পিছনে তাকানো মানা। যতক্ষণ এই পাতালের
হিম অন্ধকারে আছি, পারব না তাকাতে কখনো
তোমার মুখের দিকে। যদি তুমি আগুনের তাপে
নিমেষে মোমের পুতুলের মতো গলে যাও কিংবা
উবে যাও অকস্মাৎ, তবু দৃষ্টি অন্য কোনো দিকে
নিবদ্ধ রাখতে হবে। গলায় ঝুলবে ম্যান্ডোলিন।
পেরিয়ে এসেছি বহু দীর্ঘ পথ, পায়ে বহু ক্ষত,
তোমাকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারলেই সাবলীল
শুকোবে এ ক্ষত, মুছে যাবে নৈরাশের রেখাবলি।
তোমার শরীর থেকে শীতল কুয়াশা ঝেড়ে ফেলে
তুমি এসো, তুমি এসো দীপ্র রাজহাঁসের মতন।
ভয় নেই, তাকাব না। কিছুতেই ফিরে তাকাব না।
আমাকে চিনতে পারছ না? তাহলে কি পাতালের
ছায়ায় পড়েছে ঢাকা আমার একান্ত পরিচয়?
আমার হাতে কি তুমি দেখতে পাওনি ম্যান্ডোলিন?
এখনও তুলতে পারি কত সুর ব্যাকুল আঙুলে,
সেই সুর শুনে পাখি এখনও সান্নিধ্যে আসে, নুড়ি
গড়াতে গড়াতে চলে আসে কাছে, পশুরা হিংস্রতা
ভুলে যায় নিমেষেই। শোনো, আমি ম্যান্ডোলিনে সুর
তুলে সব নরখাদককে ঘুম পাড়িয়ে এসেছি,
সব প্রহরীর দৃষ্টিপথে তৈরি করে মায়াপুরী
এখানে এসেছি এই অন্ধকার নীরক্ত মণ্ডলে।
কিন্তু তুমি দূরে সরে যাচ্ছ কেন এরকমভাবে?
তবে কি তোমাকে দেখে ফেলেছি হঠাৎ পুনরায়?
তবে কি আবার লোভী হয়ে গেছি ক্ষয়িষ্ণু বেলায়?
ফিরে এসো, আর ফিরে তাকাব না; আমার নিকটে
ফিরে এসো; দেখে নিও, আমি হেঁটে যাব ধু-ধু পথে,
নগ্ন প্রান্তরের ধার ঘেঁষে ম্যান্ডোলিনে সময়কে
বাজাতে বাজাতে যাব অত্যন্ত একাকী। ফিরে এসো,
ছায়ায় যেও না মিশে, আমার হবে না আর ভুল।