1 of 2

অশ্বচরিত – ৪৪

চুয়াল্লিশ

ভানু জিজ্ঞেস করে, এ রোগ কতদিনের?

নগেন গিরি হাসলেন, একে কি রোগ কহিবে তুমি, রোগ কয় ইহারে? আঁজ্ঞে তাই তো জানি।

সে রোগ ইটি নয়, ইটি হলো গুপ্ত স্বভাব, আদিকাল থেকে মানুষ তার ভিতরে বহন করি চলিছে, ই স্বভাব কারও জাগে, কারও জাগেনি, আবার যার জাগে সে জাগায় আরও অনেকজনের ভিতরে, চাদ্দিকে ইমন ঢেউ উঠি যায় কখনো কখনো যে মানুষ ভালোমন্দ জ্ঞান হারাই ফেলে ই স্বভাবে পড়ে, আসলে ই স্বভাব ঘুমায়ে থাকে, যখন জাগে সাপের ঘুম ভাঙার মতো করে জাগে।

দুটি নীল মশারির ভিতরে দুজনে বসে আছে। ঘরে নীল আলো। সন্ধে থেকে নগেন গিরি বিষণ্ন হয়ে আছেন। এখন কত রাত ভানু জানে না, তবে শুক্লপক্ষের তৃতীয়ার চাঁদ পূর্ব দিগন্ত থেকে কয়েক হাত ওপরে উঠে এসেছে, ভানু বাইরে থেকে দেখে এলো তা একটু আগে। শীর্ণকায় হলুদ চাঁদটি আকাশ পৃথিবীকে যেন বহু সহস্র বৎসর পিছিয়ে নিয়ে গেছে, ভানুর তা মনে হয়েছে। কত যুগ, কত সহস্র বছর আগের নদীতীরে, তৃণভূমিতে ছুটে গেছে মাইতিবাবুর ঘোড়া! সেই পৃথিবীতেও তো এই চাঁদ উঠেছে এখন, সেই কৃষ্ণসাগর, কিংবা কাস্পিয়ান সাগরের কূলে, উরাল হ্রদের তীরে, আমুদরিয়া, সিরদরিয়া নদীর ধারে।

নগেন গিরি বললেন, তুমি কি ইতিহাস জানো ভানুবাবু?

ভানু মাথা নাড়ে, না আঁজ্ঞে, কিছুই জানিনে, ছিলাম জুট মিলের লেবারার, মিল বন্ধ, এসে পড়লাম দীঘা, ঘোড়াটার মায়ায় পড়ে গেলাম।

নগেন গিরি বললেন, ই বড় সব্বোনেশে খেলা, যে খেলায় ঢুকি পড়ছে সবাই, ঘুড়ীটার কি দোষ ছিল? ছিলনি, অবোধ জীব, তারে বিষ দিল মোর উপর শোধ নিতে, কেনে কহ দেখি?

ভানু মাথা নাড়ে, কী বলি বলুন?

একদিন কথায় কথায়, মোর সহিত সতীশের ঝগড়া লাগল, বাপ-বেটার ঝগড়া, আমি যত কহি মাথা ঠাণ্ডা করে ভাবা দরকার, ঘোড়ার ডানা হয় না, কোনোকালে ছিল না, সবটাই কল্পনা, তো সে কহে ছিল, ডানা ছিলই, একুশ বছরের বেটা যদি কহে গোড়ার ডানা ফোটে, ঘোড়া উড়ে যায় তো মেজাজ কি ভালো থাকে? যদি কহে যুদ্ধ না হিলা উপায় নাই, যুদ্ধ চাই-ই চাই, এতকাল বাদে একটা যুদ্ধের বাতাস উঠিছে, তবে কার মন ভালো থাকে? যদি বলে মানুষ মারা দরকার, মরণ চাই…!

কেন বলে, ও তো আপনারই বেটা?

শুধু কি সতীশ কহে, কত লক কহে।

সত্যি বলছেন?

সত্যিই তো, খুঁজ নাও, সবাই কহিবে যুদ্ধ লাগুক, যুদ্ধর কোনো বিকল্প নাই, ঘোড়ার ডানার কথা না কহে তো উরকম আর কিছু কহিবে, তা ছেল্যাটাকে সেদিন খুব ধমকাইছি ও রাগে ফোঁস ফোঁস করতি করতি চলি যায়, পরদিন দেখি ঘুড়ীটা মরে পড়ে আছে আস্তাবলে, কহে কিনা যুদ্ধ শুরু হিলা, যুদ্ধ লাগল, যুদ্ধে ঘুড়ীটা মরিছে।

ভানু বলে, এখন কী উপায়?

উপায় নাই, কেহ যদি কহে অশ্বর ডানা ফুটে, তো ফুটবে, কী করা যাবে।

তাতে ঘুড়ীটা মরবে?

মরবে, উপায় নাই।

ভানু বিড়বিড় করে, ঘুড়ীটার সাথে কন্থকের ভালোবাসা হয়েছিল।

তা তো জানি।

ভানুর মনে পড়ে চোদ্দবেড়িয়ার চরে ঘুড়ীটাকে নিয়ে আলাদা হয়ে গেছে ঘোড়াটা। চোদ্দবেড়িয়া কেন, যেন আমুদরিয়া নদীর কূলে, কৃষ্ণসাগরের তীরে, কাস্পিয়ান সাগরের কূলে নির্জনে কূজন করেছে দুইজনে। ভালোবাসিয়াছে। কত যুগের ভালোবাসা ছিল! কত জন্মের, জন্মান্তরের সেই ভালোবাসা থেকে জন্ম নিল কত সব তেজীয়ান ঘোড়া, কী রোষ তাদের, কী দাপট! আকাশে দুপা তুলে উঠে যেতে চায় যেন, উড়ে যেতে চায় যেন। আহা রে, গিরিমশায়ের মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছে না। ভাবতে তো ভালোই লাগে ঘোড়ার দুটি ডানার কথা, সেই ডানা মেলে পক্ষিরাজ ওড়ে তা ভাবতে ভাবতে ঘুম এসে যায় যেন। এক লহমায় পক্ষিরাজ পৌঁছে যায় সাগর থেকে পাহাড়ে, পাহাড় থেকে মরুভূমিতে। কিন্তু এ তো শুধুই স্বপ্ন, একে সত্যি ভাবলেই সব্বোনাশ। তাই ভেবে বসে আছে সতীশ

নগেন গিরি বললেন, ঘুড়ীটার মৃত্যুর খবর কাউকে তুমি কহ না।

আপনার বেটাই বলে দেবে।

নগেন গিরি বললেন, ওর কথা কেউ বিশ্বাস করে না।

তবে আপনার চিন্তা কী?

মাথায় যে যুদ্ধ, বোমা, রোষ ঢুকি গিইছে, কুথায় কী করে বসে, থাক ওসব, তুমি ইবার শুয়ে পড়ো ভানুবাবু, ভোরে উঠতি হবে।

ভানু শুয়েছে, পাশের মশারিতে গিরিমশায়ও। ভানুর ঘুম আসে না। সে ভাবছিল ঘুড়ীটা কি জানতে পেরেছিল কন্থক পালিয়েছে? যদি জানতে পারত তবে ঘুড়ীটাও কি ঘরে থাকত? পালাত। ওরা যে সেই আমুদরিয়া নদীর তীর থেকে পালাচ্ছে, কৃষ্ণসাগরের রাত্রি থেকে পালাচ্ছে।

চিত হয়ে শুয়ে নগেন গিরি বললেন, ঘুড়ীটা খুব পেয়ারের ছিল, মুর ইখনও বিশ্বাস হয় না বিষ দিয়া উভাবে মারি ফেলবে, রাতে যদি সাড়াও দিত, তাহলে বাঁচি যেত, পশুর ডাক্তার আছে ই গাঁয়ে।

নিঃশব্দে মরেছিল?

হাঁ, একেবারে নিঃসাড়ে, ভোরে মু উঠে গিয়ে দেখি শুয়ে আছে চোখ উলটে, সেদিন সতীশ বেলা নটা পর্যন্ত ঘুমায়, জন্তুটারে মারি দিয়া, সব কাজ শেষ করি তবে শেষরাতি উ ঘুমাতি গিইছিল, ইবারে, ই আশ্বিনে ঘুড়ীটা ফির পেটে বীজ লিত তুমার অশ্বর।

তাই ঠিক করছিলেন?

