দাউ দাউ পুড়ে যাচ্ছে ঐ নয়াবাজার।
পুড়ছে দোকানপাট, কাঠ,
লোহালক্কড়ের স্তূপ, মসজিদ এবং মন্দির।
দাউ দাউ পুড়ে যাচ্ছে ঐ নয়াবাজার।
বিষম পুড়ছে চতুর্দিকে ঘরবাড়ি।
পুড়ছে টিয়ের খাঁচা, রবীন্দ্র রচনাবলি, মিষ্টান্ন ভাণ্ডার,
মানচিত্র, পুরোনো দলিল।
মৌচাকে আগুন দিলে যেমন সশব্দে
সাধের আশ্রয়ত্যাগী হয়
মৌমাছির ঝাঁক
তেমনি সবাই
পালাচ্ছে শহর ছেড়ে দিগ্ধিদিক। নবজাতককে
বুকে নিয়ে উদ্ভ্রান্ত জননী
বনপোড়া হরিণীর মতো যাচ্ছে ছুটে।
অদূরে গুলির শব্দ, রাস্তা চষে জঙ্গি জিপ। আর্ত
শব্দ সবখানে। আমাদের দুজনের
মুখে আগুনের খরতাপ। আলিঙ্গনে থরথর
তুমি বলেছিলে,
‘আমাকে বাঁচাও এই বর্বর আগুন থেকে, আমাকে বাঁচাও’
আমাকে লুকিয়ে ফেল চোখের পাতায়
বুকের অতলে কিংবা একান্ত পাঁজরে,
শুষে নাও নিমেষে আমাকে
চুম্বনে চুম্বনে।
দাউ দাউ পুড়ে যাচ্ছে ঐ নয়াবাজার,
আমাদের চৌদিকে আগুন,
গুলির ইস্পাতি শিলাবৃষ্টি অবিরাম।
তুমি বলেছিলে,
‘আমাকে বাঁচাও।‘
অসহায় আমি তা-ও বলতে পারিনি।