ঋগ্বেদ ০৯।১০৬

ঋগ্বেদ ০৯।১০৬
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ৯ম মণ্ডল সূক্ত ১০৬
পবমান সোম দেবতা। অগ্নি, চক্ষু ও মনু ঋষি।

১। এই সমস্ত সোমরস এইমাত্র নিষ্পীড়িত ও প্রস্তুত হইয়াছে, ইহারা সকল বস্তুই দিতে জানে; প্রার্থনা, যেন ইহার বৃষ্টি বর্ষণকারী ইন্দ্রের নিকটে যাইয়া উপস্থিত হয়।

২। যুদ্ধের উপলক্ষে এই সোমকে ভাগ করিয়া পান করিতে হইবেক, ইনি প্রস্তুত হইয়াছেন, ইন্দ্রের জন্য ক্ষরিত হইতেছেন। যেরূপ তাবৎ লোকে জানে, তদ্রূপ ইনিও জানেন, যে ইন্দ্র কেমন বিজেতা পুরুষ।

৩। যখন পুনঃ পুনঃ সোম পান করিয়া ইন্দ্র মত্ত হয়েন, তখন তিনি গ্রহণ করিবার উপযুক্ত উত্তম উত্তম ধন গ্রহণ করিতে থাকেন। তিনি তখন বৃষ্টিবর্ষণকারী বজ্র ধারণপূর্বক জলের রোধকর্তা বৃত্রকে পরাজয় করেন।

৪। হে সোম! সতর্ক হইয়া এস। ইন্দ্রের জন্য ক্ষরিত হও। যাহাতে তাবৎ বস্তু লাভ হইতে পারে, এরূপ প্রদীপ্ত তেজঃ তাহার শরীরে পরিপূর্ণরূপে প্রদান কর।

৫। হে সোম! তুমি অতি সতর্ক; তুমি সহস্রপথ দিয়া গমন কর, তুমি সেবককে পথ দেখাইয়া দেও; তুমি সমস্ত সংসার নিরীক্ষণ কর; অতএব প্রার্থনা, যে যাহাতে বৃষ্টি বর্ষণ হয়, ইন্দ্রের এপ্রকার মত্ততা উৎপাদন কর।

৬। আমাদিগকে পথ দেখাইয়া দিবার লোক তোমার তুল্য আর কেহ নাই; দেবতাদিগের নিকট তোমার তুল্য মধুর কিছুই নাই। তুমি সশব্দে সহস্র পথে গমন কর।

৭। হে উজ্জ্বল সোম! দেবতাদিগের পানের জন্য ধারায় ধারায় প্রবল বেগে গমন কর। আমাদিগের কলসকে মধুময় রসে পরিপূর্ণ কর।

৮। হে সোম! তোমার রসগুলি জলের সহিত মিশ্রিত হইয়া ইন্দ্রের মত্ততা উৎপাদন করিবার জন্য তাহাকে যাইয়া সম্ভাষণ করিতেছে। দেবতবর্গ অমরত্ব পাইবার জন্য তোমার সুখকর রস পান করিলেন।

৯। হে নিষ্পীড়িত সোমরসগণ! তোমরা শোধিত হইতেছ; আমাদিগের চতুঃপার্শ্বে এইরূপে ধাবমান হও, যে আমরা ধন লাভ করি। তোমরা দ্যুলোকে বৃষ্টির অনুকুল করিয়া পৃথিবীতে জল বহাইয়া দেও এবং তাবৎ বস্তুর লাভ বিষয়ে সহায়তা কর।

১০। ক্ষরণশীল সোম শব্দ করিতেছেন, তাঁহার সম্মুখে স্তুতিবাক্য উচ্চারিত হইতেছে; তিনি শোধিত হইতে হইতে তরঙ্গের আকারে মেষের লোম অতিক্রম করিতেছেন।

১১। দ্রুতগামী সোম মেষলোম অতিক্রমপূর্বক জলমধ্যে ক্রীড়া করিতেছেন, স্তুতিবাক্যসহকারে তাঁহাকে চালাইয়া দিতেছে; তিনবার নিষ্পীড়নপূর্বক তিনি প্রস্তুত হইয়াছেন এবং স্তবের দ্বারা প্রতিধ্বনিত হইতেছেন।

১২। যুদ্ধের বলবান্ ঘোটকের ন্যায় দ্রুতগামী সোমকে কলসের দিকে ঢালিয়া দেওয়া হইতেছে। তিনি শোধিত হইতে হইতে এবং নানাবিধ স্তবের জন্ম দান করিতে করিতে ক্ষরিত হইলেন।

১৩। অতি চমৎকার ঔজ্জ্বল্যধারী সোম দ্রুতবেগে কুটিল পবিত্রের মধ্য দিয়া ক্ষরিতেছেন। তাহাকে যাহারা স্তব করে, তাহাদিগকে তিনি লোকবল ও কীৰ্ত্তি প্রদান করিতেছেন।

১৪। হে সোম! তুমি এই ধারার আকারে ক্ষরিত হও; তোমার মধুপূর্ণ ধারা সমস্ত প্রস্তুত হইতেছে। তুমি চতুর্দিকে শব্দ করিতে করিতে পবিত্র অতিক্রম করিতেছ।