হাঁ, প্রেমের সন্তান জানো, উ সন্তান ভালো হয়।

ভানুর চোখ ছলছল করে ওঠে আপনাআপনি, বলল না কিছুই। এতক্ষণে গিরিমশায় উজাড় করে দিলেন নিজেকে। ঘরের বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। ভানু চিত হয়ে শুয়ে থাকে। চোখের পাতা জোড়ে না। শুয়ে শুয়েই টের পায় ঘুমোননি গিরিমশায়ও। ভানু চোখ বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়তে চাইছিল, ঘুম আসছিল না। তার চোখের সামনে শীর্ণকায় সতীশ গিরির ভাঙাচোরা মুখখানি ভেসে উঠছিল বারবার। চোখদুটিতে আগুন। ও যেন মানুষের চোখ নয়, বাঘের।

গিরিমশায় ডাকলেন, ঘুমাইছ ভানুবাবু?

নাহ্! দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভানু।

মোর ডর লাগে, যদি ঘোটনের ওই কপাল হয়?

ঘোটন তো ওর নিজের ঘোড়া।

হলে কী হবে, ওর কোনো হিসাব নাই, যা ইচ্ছে করতি পারে, যখন যিটা করবে, সিটার পিছনে যুক্তি খাড়া করি দিবে।

না, না তা হবে না, মায়া জন্মাবে না ঘোটনের ওপর?

মায়া! হাসলেন গিরিমশায়, দয়ামায়া থাকলি অবোধ জীবটারে বিষ দিয়া মারতি পারে, আহা! ইমন বিষ আনিছিলা, ছটফট করতি করতি মরি গিলা ঘুড়ীটা, কিন্তু ডাক শুনিনি কেনে ওইটা অবাক হওয়ার।

ভানু বলল, এর কোনো বিহিত করা যায় না?

কী করে?

এর বিপক্ষে কেউ দাঁড়ায় না?

কে দাঁড়ায়, ঢেউ উঠিছে ভানুবাবু, ইতিহাস যদি জানতে তুমি, টের পেতে কী হইছিলা একদিন, এ তো ঘুড়ী মরিছে, দাঙ্গায় মানুষ কি কম মরিছে, আবার মানুষ মারার ইঙ্গিত হিলা ঘুড়টিার মরণ, কতখানি রোষ, কতখানি হিংসা মাথার ভিতরে ঢুকি গিঁইছে কহ দেখি, দিনা দিনা তা আরও বাড়বে ভানুবাবু, যত অভাব তত হিংসা, অভাবী মানুষের ভিতর হিংসা জাগানোর খেলা চলিছে।

আপনার বেটার তো অভাব নেই।

হিংসা তো আছে মনে, মানুষের মনে ঘুমাই থাকে হিংসা, তা জাগি উঠিছে সব দিকে, ওর ভিতরেও জাগিছে, শয়তান দখল করি নিবে সব, খুব বিপদ দেখি সমুখে, ক’বছর ধরি কী চলিছে কহ দেখি।

ভানু বলল, আমার ঘোড়াটাকে পাওয়া যাবে না তাহলে?

ইতদিন হই গিলা!

এতদিন হয়ে গেল বলে ফিরবে না?

মনে হয় তো।

আমিও তো কতদিন ঘর ছাড়া, আমি কি ফিরব না?

চমকে ওঠেন গিরিমশায়, তুমার বিষয়ে কুছুই তো জানা নাই।

ভানু নিশ্চুপ। ভানুর মনে পড়েছিল ফুলরানির কোলের শিশুটির কথা। মুখখানি ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে মন থেকে। ফুলরানির মুখখানা কেমন তাও যেন ভুলে যাচ্ছে সে। কন্থক কি এইভাবে ভুলে যাবে এই সমুদ্রতীর, হোটেল, সমুদ্রপাখি, তার বন্ধু ভানু দাস, মালিক শ্রীপতি মাইতিকে? সে কি ভুলে গেছে ঘুড়ীটার কথাও? ফিরে গেছে আদিম যূথে? পূর্বজন্ম, পিতৃ-পিতামহের জন্ম, নদীতীর ধরে উৎসে পৌছে গেল নাকি পক্ষিরাজ? হতাশ ভানু দীর্ঘশ্বাস ফেলল, তাহলে আর কেন খুঁজি?

