ঋগ্বেদ ০৯।০৯২

ঋগ্বেদ ০৯।০৯২
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ৯ম মণ্ডল সূক্ত ৯২
পবমান সোম দেবতা। কশ্যপ ঋষি।

১। এই যে হরিদ্বর্ণ ও লতা তন্তুর আকারধারী সোম যাহাকে পবিত্রের উপর নিষ্পীড়নপূর্বক ইতস্তত সঞ্চালিত করা হইতেছে, ইনি যুদ্ধের রথের ন্যায় চলিলেন, ইহার অভিপ্রায় ধন দান করিবেন, শোধিত হইবার সময় ইনি ইন্দ্রের যোগ্য শ্লোকের স্তব প্রাপ্ত হইলেন; ইনি তৃপ্তি উৎপাদক বিবিধ অন্ন লইয়া দেবতাদিগের নিকট গেলেন।

২। মনুষ্যদিগের হিতৈষী বুদ্ধিমান সোম জলের সহিত মিশ্রিত হইয়া পবিত্রের উপর বিস্তারিত হইলেন। পরে আপন স্থানে গেলেন, যেরূপ হোমকর্তা পুরোহিত যজ্ঞে উপবেশন করেন, ইনি তদ্রূপ পাত্রে পাত্রে স্থান গ্রহণ করিতেছেন। সাতজন সুপণ্ডিত ঋষি ইহার দিকে যাইতেছেন।

৩। সুবোধ, পথপ্রদর্শনকারী এবং তাবৎ দেবতার প্রীতিপ্রদ সোম শোধিত হইতে হইতে কলসে যাইতেছেন। সর্বপ্রকার স্তুতিবাক্যে প্রীতি লাভপূর্বক এই সুপণ্ডিত সোম পাঁচ জনপদের লোকের অনুগমন করিতেছেন।

৪। হে ক্ষরণশীল সোম! তোমার সেই সুপ্রসিদ্ধ তেত্রিশ দেবতা(১) লোচনের অগোচর স্থানে রহিয়াছেন। উন্নত স্থানে সংস্থাপিত মেষলোমময় পৰিত্রের মধ্যে রাখিয়া দশ অঙ্গুলি তোমাকে শোধন করিতেছে। আর প্রকান্ড সপ্তনদী নিজ নিজ বারি দিয়া তোমাকে শোধন করিতেছে।

৫। যে স্থানে তাবৎ স্তুতিবাক্য রচয়িতারা স্তব করিবার জন্য মিলিত হয়, সোমের সেই সত্যস্বরূপ স্থান আমরা যেন প্রাপ্ত হই। সেই সোম যাহার জ্যোতিঃদ্বারা আলোক উদয় হইয়া দিবসের আবির্ভাব করিয়াছে। যাহার জ্যোতি মনু রক্ষা করিয়াছে(২) এবং দস্যুর দিকে প্রেরিত হইয়াছে।

৬। যেমন পুরোহিত, যে বাটীতে যজ্ঞীয় পশু থাকে, সেই বাটীতে যায়, যেমন প্রকৃত রাজা যুদ্ধস্থলে যান; তদ্রুপ সোম শোধিত হইতে হইতে কলসে যাইতেছেন; যাইয়া বনচারী মহিষের ন্যায় জলের মধ্যে উপবেশন করিতেছেন।

————

(১) ৩৩ দেবতার উল্লেখ।

(২) এস্থানে মনু অর্থে আর্য্যমনুষ্য এবং দস্যু অর্থে অনার্য্যবর্বর করিলে সুন্দর ব্যাখ্যা হয়।