ঋগ্বেদ ০৭।০৮৭

ঋগ্বেদ ০৭।০৮৭
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ৭ম মণ্ডল  সূক্ত ০৮৭
বরুণ দেবতা। বসিষ্ঠ ঋষি।

১। এই বরুণদেব সূৰ্য্যের জন্য পথ প্রদান করিয়াছেন, নদী সকলকে অন্তরিক্ষভব জল প্রদান করিয়াছেন। অশ্ব যেরূপ বড়বার প্রতি ধাবমান হয়,সেইরূপ শীঘ্র যাইতে ইচ্ছা করিয়া তিনি মহতী রজনীসমূহকে দিবস হইতে পৃথক করিয়াছেন।

২। হে বরুণ! তোমার বায়ু জগতের আত্মা, সে জলকে চারিদিকে প্রেরণ করে। ঘাস প্রদত্ত হইলে পশু যেরূপ অন্নবান হয়, সেইরূপ ভর্ত্তা বায়ু অন্নবান। মহতী, বৃহতী দ্যাবাপৃথিবীর মধ্যস্থলে তোমার সমস্ত স্থান লোকের প্ৰিয়।

৩। বরুণের চর সকলের গতি প্রশস্ত, তাহারা সুন্দর রূপবিশিষ্ট দ্যাবাপৃথিবী সন্দর্শন করে এবং কৰ্ম্মবান, যজ্ঞধীর, প্রাজ্ঞ কবিগণ যে স্তোত্র প্রেরণ করেন তাহাও চতুর্দিকে দর্শন করে।

৪। আমি মেধাবী, বরুণ আমাকে বলিয়াছেন যে গো (১) একুশটী নাম ধারণ করে। বিদ্বান মেধাবী বরুণ, উপযুক্ত অন্তেবাসীকে উপদেশ দিয়া উৎকৃষ্ট স্থানে এই সকল গুহ্য কথাও বলিয়াছেন।

৫। এই বরুণ দেবের মধ্যেই তিন প্রকার দুলোকে (২) নিহিত আছে, তিন প্রকার ভূমি (৩) ছয় অবস্থায় (৪) ইহাতে অন্তর্ভূত আছে। স্তুতিযোগ্য রাজা বরুণ অন্তরিক্ষে হিরন্ময় দোলার ন্যায় (৫) সূৰ্য্যকে দীপ্তির জন্য নিৰ্ম্মাণ করিয়াছেন।

৬। সূর্য্যের ন্যায় দীপ্ত বরুণ সমুদ্রকে স্থাপিত করিয়াছেন। তিনি জলবিন্দুর ন্যায় শ্বেতবর্ণ, গৌর মৃগের ন্যায় বলবান, গভীর স্তোত্রবিশিষ্ট, উদকের নিৰ্ম্মাতা, পারক্ষম বলযুক্ত এবং সমস্ত সৎপদার্থের রাজা।

৭। অপরাধ করিলেও যে বরুণ দয়া করেন (৬) অদীন বরুণের ব্রত সকল যথাক্রমে সমৃদ্ধ করতঃ আমরা যেন তাঁহার নিকটেই অনপরাধী হই। তোমরা সর্বদা আমাদিগকে স্বস্তিদ্বারা পালন কর।

————
(১) অর্থাৎ বাক অথবা পৃথিবী। সায়ণ।

(২) উত্তম, মধ্যম ও অধম। সায়ণ।

(৩) উত্তম, মধ্যম ও অধম। সায়ণ।

(৪) বসন্তাদি ঋতুভেদে। সায়ণ।

(৫) সূর্য্য কেবল দুই দিক স্পর্শ করে, এই জন্য সূর্য্য দোলার ন্যায়। সায়ণ।

(৬) “The consciousness of sin is a prominent feature in the religion of the Veda; so is likewise the belief that the gods are able to take away from man the heavy burden of his sins.” —Max Mullaer’s Selected Essays