কোনো-কোনোদিন মধ্যরাতে ভয় পেয়ে জেগে উঠি।
দেয়ালে নিবদ্ধ চোখ, মগজের কোষে জ্বালা,
কিসের নিঃশ্বাস লাগে চোখে-মুখে, প্রেতের ভ্রুকুটি
ঘরময় জেগে থাকে সারাক্ষণ, যেন বোবা-কালা
আমি, পড়ে থাকি ঠাণ্ডা শবগন্ধী কফিনের মতো
শয্যায় নিঃস্পন্দ, একা। অকস্মাৎ অগ্নিবর্ণ ঝুঁটি
নেড়ে কাকাতুয়া তেড়ে আসে শয্যাপার্শ্বে, অবিরত
চঞ্চু আর নখ দিয়ে আমাকেই ছেঁড়ে কুটি-কুটি।
দেয়ালের টিকটিকি বিশাল ডাইনোসর হয়,
উঠোনের গাছপালা খুব প্রতিহিংসাপরায়ণ
হুনের মতন ধেয়ে আসে এই ঘরে কী দুর্জয়।
আমার ওপরে ঘোর কালো ফণিমনসার বন
সহসা ঝাঁপিয়ে পড়ে, এমনকি যে শান্ত বেড়াল
আমার নিবাসে করে বসবাস, সে-ও চক্ষুদ্বর
পাকায় গভীর রাতে। ঘোড়ার পায়ে ভারি নাল,
হাজার-হাজার, ঝরে সারা ঘরে; কে দেবে অভয়?
হঠাৎ ভয়ার্ত মধ্যরাতে তীব্র স্মৃতির মতন
তোমার মুখের দ্বীপ মনে পড়ে, তোমার সোনালি
শরীরের কথা ভাবি আর কী আশ্চর্য, এতক্ষণ
যে ভয় আমাকে কাটছিলো অতিশয় ফালি-ফালি,
তার ছায়া নেই আর কোথাও এখন। তুমিহীন তুমিময়
এ ঘর আমার; তুমি চোখের তারার মতো তুমি
অন্তরঙ্গ তুমি, দেখি আমার হৃদয়ে চন্দ্রোদয়,
তোমার শিল্পিত কণ্ঠস্বরে গুঞ্জরিত মনোভূমি।