ঋগ্বেদ ১০।১২২

ঋগ্বেদ ১০।১২২
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ১০ম মণ্ডল সূক্ত ১২২
অগ্নি দেবতা। চিত্রমহা ঋষি।

১। অগ্নির বিচিত্র তেজঃ, তিনি সূর্যের তুল্য, রমণীয় সুখকর এবং প্রেমাস্পদ অতিথির ন্যায়। তাহাকে স্তব করি। যাহারা দুগ্ধদ্বারা সংসারকে ধারণ করে এবং ক্লেশ নিবারণ করে, তিনি সেই গাভী ও উৎকৃষ্ট বল দান করেন। তিনি হোতা ও গৃহের স্বামী।

২। হে অগ্নি! তুমি সন্তুষ্ট হইয়া আমার স্তবের প্রতি রুচিযুক্ত হও, হে উৎকৃষ্টকৰ্মকারী! তুমি যাহা জানিবার আছে, সকলি জান। তুমি ঘৃতাহুতি প্রাপ্ত হইয়া স্তোতাকে গান করিতে কহ, তোমার কাৰ্য্য দেখিয়া পশ্চাৎ অন্যান্য দেবতা নিজ নিজ কার্য সম্পাদন করেন।

৩। হে অগ্নি! তুমি অমর। তুমি সর্বস্থানে গতিবিধি করিয়া উত্তম কর্মকারী দাত ব্যক্তিকে দান কর এবং পূজা গ্রহণ কর। যে তোমাকে যা দ্বারা সংবর্ধন করে, তাহার নিকটে উৎকৃষ্ট উৎকৃষ্ট সম্পত্তি ও সন্তান সন্ততি উপঢৌকন লইয়া যাও।

৪। যজ্ঞ সামগ্ৰীসম্পন্ন ব্যক্তিগণ সপ্ত অশ্বের স্বামী অগ্নিকে স্তব করিতেছে; সেই অগ্নি যজ্ঞের ধবজাস্বরূপ, সর্বশ্রেষ্ঠ পুরোহিত, তিনি ঘৃতাহুতি প্রাপ্ত হইয়া কামনা শ্রবণপূর্বক অভিলষিত ফল বর্ষণ করেন এবং দাতা ব্যক্তিকে উৎকৃষ্ট বল দান করেন।

৫। হে অগ্নি!  তুমি সর্বশ্রেষ্ঠ অগ্রগণ্য দূত। অমরত্ব লাভের জন্য তোমাকে আহ্বান করিতেছি, তুমি আনন্দকর। দাতার গৃহে মরুতগণ তোমাকে সুশোভিত করে। ভৃগুসন্তানেরা স্তবের দ্বারা তোমার ঔজ্জল্য বর্ধন করিল।

৬। হে অগ্নি! তোমার কর্ম চমৎকার। যে যজমান যজ্ঞানুষ্ঠানে রত হয়, তাহার জন্য তুমি যজ্ঞস্বরূপ প্রচুর দুগ্ধদায়িনী বিশ্বপালনকারিণী গাভী হইতে যজ্ঞফল দোহন করিয়া দাও। তুমি ঘৃতাহুতি প্রাপ্ত হইয়া তিন স্থান আলোকময় কর; তুমি যজ্ঞগৃহের সর্বত্র আছ, সর্বত্র গমন কর, সৎকর্মকারীর যে আবরণ, তাহা তোমাতে দৃষ্ট হয়।

৭। উষা জাগরিত হইবামাত্র মনুষ্যগণ তোমাকেই দূতস্বরূপ গ্রহণ করিয়া যজ্ঞ করে। হে অগ্নি! দেবতারাও তোমাকেই যজ্ঞে ঘৃতদ্বারা প্রদীপ্ত করিয়াপূজা করিবার জন্য সংবর্ধনা করেন।

৮। হে অগ্নি! সন্তানেরা যজ্ঞ উপলক্ষে অনুষ্ঠান আরম্ভ করিয়া অন্নসম্পন্ন তোমাকে আহ্বান করিতে লাগিল। যজমানদিগের গৃহে প্রচুর পরিমাণ ধন সংস্থাপন কর, তোমরা স্বস্তি বচনদ্বারা আমাদিগকে সর্বদা রক্ষা কর।