১৯৩৬। বয়স ৩৭ বছর
২৯ নভেম্বর রবিবার জীবনানন্দের একমাত্র পুত্র সমরানন্দের জন্ম হল (১৩ অগ্রহায়ণ ১৩৪৩ বঙ্গাব্দ)। জীবনানন্দের ব্রজমোহন কলেজে যোগদানের ঠিক পরের বছরেই সমরানন্দের জন্ম হয়। বরিশালের বাড়িতেই তাঁর জন্ম হয়। বৈবাহিক জীবনের ৬ বছর ৬ মাস ১৯ দিন পর সমরানন্দের জন্ম। জীবনানন্দের দ্বিতীয় সন্তান তিনি। ডাকনাম ‘রঞ্জ’। নবজাত শিশুর জাতকর্ম অনুষ্ঠানে গান গেয়েছিলেন শ্রীমতী সুখলতা রাও (১৮৮৬— ১৯৬৯)।
সমরানন্দের মৃত্যু হয় বুধবার, ১৬ ডিসেম্বর ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে (১ পৌষ ১৩৯৯ বঙ্গাব্দ)। সমরানন্দ ছিলেন অত্যন্তই অন্তর্মুখী সরল উচ্চাকাঙ্ক্ষাবিহীন একজন মানুষ। তিনি লেখাপড়ায় অমনোযোগী কিন্তু সঙ্গীতের প্রতি বিশেষভাবে আকৃষ্ট ছিলেন। মধ্যজীবন থেকেই প্ৰায় অস্বাভাবিক। কয়েকবার মনোরোগের চিকিৎসার জন্যে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। রক্তের উচ্চচাপ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগও তাঁর হয়েছিল। যার ফলে হঠাৎ মৃত্যু হয় তাঁর।
ডিসেম্বরে জীবনানন্দের দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘ধূসর পাণ্ডুলিপি’ প্রকাশিত হল। বইটির নাম শুধু ‘পাণ্ডুলিপি’ রাখার প্রস্তাব উঠেছিল। জীবনানন্দ তা নাকচ করে দিয়ে ‘ধূসর পাণ্ডুলিপি’ রাখেন। বইটির প্রথম এবং শেষ কবিতা কোনটি হবে, তাও নির্ধারণ করে দেন জীবনানন্দ। তিনি বলেন—’নির্জন স্বাক্ষর’ প্রথম কবিতা এবং ‘স্বপ্নের হাতে’ শেষ কবিতা হবে।
‘ধূসর পাণ্ডুলিপি’র মুদ্রণের কাজ দেখাশোনা করছিলেন বুদ্ধদেব বসু। বুদ্ধদেব বসুকে জীবনানন্দ লেখেন, ‘মৃত্যুর আগে একেবারে শেষের দিকে দেবেন—’স্বপ্নের হাতে’র আগের কবিতা হবে ‘মৃত্যুর আগে’।’
‘স্বপ্নের হাতে’ এবং ‘নির্জন স্বাক্ষর’ কবিতা দুটো ‘প্রগতি’ পত্রিকায় ছয়-সাত বছর আগে প্রকাশিত হয়েছিল। পত্রিকায় প্রকাশের সময়ে ‘নির্জন স্বাক্ষর’-এর নাম ছিল ‘পুরোহিত’। প্ৰথম প্রকাশকাল অগ্রহায়ণ ১৩৪৩, ডিসেম্বর ১৯৩৬। প্রকাশক : জীবনানন্দ দাশ (গ্রন্থটির আখ্যাপত্রে ডি.এম. লাইব্রেরির নামঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছিল)। শ্রীগৌরাঙ্গ প্রেস, প্রিন্টার : শ্রীসুভাষচন্দ্র রায়, ৫ ও ৬ চিন্তামণি দাস লেন, কলিকাতা। উৎসর্গ : ‘বুদ্ধদেব বসুকে’। কাপড়ে বাঁধাই। জ্যাকেট সম্বলিত। প্রচ্ছদশিল্পী : অনিলকৃষ্ণ ভট্টাচার্য, ‘রবীন্দ্রনাথের চিত্রের অনুকরণে’ অঙ্কিত। মূল্য : দুই টাকা। রয়াল ৮ পেজি। পৃষ্ঠা : ১০ + ১০১।
