আমার কবিতা দ্যাখো তোমার দিকেই চেয়ে আছে
অপলক সদ্য-প্রেমে-পড়া তরুণের মতো। গাছে,
দেয়ালে টেবিলে, বারান্দায় বাল্বে, টবে,
ড্রইংরুমের স্মিত শোভন বৈভবে,
স্নানাগারে শাওয়ারের ছিদ্রময় মুখে, রান্নাঘরে,
যেখানেই রাখো চোখ, নিশ্চিত দেখব তুমি প্রহরে প্রহরে
আমার কবিতা তীব্র চেয়ে আছে তোমার দিকেই, কী উন্মুখ!
লজ্জায় যতই ঢাকো মুখ
অথবা ঔদাস্যে দূরে সরে যাও, কবিতা আমার
তোমাকে করবে আলিঙ্গন বারংবার।
আমার কবিতা যেন এক ঝড়ে-পড়া পথচারী,
কোনো কোনো দিন দেবে ক্ষিপ্র টোকা দরজায়, তুমি তাড়াতাড়ি
খুলবে তো খিল? পারবে তো তাকে ডেকে নিতে কাছে?
অথবা যদি সে প্রজাপতি হয়ে নাচে
তোমার শয্যার পাশে, তাকে
চিনতে পারবে তো অকস্মাৎ? যদি সে সেখানে থাকে
প’ড়ে কোনো আহত প্রাণীর মতো আর্তিময়তায়,
করবে সতেজ তাকে তোমার কোমল শুশ্রূষায়?
যখন তোমাকে ছোঁবে আমার কবিতা নিরিবিলি, অত্যন্ত সোহাগভরে
রাখবে প্রগাঢ় ওষ্ঠ ঠোঁটে, তাকে ফেরাবে কী করে?
যখন তোমার কাছাকাছি কেউ নেই,
আমার কবিতা মৃদু হেসে বলবে তোমাকে, ‘এই
শোনো, কোনো দিন ভেবে দেখেছ কি বেশি সুন্দর, তুমি নাকি
আমি? তার হাসি দূরে হাওয়ায় মিলিয়ে গেলে দেখবে যে পাখি
রেলিং-এ গাইছে গান, সে আমারই কবিতা আপন।
রাত্তিরে যখন খোপে যুগল পায়রা করে প্রহর যাপন,
তুমি কারো দস্যুতায় আর্তনাদ করো, কী সুদীর্ঘ হাহাকার
হয়ে যায় তোমার শরীর আরো নৈঃসঙ্গে, তখনও দুর্নিবার
কবিতা আমার চেয়ে থাকে তোমার দিকেই আর
চোখের বাঙ্ময় জল হয়ে কাঁপে, কখনো আবার
ঘুমহীন কৌচে কি শয্যায়
নগ্ন, অসহায়,
গোপনে তোমার পথে
অত্যন্ত পীড়িত হয়, ধু-ধু আর্তনাদ হয় একটি রোমশ ক্রূর হাতে।