অঘোরে ঘুমিয়ে শিব – ৩২

৩২

পুলিশের তিনটে গাড়ির কনভয় যখন আগ্রা পুলিশের হেড কোয়ার্টার থেকে ইতমদ- উদ-দৌলার কবরের উদ্দেশে বেরোল, তখন ঘড়িতে ভোর সাড়ে ছ-টা। প্রজাতন্ত্র দিবসের সূর্য পূর্বদিকে উদিত হয়েছে সবে। দুটো গাড়ি ভরতি কনস্টেবল, সাবইনস্পেকটর, আর অন্য গাড়িটায় নাহুম খান, নাগেশ সিং, রুদ্র, প্রিয়ম আর অঘোরেশ। অঘোরেশকে নিয়ে আসার ব্যাপারে নাহুম খান একদমই রাজি ছিলেন না, কিন্তু রুদ্র মি ত্রিবেদীকে বার বার অনুরোধ করাতে মি ত্রিবেদী অঘোরেশকে সঙ্গে নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।

গাড়ি ছুটছিল হু হু করে, যমুনা নদীর পাশ দিয়ে। অঘোরেশ থম মেরে বসে ছিলেন। অস্ফুটে বললেন, ‘নিজামুদ্দিন বেঁচে আছে?’

‘নিজামুদ্দিন যে বেঁচে আছেন সেটা আমি কালই বুঝতে পেরেছিলাম।’ রুদ্র বলল, ‘ওই সময়ের খবরের কাগজগুলো খুঁটিয়ে পড়লেই বোঝা যায় যে তিনি সারাদিন অজস্র ঝামেলার মুখে পড়েছিলেন। যেকোনো গবেষকই তাঁর গবেষণার শেষ প্রান্তে এসে এমন উৎপাত সহ্য করবেন না। নাগেশ সিং ওইসময় প্রথম সারির নেতাদের মধ্যে একমাত্র যিনি বারবার প্রফেসর বেগের গবেষণাকে সমর্থন করেছিলেন। নাগেশ সিং নিজে একটা হিন্দু সংগঠনের প্রেসিডেন্ট, তাই তাঁর সাহায্য নিয়ে প্রফেসরের আত্মগোপন করাটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। আর তেমনই স্বাভাবিক ব্যাপার যারা প্রফেসর বেগের ওই গবেষণাটাকে ভণ্ডুল করতে চাইছে, তাদের সব রাগ নাগেশ সিং-এর ওপর গিয়ে পড়া।’

ঠিক এই সময় নাগেশ সিং-এর ফোন বাজল। কিছুক্ষণ কথা বলে তিনি চিন্তিত মুখে ফোনটা রাখলেন, ‘দিল্লি পুলিশ থেকে ফোন এসেছিল। সুজাতা, মানে আমার স্ত্রী একটু আগে টাকা নিয়ে গিয়েছিলেন কিডন্যাপারদের দিতে, পুলিশ ছদ্মবেশে নজর রাখছিল, একটা বাচ্চা ছেলে এসেছিল টাকাটা নিতে, তাকে ধরা হয়েছে।’ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন তিনি, ‘নিজের মেয়ের প্রাণ নিয়ে জুয়া খেলছি। পুলিশকে জানাতে বারণ ছিল।’

‘কী বলছে সে?’ নাহুম খান বললেন, ‘কার লোক?’

নাগেশ সিং-এর কপালে চিন্তার ভাঁজ স্পষ্ট হচ্ছিল, বললেন, ‘পুলিশ এভাবে ছেলেটাকে ধরে ফেলল, ও-ওরা আমার মেয়েটার কোনো ক্ষতি করবে না তো!’ এতক্ষণের চেপে রাখা মানসিক চাপ তিনি আর গাম্ভীর্যের আড়ালে লুকিয়ে রাখতে পারলেন না, কাঁপা কাঁপা ভাঙা গলায় বললেন, ‘আমার মেয়েটা এমনিতেই খুব কষ্টে থাকে। একে ওর বুদ্ধি স্বাভাবিকের থেকে অনেক বেশি, তার ওপর একটা হ্যালুসিনেশনও ওর মধ্যে সারাক্ষণ কাজ করে।’

