তোমার পূজার ছলে তোমায় ভুলেই থাকি

তুমি বাহির থেকে দিলে বিষম তাড়া

অরূপ, তোমার বাণী

গানের ঝরনাতলায় তুমি সাঁঝের বেলায় এলে

দুঃখের বরষায় চক্ষের জল যেই নামল

আমি কেমন করিয়া জানাব আমার জুড়ালো হৃদয় জুড়ালো

যা হবার তা হবে

তুমি যত ভার দিয়েছ সে ভার করিয়া দিয়েছ সোজা

গানে গানে তব বন্ধন যাক টুটে

কণ্ঠে নিলেম গান

আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে

প্রভু আমার প্রিয় আমার পরম ধন হে

অন্ধকারের মাঝে আমায় ধরেছ দুই হাতে

আমার সুরে লাগে তোমার হাসি

আমার ঢালা গানের ধারা সেই তো তুমি পিয়েছিলে

কেন চোখের জলে ভিজিয়ে দিলেম না

তুমি বন্ধু তুমি নাথ নিশিদিন তুমি আমার

হে মোর দেবতা ভরিয়া এ দেহ প্রাণ

যারা কথা দিয়ে তোমার কথা বলে

কবে আমি বাহির হলেম তোমারি গান গেয়ে

আমায় বাঁধবে যদি কাজের ডোরে

ও অকূলের কূল ও অগতির গতি

শুধু কি তার বেঁধেই তোর কাজ ফুরাবে

তোমারি ঝরনাতলার নির্জনে

তোমায় আমায় মিলন হবে ব’লে আলোয় আকাশ ভরা

ওদের সাথে মেলাও যারা চরায় তোমার ধেনু

আমার মাঝে তোমারি মায়া জাগালে তুমি কবি

আমারে তুমি কিসের ছলে পাঠাবে দূরে

কূল থেকে মোর গানের তরী

প্রভু, তোমার বীণা যেমনি বাজে

প্রভু বলো বলো কবে

ভুলে যাই থেকে থেকে

সভায় তোমার থাকি সবার শাসনে

কেন তোমরা আমায় ডাকো

তুমি একলা ঘরে বসে বসে কী সুর বাজালে

আমার না-বলা বাণীর ঘন যামিনীর মাঝে

তোমার এই মাধুরী ছাপিয়ে আকাশ ঝরবে

তোমার প্রেমে ধন্য কর যারে

দাঁড়িয়ে আছ তুমি আমার গানের ও পারে

তোমার সুর শুনায়ে যে ঘুম ভাঙাও

আমার হৃদয় তোমার আপন হাতের দোলে দোলাও

এরে ভিখারি সাজায়ে কী রঙ্গ তুমি করিলে

লুকিয়ে আস আঁধার রাতে

রাজপুরীতে বাজায় বাঁশি বেলাশেষের তান

মোর প্রভাতের এই প্রথম খনের কুসুমখানি

ভেঙে মোর ঘরের চাবি নিয়ে যাবি কে আমারে

আপনাকে এই জানা আমার ফুরাবে না

তুমি কি এসেছ মোর দ্বারে

জাগ জাগ রে জাগ সঙ্গীত

মালা হতে খসে-পড়া ফুলের একটি দল

তোমায় কিছু দেব ব’লে চায় যে আমার মন

তুমি যে এসেছ মোর ভবনে

আলোকের এই ঝর্ণাধারায় ধুইয়ে দাও

হেথা যে গান গাইতে আসা আমার

এত আলো জ্বালিয়েছ এই গগনে

আমায় অভিমানের বদলে আজ নেব তোমার মালা

তুমি যে চেয়ে আছ আকাশ ভ’রে

এ অন্ধকার ডুবাও তোমার অতল অন্ধকারে

গানের সুরের আসনখানি পাতি পথের ধারে

কার হাতে এই মালা তোমার পাঠালে