1 of 2

কাউণ্ট কোবরা – ৩৩

তেত্রিশ

ইতালির মিলান শহর।

বাজে দুপুর একটা।

লাঞ্চের জন্যে বন্ধ করা হয়েছে দ্য মিউসেয়ো ভিসকণ্টি জাদুঘর। যে যার মত পোর্টিকো এন্ট্রান্স দিয়ে বেরিয়ে গেছে দর্শনার্থীরা। সবার শেষে জাদুঘর থেকে বিদায় নিয়েছে বৃদ্ধ সিকিউরিটি গার্ড ড্যানিয়েলে আদানি। মেইন দরজা আটকে কাঁপা হাতে কোমর থেকে নিয়েছে একগোছা চাবি। দরজায় বল্টু মেরে চাবি দিয়ে লক করেছে ভারী তালা। ডেস্কের পেছনের হুকে ইউনিফর্ম ও ক্যাপ ঝুলিয়ে রিসেপশনিস্ট সিনোরা গ্র্যাব্রিয়েলাকে কৌতুক শোনাতে শোনাতে চলে গেছে একদিকের দরজা লক্ষ্য করে। ওদিক দিয়েই বেরোয় স্টাফরা। দরজার পাশে আছে ঢাকনি দেয়া প্যানেল। ওটা খুলে কয়েকটা সংখ্যা টিপে দেয়ার পর চালু হয়েছে অ্যালার্ম সিস্টেম। আপাতত তার কাজ শেষ করেছে বৃদ্ধ সিকিউরিটি গার্ড। সিনোরা গ্র্যাব্রিয়েলাকে নিয়ে হাসতে হাসতে দালান ছেড়ে বেরিয়ে গেছে। এরই ভেতর নিচতলায় ওঅর্কশপ বন্ধ করে পাশের ক্যাফেতে হাজির হয়েছে বাদ্যযন্ত্র মিস্ত্রি ডিনো ও এমেলিয়ো। পেরোনি বিয়ার ও পাস্তার প্লেট সামনে নিয়ে লাঞ্চে বসেছে তারা। প্রতিদিন ওই ক্যাফেতে জড় হয় জাদুঘরের স্টাফরা।

থমথম করছে জাদুঘরের ভেতরটা। তবে বেসমেন্টে গোলকধাঁধার মত প্যাসেজওয়েতে হঠাৎ করে ক্র্যাচ্-ক্র্যাচ্ আওয়াজে খুলে গেল একটা দরজা। করিডোরে গলা বাড়িয়ে দিল মাসুদ রানা। চট্ করে হাতঘড়ির দিকে তাকিয়ে নিয়ে ভাবল, এবার আর রেমারিকের সঙ্গে দেখা হবে না ওর।

এইমাত্র অব্যবহৃত কাবার্ড থেকে উদয় হয়েছে রানা। ওর পর করিডোরে পা রাখল লিয়া। বহুক্ষণ অন্ধকারে পাথরের মূর্তির মত দাঁড়িয়ে থেকে ঝিঁঝি ধরেছে পায়ে। সামনের দরজা খুলে সিঁড়ির দিকে চলল ওরা। একটু পর ধাপ ডিঙিয়ে উঠবে জাদুঘরের প্রথমতলায়।

লাঞ্চের সময় ঘনিয়ে এসেছে বলে ওঅর্কশপে যার যার কাজ গুছিয়ে নিচ্ছে দুই মিস্ত্রি, এমনসময় গোপনে তাদেরকে এড়িয়ে ছোট ওই কাবার্ডে আস্তানা গেড়েছিল রানা ও লিয়া। মিস্ত্রিদের বেঞ্চ দুটো এখন খালি। একদিকের টেবিলে রাঁদা আর খুলে রাখা পুরনো এক বেহালা। বাদ্যযন্ত্রটা ক্ষত- বিক্ষত। ঘরে আইকা আঠা, মোম-পালিশ ও ভার্নিশের গন্ধ।

টুলবক্স থেকে ক্ষুরধার দাঁতওয়ালা এক হাতকরাত নিয়ে চোখের সামনে তুলে ধরল রানা। কয়েক মুহূর্ত পর সন্তুষ্ট হয়ে মাথা দোলাল। অবাক হয়ে ওকে দেখছে লিয়া। এবার রানা কী করতে পারে, সেটা ভাবতে গিয়ে গলা শুকিয়ে গেল ওর। ভয়-ডর কিচ্ছু নেই মানুষটার!

