ত্রিশ
ইতালির গ্রাম্য এলাকায় হালকা এক পাহাড়ি জঙ্গলের ভেতর দাঁড়িয়ে আছে রানা ও লিয়া। চুপচাপ দেখছে পুরনো ট্রাকের ক্যাব ঘিরে নাচছে লকলকে আগুন। চারপাশের গাছের চূড়া ছাড়িয়ে আকাশে উঠছে ঘন কালো ধোঁয়া। একটু পর পুড়ে যন্ত্রদানবটা হবে বিশাল কোনও মৃত প্রাণীর কঙ্কালের মত। ঘুরে জঙ্গলের মাঝ দিয়ে রাস্তার দিকে চলল রানা ও লিয়া।
রাত নেমেছে। বাতাস শীতল ও ভেজা। ভাল ছিল ওর কপাল। বামবাহুটা সামান্য চিরে দিয়ে বেরিয়ে গেছে বুলেট। নইলে ব্যথা সহ্য করা কঠিনই হতো।
গ্রাম্য পথে হাঁটতে হাঁটতে নিচের উপত্যকায় কয়েকটা দালানের বাতি দেখছে রানা ও লিয়া। আরও কিছুক্ষণ হাঁটার পর ওরা দেখতে পেল একটা সাইনবোর্ড ও গেট।
এত শীতে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন পাওলো গুচ্চি পোনি-ট্র্যাকিং সেন্টারের মালিক। গ্রীষ্মে পাঁচটা কেবিন ভাড়া দেন সিনোর গুচ্চি ও তাঁর স্ত্রী। ঘোড়ায় চড়ে স্থানীয় এলাকা ঘুরতে বেরোয় অনেকে। অবশ্য আজ অচেনা এক দম্পতি রাতের জন্যে কেবিন ভাড়া নিতে চাওয়ায় তাঁরা খুব খুশি। নগদ টাকাও দিয়েছে বিদেশি দম্পতি। অতিথিদের জন্যে বেজায় ঝাল দেয়া পাস্তা ও মাংসের ঘন সুপ তৈরি করলেন মাদাম গুচ্চি। এদিকে কেবিন পরিষ্কার করে হিটিং সিস্টেম চালু করছেন তাঁর স্বামী।
ডিনার শেষে সিনোর গুচ্চির কাছ থেকে এক বোতল স্থানীয় ওয়াইন -কিনে লিয়াকে নিয়ে কেবিনে ঢুকল রানা। ভেতরে বিলাসবহুল কোন আসবাব নেই। দু’দিকে দুটো সিঙ্গল বেড। দুটোর মাঝে ছাত থেকে ঝুলছে সাদা পর্দা। এ ছাড়া কেবিনে আছে একটা সেটি, দুটো চেয়ার ও একটা টেবিল।
ডিনারের সময় প্রায় কিছুই মুখে দেয়নি লিয়া। কেবিনে ঢুকে বামদিকের বেডে ধপ করে বসল। ফ্যাকাসে হয়ে গেছে মুখ। টেবিল থেকে গ্লাস নিয়ে ওটার ভেতর ওয়াইন ঢালল রানা। গ্লাসটা বাড়িয়ে দিল লিয়ার দিকে।
গ্লাস নিয়ে লালচে তরলে চুমুক দিল মেয়েটা। ওয়াইনের প্রভাবে ধীরে ধীরে শিথিল হচ্ছে ওর দেহ।
চুপ করে বসে থাকল ওরা। তবে অনেকক্ষণ পর দুর্বল স্বরে বলল লিয়া, ‘আমি এসব খুনোখুনি আর সহ্য করতে পারছি না, রানা।’
চুপ করে থাকল রানা। ওর কাঁধে মাথা রাখল লিয়া।
সব ঠিক হয়ে যাবে, দুশ্চিন্তা কোরো না,’ নরম সুরে বলল রানা।
‘আমরা তো এটাও জানি না, কীভাবে আমাদেরকে খুঁজে নিল ওরা, বলল লিয়া।
জবাব দিল না রানা।
চাপা দীর্ঘশ্বাস ফেলল লিয়া। ‘দোষটা বোধহয় আমার, তাই না? প্রফেসরের ফোনে কান পেতেছিল ওরা।’
‘দোষ তোমার নয়। আমিও কথা বলতে চেয়েছি তাঁর সঙ্গে। এখন দুঃখ করে কোনও লাভ হবে না। তুমি ক্লান্ত। শুয়ে পড়ো
