ঋগ্বেদ ১০।১২০

ঋগ্বেদ ১০।১২০
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ১০ম মণ্ডল সূক্ত ১২০
ইন্দ্র দেবতা। বৃহদ্দিব ঋষি।

১। যাহা হইতে জ্যোতির্ময় সূৰ্য জন্মিয়াছেন, তিনিই সর্বাপেক্ষা জ্যেষ্ঠ, অর্থাৎ বয়োধিক ছিলেন, অর্থাৎ তাহার পূর্বে কেহ ছিল না। তিনি জন্মিবামাত্র তৎক্ষণাৎ শত্রু ধ্বংস করেন। তাবৎ দেবতা তাহাকে অভিনন্দন করে।

২। সেই অতি তেজস্বী শত্রুনিধন কারী ইন্দ্র বিশিষ্ট বলে বলী হইয়া দাসজাতির হৃদয়ে ভয় সঞ্চার করিয়া দেন। স্থাবর, জঙ্গম, সর্বভূতকে তুমি সোম পানের আনন্দে সুখী কর, তাহাদিগকে শোধন কর; তখন তাহারা তোমাকে স্তব করে।

৩। দেবতাদিগের তৃপ্তি সম্পাদনকারী যজমানগণ যখন এক হইতে দুই হয়, অর্থাৎ দারপরিগ্রহ করে, পরে যখন তিন হয়, অর্থাৎ সন্তান উৎপাদন করে, তখন তোমার উপরেই সকল যজ্ঞ কাৰ্য্য সমাপন করে, অর্থাৎ তুমি নহিলে যজ্ঞ হয় না। যাহা সুস্বাদু আছে, তাহার সহিত তদপেক্ষা আরও সুস্বাদু বস্তু তুমি মিলন করিয়া দাও। এই চমৎকার যে মধু আছে, তাহার সহিত আরও মধু মিলন কর, অর্থাৎ সৌভাগ্যের উপর আরও সৌভাগ্য বিধান

৪। সোম পানপূর্বক মত্ত হইয়া তুমি যখন, ধন জয় কর, তখন স্তোতা গণও সেই সঙ্গে সোমপানমদে মত্ত হয়। হে দুর্ধর্ষ! অটল তেজঃ প্রদর্শন কর। দুঃসাহসিক রাক্ষসেরা তোমাকে যেন পরাভব করিতে না পারে।

৫। হে ইন্দ্র! তোমার সহায়তা পাইয়া আমরা যুদ্ধে বিলক্ষণ শত্রু নিপাত করি; আমরা যেন যুদ্ধ করিবার উপযুক্ত বিস্তর শত্রুর সাক্ষাৎ পাই, স্তববাক্য উচ্চারণপুৰ্ব্বক তোমার অস্ত্রশস্ত্রকে উৎসাহিত করিতেছি। বেদবাক্য দ্বারা তোমার তেজঃ তক্ষু করিয়া দিতেছি।

৬। সেই ইন্দ্রকে স্তব করি, যিনি স্তবের যোগ্য, যাহার মূর্তি নানা, যাহার দীপ্তি চমৎকার, যাহার তুল্য প্রভু নাই, যিনি সকল আত্মীয়ের শ্রেষ্ঠ আত্মীয়। তিনি ক্ষমতাবলে সপ্তদানবকে বিদীর্ণ করেন, বিস্তর প্রতিদ্বন্দ্বীকে পরাভব করেন।

৭। হে ইন্দ্র! তুমি যে গৃহে আপনার আশ্রয় দান করিয়াছ, তথায় পার্থিব ও দিব্য দুই প্রকার সম্পত্তি সংস্থাপন করিয়াছ। সর্বভূতের নির্মাণ কারিণী দ্যাবাপৃথিবী যখন চঞ্চল হয়, তখন তুমিই তাহাদিগকে সুস্থির কর। সেই উপলক্ষে নানা কাৰ্য্য তোমাকে করতে হয়।

৮। ঋষিশ্রেষ্ঠ বৃহদ্দিব স্বর্গ লাভের অভিলাষী হইয়া ইন্দ্রের উদ্দেশে এই সকল প্রীতির বেদবাক্য পড়িতেছেন। সেই দীপ্তিশালী ইন্দ্ৰ বৃহৎ পৰ্ব্বতকে অপসারিত করেন এবং শত্রুর অশেষ দ্বার উদঘাটন করেন।

৯। অথর্বার সন্তান মহামতি বৃহদ্দিব ইন্দ্রকে উদ্দেশ করিয়া আপনার স্তব পাঠ করিলেন। পৃথিবী নির্মল নদীগণ জল প্রবাহিত করিতেছে এবং অন্নদ্বারা প্রজা লোকের কল্যাণ বর্ধন করিতেছে।