নেকড়েমানুষ – ৭

সাত

পরে, রানশের কর্মী আর অতিথিরা করালে জড় হলো। মার্থা বার্বিকিউ লাঞ্চ পরিবেশন করল, এবং র‍্যাম দাঁড়াল গিয়ে মঞ্চের উপর।

‘বন্ধুরা, তোমরা জেনে খুশি হবে, গত রাতে যে বাক্সটা চুরি গেছে তাতে আসল সোনার হর্সশুগুলো ছিল না,’ বলল র‍্যাম। ‘ছিল শুধু রেপ্লিকা। আসল হর্সশুগুলো এতই দামি, আমরা গোপন এক জায়গায় পুঁতে রেখেছি ওগুলোকে। কাজেই এই রহস্যের সমাধান না হওয়া পর্যন্ত, আসল হর্সশুগুলো ব্যাঙ্কের ভল্টে রাখতে যাচ্ছি আমরা। আমি একটু পরে ওগুলো নিয়ে শহরে রওনা হব। তোমরা লাঞ্চ করো। আশা করি বিকেলটা তোমাদের ভাল কাটবে।’

র‍্যাম সাবধানে মঞ্চ থেকে লাফিয়ে নেমে ছেলে-মেয়েদের কাছে হেঁটে এল।

‘একদম পারফেক্ট হয়েছে, র‍্যাম,’ বলল জিনা। ‘আমার ধারণা যদি ঠিক হয়, নেকড়েমানুষ আপনাকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে লক্ষ করবে।’

‘আপনার বক্তৃতার পর সবার দুশ্চিন্তা কেটে যাবে,’ বলল রবিন। ‘আচ্ছা, রাফি কোথায়?’

মুসা লাঞ্চ টেবিলের দিকে তর্জনী তাক করল।

রাফি ওখানে ঘুরঘুর করছে।

‘আমাদেরকে এখন ফাঁদ পাতার জন্যে বার্নে যেতে হবে,’ বলল গোয়েন্দাপ্রধান।

ছেলে-মেয়েরা করাল ত্যাগ করে বার্নের কাছে হেঁটে চলে এল। বার্নের ভিতরটা আঁধার। দু’পাশে চারটে করে স্টল। কয়েকটা স্টলে ঘোড়া দাঁড়িয়ে। খড়ের আঁটি স্তূপ হয়ে আছে চারপাশে। মেঝে ঢাকা পড়েছে আলগা খড়ের ছোট-ছোট গাদায়।

‘প্ল্যানটা শোনো,’ শুরু করল কিশোর। ‘র‍্যাম এখানে আসবে হর্সশুগুলো খোঁড়ার ভান করতে।’

‘এবং নেকড়েমানুষ শিয়োর ফলো করবে,’ যোগ করল জিনা। ‘নেকড়েমানুষ ভিতরে ঢুকলেই বাইরে থেকে দরজা লাগিয়ে দেব রবিন আর আমি।’

‘আমি সঙ্কেত দিলেই র‍্যাম নেকড়েমানুষকে ল্যাসোয় বেঁধে ফেলবে। মুসা, রাফি আর আমি লাফিয়ে বেরিয়ে এসে ও যাতে দৌড়ে পালাতে না পারে সে ব্যবস্থা করব।’ বলল কিশোর।

রাফি ঘেউ করে উঠে আপত্তি জানাল।

‘ওহ, ভুলেই গেছিলাম,’ জিনা বলল। ‘তুই আমার কাছে দুটো স্ন্যাক পাস।’

‘আর পিচ কবলার,’ মনে করিয়ে দিল মুসা।

‘সব হবে,’ বলল রবিন। ‘আগে নেকড়েমানুষকে ধরি।’ রাফি ঠোঁট দিয়ে জিভ চাটল।

‘তবে স্ন্যাক এখনই পেতে পারিস তুই,’ বলল জিনা। পকেট থেকে দুটো স্ন্যাক বের করল। বাতাসে ছুঁড়ে দিল একটা-একটা করে। রাফি লাফিয়ে উঠে প্রথমটা কামড়ে ধরল। দ্বিতীয়টার জন্যও লাফ দিল। কিন্তু নাগাল পাওয়ার আগেই, মাথা বাড়িয়ে দিয়ে কোঁত করে ওটা গিলে নিল এক ঘোড়া।

হতাশায় কেঁউ করে উঠল রাফি।

ঘড়ি দেখল কিশোর।

‘সময় হয়ে গেছে প্রায়,’ বলল। ‘রবিন, জিনা, তোমরা দু’জন বাইরে গিয়ে অপেক্ষা করো। আমি ওই খড়ের আঁটিগুলোর পিছনে লুকাচ্ছি। মুসা আর রাফি, তোমরা কোন একটা খালি স্টলে লুকাও। তবে সাবধান, কোন শব্দ কোরো না যেন।’

‘খাইছে, নো প্রবলেম, কিশোর,’ বলল মুসা। ‘তুমি আমাদের ওপর ভরসা রাখতে পারো।’