ওরা দু’জন ছাড়া জাদুঘরে আর কেউ নেই। সামনের দরজা খুলে পাশের ঘরে ঢুকল রানা। ওখানেই পেল যা খুঁজছিল। জাদুঘরের মেইন ফিউয বক্সটা প্রাচীন আমলের। ইঁটের মত সব সুইচ। এক এক করে প্রতিটা সুইচ অফ করল রানা। কাজটা শেষ করে নিচের দিকে নামিয়ে দিল মাস্টার সুইচের হাতল। ফিউযগুলোর তার খুলে লুকিয়ে রাখল ভারী একটা ক্রেটের নিচে।

কাজটা শেষ হতে লাগল ওর বড়জোর তিন মিনিট। স্টাফ ওনলি লেখা একটা দরজা খুলে প্রথমতলায় উঠে এল ওরা। জানালার কাঁচ ভেদ করে ঘরে ঢুকেছে সূর্যের ভোঁতা আলো। এখন আর ঘরে একটা বাতিও জ্বলছে না। অন্ধকারে টিপটিপ করছে না সিকিউরিটি ক্যামেরার লাল এলইডি বাতি

দীর্ঘ করিডোর পেরিয়ে বেহালার ঘরে ঢুকল রানা ও লিয়া। ঘরের একদিকে রয়েছে কিবোর্ডের বাদ্যযন্ত্রের প্রদর্শনী।

.

দোতলায় পোর্ট্রেট গ্যালারিতে ব্যাটারি চালিত রেডিয়োতে গান শুনতে শুনতে ভ্যাকিউম ক্লিনার দিয়ে চারপাশের ধুলো শুষে নিচ্ছিল ডোনা বিয়াঞ্চি। কিন্তু হঠাৎ করে বিদ্যুৎ চলে যেতেই থেমে গেল যন্ত্রটা। ভারী দেহের বয়স্কা মহিলা ডোনা। চর্বির আধিক্যে মাথাটা তেমন খেলে না। কয়েক মুহূর্ত পর সে বুঝল কী ঘটেছে। মোটা আঙুল দিয়ে অফ-অন করল ভ্যাকিউম ক্লিনারের সুইচ। বিড়বিড় করল, ‘যাহ্, কপাল মন্দ!’ আবারও চলে গেছে লাঞ্চের সময়ে বিদ্যুৎ। ক’দিন আগেও খাবারের পালা সেরে এনেছে, এমনসময় বেইমানি করল কারেন্ট। তখনও পুরো একা ছিল সে এই দালানে। সুইচের ফিউয পড়ে গিয়েছিল। এবারও অত নিচে নেমে বেসমেন্টে গিয়ে অন করতে হবে সুইচ। সে বিশাল এই নির্জন, ফাঁকা দালানে একা, সেটা ভাবতে গিয়ে ভাল লাগল না ডোনা বিয়াঞ্চির 1

স্যাণ্ডউইচ চিবুতে চিবুতে অপেক্ষা করল। আশা করছে, যে-কোনও সময়ে ফিরবে বিদ্যুৎ। কিন্তু কয়েক মিনিট পেরোলেও জ্বলল না বাতি। বিরাট দীর্ঘশ্বাস ফেলে রেডিয়োটা তুলে নিয়ে সিঁড়ির দিকে চলল ডোনা।

.