না খুঁজেই বা করবে কী?

ভানু বিড়বিড় করে, ভোজপুরে চলে যাই।

ভোজপুর, আরা জিলা?

হ্যাঁ। ভানু চোখ বুজে ফুলরানির ঢলোঢলো মুখখানি মনে করতে চাইছিল। ফুলরানি, তার বাবা-মা, কোলে ধরা চাঁদটিকে। খোকার নাম দিয়েছিল বুড়ো শ্বশুর। কী নাম? তার ইষ্টদেবতার নাম। ইষ্টদেবতা গোবিন্দ। দাদামশায় বলত গোবিন্দ, দিদিমা বলত গোপাল। তারপর! কেমনভাবে হাসত সেই সোনার চাঁদ, কেমনভাবে? আকাশের চাঁদ ডাকত কেমনভাবে? ভানু মনে করতে চাইছিল। এসব তার পূর্বজন্মের কথা মনে হয়। অনেক দূরের কথা।

গিরিমশায় ডাকলেন, ঘুমালে নাকি, আরা জিলা তো ভীষণ জায়গা! সেখেনে কী?

হ্যাঁ, তা বটে। ভানু বিড়বিড় করে, সেখেনে পরিবার রয়েছে।

তুমার ডর লাগেনি?

ভানু বলল, ডর করে কী করব?

কত দিন যাওনি?

অনেক দিন, অনেক বছর, আরা জিলায় আমি কোনোকালে যাইনি।

গিরিমশায় বিস্মিত হয়ে উঠে বসলেন। ভানু দেখছে বিস্মিত গিরিমশায়ের স্ফীত চোখদুটি তার দিকে চেয়ে স্থির। কিছুই বুঝতে না পেরে বিব্রত হয়ে পড়েছেন তিনি। ভোজপুর যায়নি ভানু তো ভোজপুরে তার পরিবার গেল কী করে? এই কথাটির জবাব কি ভানু দাস দেবে? ভানু দিল না। মৌন হয়ে থাকল। তার মৌনতায় বিষাদ না বিপন্নতা আছে তা অনুধাবন না করতে পেরে নিশ্চুপ বসে আছেন গিরিমশায়। অনেকক্ষণ বাদে ভানু বলল, ও জায়গায় প্রায়ই মানুষ মরে, ধান কাটার আগে, ধান বোনার সময়।

হ্যাঁ, আকাশে মেঘ উঠলিই হয়।

ভানু বলল, এর কোনো বিহিত নেই?

না নেই, কত সব নাম রহিছে, বাথানিয়াটোলা, জাহানাবাদ, লছমনপুর বাথে কত নাম, মানুষ মারার জন্য উসব জায়গার নাম ছড়াই পড়িছে।

হ্যাঁ, কিন্তু আমি তো ও দেশে যাইনি কখনো, কী করে চিনব?

যদি চিনতি চাও, অসুবিধে হবেনি।

ওদিকে কি পক্ষিরাজ যেতে পারে? সি তো ঘোড়াটা জানে।

আপনি কী অনুমান করেন?

দীর্ঘশ্বাস ফেলেন গিরিমশায়, এক এক জায়গায় এক এক রকমে মানুষ মারার বেবস্থা, মানুষের মনে হিংসা বাড়ি যাচ্ছে, কী মনে হয় তুমার?

