দিল সে। ‘আমার অ্যাকাউন্টে জমা দেবে দুই মিলিয়ন ডলার।’

‘তুমি বলেছিলে এক মিলিয়ন।

‘ওটা আমার সমস্যা তৈরি করেছ বলে।’

‘আর বাকি টাকা?

ভয়ঙ্কর নিষ্ঠুর হাসল বেপরোয়া লোকটা। ‘এমন একজনকে চিনি, যে তোমার হয়ে সিনথেসিস করবে। তাকে কাজে জড়িয়ে নেয়ার জন্যে দেবে আর এক মিলিয়ন।’

‘কে সে?’ এত বড় বিপদেও কৌতূহলী হয়ে জিজ্ঞেস করলেন মুর।

‘যার কাছ থেকে জানতে পেরেছি মোবারকের কথা।’

‘তার মেয়ে?’

মাথা দোলাল কাউন্ট।

সাপের মত ঘিনঘিনে এই লোকের প্রতি তীব্র ঘৃণা মুরের মনে, কিন্তু শেষ কয়েকটা কথা শুনে বুকে জেগেছে লোভ। অদ্ভুত কিছু আবিষ্কারের খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছিল ডক্টর মোবারক। এমপিসি ওই জিনিস হাতে পেলে, বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করবে। চিরকালের জন্যে সেরা ড্রাগ বলে প্রমাণিত হবে। তাতে আসবে প্রতি মাসে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার। আর ওটা তো মাত্র শুরু!

কিন্তু খুবই জটিল গবেষণা করছিল ডক্টর মোবারক। স্যাম্পল পেলেও এমপিসির গবেষকদের মূল ফরমুলা বের করতে লাগবে কয়েক বছর। জানতে হবে সঠিক কোডিং। কিন্তু ডক্টর মোবারকের মেয়ে কয়েক বছর কাজ করেছে বাবার সঙ্গে। তার পক্ষে সহজ হবে আসল জিনিস খুঁজে বের করা। সোজা কথায়, কেউ চট করে সিরাম আবিষ্কার করতে পারলে, সে ওই মেয়ে!

নকল কাউন্টের ওপর ভরসা করাই ভাল। ক্রিমিনালের মত মন আছে তার। খুঁজে নিয়ে ওই মেয়েকে বাধ্য করবে সিরাম তৈরি করতে। লোকটার গুণের কথা অস্বীকার করার উপায় নেই। দুনিয়ার আর কেউ তার মত এভাবে গোপনে এসে ঢুকতে পারত না এ অফিসে। ডক্টর মোবারকের মেয়েকে কিডন্যাপ করতে কে ঠেকাৰে তাকে?

‘ওই মেয়েকে সরিয়ে আনতে পারবে?’ জানতে চাইলেন মুর।

‘ওকে সরাতে হবে না,’ বলল কাউণ্ট, ‘নাকের কাছে যথেষ্ট টাকা ধরলেই সুড়সুড় করে আসবে তোমার ফার্মাসিউটিকালের হয়ে কাজ করতে।’

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *