পদচিহ্নের উপাখ্যান – ২

দুই

মেলানি নানু আর সেই মহিলাকে পুলিসের সঙ্গে কথা বলতে দেখছে করাল ফেন্সে বসা ছেলেরা।

‘তো, পুলিসম্যান বলল, তথ্য টুকছে নোটবুকে, ‘আপনি এখানকার নতুন হেড র‍্যাংলার।’

মাথা ঝাঁকাল মহিলা।

‘আমার নাম ডেবোরা। এই র‍্যাঞ্চে সেই ছেলেবেলা থেকেই রাইড করছি আমি। গত মাসে হেড র‍্যাংলার অবসর নিলে আমি কাজটার জন্যে আবেদন করি। মেলানি, আমাকে ঘোড়াদের দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়েছেন।’

‘এবং আপনি নিশ্চিত ঘোড়া দুটো চুরি গেছে?’ পুলিসের প্রশ্ন।

‘নইলে যাবে কোথায় ওরা?’ শাণিত কণ্ঠে পাল্টা বলল ও।

মেলানি নানু ওর কাঁধ চাপড়ে দিলেন।

‘রোজ সকালে, তৃণভূমি থেকে করালে ঘোড়াগুলোকে তাড়িয়ে নিয়ে আসে ডেবোরা, আমরা যাতে সব কটাকে গুনে বুঝে নিতে পারি।’ কপাল থেকে এক গোছা পাকা চুল সরালেন তিনি। ‘কিছু ঘোড়াকে শস্ আর মলম দেয়ার দরকার হয়। অন্যগুলোর খুর পিক করা হয়। কিংবা নতুন নাল পরানো হয়।’

‘এবং পাত্রে জই রাখা আছে,’ জানাল ডেবোরা। ‘হানি আর বানি জই খেতে ভালবাসে। করালে সবার আগে ওরাই ঢোকে। কিন্তু…কিন্তু আজ আর আসেনি…’ নাক টেনে চোখ নামাল পায়ের বুটজোড়ার দিকে।

ডেবোরার জন্য মায়া লাগল ছেলেদের। ঘোড়াদের দায়িত্ব ওর ওপরই বর্তায়, এবং এখন দুটো ঘোড়া খোয়া গেছে।

‘ওরা বেড়া টপকে চলে যায়নি তো?’ মুসা বলল।

‘বেড়া অনেক উঁচু,’ জানাল ডেবোরা।

‘তাছাড়া,’ বললেন মেলানি নানু, ‘হানি আর বানি টপকানোর চেষ্টাও করবে না। ওরা মিষ্টি স্বভাবের বুড়ো একজোড়া মাদী ঘোড়া, মাঠে চরে বেড়িয়ে আর ঘুমিয়ে দিন কাটায়।’

ঘাড়ের পেছনটা চুলকে নিল পুলিসম্যান।

‘মনে পড়ছে আমি একটা আর্টিকলে পড়েছি পাশের কাউন্টিতে এক ঘোড়াচোর চক্র অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। তবে সেটা তো ক’মাস আগের কথা। এখানে কোন চুরি-চামারির খবর তো শুনিনি। এর আগে কি আপনাদের র‍্যাঞ্চে এধরনের কোন সমস্যা হয়েছে?’

‘না,’ দুই মহিলা একসঙ্গে বললেন।

নোটবইটা ফটাস করে বন্ধ করল পুলিসম্যান।

‘আপনারা আশপাশের লোকজনদেরকে ফোন করে বলুন, তারা যেন ঘোড়া দুটোর কোন খোঁজ পেলে জানায়। গাড়িতে চাপল সে। ‘আমি নিজেও ফ্রি হলে খবরটা ছড়িয়ে দেব।’ এবার ধুলো উড়িয়ে গাড়ি চালিয়ে চলে গেল।

‘যাই আরেকবার মাঠগুলোতে খুঁজে আসি,’ বলে ঘোড়া দাবড়াল ডেবোরা।

‘আর আমি কিচেনে যাই, নইলে নাস্তা পুড়ে শেষ হয়ে যাবে,’ বললেন মেলানি নানু। ‘খাওয়ার সময় হলে কাউবেল বাজাব।’

ছেলেরা বেড়ার ওপর নীরবে বসে ভাবছে। রহস্য একটা হাতে এসেছে বটে ওদের, যদিও এমন ঘটনা প্রত্যাশা করেনি ওরা।

শেষমেশ মুখ খুলল রবিন, এর কোন মাথামুণ্ডু বুঝতে পারছি না আমি।’

‘খাইছে, কীসের?’ মুসার জিজ্ঞাসা।

ওর দিকে চাইল রবিন।

‘মনে করো তুমি ঘোড়াচোর।’

ঢোক গিলল মুসা।

‘খাইছে, আমি জীবনেও অমন কাজ করব না-’

‘স্রেফ ধরে নাও,’ বলল নথি।

‘আমি ধরে নিলাম!’ বলল ডন।

‘গুড,’ বলল রবিন, ‘তুমি হচ্ছ চোর।’ চোরের মত জঘন্য চোখ-মুখ করল ডন। ‘বাহ, নিখুঁত অভিনয়। গভীর রাতে তুমি এই র‍্যাঞ্চের চারপাশে ছোঁক ছোঁক করে বেড়াও। মাঠ ভর্তি চমৎকার সব তরতাজা ঘোড়াকে চরে বেড়াতে দেখ। ওদের যে কোনটাকে চুরি করতে পার তুমি। তাহলে একজোড়া ক্লান্ত, বুড়ো মাদী ঘোড়া চুরি করতে যাবে কেন?’

‘যাব না তো!’ বলে উঠল ডন। চুরি করলে ফুটকিকেই করব, কারণ ওটাই সেরা।’

‘আর আমি চুরি করব সবচেয়ে দ্রুতগামী আর জোয়ান, তাগড়া ঘোড়াদের,’ জানাল কিশোর। ‘বিজলী আর ড্রাগনের মত।’

‘ঠিক তাই!’ বলে উঠল রবিন। আর এজন্যেই তো এর কোন অর্থ খুঁজে পাচ্ছি না।’

চুপচাপ বসে ভাবছে ছেলেরা, করাল ভর্তি ঘোড়া দেখছে। র‍্যাঞ্চের খুঁজে আনা, দলছুট ঘোড়াগুলোর সঙ্গে সবসময়ই বিশেষ এক মমতার বাঁধন অনুভব করে ওরা। বিশেষ করে কিশোর-এতিম ছেলে ও, চাচা-চাচীর কাছে মানুষ। এবং সেজন্য অন্তর দিয়ে ওকে ভালবাসে মুসা, রবিন আর ডন।

‘ড্রাগন এখানে কী করছে?’ এসময় গমগম করে উঠল এক ভারিক্কী কণ্ঠস্বর। বিশালদেহী এক লোক ঘোড়ায় চড়ে হাজির হয়েছে। মাথায় তার পুরানো স্ট্র কাউবয় হ্যাট। পুরু, সোনালী গোঁফজোড়া পাকানো।

‘ড্রাগন আমার ঘোড়া,’ বলল রবিন। আমি ওটায় চেপে-’

‘ও এখনও তৈরি নয়,’ কাটখোট্টা স্বরে বলল লোকটা। ‘ওর পা কেটে গেছে। ক্ষত না সারা অবধি পশ্চিমের চারণভূমিতে ওকে ছেড়ে রাখতে বলা হয়েছিল ডেবোরাকে।’

‘আপনি কে?’ কিশোর শুধাল।

‘হ্যারি রেডন্যাপ, নতুন র‍্যাঞ্চ ম্যানেজার,’ দশাসই লোকটি জানাল। ‘ডেবোরা ঘোড়াগুলোকে সুস্থ রাখতে চাইলে আমার কথা শুনতে হবে। মেলানিকে বারবার বলেছি মেয়েটা হেড র‍্যাংলার হিসেবে একেবারেই আনাড়ি।’ এবার পাঁই করে ঘোড়া ঘুরিয়ে চলে গেল।

‘ড্রাগনের কি সত্যিই কোন সমস্যা আছে?’ রবিন প্রশ্ন করল। করাল জুড়ে হেঁটে বেড়াতে দেখছে ড্রাগনকে। কই, মোটেই আহত দেখাচ্ছে না ঘোড়াটাকে, এমনকী খোঁড়াচ্ছেও না। হ্যারির ধারণা হয়তো ভুল। ড্রাগনের পা হয়তো ইতোমধ্যেই সেরে গেছে।

ঢং-ঢং-ঢং। হঠাৎই জোরাল শব্দে কাউবেল বাজল।

‘ব্রেক-ফা-স্ট,’ চিৎকার করে জানালেন মেলানি নানু। ঢং- ঢং-ঢং। ‘সবাই চলে আসুন।’

ক্ষুধার্ত ছেলেরা ফেন্স থেকে টপাটপ লাফিয়ে নেমে পড়ল, তারপর র‍্যাঞ্চকর্মী আর স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে মিশে মেইন হাউসের উদ্দেশে চলল। দরজার কাছে পৌঁছেছে প্রায় এসময় মুসা খেয়াল করল ডন নেই। গেল কোথায় ও? করালে দৌড়ে ফিরল মুসা। ডন তখনও ফেন্সের ওপর বসা, ফুটকির কানের পেছনে চুলকে দিচ্ছে।

‘ডন, নাস্তা করবে না?’ বলল।

‘না, মুসাভাই।’

‘কেন?’

‘আমি এখানে না থাকলে কেউ এসে যদি ফুটকিকে চুরি করে নিয়ে যায়? যেভাবে হানি আর বানিকে নিয়েছে।’

‘চিন্তা কোরো না।’ দুই বালতি ভর্তি জই নিয়ে এক বৃদ্ধ খুঁড়িয়ে-খুঁড়িয়ে করালে ঢুকল। ধবধবে পাকা চুল আর উষ্ণ হাসির কারণে তাকে জ্যাক নানার মত দেখাল। তবে এ লোক খানিকটা খাট আর মোটাসোটা। তার কাউবয় হ্যাটের শোভা বাড়িয়েছে উজ্জ্বল কমলা রঙের পালকের ছেঁড়া-ফাটা এক ব্যাণ্ড। কিছু পালক বাঁকা হয়ে রয়েছে, আর কিছু খোয়া গেছে। ‘আমার নাম শর্টি,’ বলল সে। ‘এই র‍্যাঞ্চে স্বেচ্ছাশ্রম দিচ্ছি। তোমাকে কথা দিচ্ছি নাস্তা সেরে এসে দেখবে তোমার ফুটকি এখানেই আছে।’

‘কীভাবে জানলেন?’ ডনের প্রশ্ন।

‘ফুটকি জই ভালবাসে।’ ডনের দিকে একটা বালতি এগিয়ে দিল লোকটা। ‘খানিকটা খাওয়াও, ও ঠিক তোমার ফেরার অপেক্ষায় বসে থাকবে।’

এক মুঠো জই তুলে নিয়ে বাড়িয়ে ধরল ডন। ফুটকি গোগ্রাসে ওগুলো গিলে আরও খাওয়ার জন্য খোঁত-খোঁত করতে লাগল।

‘আপনি ঠিক বলছেন তো কেউ ওকে চুরি করবে না?’ জিজ্ঞেস করল ডন। যেতে চাইছে না ও, তবে খিদেয় পেট গুড়- গুড় করছে যে।

‘আমি চোখ রাখব ওর ওপর,’ বলল শর্টি। এখন জলদি যাও। মেলানির ফ্ল্যাপজ্যাকের কোন তুলনা হয় না। গোটা তল্লাটে এ জিনিস ওর মত আর কেউ বানাতে পারে না। দেরি করলে পাবে না।’

‘ফ্ল্যাপজ্যাক?’ ডন জবাব চাইল।

‘ওটা প্যানকেকের মত, তবে সাইযে অনেক বড়। আর মেলানি ওগুলোয় চিনি আর হট ম্যাপল সিরাপ মেশায়।’

ব্যস, আর বলতে হলো না! ফেন্স থেকে এক লাফে নেমে পাঁই-পাঁই ছুটল ডন র‍্যাঞ্চ হাউস অভিমুখে, ওর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পারে কার সাধ্য! মুসাও পারল না।

দরজার কাছে থেমে পড়ে, ঘাড় কাত করে করালের দিকে চাইল ডন। ফুটকি বেড়ার ফাঁক দিয়ে নাক গলিয়ে ওর ফেরার অপেক্ষা করছে।

ডাইনিং রুম এমুহূর্তে রীতিমত সরগরম। র‍্যাংলার আর ভবঘুরে ঘোড়াদের নিয়ে কাজ করে যেসব স্বেচ্ছাসেবক সবাই উপস্থিত। মেলানি নানু কাঠের লম্বা এক টেবিলে বসেছেন ছেলেদের নিয়ে। টেবিলের মাথায় ঘন কালোচুলো, শুকনো লিকলিকে এক লোক বসা।

‘ইনি শার্প,’ বললেন মেলানি নানু। ‘আমাদের নিয়মিত ডাক্তার পা ভেঙে বিছানায়। মাস দুয়েক কাজ করতে পারবেন না। তাই শার্প র‍্যাঞ্চের ভেটের দায়িত্ব নিয়েছেন।’

‘ওয়াও, আপনি পশু চিকিৎসক!’ ডন বলে উঠল। ‘বাঘার চিকিৎসা করেন যিনি ঠিক তেমন।’

‘বাঘা তোমার কুকুর?’ শার্প প্রশ্ন করল।

‘কিশোর ভাইয়ের, তবে এখন আমাদের সবার।’

খোঁত করে উঠল শার্প।

‘কুকুর ভালবাসি আমি,’ জানাল। ‘ওদের নাড়ি-নক্ষত্র স-ব জানি। একটা বইও লিখেছিলাম কীভাবে কুকুর পালতে হয়। ওটার নাম ছিল ‘হাউ টু রেই ডগ্‌’। হ্যাঁ, ঘোড়াদের পর কুকুরের চিকিৎসা করতেই সবচেয়ে ভাল লাগে আমার।’

সিরাপ নিতে ডনের সামনে দিয়ে হাত বাড়াল শার্প। তার চুল কালো হলেও, বাহুর পশম লাল।

‘এখানে থিতু হওয়ার পরপরই,’ বলে চলল সে, ‘একটা কুকুর জোগাড় করব আমি, এমনকী দুটোও পালতে পারি। কিংবা তিনটে। শার্পের কণ্ঠার দিকে চেয়ে রইল ডন। লোকটা কথা বলছে, তার গলার মাঝখানে একটা পিণ্ড ওঠা-নামা করছে।

‘নাস্তার পর ড্রাগনের পা পরীক্ষা করবেন না?’ রবিনের প্রশ্ন। ‘হ্যারি বললেন আপনি অনুমতি না দেয়া পর্যন্ত আমি ওর পিঠে চাপতে পারব না। ড্রাগন এখন করালেই আছে।’

ভ্রূ কোঁচকাল শার্প।

‘আমি তো ডেবোরাকে বলেছি পশ্চিমের মাঠে ওকে যেন আরও ক’দিন ছেড়ে রাখে। ওর জখম না সারা পর্যন্ত।’

‘প্লিজ,’ মিনতি করল রবিন। ও তো খোঁড়াচ্ছে না, ওর তো কোন সমস্যা নেই। ‘

চেয়ারে হেলান দিল শার্প, পেছনের দু’পায়ের ওপর ভারসাম্য রাখছে চেয়ারটার।

‘আজ সকালে আমার বহুত কাজ। পরে ওকে পরীক্ষা করব।’

‘ধন্যবাদ,’ বলল রবিন, আঙুল আড়াআড়ি করল।

‘শার্প রেসকিউ হর্স খুঁজে পাওয়ার ওস্তাদ,’ বললেন মেলানি নানু। এখানে আসার এক মাসের মধ্যেই, পুরো একটা পাল নিয়ে এসেছে।’

‘কারণ গোটা দেশের মানুষ জানে আমি বিপন্ন ঘোড়াদের দেখভাল করি, সগর্বে বলল শার্প। ‘বহু বছর ধরে অসহায় ঘোড়াদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি।’

ডন শার্পের গলার দলাটার ওঠা-নামা লক্ষ করল। জ্যাক নানার গলাতেও ছোট্ট এক পিণ্ড রয়েছে।

‘একে বলে কণ্ঠা,’ বলেছেন তিনি। ‘ওখানেই ভয়েস বক্স থাকে।’ কিন্তু তাঁর কণ্ঠমণি কখনওই শার্পের মত নাচানাচি করে না। চোয়াল ঝুলে পড়ল ডনের। ওর পায়ের পাতায় আলতো লাথি মারল কিশোর। তারপরও ডন একদৃষ্টিতে চেয়েই রইল।

কিশোর ঝুঁকে পড়ে ফিসফিস করে বলল, ‘ওভাবে চেয়ে থেকো না।’ ডন চেষ্টা করল। কিন্তু পারল না

‘ওই যে, ডেবোরা,’ বলে হাত নাড়লেন মেলানি নানু। ডাইনিং রুমে ঢোকার সময় কাঁধজোড়া নুয়ে পড়ল র‍্যাংলারের, লাল হ্যাটটা খুলে মেলানি নানুর পাশে বসল।

‘আমাদের প্রতিটা তৃণভূমি খুঁজেছি,’ জানাল ও। ‘হানি আর বানিকে কোথাও পেলাম না।’

মেলানি নানু একটা চামচ তুলে নিয়ে গ্লাসের পানিটা নাড়তে লাগলেন। কামরায় পিন পতন নিস্তব্ধতা নামল। হারানো ঘোড়া দুটোর কথা সবাইকে জানাল ডেবোরা।

‘আপনারা কেউ কি কাল রাতে অস্বাভাবিক কোন কিছু দেখেছেন কিংবা শুনেছেন?’ প্রশ্ন করল মহিলা। হাত ওঠাল ডন।

‘বলো, ডন?’

‘ঘোড়ার ডাক শুনেছি আমি,’ বলল ও। সবাই হেসে উঠল। চেয়ারে রীতিমত কুঁকড়ে গেল ডন, অপ্রস্তুত।

‘ধন্যবাদ, ডন,’ বললেন মেলানি নানু। ‘কিন্তু র‍্যাঞ্চে তো সারাক্ষণই ঘোড়ারা ডাকছে।’ ঘরের চারপাশে চোখ বোলালেন। ‘অন্য কেউ কি কিছু শুনেছেন?’

ডন বলতে যাচ্ছিল মাঝরাতে ট্রাকের ইঞ্জিন চালু হতে শুনেছে। কিন্তু চেপে গেল। আবার যদি হাসাহাসি করে সবাই?

কাজেই হাত বাড়াল ম্যাপ্‌ সিরাপের দিকে এবং মেলানি নানুর সুবিখ্যাত ফ্ল্যাপজ্যাকের ওপর বেশি করে ঢালল। দ্বিতীয়বার খাবারটা নিয়েছে ও।