ভানু বলল, মানুষ তো এমনই, জন্তুর মতন প্রায়।

তুমি কি সেই রকম, মু কি সেই রকম? কহ দেখি।

তা না হোক, এই যে ঘুড়ীটা মরল, এই যে মারণ বোমা ফাটানো হলো, ও তো মানুষ মারার কল, জন্তুতে ক্ষুধায় জন্তু মারে, মানুষ ফুর্তির জন্য মারে।

গিরিমশায় শুয়ে পড়েছেন। ভানুও চোখ বুজেছে। ধীরে ধীরে ঘুম এসে যায় দুজনের চোখে। ভোর হতে হতে ঘুমটি ভেঙে যায় ভানুর। বাইরে সবে আলো ফুটছে তখন। পায়ের দিকের জানালায় আবছা আলোয় ফুটে ওঠা পৃথিবী। সে চট করে উঠে বসল, আর না, দীঘায় ফিরতে হবে, খুব বিশৃঙ্খল হয়ে গেছে মন। সে মশারি তুলে বেরিয়ে এলো, কপাট খুলে বারান্দায়। বারান্দা থেকে উঠোনে নেমে দেখল অদ্ভুত দৃশ্য। সতীশ গিরি উঠোনে দুটো ইট রেখে ডন দিচ্ছে। ফোঁস ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলছে শীর্ণকায় মানুষটি আবছা আলো-আঁধারে। তাকে দেখে দাঁড়াল, হাসল, শরীরই আসল, বডিই সব।

ভানু কিছু বলে না, হাসি চাপল।

শরীরচর্চা করি দেশমাতার চরণে নিবেদন করতি হবে নিজেকে।

কে বলেছে? ভানু টিউবওয়েলের দিকে যেতে যেতে বলে।

কে আবার কহিবে, তুমি দেখছি নগেন গিরি মতন।

ভানু টিউবওয়েলের জলে মুখ ধুয়ে ফিরে এলো। আলো আরও ফুটে গেল। উদার হয়ে যাচ্ছে প্রকৃতি। সতীশ গিরির সমস্ত দেহ ঘর্মাক্ত। গামছা দিয়ে গা মুছছে সে, বলল, তুমি ইসব বিশ্বাস করোনি?

করি, তবে এর ফলে যদি অবোধ প্রাণী মারতে হয়, তবে তো সব্বোনাশ।

কে অবোধ সতীশ গিরি রুখে এলো, ইটা প্রতীকী, এইটি বুঝ?

মাথা নাড়ে ভানু, বলল, মায়া হলো না তোমার, তুমি না নগেন গিরির বেটা, তুমি না নগেন গিরিমশায়ের বাপের নাতি।

সতীশ বলল, নগেন গিরিরে একটু সমঝানো দরকার ছিল, তারপর চুপ মারি গিইছে, যেমন কিনা অযোধ্যা কাণ্ডা হিলা, তারপর উয়ারা ঠাণ্ডা, অযোধ্যা কাণ্ডর মতনই ইটা প্রতীকী কহিতে পারো।

ভানু আর কথা বাড়ায় না, বলল আমি যাব, গিরিমশায়কে বলে দিয়ো।

দাঁড়াও, মু তুমারে আগায়ে দিয়ে আসি।

দরকার হবে না একা পারব।

না মোর সাথে চলো, বাসে তুলে দিব আমি।

কেন? ভানুর ভ্রু ভাঁজ হয়ে গেল, অদ্ভুত তো, তুমি বাসে তুলবে কেন?

তুমি কুথায় যাচ্ছ সত্যি করে জানা দরকার।

কেন, জেনে কী হবে?

তুমি লকটা কী উদ্দেশ্যে আসছ জানিনি, অশ্ব তো খরিদ করলেনি, উ জন্য আসো নাই, তুমি কার পক্ষে বুঝা দরকার।

কার পক্ষে মানে?

বাবার পক্ষে না মোর পক্ষে, বাবার পক্ষের লক তুমি, কিন্তু তুমারে মোর পক্ষে আসতিই হিবে, শালা মোরা কী কাণ্ড করছি জানোনি, বোমা ফাটানো হিলা, আরও কত কী হিবে, দেহচর্চা হচ্ছে, ঘুড়ীটারে মারা হিলা, আগে অযোধ্যা কাণ্ড হিলা… 1 বলতে বলতে পেট চেপে বসে পড়ে সতীশ গিরি, গ্যাসের ব্যথা, একঘটি পানি লিয়ে আসো ভানুবাবু।

দুটি চোখ স্ফীত হয়ে বেরিয়ে পড়েছে প্রায়। জিভ বেরিয়ে পড়েছে সতীশের।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *