অপয়া ক্যামেরা – ৬

ছয়

একটু পরেই সাদা ইউনিফর্ম পরা চার প্যারামেডিক চলে এল। সারাকে দেখার পর মুখের চেহারা থেকে আতঙ্ক লুকোতে পারল না তারা। কোচ ওয়ালশ মেঝেতে বসে সারাকে শক্ত করে ধরে রেখেছেন।

সারা এখন নিশ্চুপ। হয়তো ঘোরের মধ্যে চলে গেছে আকস্মিক আঘাতের ফলে।

জিম ফাঁকা। দু’দলকেই পাঠানো হয়েছে লকার রুমে। মেডিকরা সারাকে স্ট্রেচারে তুলল। দেখলাম ওর বাহুটা প্রায় পেছনদিকে বাঁকা হয়ে গেছে।

ছবিটা ব্যাগে গুঁজলাম। রেফারি জিম ছেড়ে চলে গেছেন। কিন্তু তাঁর তীক্ষ্ণ বাঁশির শব্দ আমার কানে লেগে রয়েছে এখনও।

কিশোরের কথা ভাবলাম। ওর লাল চোখ, তারপর তো সারার বাহুর ছবি তুললাম।

হিমস্রোত বয়ে গেল শিরদাঁড়া বেয়ে।

আমার হয়তো ওই মহিলার সতর্কবাণী শোনা উচিত ছিল। ক্যামেরাটা গ্যারেজে রেখে আসা দরকার ছিল। এটা কাকতালীয় ঘটনা হতে পারে না! মান্ধাতা আমলের এই অপয়া ক্যামেরায় নিশ্চয়ই অশুভ কিছু আছে…

রয় যে কখন সামনে এসে দাঁড়িয়েছে টেরই পাইনি। আমার হাত থেকে পুরানো ক্যামেরাটা ছিনিয়ে নিল ও।

‘অ্যাই!’ চিৎকার ছেড়ে, থাবা মারলাম।

কিন্তু ও ওটাকে এক ঝটকায় আমার নাগালের বাইরে নিয়ে গেল।

‘আরি, দারুণ জিনিস তো!’ বলল। ‘এটা পেলে কোথায়? একটা ছবি তুলি!’

‘খাইছে, না!’ রীতিমত আর্তনাদ ছাড়লাম। আবারও ওটা কেড়ে নিতে ছোঁ মারলাম।

অনেক দেরি হয়ে গেছে।

রয় ক্যামেরাটা আমার দিকে তাক করে মুখের ওপর ফ্ল্যাশ করল।