‘কিন্তু নিজের নাম বলেছি সেই ইন্সটিটিউটে,’ বলল লিয়া। ‘বারবার মানা করেছিলে। কথা শুনিনি বলে আজ মারা গেলেন বুড়ো মানুষটা।’
‘তুমি তো আর গুলি করোনি,’ বলল রানা।
‘প্রায় একই কথা,’ দীর্ঘশ্বাস ফেলল লিয়া। ‘বলতে পারো, এসব খুনি আসলে কারা? এদের জন্যে কোথাও আমরা নিরাপদ নই।’ ভীত চোখে রানাকে দেখল ও। ‘প্রথম সুযোগে আমাদেরকেও মেরে ফেলবে।
শান্ত স্বরে ওকে সান্ত্বনা দিল রানা। যদিও মাথায় চলছে ঝড়। লিয়োনার্দো ডিয়ানোর বাড়ি থেকে অন্তত বিশ মাইল দূরে সরে গেছে ওরা। ওদেরকে অনুসরণ করেনি কেউ। কারও জানার কথা নয় যে ওরা এখানে। তবে সন্দেহ নেই, ওদেরকে নিশ্চয়ই খুঁজবে ওরা।
এরপর লিয়াকে নিয়ে কোথায় যাবে, স্থির করতে পারছে না রানা। নতুন করে অ্যালেকের সেই পুরনো পথে খোঁজ নিয়ে কোনও লাভ হবে বলেও মনে হচ্ছে না ওর।
মনের ভেতর বাজছে প্রফেসর ডিয়ানোর কথা: ‘অ্যালেক ই-মেইল করার পর মোযার্টের চিঠি সরিয়ে ফেলেছি গোপন জায়গায়। কেউ ওটা খুঁজে পাবে না। নিজের বাড়িতে ফিরেছে ওটা।’
মোয়ার্টের সেই চিঠি কোথায় আছে আসলে?
বাড়ি ফিরেছে মানে?
অস্ট্রিয়ায় পাঠানো হয়েছিল?
একটু পর শুয়ে পড়ল লিয়া। ওয়াইনের প্রভাবে সময় লাগল না ঘুমিয়ে পড়তে। ধীরে ধীরে উঠছে-নামছে বুক। ব্ল্যাঙ্কেট দিয়ে গলা পর্যন্ত ওকে ঢেকে দিল রানা। একসময়ে ফুরিয়ে গেল ওয়াইনের বোতল। রানার মনে জমেছে অনেক প্রশ্ন, কিন্তু একটারও জবাব নেই ওর কাছে।
রাত সাড়ে এগারোটায় একটু হাঁটাহাঁটির জন্যে কেবিন থেকে বেরোল রানা। বাইরে বইছে শীতল হাওয়া। পায়ের নিচে শক্ত বরফ। কট-কট আওয়াজে ভাঙছে জমাট বাঁধা ঘাস। রাতের আকাশে মুখ তুলে তাকাল রানা। টিপটিপ করে জ্বলছে অসংখ্য নক্ষত্র।
কেবিনের সারি পেরোলে উঠানের ওদিকে পাথরের ক’টা বাড়িঘর, আস্তাবল ও করাগেটেড লোহার কিছু পুরনো ছাউনি। বহু দূরে ঘেউ-ঘেউ করছে কুকুর। একটা ছাউনির ধুলো ভরা জানালা দিয়ে আসছে হলদে আলো। ওখানে ধাতব আওয়াজ। ওই ছাউনির দিকে চলল রানা। জংধরা করাগেটেড দেয়ালের ফাঁক দিয়ে দেখল, ভেতরে নানান ধরনের যন্ত্রপাতি। পুরনো এক ফিয়াট স্ট্রাডার বনেটের নিচে মাথা ঢুকিয়ে কী যেন মেরামত করছে কোঁকড়া চুলের এক তরুণ।
খোলা দরজা পেরিয়ে ভেতরে ঢুকল রানা। গলা উঁচিয়ে বলল, ‘চিয়াও। আমি জন।’
ঘুরে তাকাল তরুণ। একেবারেই পাওলো গুচ্চির কমবয়সী সংস্করণ সে। বয়স হবে আঠারো কি উনিশ।
গাড়ির দিকে আঙুল তাক করে ইতালিয়ান ভাষায় জানতে চাইল রানা, ‘সমস্যা?’
‘চিয়াও, জন, আমি রসি।’ আন্তরিক হাসল তরুণ। বিদেশিকে একটা স্পার্ক প্লাগ দেখাল। ‘আসলে কোনও সমস্যা নেই, শুধু বদলে দিচ্ছি প্লাগ। এই গাড়িটা বিক্রি করব তো, চাইছি এটা ভালভাবে চলুক।’ প্লাগগুলো ঠিকভাবে প্যাঁচ মেরে ঠিক জায়গায় ক্যাপ বসাল সে। কাজ শেষে ধুম্ করে বন্ধ করল হুড। ড্রাইভিং সিটে বসে ইঞ্জিন চালু করল। কান পেতে শব্দ শুনছে রানা। কোথাও অস্বাভাবিক বিশ্রী শব্দ নেই। ঠিকভাবে কাজ করছে একয়স্ট। সমস্যা নেই কোন গ্যাস্কেটে। নীল ধোঁয়া বের করে হাঁফিয়ে উঠছে না ইঞ্জিন।
‘দাম কত হতে পারে গাড়িটার?’ জানতে চাইল রানা।
জিন্সের প্যান্টে কালিমাখা হাত মুছল রসি। ‘পুরনো হলেও ইঞ্জিন ঠিক আছে। আমার মনে হয় দেড় হাজার ইউরো পাব।’
পকেট থেকে মানিব্যাগ বের করল রানা। টাকা গুনতে গুনতে বলল, ‘তা হলে আমিই নিলাম।’
প্রায় নিঃশব্দে গাড়ি নিয়ে ফার্মের উঠান থেকে বেরোল রানা। এবড়োখেবড়ো মাটির রাস্তা পেরিয়ে উঠল আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথে। চলেছে প্রফেসর ডিয়ানোর বাড়ির দিকে। একটু পর পেছনে পড়ল পোড়া, পুরনো ট্রাক।
অস্ত্র নেই বলে অস্বস্তি বোধ করছে রানা। জরুরি একটা কারণে আবারও ফিরছে প্রফেসরের বাড়িতে। যদিও জানে, কাজটা খুবই বিপজ্জনক। মোয়ার্টের চিঠি কোথায় রেখেছেন, সেটা আগেই বৃদ্ধের কাছ থেকে জেনে নিলে এত ঝামেলায় পড়ত না। মনে মনে নিজেকে বকছে রান।। গত কয়েক দিনে বেশ কিছু ভুল করেছে। নিজেকে জিজ্ঞেস করল: ওই চিঠি দিয়ে কী হবে?
মন থেকে কোনও জবাব পেল না।
এখন খড়ের গাদায় সুঁই খুঁজতে হবে জেনেও আশা করছে, কোনও না কোনভাবে চিঠিটা হাতে পাবে।
রাত সাড়ে বারোটায় প্রফেসরের বাড়ির কাছে পৌঁছে, ড্রাইভওয়ের ওদিকে বাগানে নীল ঝলমলে আলো দেখল রানা। বিড়বিড় করে কপালকে ছোট্ট একটা গালি দিয়ে আবারও বাড়িয়ে নিল গাড়ির গতি। বাগানে আছে কয়েকটা পুলিশের গাড়ি ও দুটো ফায়ার ইঞ্জিন। কাঠের মূর্তির মত সরাসরি সামনে চেয়ে ডিয়ানোর এস্টেট পেরিয়ে গেল রানা।
আগেই দেখেছে, পুড়ে ছাই হয়ে গেছে প্রফেসরের বাড়ি। ধসে যাওয়ার সময় বিশাল কোনও মৃত জন্তুর মেরুদণ্ডের মত মুচড়ে গেছে ছাত। এখানে ওখানে পোড়া জানালা, কাঠের বিম ও কলাম। সবকিছু থেকে উঠছে ধোঁয়া।
বহুক্ষণ ধরে জ্বলেছে এই বাড়ি। সরিয়ে নেয়ার মত আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। চারপাশে শুধু জঞ্জাল।
আজ রাতের মত নিজেদের কাজ শেষ করেছে ফায়ার ব্রিগেডের সদস্যরা। একটু পর ফিরবে স্টেশনে।
এবার কী করবে ভাবতে চাইল রানা।
আগুন হয়তো ছড়িয়ে গিয়েছিল গোটা বাড়িতে। অথবা, নিজেদের উপস্থিতি গোপন করতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে খুনিরা। ওই কাজ করলে সহজেই নিশ্চিহ্ন হবে সব প্রমাণ।
আরও কিছুটা গিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে পুরনো ফার্মহাউসের গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকল রানা। পাথরে ছাওয়া ড্রাইভওয়ে শেষে পৌঁছল গোলাঘরের কাছে। সন্ধ্যায় ওখান থেকেই নিয়েছিল ট্রাক। কাঠের পুরনো দেয়াল ভেঙে গেছে, এ ছাড়া বোঝার উপায় নেই অস্বাভাবিক কিছু ঘটেছে চারপাশে।
গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ করে নেমে পড়ল রানা। কিছুক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকল অন্ধকারে।
আশপাশে কেউ নেই।
মিনি ম্যাগলাইটের আলোয় ছাউনি ও গোলাঘর সার্চ করল রানা। মেঝেতে গুলির কোনও খোসা নেই। ছাউনির দরজা ও চৌকাঠে মেখে নেই লোকটার বাহুর রক্ত। কাঠ থেকে প্লায়ার্স দিয়ে টেনে তোলা হয়েছে চারটে পেরেক।
অন্ধকারে কী যেন হঠাৎ নড়ে উঠতেই চরকির মত ঘুরে দাঁড়াল রানা। প্রতি আক্রমণের জন্য তৈরি হয়ে গেছে সারা শরীরের পেশি।
ওপরের এক তাক থেকে লাফ দিয়ে নেমেছে কালো এক বেড়াল। পেরেক রাখার ছোট একটা কৌটা উল্টে দিয়ে ছুটে বেরিয়ে গেল দেয়ালের গর্ত গলে।
ছাউনি থেকে বেরিয়ে অন্ধকারে সেই পাথরের দেয়ালের দিকে চলল রানা। ওদিকে আছে প্রফেসরের বাগানে পার্কের মত জায়গাটা। দেয়ালের কাছে একটা গাছের আড়াল নিয়ে চারপাশে তাকাল রানা। পুড়ে যাওয়া বাড়ির কাছে ঘোরাঘুরি করছে পুলিশের কয়েকজন সদস্য।
এখানে অপেক্ষা করে কোনও ফায়দা হবে না, বুঝে গেল রানা। ঘুরে গাছগাছালির মাঝ দিয়ে এগোল গাড়ির দিকে কিন্তু তখনই কালো মেঘ সরে গেল চাঁদের নিচ থেকে। সেই আলোয় রানা দেখল, একটা গাছের শেওলা ভরা মোটা শেকড়ের ওপর হুমড়ি খেয়ে দু’হাত দু’দিকে ছড়িয়ে পড়ে আছে এক লোক।
অথচ মাথা নেই তার!
পাথরের মূর্তি হয়ে দাঁড়িয়ে থাকল রানা। আবার মেঘ সরে চাঁদ বেরোতেই তাকাল ওদিকটায়। পা টিপে সাবধানে এগিয়ে মানুষটার পেটে পা দিয়ে গুঁতো দিল ও।
দেখা গেল ওটা কারও দেহ নয়।
সার্চ করার সময় এটা খুঁজে পায়নি পুলিশের লোক।
প্রফেসর ডিয়ানোর সেই টুইড জ্যাকেট
ছুটে পালিয়ে যাওয়ার সময় পড়ে গিয়েছিল লিয়ার গা থেকে।
জ্যাকেটটা তুলল রানা। ওটা ঠাণ্ডা ও শিশিরে ভেজা। অন্য পকেটে কিছু না থাকলেও ডান পকেটে কী যেন। ওই পকেট থেকে জিনিসটা বের করল রানা।
ওটা সরু একটা মানিব্যাগ।
.
অন্ধকারে ভয়মিশ্রিত স্বরে জানতে চাইল লিয়া, ‘কে?’
‘আমি, ভয় নেই,’ কেবিনের দরজা বন্ধ করল রানা।
‘কোথায় গিয়েছিলে? এখন তো অনেক রাত!’
প্রফেসরের বাড়ির দিকে গিয়েছিল, লিয়াকে জানাল রানা।
‘বলো কী! ফিরে গিয়েছিলে?’
‘আগুনে পুড়ে গেছে গোটা বাড়ি। ছাই হয়ে গেছে সব। তবে একটা জিনিস পেয়েছি, লিয়া।’ হাত তুলে মানিব্যাগ দেখাল রানা। ‘এটা প্রফেসরের।’
লিয়া বিছানায় উঠে বসতেই বাতি জ্বেলে দিল রানা। এসে বসে পড়ল বিছানার পাশে। চোখ থেকে একগোছা চুল সরিয়ে ঘুম ভরা স্বরে বলল লিয়া, ‘ওটা কোথায় পেয়েছ?’
‘গাছের গোড়ায়, যেখানে পড়েছিল,’ বলে চামড়ার তৈরি মানিব্যাগের ভেতরের পকেট খুলল রানা। ‘ভেতরে তেমন কিছু নেই। একটা লাইব্রেরির পুরনো বাতিল সদস্য কার্ড। এ ছাড়া কয়েকটা সিনেমার টিকেট। পনেরো ইউরো। এটা।’ ছোট একটা স্লিপ বের করে লিয়াকে দেখাল রানা।
কাগজটা কৌতূহলী চোখে দেখল লিয়া। ‘এটা কী?’
‘রিসিট।’
‘মিলানের দ্য মিউসেয়ো ভিসকণ্টি, ভাঁজ খুলে কাগজের
লেখা পড়ল লিয়া।
‘আগে কখনও এর নাম শুনেছ?’
ধীরে ধীরে মাথা নাড়ল লিয়া।
‘ওই মিউযিয়ামে কিছু না কিছু দান করেছেন প্রফেসর ডিয়ানো,’ বলল রানা, ‘জিনিসটা কী, তা এই রিসিটে লেখা নেই। তবে গত বছর জানুয়ারি মাসে অ্যালেক মারা যাওয়ার তিন দিন পরের তারিখ।’
রিসিটের ওপর থেকে চোখ তুলে রানাকে দেখল লিয়া। ‘তার মানে, তুমি ভাবছ …’
‘মোযার্টের চিঠি হয়তো গেছে মিলানে? জানি না। তবে জেনে নেব।’ উঠে পাশের বেডের দিকে চলল রানা। ‘আপাতত ঘুমিয়ে পড়ো। আমরা রওনা দেব ভোর পাঁচটায়।’