বারো
বালিমুণ্ডায় নেমে ছ’মাইল হেঁটে ভীমাপুর, ভীমাপুরেই বাবুর চাষবাড়ি। ভীমাপুর কে চেনে, সবাই বলে, বাবুও বলে বালিমুণ্ডা। ভানু পুরোটা পথ ঘুমিয়েছে। বাস থেকে নেমে বিষ্ণুকে বলল, তোর কোনো চিন্তা নাই, চিন্তা করব আমি।
হাঁটা পথ সি-ডাইক ধরে। সি-ডাইক থেকে সবসময় সমুদ্র দেখা যায় না, আবার দেখাও যায় কখনো কখনো। ভানুর বেশ লাগে। বেলা দুপুর। আকাশে ঘন মেঘ। বালিমুণ্ডা বাজারে ভাত, ডাল, পোস্ত-আলু খেয়ে নিয়েছে দুজনে। সব টাকা বাবু শ্রীপতি মাইতির।
যেতে যেতে বিষ্ণু বলল, এতদূর কি অশ্ব আসিবে?
না আসিবে তো না আসিবে, শূন্যপৃষ্ঠ অশ্ব, কোথায় যায় কে জানে!
তবে যে আপুনি এলা?
এলা তো এলা। ভানু হে হে করে হাসে, বলে, ওদিকে এখনও বিষ্টি নামেনি, ট্যুরিস্টও নাই তেমন, কোকিলা বধূর মায়ায় পড়েছে বাবু, পড়ুক, আমি কদিন বালিমুণ্ডা দেখে যাই, এই একটা সুযোগ, অশ্বও তো ঘুরছে।
বিষ্ণু বলল, কিন্তু মোর জমিন কী হিবে?
হিবে রে হিবে। ভানু হাসে, সব হবে, না হবে তো আমি এলাম কেন, বাবুর সঙ্গে তোর সব বাতচিত আমি শুনেছি, শুনে মনে হলো তোর উপগার করতে যদি পারি মোর ভালো হয়।
কী কহিলা?
কেন বুঝতে পারছিসনে?
হাঁ, বুঝিবার না পারি, কহো ফের।
ভানু হাসে, না আর শুনতে হবে না।
বিষ্ণু বলল, জমিন দিবে তো দিবে, এক-দুসন চাষ চলিবে, উহার পর তো আর জমিন রহিবে না।
কেন?
গরমেন লিয়া লিবে।
কী নেবে?
জমিন, ভীমাপুর বাকি রহিছে, গাঙ থিকে আসিছে ভীমাপুরের দিকে, মিলিটারির জন্য গরমেন লিচ্ছে।
বাবু জানে?
জানে।
কই বাবু তো কিছু বলে না।
কী কহিবে, বাবুর কী, টঙ্কা লিবে জমিন দিবে, মোরা তো চাষা, মোদের কী হিবে জগন্নাথো জানে।
ভানু অবাক। এ কেমন ব্যাপার?
লোকটা তো সমস্ত পথে এই সব কথা একটাও বলেনি। দীঘাতে বসেও বলেনি; সন্ধেবেলায় অত যে গাঁজাটানা হলো সমুদ্রের ধারে বসে, লোকটা তো কিছুই বলেনি। এখন যা বলছে তাতে তো ভীমাপুর গেল বলে। মৌজার পর মৌজা নাকি ‘গরমেন’ মিলিটারির জন্য নিয়ে নিচ্ছে। এ খবর তো সবাই জানে, ভানু জানে না?
ভানু বলল, তাহলে কেন এলাম, এদিকে কি কন্তুক আসবে?
এলা মোর জমিন ঠিক করি দিতা।
জমিন! ফুহ্! যদি গরমেন লিয়ে লেয়, জমিন পাবি কোথায়?
বিষ্ণু পাতর বলল, গরমেন তো টঙ্কা দিবে।
টঙ্কা তো মালিক পাবে।
পাঁচ বছর যদি জমিনে চাষা হাল দিয়া থাকে, সেও কুছু পাবে।
পাঁচ বছর আছিস?
