জড়ায়ে আছে বাধা, ছাড়ায়ে যেতে চাই

তোর শিকল আমায় বিকল করবে না

তুমি নব নব রূপে এসো প্রাণে

উড়িয়ে ধ্বজা অভ্রভেদী রথে

আমি মারের সাগর পাড়ি দেব বিষম ঝড়ের বায়ে

এখনো গেল না আঁধার

হৃদয়নন্দনবনে নিভৃত এ নিকেতনে

আপনারে দিয়ে রচিলি রে কি এ আপনারই আবরণ

বাহিরে ভুল ভাঙবে যখন অন্তরে ভুল ভাঙবে কি

লক্ষ্মী যখন আসবে তখন কোথায় তারে দিবি রে ঠাঁই

বসে আছি হে কবে শুনিব তোমার বাণী

বাঁধন ছেঁড়ার সাধন হবে

যেতে যেতে চায় না যেতে

ডাকিছ শুনি জাগিনু প্রভু

আমায় মুক্তি যদি দাও বাঁধন খুলে

তোমারি রাগিণী জীবনকুঞ্জে

তুমি এবার আমায় লহো হে নাথ

যে দিন ফুটল কমল কিছুই জানি নাই

চরণ ধরিতে দিয়ো গো আমারে

হৃদয়ে তোমার দয়া যেন পাই

প্রভু তোমা লাগি আঁখি জাগে

তোমারি নাম বলব নানা ছলে

ভুবনেশ্বর হে মোচন কর বন্ধন সব মোচন কর

যদি তোমার দেখা না পাই প্রভু

আমার এ ঘরে আপনার করে

আমার সত্য মিথ্যা সকলই ভুলায়ে দাও

হেরি অহরহ তোমারি বিরহ ভুবনে ভুবনে রাজে হে

সংসারে তুমি রাখিলে মোরে যে ঘরে

ভয় হতে তব অভয়মাঝে

আমার গোধূলিলগন এল বুঝি কাছে গোধূলিলগন রে

আমার মুখের কথা তোমার

পাদপ্রান্তে রাখ সেবকে

নাই বা ডাকো রইব তোমার দ্বারে

বল দাও মোরে বল দাও

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

সকাল-সাঁজে ধায় যে ওরা নানা কাজে

অন্তর মম বিকশিত করো অন্তরতর হে

সার্থক কর সাধন

জগৎ জুড়ে উদার সুরে আনন্দগান বাজে

আমার বিচার তুমি করো তব

আমার মিলন লাগি তুমি

কোন্‌ শুভখনে উদিবে নয়নে অপরূপ রূপ-ইন্দু

তোমারি ইচ্ছা হউক পূর্ণ করুণাময় স্বামী

কোথায় আলো কোথায় ওরে আলো

তুমি এ-পার ও-পার কর কে গো ওগো খেয়ার নেয়ে

অন্ধজনে দেহো আলো

তোরা শুনিস নি কি শুনিস নি তার পায়ের ধ্বনি

বেলা গেল তোমার পথ চেয়ে

হে মহাজীবন, হে মহামরণ

হে অন্তরের ধন তুমি যে বিরহী

তোর ভিতরে জাগিয়া কে যে

পথে যেতে ডেকেছিলে মোরে

তোমার পূজার ছলে তোমায় ভুলেই থাকি

তুমি বাহির থেকে দিলে বিষম তাড়া

দুয়ারে দাও মোরে রাখিয়া

নীরবে আছ কেন বাহিরদুয়ারে

দাঁড়াও আমার আঁখির আগে

ধনে জনে আছি জড়ায়ে হায়

তোমার আমার এই বিরহের অন্তরালে

যদি এ আমার হৃদয়দুয়ার