‘হ্যাঁ জানি, মি সিং।’ রুদ্র সমব্যথীর ভঙ্গিতে তাকাল, ‘আপনার মেয়ে বিস্ময়শিশু, খুব অল্প বয়সেই সে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে, তার ওপর ও মাঝেমধ্যে একটা স্বপ্ন দেখে, যেটাকে অনেক ডাক্তার পূর্বজন্মের চিহ্ন বলে মত দিয়েছেন, তাই তো? আপনার মেয়েকে নিয়ে লেখা আর্টিকল আমি কিছুক্ষণ আগেই ইন্টারনেটে পড়েছি।’

নাগেশ সিং ধীরে ধীরে মাথা নাড়লেন, ‘হ্যাঁ, আমার মেয়েটা খুব একা।’ তারপরেই বললেন, ‘দিল্লির পুলিশ বলল গত এক মাসে ওর ফোন থেকে নাকি দিনে পাঁচ ছ-ঘণ্টা একটা নম্বরে কথা হত। সেই নম্বরটা ওরা ট্র্যাক করেছে, আগ্রার নম্বর। কবীর খান নামে। ওরা আগ্রা রওনা দিয়েছে।’

রুদ্র নাহুম খানের দিকে তাকিয়ে সামান্য হাসল, ‘যা ভেবেছিলাম!’

নাহুম খান বললেন, ‘দাঁড়ান দাঁড়ান, এক মিনিট! নিজামুদ্দিন বেগের যে অ্যাসিস্ট্যান্ট ছিল, তার নাম কবীর খান আপনি জানতেন না?’

‘সেটা জানতাম। প্রফেসর বেগের সহকারী ছিল। প্রফেসরের সঙ্গে তো আমার ফোনে কথা হত ওই কলাম বেরোনো শুরু হওয়ার পর। আমিই নম্বর খুঁজে যোগাযোগ করেছিলাম। তখন ফোনটা ওঁর সহকারী ছেলেটিই রিসিভ করত, কিন্তু আমি যখন শেষ কিস্তি প্রকাশের আগের সপ্তাহে গিয়ে প্রথম প্রফেসরের সঙ্গে দেখা করি, তার আগেই ও কাজ ছেড়ে দিয়ে চলে গেছে।’ নাগেশ সিং মাথা নাড়লেন, ‘কিন্তু প্রফেসরের বাড়িতে যখন হামলা চলছে, তখনও আমরা বুঝিনি এর মধ্যে ওই ছেলেটা জড়িয়ে থাকতে পারে। পরে যখন বারবার হানা দিচ্ছিল, তখন আমাদের দলের একটা লোক ওদের একটা ছেলেকে হাত করে খবর আনে। আমি কিছু কথোপকথনের রেকর্ড শুনে বুঝতে পেরেছিলাম যে ও-ও চাইছে তাজমহলের রহস্যের কিনারা করতে, কিন্তু মোটিভটা বুঝিনি। কিন্তু সেই কবীর যে আবার আমার উজ্জয়িনীর সঙ্গে…!’ নাগেশ সিং আর ভাবতে পারছিলেন না।

পুলিশের গাড়িটা প্রাচীন যমরাজের মন্দিরটাকে ডান হাতে ফেলে আম্বেদকর ব্রিজে উঠতেই উলটোদিকে ইতমদ-উদ-দৌলার সাদা প্রাসাদোপম কবরস্থানটা দৃশ্যমান হল। সকালের নরম রোদ গায়ে মেখে গোটা প্রাসাদটা যেন সোনার মতো ঝকমক করছে।

নাহুম খান সামনের দুটো গাড়িতে থাকা সাবইনস্পেকটরদের মোবাইলে কিছু নির্দেশ দিচ্ছিলেন, ‘আমরা আসছি, তোমরা গিয়ে ঘিরে ফেল জলদি…।’

প্রিয়ম এতক্ষণ কোনো কথা বলেনি, এখন চিন্তান্বিত মুখে বলল, ‘আমার মাথায় কিছুই ঢুকছে না। নিজামুদ্দিন বেগ, নাগেশ সিং, অঘোরেশ ভাট, এদের যদি একটা টিম ভাবি, এঁরা প্রমাণ করার চেষ্টা করছিলেন তাজমহল আসলে একটা পুরোনো শিবমন্দির। কিন্তু এদের অপোনেন্ট দল, যারা ড বেগকে খুঁজছে, তাঁর বাড়িতে হামলা করছে, কিংবা অঘোরেশ ভাটের বাড়িতে আর্মস ফেলে যাচ্ছে, নাগেশ সিং-এর মেয়েকে কিডন্যাপ করছে, তাদের স্বার্থ কী হতে পারে? তর্কের খাতিরে যদি ধরে নিই তারা মুসলিম মৌলবাদী, চায় না তাজমহলে কোনোরকম অনুসন্ধান হোক, কিন্তু সেক্ষেত্রে তারা ড বেগের বাড়িতে কী এত আঁতিপাঁতি করে খুঁজছে?’

‘ঠিক।’ রুদ্র বলল, ‘কিন্তু তারা হয়তো সেই মূল্যবান প্রুফটাকে ধ্বংস করে দিতে চায়।’

‘তাহলেও একটা প্রশ্ন উঠছে। পুলিশে উড়ো ফোন করে অঘোরেশের ওপর দোষ কে চাপাল? কারাই-বা বলল যে ছাব্বিশ তারিখ সকালে তাজমহলে হামলা হবে? তাদের উদ্দেশ্য কী? শুধু প্রুফ ধ্বংস করে দেওয়া?’ প্রিয়ম মাথা নাড়ল, ‘উঁহু!’

‘প্রুফ মানে তো একটা মুদ্রা।’ নাগেশ সিং বললেন, ‘নিজামুদ্দিন বেগের গবেষণার প্রধান বিষয় ছিল চান্দেলা রাজাদের আর্কিটেকচার নিয়ে। চান্দেলা রাজারাই খাজুরাহোর ওই অপূর্ব মন্দিরগুলো বানিয়েছিলেন। সেই মন্দির নিয়ে গবেষণা করতে করতে প্রফেসর বেগ উপলব্ধি করেন প্রতিটা মন্দিরেই লুকিয়ে আছে অঙ্কের কিছু জটিল তত্ত্বের ব্যবহারিক প্রয়োগ। লখনৌয়ের মিউজিয়ামের একটা শিলালিপি থেকে তাজমহল যে চান্দেলা বংশের শেষ রাজা পরমাদ্রিদেবের বানানো, সেটা ওঁর ধারণা হয়। তাজমহলের ঠিক বিপরীত দিক থেকে অজস্র সুড়ঙ্গ খোঁড়া রয়েছে যমুনা নদীর মধ্য দিয়ে, যার মধ্যে একটা এসো মিশেছে তাজমহলের একদম নীচে।’

৭ নম্বর ঘরে

প্রিয়ম দ্রুত ফোনে সেই ছবিটা খুলল, ‘অর্থাৎ আপনার কথা অনুযায়ী ৭ নম্বর ঘরে।’

‘হ্যাঁ।’ নাগেশ সিং ঝুঁকে প্রিয়মের মোবাইলে ছবিটা দেখলেন।

‘কিন্তু যদি সেই সুড়ঙ্গ থেকেও থাকে, আর যদি সেই সুড়ঙ্গের মুখ খুঁজে বের করাও যায়, সেক্ষেত্রে তো এত বছর সেটা খোলা হয়নি, বিষাক্ত গ্যাসে ভরতি থাকবে, ঢোকার সঙ্গেসঙ্গে মৃত্যু অবধারিত।’ প্রিয়ম বলল।

‘এইরকম সুড়ঙ্গ একটা নয়, অজস্র আছে।’ গাড়িতে জবুথবু হয়ে বসে থাকা অঘোরেশ এই প্রথম মুখ খুললেন, ‘একটা সুড়ঙ্গের কথা ইতিহাসে লেখা আছে, যেটা আগ্রা দিল্লি আর লাহোরকে কানেক্ট করা ছিল। ওইসব গোপন টানেল দিয়ে বিপদের সময় অস্ত্রশস্ত্র, সৈন্য এমনকী বাদশাহ নিজেও পালাতেন। আকবর যখন বাদশাহ ছিলেন, যুবক জাহাঙ্গীরের সঙ্গে অবৈধ প্রেমে জড়িয়ে পড়েছিল আনারকলি নামে এক ক্রীতদাসী। বলা হয় সেই অপরাধে আনারকলিকে আকবর জ্যান্ত কবর দেন।’