মন দিয়ে পুরনো পিয়ানো দেখছে রানা। একটু পর বুঝে গেল কী করতে হবে ওকে। আশা করা যায় সহজেই খুলতে পারবে সামনের ডানদিকের পায়া। বেশি সময় নেই ওর হাতে, যে-কোনও সময়ে ফিরে আসবে স্টাফদের কেউ।

একবার পিয়ানোর ডানদিক দুই-একইঞ্চি ওপরে তুলে শক্তপোক্ত কিছু নিচে ঠেস দিলে কেটে নিতে পারবে করাত দিয়ে পায়া। তাতে ধুম্ করে মেঝেতে পড়বে না ভারী বাদ্যযন্ত্র। দু’জন বসবার জন্যে তৈরি টুলটা ধরে রানা টের পেল, পিয়ানোর নিচে ঠেস দেয়ার তুলনায় ওটা বেশি উঁচু।

দড়ি টপকে পিয়ানোর ওপরে করাতটা রাখল রানা। দুই হাতে তুলতে চাইল বাদ্যযন্ত্রটা। কিন্তু আধইঞ্চি তুলতে গিয়েই ভীষণ ওজনে কোমর ধরে গেল ওর। এমন কী লিয়ার সাহায্য নিলেও ওপরে তুলতে পারবে না পিয়ানো। করাতটা উদাস চোখে দেখে নিয়ে আবারও দেখল পিয়ানোর পায়া। পুরু কাঠের জিনিসটা করাত দিয়ে কাটতে লাগবে কমপক্ষে পনেরো মিনিট। অথচ, ওর হাতে অতটা সময় নেই।

এবার? নিজেকে বলল রানা।

আড়ষ্ট স্বরে বলল লিয়া, ‘রানা, জাদুঘরে কে যেন আছে!’

পদশব্দ শুনেছে রানাও। ভারী পায়ে সিঁড়ি বেয়ে নামছে কেউ। নীরব বাড়ির ভেতর ছড়িয়ে পড়ছে হালকা ধুপ-ধুপ আওয়াজ। আরও আছে আরেকটা আওয়াজ। ক্রমেই বাড়ছে ম্যাডোনার গান ও মিউযিক। রেডিয়ো হাতে রানা ও লিয়ার দিকেই আসছে কেউ হাতে একদম সময় নেই!

যা করার এখনই, নইলে আর কখনও নয়!

চট করে চারপাশে তাকাল রানা।

পিয়ানো ঘিরে রাখা দড়ির কর্ডনের মাঝে মাঝে মেঝেতে আছে সাতটা পিতলের পেডেস্টাল। উচ্চতা তিন ফুটের মত। পায়ের দিকটা বৃত্তাকার।

হ্যাঁ, এটাই একমাত্র উপায়, বুঝে গেল রানা। দেরি হলো না করাত দিয়ে দুই পেডেস্টালের মাঝের দড়ি কেটে দিতে। একটানে তুলল একটা পেডেস্টাল। ওটা ভারী ও নিরেট দু’হাতে কুঠারের মত করে পেডেস্টাল ধরল রানা। ওর হাতে বরফের মত ঠাণ্ডা লাগছে জিনিসটা।

‘আর কিছু করার নেই,’ বিড়বিড় করল রানা। কাঁধের ওপরে পেডেস্টালটা তুলে একপাশ থেকে গায়ের জোরে নামিয়ে আনল পিয়ানোর পায়ার ওপর। চোখের কোণে দেখল, ভীষণ আতঙ্ক নিয়ে ওর দিকে চেয়ে আছে লিয়া।

নিরেট পিতলের পেডেস্টালের সঙ্গে পুরু কাঠের সংঘর্ষে বিকট আওয়াজে খানখান হলো ঘরের নীরবতা। মড়াৎ শব্দে ফাটল ধরেছে পায়ার গায়ে। করুণ সুরে গুঙিয়ে উঠল পিয়ানো। ঝনঝন শব্দে নানান সুরে বাজছে ভেতরের তার। ডানদিকের পায়া একদিকে সরতেই সামনে ঝুঁকল বাদ্যযন্ত্র।

.

নিচতলায় কী যেন চুরমার হওয়ার আওয়াজে মাঝ-সিঁড়িতে থমকে দাঁড়াল ডোনা বিয়াঞ্চি। অফ করল রেডিয়ো।

আজ হচ্ছেটা কী জাদুঘরে?

ধুপ-ধাপ করে পাঁজরে বাড়ি মারছে বৃদ্ধার হৃৎপিণ্ড। রেলিং ধরে আগের চেয়ে দ্রুত সিঁড়ি বেয়ে নামতে লাগল সে।

.

আবারও পেডেস্টাল দিয়ে পিয়ানোর পায়ায় বাড়ি দিল রানা। ধুম্ আওয়াজের সঙ্গে সঙ্গে ঝংকার তুলল অসংখ্য তার। কিবোর্ডের তলা থেকে সরে গেল পায়া। পায়ে ভারী পিয়ানো পড়ার আগেই লাফিয়ে আত্মরক্ষা করল রানা।

এক টনি লোহার ফ্রেম ও ভারী কাঠের কেসিং নিয়ে কাত হয়ে মেঝেতে নামল পিয়ানো। নানাদিকে ছিটকে গেল ভাঙাচোরা টুকরো। জোরাল ঝন-ঝনাৎ আওয়াজ তুলল একগাদা তার। ওই আওয়াজ শোনা যাবে জাদুঘরের যে- কোনও জায়গা থেকে।

.

ভীষণ ভয় পেয়েছে ডোনা বিয়াঞ্চি। বুঝে গেছে, জাদুঘরে ডাকাতি হচ্ছে। সিঁড়ি বেয়ে নেমে হাতির মত শরীরটা নিয়ে পায়ে পায়ে হল পেরিয়ে মহিলাদের ওয়াশরুমে গিয়ে ঢুকল সে। একটা কিউবিকলে ঠাঁই নিয়ে আটকে দিল দরজা। ধুপ- ধাপ করে পাঁজরে এসে লাগছে হৃৎপিণ্ড। বারকয়েক ঢোক গিলে পকেট থেকে বের করল সেল ফোন। হ্যাঁ, এবার দেরি না করে কল দেবে পুলিশের কাছে!

.

বিধ্বস্ত পিয়ানোর দিকে হাঁ করে চেয়ে আছে লিয়া। ওটা ছিল খুব দামি পিয়ানো। ঐতিহাসিক মূল্য ছিল সুরের জগতে। ওর বাবার শত শত ঘণ্টার কঠিন পরিশ্রম শেষ হয়ে গেছে মাত্ৰ আধ মিনিটে! অসুস্থ বোধ করছে লিয়া।

এখনও ঝনঝন গুঞ্জন তুলছে তার। দেরি না করে ফাটল ধরা ভাঙা পায়া হাতে নিল রানা। বিড়বিড় করে বলল, ‘আমি তো কোনও ফাঁপা অংশ দেখছি না!’ পায়ার মাঝে করাত বসিয়ে ব্যস্ত হাতে কাটতে লাগল। ক্ষত তৈরি হচ্ছে পুরু কাঠে। চল্টা লাগছে রানার হাতে। ব্যথা পাত্তা না দিয়ে আগের চেয়ে জোরে করাত চালাল। ওর কাঁধের কাছে দাঁড়িয়ে বড় বড় চোখে পায়ার দিকে চেয়ে আছে লিয়া। ফুঁ দিয়ে কাঠের গুঁড়ো সরাল রানা। হাত কেটে গেছে বলে রক্ত পড়ছে পায়ার ওপর। কিন্তু ভেতরে কোনও খোঁড়ল বা ফাঁপা জায়গা নেই!

‘কাঠ তো দেখি একদম নিরেট,’ নিরস গলায় বলল রানা, ‘ভেতরে কিচ্ছু নেই!’

.

পুলিশ সুইচবোর্ডে ঝড়ের বেগে কথা বলছে ডোনা বিয়াঞ্চি। ডাকাত ঢুকেছে জাদুঘরে। হ্যাঁ, দ্য মিউসেয়ো ভিসকণ্টিতে!

ওদিক থেকে মোটা গলায় বলা হলো, ‘দুশ্চিন্তা করবেন না। আমরা এখনই হাজির হচ্ছি।’

যাক, আর চিন্তা নেই। ধপ করে কমোডের ঢাকনির ওপর বসে পড়ল ডোনা বিয়াঞ্চি।

কড়া চোখে লিয়ার দিকে তাকাল রানা। ‘তুমি বলেছিলে কোনও ভুল হবে না।’

.

‘ইয়ে… এখন তো মনে হচ্ছে বাম পায়া।’

‘মেয়েটা তো পাগল করে দিল,’ বিড়বিড় করল রানা। লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে চট্ করে দেখল হাতঘড়ি।

‘ভুল হয়ে গেছে, সরি,’ ফিসফিস করে বলল লিয়া।

সবুজ দুই চোখে চোখ রেখে সব রাগ মিলিয়ে গেল রানার। ‘আমিও সরি বলব, ধরা পড়লে,’ মনে মনে বলে আবারও পেডেস্টাল কাঁধে তুলে নিল রানা। সৈকতে উঠে আসা তিমি মাছের মত কাত হয়ে পড়ে আছে দুর্মূল্য, বিধ্বস্ত পিয়ানো। কাত হয়ে গেছে বাম পায়া। ওটার ওপর নেমে এল ভারী পেডেস্টাল। জাদুঘর জুড়ে নানাদিকে ছড়িয়ে গেল বিকট আরেক ঝঙ্কার ভরা আওয়াজ। দু’হাতে দু’কান ঢাকল লিয়া।

এক পা পিছিয়ে এল রানা। ফ্রেম থেকে ভেঙে এসেছে বাম পায়া। পেডেস্টালটা হাত থেকে ফেলে কাঠের মেঝেতে বসে পড়ল রানা। হ্যাচকা টানে তুলে নিল ফাটল ধরা পায়া।

ওটার ভেতরটা ফাঁপা!

ধক্ করে উঠল রানার বুক। দুই আঙুল ভরে দিল খোঁড়লের ভেতর। কী যেন ঠেকল আঙুলে। জিনিসটা রোল করা কাগজ। পায়া উল্টো করে ঝাঁকুনি দিতেই ভেতর থেকে বেরিয়ে এল হলদেটে, পুরনো মুড়িয়ে রাখা কাগজ। মাঝখানে লাল রিবন দিয়ে গিঁঠ দেয়া। চুরমার হওয়া পিয়ানোর পাশে পড়ল রোল করা কাগজ।

ঝুঁকে ওটা তুলল লিয়া। রিবন খুলতেই বুঝল, ওটা মাত্র একটা পুরু কাগজ। খুব সাবধানে মুড়িয়ে রাখা কাগজটা খুলে চোখ বোলাল লিয়া। বিড়বিড় করে বলল, ‘হায়, ঈশ্বর!’

ফ্যাকাসে হওয়া কালিতে লেখা চিঠি। নিচে সই।

লিয়া নিশ্চিত, এটা ওর বাবার খুঁজে পাওয়া সেই চিঠি লিখেছেন স্বয়ং মোযার্ট!

.

বাইরে পুলিশের সাইরেনের আওয়াজ শুনে টয়লেট থেকে মোটা শরীরটা বের করে আনল ডোনা বিয়াঞ্চি। ভাল করেই জানে কোথায় চাবি। সমস্যা হলো না প্রধান দরজা খুলতে। পুলিশের লোক ভেতরে আসতেই আঙুল তাক করে দেখিয়ে দিল পিয়ানো রুমের দিকে। জানিয়ে দিল, ওখানে আছে ডাকাতের দল। ভয়ঙ্কর মানুষ তারা। ভীষণ নিষ্ঠুর চেহারা। কুচকুচে কালো গোঁফ হুলো বেড়ালের লেজের চেয়েও মোটা। হাতে বিরাট সব পিস্তল। কালো। ডোনা বিয়াঞ্চির স্বর্গত বাবার কপাল খুবই ভাল যে, এখনও প্রাণে বেঁচে আছে তার আদরের ছোট মেয়েটা।

করিডোর পেরিয়ে বাঁক ঘুরে কিবোর্ডের প্রদর্শনী ভরা রুমে ঢুকল পুলিশ।

কিন্তু ওই ঘরে কেউ নেই।

চুরমার হয়ে পড়ে আছে দামি একটা পিয়ানো।

কিন্তু কেন খামোকা পুরনো একটা বাদ্যযন্ত্র ভাঙবে কেউ? এর কোনও জবাব নেই কারও কাছে।

পুলিশ বা মোটা মহিলা জানে না, সাত মিনিট আগেই পুরনো একটা ফিয়াট ইলেভেন হানড্রেড গাড়িতে চেপে মিলানের ব্যস্ত রাস্তায় হাওয়া হয়েছে দুই দুর্ধর্ষ চোর।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *