এ শহর ট্যুরিস্টের কাছে পাতে শীর্ণ হাত যখন তখন,
এ শহর তালিমারা জামা পরে নগ্ন হাঁটে, খোঁড়ায় ভীষণ।
এ শহর রেস খেলে, তাড়ি গেলে হাঁড়ি হাঁড়ি, ছায়ার গহ্বরে
পা মেলে রগড় করে আত্মার উকুন বাছে, ঝাড়ে ছারপোকা।
কখনো-বা গাঁট কাটে, পুলিশ দেখলে
মারে কাট। টকটকে চাঁদের মতন চোখে তাকায় চৌদিকে,
এ শহর বেজায় প্রলাপ বকে, আওড়ায় শ্লোক,
গলা ছেড়ে গান গায়, ক্ষিপ্র কারখানায়
ঝরায় মাথার ঘাম পায়ে।
ভাবে দোলনার কথা কখনো-সখনো,
দ্যাখে সরু বারান্দায় নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে থাকা মেয়েটির রূপ।
এ শহর জ্যৈষ্ঠে পুড়ে এবং শ্রাবণে ভিজে টানে
ঠেলাগাড়ি, রাত্রি এলে শরীরকে উৎসব করার
বাসনায় জ্ব’লে সাত তাড়াতাড়ি যায় বেশ্যালয়ে।
এ শহর সাদা হাসপাতালের ওয়ার্ড কেবলি
এপাশ ওপাশ করে, এ শহর সিফিলিসে ভোগে,
এ শহর পীরের দুয়ারে ধরনা দেয়, বুকে-হাতে
ঝোলায় তাবিজ তাগা, রাত্রিদিন করে রক্তবমি,
এ শহর কখনো হয় না ক্লান্ত শবানুগমনে।
এ শহর দারুণ দুক্ষোভে ছেঁড়ে চুল, ঠোকে মাথা
কালো কারাগারের দেয়ালে,
এ শহর ক্ষুধাকেই নিঃসঙ্গ বাস্তব জেনে ধুলায় গড়ায়;
এ শহর পল্টনের মাঠে ছোটে, পোস্টারের উল্কি-ছাওয়া মনে
এল গ্রেকো ছবি হয়ে ছোঁয় যেন উদার নীলিমা,
এ শহর প্রত্যহ লড়াই করে বহুরূপী নেকড়ের সাথে।