ঋগ্বেদ ১০।১৪৬

ঋগ্বেদ ১০।১৪৬
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ১০ম মণ্ডল সূক্ত ১৪৬
অরণ্যানী দেবতা। দেব মুনি ঋষি।

১। হে অরণ্যানি! (বৃহৎ বন)। তুমি যেন দেখিতে দেখিতে অন্তর্হিত হইয়া যাও, অর্থাৎ কতদূর চলিয়াছ, স্থির করা যায় না। তুমি কেন গ্রামে যাইবার পথ জিজ্ঞাসা কর না? তোমার কি একাকী থাকিতে ভয় হয় না?

২। এক জন্তু বৃষের ন্যায় শব্দ করিতেছে, আর এক জন্তু চীচী, ইত্যাকার শব্দ করিয়া যেন তাহার উত্তর দিতেছে, যেন ইহার বীণার ঘটায় ঘটায়(পর্দায় পর্দায়) শব্দ নির্গত করিয়া অরণ্যানীকে বর্ণনা করিতেছে।

৩। অরণ্যানীর মধ্যে কোথাও যেন গাভী চরিতেছে, এইরূপ ভ্রম হয়, কোথাও যেন একটী অট্টালিকার মত দৃষ্ট হয়, সন্ধ্যাবেলা যেন উহার মধ্য হইতে কত শত শকট নির্গত হইয়া আসিতেছে (১)।

৪। তবে কি এই ব্যক্তি গাভীকে আহ্বান করিতেছে? তবে কি এই আর এক ব্যক্তি কাষ্ঠ ছেদন করিতেছে? অরণ্যানীর মধ্যে যে ব্যক্তি থাকে, সে জ্ঞান করে যেন সন্ধ্যাবেলা কেহ চীৎকার করিয়া উঠিল।

৫। বাস্তবিক অরণ্যানী কাহারও প্রাণ বধ করেন না। অন্য অন্য পশু না আসিলে তথায় কোন আশঙ্কা নাই, তথায় সুস্বাদু ফল আহার করিয়া অতি সুখে কাল ক্ষেপ হয়।

৬। মৃগনাভির ন্যায় অরণ্যানীর সৌরভ কত, আহার তথায় বিদ্যমান আছে, তথায় কৃষক লোক আদৌ নাই। অরণ্যানী হরিণদিগের জননীস্বরূপা। এইরূপে আমি অরণ্যানীর বর্ণনা করিলাম।

————-

(১) আলোক ও অন্ধকারের ক্রীড়া বশত এই সকল অলীক দৃষ্টি। এই সূক্তটা অরণ্য সম্বন্ধে একটি কবিতা মাত্র।