এখন মাঝরাস্তায় আমি; দমবন্ধ-করা নিঃসঙ্গতা
একটা মাকড়সার মতো হাঁটছে
আমার চোখে, গালে, কণ্ঠনালিতে,
বুকে, ঊরুতে আর
বেদেনীর ভলা যৌবন হয়ে
অন্ধকারের জোয়ার খলখলিয়ে উঠেছে আমার চারপাশে।
অন্ধকার ছাড়া কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। মনে হয়
এখানে কোথাও তুমি আছ, ডাকলেই
সাড়া দেবে নিমেষে। তলোয়ার মাছের মতো তোমার কণ্ঠস্বর
ঝলসে উঠবে অন্ধকারে।
কণ্ঠে সমস্ত নির্ভরতা পুরে তোমাকে ডাকলাম,
শুধু ভেসে এলো আমার কণ্ঠস্বরের প্রতিধ্বনি।
অন্ধকারে পথ হাতড়ে চলেছি, যদি হঠাৎ
তোমার দেখা পেয়ে যাই।
ভেবেছি আমার দিকে প্রসারিত হবে
অলৌকিক বৃক্ষশাখার মতো তোমার হাত।
কতকাল প্রতীক্ষাকাতর আমি
তোমার কণ্ঠস্বর শোনার জন্যে, কত পাথর আর কাঁটাময়
পথ পেরিয়েছি তোমাকে একটিবার
দেখব বলে। অথচ আমার সকল প্রতীক্ষা
আর ব্যাকুলতাকে বারংবার উপহাস করেছে
তোমার নীরব অনুপস্থিতি।
অন্ধকারে আমি দু’হাতে আঁকড়ে রেখেছি
একটি আয়না, যাতে দেখতে পাই
তোমার মুখের ছায়া। কিন্তু আয়নায় পড়ে না
কোনো ছায়া, লাগে না নিঃশ্বাসের দাগ।
এখানে কোথাও তুমি আছ, কখনোসখনো এই বিশ্বাস
আমাকে বাঁচায়
অক্টোপাস-বিভ্রান্তি থেকে। কিন্তু সেই বিশ্বাস নিয়ে
আমি কী করব যা সমর্থিত নয়
জ্ঞানের জ্যোতিশ্চক্রে? উৎপীড়িত মুতাজিলা-মন
আমাকে নিয়ে গেছে সংশয়ের সৈকতে। নুড়ি কুড়াতে কুড়াতে
জেনেছি জ্ঞান আমার উদ্ধার; তারই অন্বেষণে
স্বৈরিণীর মতো অন্ধকার
উজিয়ে চলেছি। এ জন্যে যদি তোমাকে খোঁজার সাধ
মুছে যায় কোনো রাগী পাখির পাখার ঝাপটে,
আমি প্রতিবাদহীন পা চালিয়ে চলে যাব
জ্ঞানের বলয়ে আমার অজ্ঞতা নিয়ে।