‘মুঘল-এ-আজম!’ নাহুম খান অস্ফুটে বললেন।

‘আসলে জ্যান্ত কবর নয়, আকবরের রাজধানী ফতেপুর সিক্রির গোপন সুড়ঙ্গ দিয়ে তাকে পাচার করে দেওয়া হয়েছিল দিল্লিতে। যদিও এই ঘটনার কোনো উল্লেখ আকবরনামা বা তুজুক-ই-জাহাঙ্গীরি-তে নেই, তবু এই সুড়ঙ্গ সত্যিই ছিল।’ অঘোরেশ বললেন।

রুদ্র ফিসফিস করে বলল, ‘এই কথাটাই প্রমাণ করে, শাজাহানই ওই সুড়ঙ্গটা বানিয়েছিলেন, কারণ মুঘল পিরিয়ডে এমন চোরাসুড়ঙ্গ বানানোর চল ছিল। চান্দেলা রাজা-টাজা সব ভুল কথা।’

ইতিমধ্যে ওদের গাড়ি এসে দাঁড়াল ইতমদ-উদ-দৌলার কবরের সামনের রাস্তায়। নাগেশ একটু ইতস্তত করে বললেন, ‘আমার মনে হয় এত লোকজন না নিয়ে গিয়ে একটা গাড়ি গলির ভেতর ঢুকলেই ভালো হয়। এটা আমাদের সন্তান দলের এক ওয়ার্কারের বাড়ি, সে অন্য জায়গায় থাকে। একটা শুধু কাজের লোক রাখা আছে এই ক-দিন ওঁর রান্নাবান্না, কাজকর্মের জন্য। আর উনি আমি ছাড়া কারুর সঙ্গে দেখা করবেন না, সেরকমই বলা আছে।’

‘আপনাদের সন্তান দলের বারোটা আমি বাজাচ্ছি।’ বিড়বিড় করলেন নাহুম খান, ‘খোদ প্রাইম মিনিস্টারও আপনাদের বাঁচাতে পারবেন না। খুন, দাঙ্গায় উসকানি, আর অনেক কিছু এভিডেন্স আছে। কচি কচি ছেলেগুলোকে নিয়ে নাকি হিন্দুত্বের সেশন দেওয়া হয়। দিল্লি থেকে খবর এসেছে, একটা আর্মস ডিলার নিজে স্বীকার করেছে এদের দলকে আর্মস বেচার কথা। এই ব্যাপারটা মিটুক, নিষিদ্ধ ঘোষণা করেই ছাড়ব, দাঁড়ান না!’

নাগেশ সিং বললেন, ‘কিছু বলছেন?’

নাহুম খান মাথা নাড়লেন, ‘না তো!’

রুদ্র ঘড়ি দেখল, সাড়ে সাতটা। ও বলল, ‘আমরা এখানেই অপেক্ষা করছি, আপনারা গিয়ে ওঁকে নিয়ে আসুন বরং।’

সেইমতো গাড়ি থেকে রুদ্র আর প্রিয়ম নেমে গেলেও অঘোরেশকে ছাড়তে নাহুম রাজি হলেন না, অঘোরেশ আর নাগেশ সিংকে নিয়ে ঢুকে গেলেন গলির ভেতরে।

রুদ্র পাশের একটা চায়ের দোকানে দু-কাপ চায়ের অর্ডার দিল। গত রাতটা পুরোটা জাগা, মাথা যন্ত্রণায় ছিঁড়ে যাচ্ছে, হাত-পায়ের শিরায় টান ধরছে প্রচণ্ডভাবে।

প্রিয়মের অবস্থা ওর চেয়েও সঙ্গিন। একে এতটা জার্নি, তারপর জেট ল্যাগ, ওর মুখের দিকে তাকালে রুদ্রর নিজেরই মায়া লাগছে।

ধোঁয়া-ওঠা চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে প্রিয়ম কপালটা নিজেই কিছুক্ষণ রগড়াল, তারপর বলল, ‘অফিসের ওই চিঠিটার উত্তর এখনও লিখলে না কিন্তু!’

‘সেই জোরই পাচ্ছি না!’ রুদ্র ক্লান্ত চোখে প্রিয়মের দিকে তাকাল, ‘পরে দেখা যাবে। চাকরগিরি আর পোষাচ্ছে না। এত খাটলাম শেষ কয়েক মাস ধরে, আরসামান্য একটা ইসু পেতেই চার্জশিট দিয়ে দিল।’

‘সে তো সিস্টেমের মধ্যে থাকতে গেলে প্রোটোকল তোমাকে মানতেই হবে।’ প্রিয়ম আরও কিছু বলতে যাচ্ছিল, তার আগেই দেখল পুলিশের মস্ত বাইক থেকে ভগতবীর সিং নেমে গলির ভেতর ঢুকছেন।

ইনি নাহুম খানের মতো অতটা অভিজ্ঞ নন, বয়সও খুব অল্প, দেখলেই বোঝা যায় তারুণ্যের সতেজ ভাব এখনও যায়নি।

ওদের দেখতে পেয়ে তরুণ অফিসারটি এগিয়ে এলেন, ‘এসেছিলাম জরুরি অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে। তার তো আর দরকার পড়ল না, আগ্রা শহরের অদ্ভুত পোস্টারের কিনারা হয়েই গেল। আমার ডিপার্টমেন্ট থেকে ঘন ঘন ফোন আসছে, একটু বাদেই দিল্লি ব্যাক করব, তাই শেষ রিপোর্টটা নিতে এলাম।’

রুদ্র আরেক কাপ চা দিতে বলে হাসল, ‘আপনাদের মতো এফিশিয়েন্ট পুলিশ অফিসার দেখলে সত্যিই একটা সমীহ জাগে। ফোনে অতগুলো ইনফরমেশন দেওয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।’

‘না, ঠিক আছে।’ ভগতবীর লাজুক হাসলেন, ‘আমি তো একদমই নতুন। আমাদের সেলে বাঘা বাঘা সব অফিসার আছেন। ওই যে মনোজ বশিষ্ঠ, ওঁরা সব জাঁদরেল অফিসার। আপনাকে উনি আরও সব ইনফরমেশন দিলেন এখানকার ডিজি সাহেবের নির্দেশে।’

‘আপনার বাড়ি কোথায়?’ প্রিয়ম জিজ্ঞেস করল।

‘আগ্রাতেই। সেইজন্যই তো এই অ্যাসাইনমেন্টটা নিয়েছিলাম। মাঝখান থেকে একটু বাড়ির সঙ্গে দেখা করে যেতে পারলাম।’ ভগতবীর হাসলেন, ‘না হলে এখন দিল্লিতে প্রচুর কাজ আমাদের। আপনি পুলিশের কাছের লোক বলে বলছি। একটা বড়ো আর্মস সাপ্লাই র‌্যাকেট দিল্লিতে ঘাঁটি গেড়েছে। আপনাদের কলকাতা থেকেই একটা লোক ধরা পড়েছিল, সে-ই বলেছে বিহার, ওয়েস্ট বেঙ্গল, আসাম থেকে মোট একুশ কোটি টাকার আর্মস গত এক মাসে সাপ্লাই হয়েছে দিল্লিতে, সেটা নিয়ে আমাদের…।’

‘কী ধরনের আর্মস?’ রুদ্র চায়ের কাপ থেকে চোখ তুলে তাকাল, ‘পিস্তল?’

‘সবরকম। শুধু আর্মস নয়, অ্যামিউনিশনসও আছে। ওই নিয়ে আমরা সবাই খুব ঘেঁটে আছি আর কি!’ ভগতবীর বললেন, ‘জেনেরালি এত বড়ো অ্যামাউন্টের সাপ্লাই তো কোনো…।’

গলি থেকে পুলিশের গাড়িটা বেরিয়ে এদিকে আসতে শুরু করতেই প্রিয়ম, রুদ্র আর ভগতবীর সচকিত হয়ে উঠলেন।

গাড়িতে কি নিজামুদ্দিন বেগ আছেন? আর সঙ্গে সেই প্রাচীন মুদ্রাটা?

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *