বিচ্ছেদ

কোনো কোনো দিন
গভীর রাত্তিরে ঘুম ভেঙে গেলে, প্রায়শই ভাঙে আজকাল,
নিজেকে ভীষণ একা লাগে। যেন আমি
প্রাচীন ধ্বংসস্তূপে অত্যন্ত ভেতর থেকে জেগে
প্রথম দেখছি পৃথিবীকে।

‘কে তুমি এখানে এই আঁধার নিবাসে ব’সে আছে’,-
নিজেকেই প্রশ্ন করে খুব
বিচলিত হই। কাকে যেন ডেকে ডেকে 
হৃদয়ের গলা ফেটে যায়, রক্তস্রোতে
আকাঙ্ক্ষার নৌকাডুবি বারংবার। অকস্মাৎ স্মৃতি,
প্রধান ফোয়ারা বুঝি এভেন্যুর, উচ্ছ্বসিত হয়! পলাতক
স্বপ্নেরা কখনো দূরে শূন্য উঠোনের
বৃষ্টিজালে ধরা-পড়া মাছ,
কখনোবা ধাবমান ঘোড়ার কেশরে মুক্তোমালা।

কেবলি বাড়াই হাত জাল আর কেশরের দিকে,
হাত ঝুলে থাকে
ফাঁসির মঞ্চের কোনো মৃতের জিভের মতো। কেউ,
মনে হয়, ছোরা থেকে নিচ্ছে মুছে রক্তের চিৎকার,
নিচ্ছে ধুয়ে অস্থিরতা বৃষ্টির গহন
জলে; ধু-ধু অন্ধকারে আমার কেবল ব’সে থাকা, চেয়ে থাকা,
কেউবা বিচ্ছেদ শব্দটিকে ঠেলে দেয়
আমার জানালা দিয়ে।

সারা রাত একা
জানালার চোখ থেকে টপকে টপকে পড়ে জল।