পাঁচ পুরুষা আছি বাবু।
তবে তো গরমেনের টঙ্কা পাবি।
মাথা নাড়ে বিষ্ণু, এক জমিনে হিবে তবে তো পাব!
এক জমিন!
হাঁ, না হলে কোন জমিন লিখিবে মোর নামে?
এতক্ষণে ভানুর মাথায় যেন ঢুকছে সবটা। বিষ্ণু পাতর যে এত হাঁকপাক করছে ওই জমির জন্য, তার কারণও ওইটা। এখেনে তো বছর বছর চাষা বদলানো হয় জমির, যাতে চাষা না বলতে পারে কোন জমি সে বছরের পর বছর চষছে। আর বাবুও তো সেই কারণে চাষা বদল করে যাতে চাষার চাষের অধিকার না জন্মায় কোনো বিশেষ জমিতে। এখন সরকার জমি অধিগ্রহণ করলে কী হবে? বাবু তো মালিক হয়ে সব টাকা নিয়ে ঘরে উঠবে, চাষি কী পাবে?
ভীমাপুর যেতে যেতে সাগর পিছনে থাকল। আকাশে আঙুল তুলে বিষ্ণু পাতর পশ্চিমে দেখিয়ে বলল, ওদিকে দে-পাল, মহাপাত্র নগর, কুসমাড়। সব নিয়ে নিয়েছে সরকার। ধান জমি, বাস্তু জমি, ডোবা, পুকুর কিছুই বাদ যায়নি, এক ছটাকও না। টাকার জন্য ভুবনেশ্বর ছুটতে হচ্ছে সবাইকে। কী ধুন্ধুমার হচ্ছে! এর টাকা ও তুলে নিচ্ছে।
ভানুর কাছে এ ব্যাপার একদম নতুন। সে আকাশ দেখতে পেল সি-ডাইক থেকে, ঝাউবন, ঘন কেয়াবনের আড়াল থেকে গ্রামগুলো দেখা যায় না। বিষ্ণু পাতর বলছে, সার্ভেয়ার আসিবে উহাকে টঙ্কা দিলে তবে নাম তুলিবে।
বাবুর নাম?
বাবুর তো নাম রহিছে সরকারি খাতায়, বাবু তো মালিক, কিন্তু চাষার তো নাম নি, চাষার নাম লিয়া তো যত ধুন্ধুমারি।
হুম! ভানু বিজ্ঞের মতো হাঁটে। হাঁটতে হাঁটতে মনে পড়ে, জিজ্ঞেস করে, ঘোড়া কি দ্যাখোনি, রাজার মতো চলন তার, মুখখানিতে দুঃখী-দুঃখী ভাব।
বাবুর অশ্ব তো?
হাঁ, আগে দ্যাখো নাই?
মাথা নাড়ে বিষ্ণু, নাহ্!
এদিকে আসবে নাকি বলো?
কুছুতেই না, এত দূরে এলা কি চখে পড়তনি?
তবে কেন এলাম? নিজেকে প্রশ্ন করেই নিজেই তার উত্তর দেয় ভানু, এমনি এলাম!
মোর কথা তবে রামচন্দরকে কহি যাও।
ভীমাপুরে চাষ জমি শুধু। গাঁয়ের উত্তর-পুব দিকটায় বসতি। বসতির লোক মানে হতদরিদ্র, চোখে তাকানো যায় না। আট-ন বছরের ছেলেমেয়ের কোমরেও কিছু নেই এমন। ডাগর মেয়েমানুষ, বউ-ঝিরা কোনো রকমে গা ঢেকে আছে, হয় ঝোপের আড়ালে, না হয় ভিটের আড়ালে। তাদের সবসময় সতর্ক থাকতে হয় কখন ভিনদেশি পুরুষ ঢুকে পড়ে গাঁয়ে, কখন অচেনা পুরুষের সামনে প্রায় আব্রুহীন হয়ে পড়ে যেতে হয়। মাথা নামিয়ে পথটা হেঁটে গ্রামের সীমানায় এসে বাবুর কাছারি ঘর পেল ভানু। তাকে পথ দেখিয়ে দেখিয়ে নিয়ে এসেছে বিষ্ণু পাতর।
কাছারিবাড়িটি পাকা, মাথায় অ্যাসবেস্টসের ছাউনি। এখনও ইলেকট্রিক আসেনি এদিকে। না আসুক, কাছারিবাড়িই বা আর কদিন? ভানুকে বলল রামচন্দ্র। রামচন্দ্রকে চেনে ভানু। সে তো দীঘায় যায় প্রায়ই। রামচন্দ্র মাদুর পেতে দিয়েছে বারান্দায়, বিষ্ণু পাতর বসে আছে উঠোনে। ঠাণ্ডা বাতাস বইছে। বৃষ্টি এলো বলে। ভানু বসেছে মন্ত শালখুঁটির গায়ে পিঠ দিয়ে। এ বাড়ি বাবু শ্রীপতি মাইতির ঠাকুরদার আমলের। কী জাব্দা বাড়ি, চুন সুরকির গাঁথনি বটে, কিন্তু খুব পোক্ত। শাল খুঁটিগুলো কী মোটা। ভানু বিড়ি ধরিয়ে তাকাল সামনের দিকে। যতদূর চোখ যায় জমি আর জমি। ভানু জিজ্ঞেস করল, সব বাবুর?
বাবুর আছে, আবার ভুবনেশ্বরের পণ্ডাদেরও আছে।
আলাদা করা আছে তো?
হি হি করে হাসে রামচন্দ্র, একসঙ্গে থাকতে পারে?
রামচন্দ্র লোকটা খুব স্বাস্থ্যবান। একেবারে ষাঁড়ের মতো চেহারা। যেমন তার গায়ের রং, তেমনি তার হাবভাব। বাবুর বদলে ভানু এসেছে, তাতেই রামচন্দ্র খুশি, বলল, কতবার আপুনারে কহিছি ভানুবাবু, বালিঘুঁড়া ভীমাপুর দেখে যান, এতদিনা সময় হিলা।
ভানু বলে, হিলা তো বিষ্ণুর জন্যে। রামচন্দ্রের মুখের ভাষা ভানুর মুখে।
ওর কী হইছে?
কী হইছে জানো না?
রামচন্দ্র বলে, আর হিবে কী লুটিশ এসে গেল, আপুনি ইটা লিয়ে বাবুরে দিখাও।
কী লুটিশ?
সরকারের। বলে থমথম করে বাতাস গিলল যেন রামচন্দ্র, বাবুর তো কোনো মন নাই, কেস কাছারি না হোক ভুবনেশ্বরে গিয়া বেশি টঙ্কা আদায় তো করিবে,কী হিবে, কত টঙ্কা দিবে ইসব নিয়ে কথা তো কহিবে সরকারের সহিত, ইত জমিন!
কত জমি?
দেড়শ বিঘা হবে।
বাবু যে বলে পঞ্চাশ বিঘা।
ওইর’ম কহে, জমিনের কাগজপত্তর তো সব মোর কাছে।
বিষ্ণু পাতর কথা শুনছিল। সে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল কখন তার কথা তোলে ভানুবাবু। কিন্তু ভানুবাবু যেন তাকে ভুলেই গেছে। তার কোনো কথাই তো বলছে না। এদিকে অন্ধকার হয়ে এলো প্রায়। বৃষ্টি এসে গেলে বিপদ হবে। এখেন থেকে মাইল দেড়েক তার ঘর।
ভানু বলল, কতদিন ধরে ভাবি বালিমুণ্ডা-ভীমাপুর আসব।
ইহার পরে তো আসা হতোনি।
কেনে হতোনি?
বাহ্, শুনছ কী, লুটিশ পড়া মানে আর কদিন! এই কাছারিবাড়ি, জমি সব নিয়ে নেবে।
সব?
বিষ্ণু পাতর আর অপেক্ষা করতে পারে না, উঠে দাঁড়ায়, ভানুবাবুকে লিয়া আসিছি দীঘা থিকে, মোর কথাডা ভাব রামচন্দরবাবু।
রামচন্দ্র বলে, বাবু কী কহিল?
বাবুর তো জমিনই লিয়া লিবে সরকারে।
সে সরকার আর বাবুর বেপার, তুমি চাষে নামিবে, উয়ার পর সেই কারণে সরকারের নিকট থিকে টঙ্কা লিবে, বাবু না কহিলে হিবে? ইয়ার পর বাবু যদি বুঝে ফেলে রামচন্দ্র ইচ্ছামতো জমিন সাঁজায় দিইছে, মোর তো চাকুরি রহিবেনি।
ভানুর দিকে তাকায় বিষ্ণু পাতর। ভানু দেখছিল দূর-দিগন্তে, যেদিকে সমুদ্র, সেদিকে বৃষ্টি নেমেছে যেন। ঘোর হয়ে উঠেছে খোলা জমির শেষ দিক, আকাশ কালো হয়ে আছে, মেঘ কুণ্ডলী পাকিয়ে সরছে একটু একটু করে। মেঘ দেখে, বৃষ্টির চিহ্ন দেখে তার যে কেন মনে পড়ে গেল ঘোড়াটার কথা, সে ঘুরে বসল, রামচন্দ্রকে বলল, বাবুর অশ্ব, হাঁরাই গিঁইছে।
অ্যা। চমকে গেল রামচন্দ্র, আজই সকালে গোটায় অশ্ব দেখিলাম, সত্যি হাঁরাই গিছে?
হাঁ, অশ্ব খুঁজতে তো আসা।
কী কঁইরে হাঁরাই গেল?
ভানু বলতে থাকে। শুনতে শুনতে রামচন্দ্রর নিঃশ্বাস গাঢ় হয়। বুক ফুলতে থাকে, বলে, কুহকেই পলাইছে।
নিশির ডাক তো? ভানু সমর্থন চায়।
হাঁ, নিশির ডাক, এই তো দিন বিশ আগে, এক রাত্তিরে ঘুমের ভিতর শুনলাম কে যেন ডাকিছে, রামচন্দর হে…।
সত্যি!
হাঁ সত্যি।
এদিকে কুহকিনী আছে?
কুহকিনী যেখেনে থাকুক, ডাকে যদি তুমারে শুনিতে হিবেই।
শুনলে রক্ষা নাই? ভানু জিজ্ঞেস করে।
না, তবে মনে জোর থাকিলে রক্ষা হয়, মু তো বাহার যাই নাই।
কথা শুনতে শুনতে বিষ্ণু পাতর অধৈর্য হলো, বলল, রামচন্দরবাবু মোর কী হিবে, পানি আসি গিলা।
আসি গিলা তো বারাণ্ডায় আয়।
না, বলি কী, পানি আসি গিলা, চাষে ইখন যদি না নামি কবে নামিব, তুমি হাঁ করো, দীঘা থিকে ভানুবাবুরে লিয়া আসছি।
ভানুর যেন খেয়াল হলো, বলল, হাঁ, হাঁ, যোগেন পাতরের জমিনে নামাই দাও রামচন্দর, জল তো নামল বটে।
বাবু কহিছে? রামচন্দরের কণ্ঠস্বর শীতল।
বাবু কী আর কহিবে, তুমি নায়েব, তুমি হাঁ করলেই হবে।
আর যোগেনের বেটা?
সে তো কহিছেনি। বলল বিষ্ণু পাতর।
কহিছেনি মানে! রামচন্দ্র যেন মেঘের মতো ডাক দেয়, কহিছে তো বটে, সকাল থিকে ছিলা ইখানে।
তবে কী হবে? ভানু বোঝে বিষ্ণু মিথ্যে বলেছে দীঘায় গিয়ে।
বিষ্ণু বলে, বাবুর তো কত জমিন! বড়বাবুর জমিন মু তো এককালে চষিছি।
রামচন্দ্র বলে, সকালে আসো খুড়া ভাইপোয়।
ভাইপোরে অন্য জমিন দাও, ঐটা মোরে দাও। বিষ্ণু পাতর প্রার্থনা করে।
সে কী হিবে না হিবে মু বুঝিব, সকালে আসো।
বৃষ্টি এসে গেল। বৃষ্টি মানে! এত বৃষ্টি যেন জন্মে দেখেনি ভানু। কাছের সমুদ্র থেকে মেঘ উঠতে লাগল আর ভাসাতে লাগল যেন ভীমাপুর, দে-পাল, কুসমাড়, মহাপাত্রপুর। মেঘ গজরাতে লাগল। বারান্দায় আর দাঁড়ানো যায় না। ঘরের ভিতরে ঢুকে গেল ভানু আর রামচন্দ্র। বর্ষার ভিতরে বিষ্ণু পাতর রওনা দেয়। রামচন্দ্র কাছারি ঘরের ভিতর থেকে একটা তালপাতার টোকা তাকে দেয় সকালে ফেরত দেয়ার কড়ারে।
কাছারিবাড়িতে চারখানা ঘর। ভানুকে যে ঘরটা দেবে রামচন্দ্র সেই ঘর পরিষ্কার করছে একজন। মাথায় এতখানি ঘোমটা। এই ঘরে রামচন্দ্র থাকে। বাবুর ঘর, আরও একটি ঘর বন্ধ করা আছে। মাঝেমধ্যে খুলে ঝাড়পোছ করা হয়। রামচন্দ্র হারিকেন জ্বালে। ভানুকে জিজ্ঞেস করে, কিছু খাবে কি না। ভানু মাথা নাড়তে রামচন্দ্র বলে, রাতে কুকড়া মারা হবে, তা বাবুর খপর কী, অশ্বটা বড় পেয়ারের ছিল তো!
বালিমুণ্ডার অশ্বটা সাদা ছিল?
হাঁ, ধবল বন্ন। রামচন্দ্ৰ বলে।
সেই অশ্ব হতে পারে, আসলে ওর নাম তো কন্থক, ভগবানের ঘোড়া।
ওটা তো মহাপাতর বাবুর খরিদ করা।
কে মহাপাতর বাবু?
জলেশ্বরে ঘর, বালিমুণ্ডায় বেওসা, বড় সাইকেল দুকান, ইবার মোটর সাইকেল দুকান খুলিবে কহিছেন।
অশ্বটা দেখা দরকার।
হাঁ, তবে উটা ওঁর খরিদ।
যদি মোর কন্থক অশ্ব খরিদ করে থাকেন?
কন্থকের কথা জানে রামচন্দ্র, সে কী যেন বলতে গিয়ে থেমে যায়, তারপর জিজ্ঞেস করে, আজ কী তিথি হইছে বলো দেখি, অমাবস্যা কি?
কেনে?
অমাবস্যায় উ মেয়েমানুষ খুব ডরায়।
কোন মেয়েমানুষ?
ওই যে উ ঘরে কাম করছে, রাঁধাবাড়া করে, বড় দুঃখী।
দুঃখী কেন?
সোয়ামি নেয় না, সোয়ামি ফের বেহা করিছে।
ভানু বলল, এখেনে কী করে?
ওই যে কাম করে কাছারির।
থাকে কোথায়?
রামচন্দ্র হেসে ফেলে, চান্দ কম থাকলে খুব ডরায়, তুমি রহিছ, রাঁধাবাড়া কে করিবে, কহিলাম রহি যেতি
ঘর কোথায় হলো?
ছ’মাইল হবে, দে-পালে ঘর ছিলা, তো সে ইখন মিলিটারি সরকার লিয়া লিইছে।
ভানু টের পায় কথার পারম্পর্য রাখতে পারছে না রামচন্দ্র।