ছাব্বিশ
ভোর ভোর পঞ্চম ঠাকুর অলঙ্কারপুরে হাজির, অন্তা হে।
রোদ ওঠেনি। ভোরের আকাশের এখানে ওখানে কালো মেঘের পৌঁচ, যেখানটায় মেঘ নেই, আকাশ ডিমের গায়ের মতো সাদা, পুব দিকটায় ঘন ঝাউবন ঢেকে রেখেছে ডিমের হলুদ কুসুম রং, উত্তর-পশ্চিমে ভেড়িবাঁধ, সেও তো প্রায় দশ মানুষ উঁচু। সমুদ্রপাখি হোটেল থেকে বেরিয়ে জেলেপাড়ার কাছ থেকে ভেড়িবাঁধে উঠে সাইকেলে বনবন করে এসেছে পঞ্চম ঠাকুর। অনন্তর বউ তাকে আসতে দেখেছে। বাঁধ থেকে সাইকেল গড়িয়ে কালো ফুটকির মতো মানুষটা বড় হয়ে গেল। বড় হতে হতে চেনা মানুষ হয়ে গেল। ঠাকুরমশায়, ঠাকুরমশায়, কুন্তি ভালো আছে?
পঞ্চম ঠাকুর ঘেমে গেছে খুব। পকেট থেকে রুমাল বের করে মুখ মুছল, বলল, ভালো তো আছে, ভালো থাকবে, অন্তা হে, অন্তা।
সরস্বতী বলে, শুয়ে আছে।
এত বেলা, এখনও ঘুমায়, ঘুমাবে তো, দুটো হাজার টঙ্কা মারছে, ইখন আর চিন্তা কী, উয়ারে ডাকো।
কী হঁইছে?
কথা আছে।
কী কথা?
পঞ্চম ঠাকুর বলে, মোর সাথে যেতি হবে।
কথাটা শোনার সঙ্গে সঙ্গেই কুন্তির মা সরস্বতীর বুকটা ধক করে ওঠে। তিন দিন মেয়ের মুখ দেখেনি। বাপ গিয়েছিল সেই দিন সন্ধেয়, বলেছে মেয়ের সঙ্গে দেখা হয়নি, ঘুমাচ্ছিল। সব মরে গিয়ে ওই একটা বেঁচে আছে, কাজ করে রাতে ঘরে তো ফিরবে! বুড়ো সায়েবের কাছে আছে অবশ্য। জাহাজবাবু ওর ঠাকুরদার মতো, তবু তো সে পুরুষমানুষ। সরস্বতী মাথার কাপড় টেনে জিজ্ঞেস করে, মেয়্যার ছাড় হবে কবে ঠাকুরমশায়?
ঠাকুর বলল, কেনে, কামে আবার ছাড় কী?
ঘরে ফিরবা কবে?
ঠাকুর বলল, কহ তো মেয়্যাকে দিয়ে যাই, টঙ্কাও ঘুরাই দাও, তুমরা কী ভাবো কহ দেখি, ডাকো উয়ারে।
ঠাকুরের চণ্ডমূর্তি দেখে সরস্বতী সিঁটিয়ে যায়। ভরা ভাদ্র মাস। কামকাজ নেই, অন্ন সংস্থান নেই, পঞ্চম ঠাকুর যদি এই কাজটা না দিত, কী হতো? মেয়ে তবু খেয়ে বাঁচছে, তারাও বাঁচছে। অবেলায় ঘুমোতে পারছে মেয়ে। কেন ঘুমায়? শরীর কি খারাপ হলো? তার উদ্বেগে জল ঢেলে দিয়ে মেয়ের বাপ বলেছে, তা কেনে, শান্তিতে ঘুমাচ্ছে, আরামে ঘুমাচ্ছে, কচিটা ঘুমাইছে কদিন কেনে কহ দেখি, জাহাজের মালিক, জাহাজ ভর্তি টঙ্কা উয়াদের, বাণিজ্য করে টঙ্কা লিয়ে ফেরে।
অনন্ত বেরিয়ে ঠাকুরকে দেখে চমকে ওঠে, কী হইছে?
কুছু না, মোর সাথে চ।
কুথায়, কেনে?
কাম আছে।
অনন্ত অবাক হয়ে ঠাকুরের দিকে তাকিয়ে থাকে, পঞ্চম ঠাকুর কি ভগবান! বাড়ি বয়ে কাজের সন্ধান দিতে এসেছে? সে ইঙ্গিত করতে দাওয়া থেকে খাটিয়া টেনে নামাতে থাকে সরস্বতী। পঞ্চম মাথা ঝাঁকায়, না না, বসবনি, অন্তা মোর সাথে চ।
কাজটা কী ঠাকুরমশায়?
গিয়ে জানবি।
টুকুন খাড়াও, মাঠ সেরে হাতমুখ ধুয়ে আসি, চা করুক কুন্তির মা।
অনন্ত চলে গেলে কুন্তির মা খাটিয়াটা নামিয়ে দিল উঠোনে। ভিজে বালি কী ঠাণ্ডা, নরম, মোলায়েম! পায়ের পাতা মেলে দাঁড়িয়ে থাকল সরস্বতী। পঞ্চম ঠাকুর অন্যদিকে চেয়ে আছে। পকেট থেকে বিড়ির কৌটো আর দেশলাই বের করে বিড়ি ধরিয়ে আকাশে তাকিয়ে উদাসীন হয়। পঞ্চমের সঙ্গে সঙ্গে সরস্বতীও আকাশে তাকায়। আকাশে কিছু খুঁজে না পেয়ে পঞ্চম ঠাকুরের দিকে চেয়ে থাকে। তার চোখের পাতা পড়ে না, দৃষ্টি টানটান। চোখ সরছে না সরস্বতীর, যেন চোখ সরালেই অদৃশ্য হয়ে যাবে পঞ্চম ঠাকুর। অথবা চোখ সরালেই সরস্বতীর বিপদ। বিপদ তো নিশ্চয়ই! পঞ্চমের কাছে তার মেয়ে। পঞ্চমের কাছেই যেন রেখেছে।
পঞ্চম ঠাকুরই গলা খাঁকারি দেয়, চা করবানি?
সরস্বতী জবাব দেয় না। সরস্বতীর বুক কাঁপছিল কেন যেন, বিড়বিড় করে, মেয়েটারে আজ ঘুরাই দিবে রাত্তির করে?
পঞ্চম মাথা ঘুরায়, কেনে?
একটাই তো ছা, আর নাই, মেয়্যা ছাড়া থাকি নাই।
তবে টঙ্কা ঘুরাই দাও, মেয়্যারে তো তুমরা দিইছ, খালি মনেই তো দিঁইছ।
কাল সকালা আবার যাবে।
ঐ রকম তো কথা ছিলনি!
সরস্বতী চুপ করে যায়। দূরের মাঠের দিকে তাকায়। মেয়ের বাবা কি এলো? শূন্য মাঠ, ধীর গমনা মেঘ, রৌদ্রবিহীন সকাল–সবদিক যেন ঝিমিয়ে আছে। সরস্বতী নিশ্চুপ তাকিয়েই থাকে মাঠের দিকে, শূন্য দৃষ্টি! পঞ্চম ঠাকুর ঘরে বসেছে! তাকিয়ে আছে নুনমারা অনন্তর বউটার দিকে। বউটা টের পাচ্ছে না তাকে দেখছে আর একজন। আচমকা সরস্বতী ঘুরতে পঞ্চম ঠাকুর ধরা পড়ে গিয়ে হাসল, কী দ্যাখো?
সরস্বতী বলল, টঙ্কা তো ধরাই আছে, তিন দিনের পয়সা দিয়া ছাড়ি দিক।
চমকে ওঠে ঠাকুর, কী কহ, টঙ্কা খরচ করো নাই?
না, সবটা ধরা আছে।
দিয়া দিবে?
হাঁ।
পঞ্চম ঠাকুর বলে, তা তো হবেনি।
কেনে?
তিন হাজার দিতে হবে।
তিন হাজারই তো আছে।
দুহাজার দিলাম না?
পরে কুন্তির বাপ আর এক হাজার আনছে।
কবে? ঠাকুর অবাক।
ওই দিন সাঁঝে।
জানিনি তো।
তুমি এক হাজার মারিছ?
কে কহে?
জাহাজবাবু, এত টঙ্কা দেয় কেনে গো?
ঠাকুর বলল, আছে তাই।
কত আছে?
অনেক, সোনায় মুড়িয়ে দিতে পারে মেয়্যারে।
কেনে দিবে মেয়্যারে?
কাজ করছে তো, দিল আছে বাবুর।
কাজ তো ঝিগিরি, উয়ার জন্যি এত দিল কেনে গো?
দেওয়াও দোষ! বিরক্ত হয় ঠাকুর।
সরস্বতী বলে, ডর লাগে যে।
কেনে, ডর কীসের?
এত টঙ্কা, তুমি মেয়্যাটারে দিয়ে এলে তো হাজার টঙ্কা মারলে, তুমি কী কাম করলে যে অত টঙ্কা পাবে?
পঞ্চম বলল, দিল ভালোবেসে।
কীসের ভালোবাসা?
বিরক্ত হয় পঞ্চম ঠাকুর, জানিনে যা, এত যদি কথা তো মেয়েরে রাস্তায় রেখে দিতে পারতিস, পাঠালি কেনে?
তুমি যে পাঠালে।
মেয়্যা কি আমার যে আমি পাঠাব? ঝপ করে উঠে দাঁড়ায় পঞ্চম ঠাকুর, আমি পাঠাইনি, মোর নামে ইসব কহিবেনি, মু কেনে পাঠাব, মোর কেডা কুন্তি?
তুমি যদি না পাঠাও তুমি হাজার টঙ্কা নিলে কেনে?
নিয়েছি কে কহিছে?
সায়েববাবু, কুন্তির বাবু।
ঝুটা সব, মু কুছু পাই নাই, মু যাই।
না, যাবেনি। সরস্বতী আচমকা এগিয়ে এসে পঞ্চম ঠাকুরের সামনে দাঁড়ালে ঠাকুর বসে পড়ে আবার। সরস্বতী বলে, মেয়্যাটারে দেখা যাবেনি?
দু-তিন দিন হইছে মাত্তর। ঢোক গেলে পঞ্চম ঠাকুর।
তিন দিন, মেয়্যা নাকি ঘুমায় শুধু?
কী করে জানব?
তুমি জানো ঠাকুরমশায়, ওটা মোর পেটে ধরা, ওটাই বাঁচি আছে।
ঠাকুর বলল, তুমি চুপ করো, অন্তা আসুক।
কী হঁইছে ঠাকুর কহ দেখি?
কী হবে?
সকালে কী কামে এলে ঠাকুর?
ঠাকুর চুপ করে থাকে। সরস্বতী তার সামনে দাঁড়িয়ে। ঠাকুর মাথা নামিয়ে আবার একটা বিড়ি ধরায়। অনন্ত এলো। অনন্ত আসতেই ঠাকুর ধড়ে প্রাণ পায়, উঠে বলে, চ, চ, তাড়াতাড়ি চ।
যাবে তো, কিন্তু মোর কথাটার জবাব কী হলো?
কী কথা? অনন্ত তার বউকে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে।
অত টঙ্কা দিবে কেনে?
কে দিবে? অনন্ত আরও অবাক।
জাহাজবাবু, টঙ্কা থাকলেই দেয় নাকি?
অনন্ত বলল, দেয়, এমনি দেয়।
না, এমনি দেয় না। সরস্বতী আচমকা মাটিতে বসে ফুঁপিয়ে ওঠে, মেয়্যাটারে কতদিন দেখিনাই গো, তিনজনায় দীঘায় গেলাম, দুজন ঘুরি এলাম, মেয়্যাটা এলোনি।
আহ্! অনন্ত বিরক্ত হয়, কামে দিলি কেনে, তিন দিন গেছে, কানছিস কেনে?
ভালো খাচ্ছে, পরছে। ঠাকুর বলতে বলতে থেমে যায়, বিড়বিড় করে, এমন তো দেখিনি, আগে বললে নিয়ে যেতাম না, টঙ্কা নিলে কেনে?
অনন্ত ঘরে ঢুকে জামা এনে পিঠে ফেলে ঠাকুরকে তাড়া দেয়, চলো।
সরস্বতী বলল, মু যাব।
কেনে? অনন্তর দুই ভ্রু কুঞ্চিত, মুখে বিরক্তির চিহ্ন।
মেয়্যারে লিয়ে আসব।
কেনে?
মেয়্যারে লিয়ে ডর লাগে, কাম দরকারনি।
ভাত দিবে কে? অনন্ত গর্জে ওঠে।
মা বেটি ভাত জুগাড় করে লিব।
থাম থাম, অনেক হয়েছে, লাটের বেটি, কোন মেয়্যাটা কাজ করে না, ভালো বাবু পেয়েছে ওর কপাল ভালো।
না আমি যাব। সরস্বতী আটকাতে চায় দুজনকে।
অনন্ত বলল, কী করিস সরস্বতী, মেয়্যাটা ভালো আছে, মু দেখে এলাম, সাথে ভানুবাবু ছিল, তারে জিগাস।
তুমি যে বললে দেখা হয় নাই।
কে বলল?
তুমি তো কহিছ, সাঁঝবেলায় ঘুমাই ছিল।
ছিল, তাতে কী হলো? অনন্ত এগিয়ে যায় পঞ্চম ঠাকুরের সাইকেলের পিছনে পিছনে। সরস্বতী থমথমে পাথর। পঞ্চম ঠাকুরের সাইকেলের রডে অনন্ত। ঠাকুর সাইকেল চালিয়ে দিল। একটু গিয়ে নামল। এবার সাইকেল ঠেলে তুলছে ভেড়িবাঁধের ওপর। ক্রমশ কালো ফুটকি হয়ে যাচ্ছে দুজনে। সরস্বতী শক্ত হয়ে যাচ্ছিল। ভয়টা যে কেন ধরল? কাল রাত কেন, আজ সকালেও তো সে নিরুদ্বেগেই ঘর থেকে বেরিয়ে উঠোনে দাঁড়িয়ে ছিল। আকাশ দেখছিল, ভেড়িবাঁধ দেখছিল, দূরের ঝাউবন দেখছিল। তারপর ভেড়িবাঁধ থেকে শয়তানের মতো নেমে এলো পঞ্চম ঠাকুর। এত সকালে ঠাকুর কেন? হোটেলে গেলে দূর দূর করে যে লোক তাড়ায়, মুখে অশ্রাব্য ভাষা ছোটায়, সে লোক কোন ধান্ধায় আসে তা কি আন্দাজ করা যায় না? কেন এত মধুর হলো পঞ্চম ঠাকুর? কেন পনেরো দিনের কাজের লোককে অত টাকা দেয়? কাজের মেয়ে সন্ধেবেলায় ঘুমোয় কেন? তার বাপ তার মুখটিও দেখতে পায় না কেন? সব চিন্তা আজ একটু আগে এই উঠোনে পঞ্চম ঠাকুরকে দেখেই মনের ভিতরে ভেসে উঠেছে। আশঙ্কা হোক, চিন্তা, উদ্বেগ হোক তা ডুবে ছিল মাথার অন্ধকারে, আচমকা ভেসে উঠতে সরস্বতী দিশেহারা। পঞ্চম ঠাকুর না এলে এসব মনেই হতো না। কী যে করে এখন সরস্বতী, চারটে গিয়ে একটা আছে, তাই বড় ভয়। যে চারটে গেছে তারা যদি টানে? কী সব্বোনাশ! সরস্বতী দীঘায় যাওয়া মনস্থ করে।
তখন দীঘার রাস্তায় ভেড়িবাঁধ থেকে নামল দুজন। পঞ্চম ঠাকুর বলল, মোর ছোট শালিটো কলকাতায় কাজ করে মন্ত্রীর ঘরে।
তার মানে?
মন্ত্রীর কাজ পছন্দ হয়েছিল, যাওয়ার সময় লিয়ে গেল।
অনন্ত চুপ করে আছে। তার ভিতরে কেমন যেন অন্ধকার ছায়া ফেলছে।
ঠাকুর বলল, রানির মতন রাখি দিইছে, তিন ভরি গয়না গড়াইছে শেলু; কাপড়চোপড় কত, কথা আছে বিয়ার আগে লিয়ে আসব, শেলুর বাবু কহিছে উকে ছাড়বেনি, উয়ার সোয়ামিকেও কাজ দিবে কলকাতায়। সেবার এলো, পাঁচ হাজার টঙ্কা দিয়ে গেল ওর মার হাতে, মাসে মাসে তো সাতশ টঙ্কা মনিঅর্ডারে পাঠায়, তবে বোঝো।
হুঁ। অনন্ত হাঁটছিল। ঠাকুরের পাশাপাশি। পুরনো দীঘার বাজার এলাকায় ভিড় খুব! পরপর বাস এসে ঢুকছে। তেমন লোক না থাকলেও বাস তো ঢুকবেই। বাজারও বসে গেছে রাস্তায়। ঠাকুরের কথা শুনতে শুনতে অনন্তর ভিতরে উদ্বেগ জন্মাচ্ছে। কাফেটোরিয়া ছাড়িয়ে এসে ঠাকুর আবার তাকে সাইকেলে ডাকতে সে বলল, হুটেলে যাবানি, ও ঠাকুরমশায়?
ঠাকুর হাসে, মদনানি সায়েবের কাছে যাব।
কেনে?
উনি তো ডাকছেন তোরে।
তুমি যে বললে কাম আছে নোতন।
তো কী বলব, তোর বউ যেরকম ছিন মারতি লাগল।
মদনানি সায়েবের নিকট কেনে, কুন্তির কুছু—! কথা শেষ করতে পারে না অনন্ত, গলা বুজে যায়।
মাথা নাড়তে নাড়তে ঠাকুর তাকে টানে সাইকেলে, তা’লে কি আমি হাসতি পারতাম, কুছু না, সায়েব এমনিই ডাকে, কী যেন কহিবে তুরে।
আরও একটু বাদে, নতুন দীঘার কাছে, সেই গেস্ট হাউসের কয়েক কদম আগে ঠাকুর সাইকেল থেকে নেমে অনন্তকে বলল, শুন, মেয়্যাটারে উনি লিয়ে যেতে চান, তোরা কীরকম কী চাস তা শুনতি চান।
তার মানে? অনন্তর গা কেঁপে ওঠে।
মানে এত বুঝাতি হবে কেনে, ওর কাজ সায়েবের পছন্দ হইছে, সায়েব তো শুধু ঘুরে বেড়ায়, মেয়্যাটারে সঙ্গে লিবে।
তার মানে মেয়্যা দীঘায় থাকবেনি?
কী করে থাকবে?
সায়েব লিয়ে যাবে?
যাবে।
জাহাজে?
হাঁ, তা কহিতে পারিস, জলের জাহাজ, উড়াজাহাজ, সব জাহাজেই লিবে।
মানে কি সাহেব ঘুম পাড়াই রাখবে?
কীসব কহিস?
মরি যাব রে ঠাকুরমশায়।
হাসল ঠাকুর, নগদ পনেরো হাজার দিবে, আর মাস মাইনে যা জমবে তা এই সময় এসে দিয়ে যাবে, তোর আর তোর মেয়ের কপাল তো খুলে গেল।
পনেরো হাজার!
হাঁ।
অত দিবে কেনে?
মেয়্যাটারে পসন্দ হইছে, বুড়া সায়েব, মনে ধরিছে সায়েবের, দেখিস কীরকম বিয়া হয় উয়ার, হিল্লে হই গেল, শুন অনন্ত…। পঞ্চম ঠাকুর বোঝাতে থাকে নুনমারা অনন্ত সারকে।