বুদ্ধদেব বসুর প্রবল আগ্রহ ও পরিচর্যায় ‘ধূসর পাণ্ডুলিপি’ প্রকাশিত হয়। কবিতার সংখ্যা : ১৭।
কবিতাগুলোর শিরোনাম :
১. নির্জন স্বাক্ষর, ২. মাঠের গল্প, ৩ সহজ, ৪. কয়েকটি লাইন, ৫. অনেক আকাশ, ৬. পরস্পর, ৭. বোধ, ৮. অবসরের গান, ৯. ক্যাম্পে, ১০. জীবন, ১১. ১৩৩৩, ১২. প্রেম, ১৩. পিপাসার গান, ১৪. পাখিরা, ১৫. শকুন, ১৬. মৃত্যুর আগে, ১৭. স্বপ্নের হাতে।
কবিতাগুলোর রচনাকাল : ১৯২৫ থেকে ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত।
গ্রন্থটির ভূমিকায় জীবনানন্দ লেখেন—
আমার প্রথম কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছিল—১৩৩৪ সালে। কিন্তু সে বইখানা অনেকদিন হয় আমার নিজের চোখের আড়ালেও হারিয়ে গেছে; আমার মনে হয় সে তার প্রাপ্য মূল্যই পেয়েছে। ১৩৩৬ সালে আর একখানা কবিতার বই বার করবার আকাঙ্ক্ষা হয়েছিল। কিন্তু নিজ মনে কবিতা লিখে এবং কয়েকটি মাসিক পত্রিকায় প্রকাশিত করে সে ইচ্ছাকে আমি শিশুর মত ঘুম পাড়িয়ে রেখেছিলাম। শিশুকে অসময়ে এবং বার বার ঘুম পাড়িয়ে রাখতে জননীর যে রকম কষ্ট হয়, সেইরকম কেমন একটা উদ্বেগ—খুব স্পষ্টও নয়, খুব নিরুত্তেজও নয়—এই ক’বছর ধরে বোধ করে এসেছি আমি।
আজ ন’বছর পরে আমার দ্বিতীয় কবিতার বই বার হল। এর নাম ‘ধূসর পাণ্ডুলিপি এর পরিচয় দিচ্ছে। এই বইয়ের সব কবিতাই ১৩৩২ থেকে ১৩৩৬ সালের মধ্যে রচিত হয়েছে। ১৩৩২ সালে লেখা কবিতা, ১৩৩৬ সালে লেখা কবিতা—
প্রায় এগারো বছর আগের প্রায় সাত বছর আগের রচনা সব আজ ১৩৪৩ সালে এই বইয়ের ভিতর ধরা দিল। আজ সে সব মাসিক পত্রিকা আর নেই—’প্রগতি’, ‘ধূপছায়া’, ‘কল্লোল’–—এই বইয়ের প্রায় সমস্ত কবিতাই সেই সব মাসিকে প্রকাশিত হয়েছিল একদিন।
সেই সময়কার অনেক অপ্রকাশিত কবিতাও আমার কাছে রয়েছে— যদিও ‘ধূসর পাণ্ডুলিপি’র অনেক কবিতার চেয়েই তাদের দাবি একটুও কম নয়—তবুও সম্প্রতি আমার কাছে তারা ধূসরতর হয়ে বেঁচে রইল।
জীবনানন্দ দাশ
আশ্বিন ১৩৪৩
‘ধূসর পাণ্ডুলিপি’র দ্বিতীয় সংস্করণ (প্রথম সিগনেট সংস্করণ) হয় আশ্বিন ১৩৬৩ বঙ্গাব্দে। প্রকাশক : দিলীপকুমার গুপ্ত, সিগনেট প্রেস। ১০/২ এলগিন রোড, কলকাতা-২০। প্রচ্ছদ : সত্যজিৎ রায়। সহায়তা করেছেন পীযূষ মিত্র। ভূমিকা : অশোকানন্দ দাশ (আশ্বিন ১৩৬৩)। মূল্য : তিন টাকা। পৃষ্ঠা : ১২ + ৯৩।
প্রথম সংস্করণের ১৭টি কবিতাসহ আরও নতুন ১৪টি অপ্রকাশিত কবিতা এই দ্বিতীয় সংস্করণে স্থান পেয়েছে। নতুন কবিতাগুলো হল-
১. এই নিদ্রা, ২. পাখি, ৩. আঘ্রাণ, ৪. শীত শেষ, ৫. এই সব, ৬. তাই শান্তি, ৭. পায়রারা, ৮. এই শান্তি, ৯. বুনো হাঁস, ১০. বৈতরণী, ১১. নদীরা, ১২. মেয়ে, ১৩. নদী, ১৪. পৃথিবীতে থেকে।
৫.৩. ১৯৩৭ তারিখে জীবনানন্দ দাশ রবীন্দ্রনাথকে একটি অসামান্য চিঠি লিখে এক কপি ‘ধূসর পাণ্ডুলিপি’ পাঠালেন। উপহার লিপিতে লেখা ছিল—
‘পরম পূজনীয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয়ের/শ্রীচরণকমলেষু/শ্রদ্ধাবনত
জীবনানন্দ/২০শে ফাল্গুন, ১৩৪৩।’
রবীন্দ্রনাথ এই চিঠি ও উপহারের উত্তরে ১২.৩.৩৭ তারিখে লিখেছিলেন—
‘তোমার কবিতাগুলি পড়ে খুশি হয়েছি। তোমার লিখায় রস আছে, স্বকীয়তা আছে এবং তাকিয়ে দেখার আনন্দ আছে।’
‘কবিতা’ পত্রিকার চৈত্র ১৩৪৩ বঙ্গাব্দের সংখ্যায় বুদ্ধদেব বসু ‘ধূসর পাণ্ডুলিপি’-এর একটি অভিনন্দনমূলক আলোচনা লিখলেন। তিনি লিখেছেন-
‘জীবনানন্দ দাশকে আমি আধুনিক যুগের একজন প্রধান কবি বলে মনে করি এবং ‘ধূসর পাণ্ডুলিপি’ তাঁর প্রথম পরিণত গ্রন্থ। আমাদের দেশে সাহিত্য- সমালোচনার আদর্শ এখনও অত্যন্ত শিথিল; প্রতিভা হয় অবজ্ঞাত, তৃতীয় শ্রেণীর কবি অভিনন্দিত হয় অসাহিত্যিক কারণে; আমাদের মূল্যজ্ঞানহীন মূঢ়তাকে মাঝে মাঝে প্রবলভাবেই নাড়া দেয়া দরকার। আমাদের মাতৃভাষার সাহিত্যকে যাঁরা শ্রদ্ধা করে ভালবাসেন (আশা করি তেমন লোকের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে), তাঁরা ‘ধূসর পাণ্ডুলিপি’ নিজের গরজেই পড়বেন, কারণ এই বইয়ের পাতা খুললে তাঁরা এমন একজনের পরিচয় পাবেন, যিনি প্রকৃতই কবি এবং প্রকৃত অর্থে নতুন।’ [‘কবিতা’, চৈত্র ১৩৪৩]
বুদ্ধদেব বসু আরও লিখেছেন-
‘এটা উল্লেখযোগ্য যে, জীবনানন্দ একেবাইে রবীন্দ্রনাথের প্রভাবমুক্ত। ‘ তাঁর কল্পনা সর্বদাই নব নব রূপের সন্ধানী, তাঁর রচনাভঙ্গি গভীরতর পরিণতির দিকে ঝুঁকেছে।’ [‘কবিতা’, ২য় বর্ষ, ৩য় সংখ্যা]।
যে জীবনানন্দ সম্পর্কে বুদ্ধদেব বসু এত উচ্ছ্বসিত, সেই বুদ্ধদেব সম্পর্কে জীবনানন্দের মনোভাব কী রকম তা জানা যায় বুদ্ধদেবকন্যা মীনাক্ষী দত্তের লেখায়। মীনাক্ষী লিখেছেন-
‘আজীবন বাবা ছিলেন জীবনানন্দের পরম সুহৃদ ও উগ্র প্রচারক। — লিখেছেন কত না লেখা জীবনানন্দর কবিতা নিয়ে, তাঁকে আখ্যা দিয়েছেন নির্জনতম কবি’ বলে, বলেছেন ‘জীবনানন্দের দৃশ্যগন্ধময় নির্জন কান্তারে’ তিনি আনন্দে বিচরণ করেন। তিনি প্রায় জীবনানন্দের ফেরিওয়ালার কাজ করেছেন। যখন বুদ্ধদেব প্রতিটি সুযোগে প্রবল উৎসাহে জীবনানন্দের ‘মার্কেটিং’ করছেন, তখন বাবার কাছে বিপুলভাবে ঋণী হওয়ার কারণে তাঁর পুঞ্জীভূত ক্রোধ ও ক্ষোভ জীবনানন্দ তাঁর খাতায় কানে কানে বলছেন। তাঁর একটি উপন্যাসের চরিত্র (স্পষ্টতই জীবনানন্দের ‘অলটার ইগো’) তরুণ অধ্যাপক ও সাহিত্যরথী বুদ্ধদেব বসুকে ব্যঙ্গ করছেন ও তাঁর ‘সাফল্য’কে প্রায় স্থূলতা বলে চিত্রিত করছেন।’ [‘বুদ্ধদেব বসু ও তাঁর সারস্বত গোষ্ঠী’, মীনাক্ষী দত্ত, আজকাল, ২০০৯, পৃ. ৩৩]।
‘ধূসর পাণ্ডুলিপির সমালোচনা সূত্রে গিরিজাপতি ভট্টাচার্য (১৮৯৩–১৯৮১) ‘পরিচয়’ পত্রিকায় লিখলেন যে, আধুনিক কবিদের মধ্যে জীবনানন্দের স্থান প্রথম শ্রেণিতে। তিনি লিখেছেন—
‘জীবনানন্দের কবিতার বৈশিষ্ট্য শব্দ-স্পর্শ-রং-রূপ-গন্ধের অনুভূতিমুখর বাণী। এগুলো ঠিক সোজাসুজি ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য অনুভূতি নয়—তিনি কল্পনার সঞ্জীবনী মন্ত্রে অনুভূতিমুখর।’
সমর সেন (১৯১৬—–১৯৮৭) লিখলেন—
‘To a considerable extent he is free from Tagore’s influences, and his treatment of nature is unique in Bengali Poetry.’ ( 8 জুলাই ১৯৩৭)
[সূত্র : ‘অনুষ্টুপ’ : সমর সেন বিশেষ সংখ্যা, ১৯৮৮]
১৯৩৬ সালে জীবনানন্দ ২৫টির মতো ছোটগল্প লিখেছেন। এ বছর রচিত উল্লেখনীয় গল্পগুলো হল—কবিতা, কবিতা ও তারপরেও কবিতা’, ‘রক্তের ভিতর’, ‘মনোবীজ’, ‘কবিতা নিয়ে’, ‘রক্ত মাংসের স্পন্দন’।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বয়স ৭৫। লেখক Yeats Brown শান্তিনিকেতন পরিদর্শনে এলেন। মহাত্মা গান্ধী রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন এবং বিশ্বভারতীর ঘাটতি মেটানোর জন্যে বিড়লা কর্তৃক প্রদত্ত ৬০ হাজার টাকার চেক কবিকে প্রদান করলেন। মীরার কন্যা, কবির দৌহিত্রী নন্দিতার বিয়ে হল কৃষ্ণ কৃপালনীর সঙ্গে। বিয়েটা হল ব্রাহ্মমতে ও রেজিস্ট্রেশন করে। কবি এই নবদম্পতিকে ‘পত্রপুট’ কাব্যটি উৎসর্গ করলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রবীন্দ্রনাথকে ‘ডক্টর’ উপাধি প্রদান করল। বাংলা বানানের নিয়ম প্রস্তুতিতে সহায়তা করলেন কবি। রামকৃষ্ণদেবের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করলেন রবীন্দ্রনাথ। উপস্থিত থাকলেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মোৎসব সভায়। জওহরলাল নেহরু শান্তিনিকেতনে এসে কবির সঙ্গে দেখা করে গেলেন। ভারত বিভাগের বিরুদ্ধে গণ-আবেদনে প্রথম স্বাক্ষর করলেন রবীন্দ্রনাথ।
বাংলা প্রদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে প্রথম ভাষাভিত্তিক উড়িষ্যা রাজ্যের জন্ম। প্রতিষ্ঠিত হল নিখিল ভারত প্রগতি সেবক সংঘ। বাংলায় গবেষণাপত্র লিখে বিমানবিহারী মজুমদার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম পিএইচ.ডি ডিগ্রি লাভ করলেন। মজুরি পরিষদ আইন হল। ৩১ অক্টোবর কলকাতায় ‘দৈনিক আজাদ’ প্রকাশিত হল।
ইংল্যান্ডের রাজা পঞ্চম জর্জের মৃত্যু হলে তাঁর বড় ছেলে অষ্টম এডওয়ার্ড রাজা হলেন। কিন্তু তিনি আমেরিকান মিসেস সিমসনকে বিয়ে করে সিংহাসন ত্যাগ করলেন। ফলে তাঁর ছোট ভাই ষষ্ঠ জর্জ রাজা হন।
জার্মান ও ইতালির মধ্যে অক্ষচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। রাইন প্রদেশ পুনরধিকার করেন হিটলার। মিশরের সঙ্গে ব্রিটিশদের সন্ধি হয়। মিশর স্বাধীন দেশের স্বীকৃতি পেলেও সুয়েজ খালের নিয়ন্ত্রক রইল ব্রিটিশ গভর্নমেন্ট। উইলিংডন পদত্যাগ করলে লর্ড লিনলিখগো উক্ত পদে নিযুক্তি পান।
ফ্যাসিবাহিনীর হাতে লোরকা নিহত হলেন।
এ বছর জন্মালেন তারাপদ রায়, জ্যোতির্ময় দত্ত, আল মাহমুদ, প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত, দেবীপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়, সামসুল হক, জিয়া হায়দার, দিলারা হাশেম, ফজল শাহাবুদ্দীন, বশীর আল হেলাল, বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর, শওকত আলী, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, আবু হেনা মোস্তফা কামাল।
এ বছর পরলোক গমন করেছেন ম্যাক্সিম গোর্কি, মুন্সী প্রেমচাঁদ, পিরানদেল্লো, ফেদোরিকো গার্সিয়া লোরকা, কৃষ্ণকুমার মিত্র, ডাক্তার লুৎফর রহমান
এ বছর সাহিত্যে নোবেল প্রাইজ পান ইউজিন গ্লাডস্টোন ও’নীল (১৮৮৮–১৯৫৩)। আমেরিকান নাট্যকার তিনি
প্রাইজ দেওয়ার কারণ হিসেবে নোবেল কমিটি লেখেন—
‘For the power, honesty and deep felt emotions of his dramatic works, which embody an original concept of tragedy’.
ও’নীলের উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হল—’Day’s without end’, ‘The leman Cometh’, ‘Long days Journey into Night’, ‘Mourning Becomes Electra’.
প্রকাশিত গ্রন্থ : বের হয় রবীন্দ্রনাথের ‘চিত্রাঙ্গদা’, ‘পত্রপুট’, ‘জাপানে পারস্যে’, ‘শ্যামলী’, ‘সাহিত্যের পথে’, ‘ফাল্গুনী’। ইংরেজিতে প্রকাশ পায় ‘এডুকেশন ন্যাচারালাইজড’, ‘কালেকটেড পোয়েম্স অ্যান্ড প্লেজ’।
প্রকাশিত হয় অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের ‘প্রিয়া ও পৃথিবী’, সরোজকুমার রায়চৌধুরীর কালো ঘোড়া’, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পদ্মানদীর মাঝি’, ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’, ‘জীবনের জটিলতা’, সঞ্জয় ভট্টাচার্যের ‘সাগর ও অন্যান্য কবিতা’, আশুতোষ ভট্টাচার্যের ‘বাংলা মঙ্গলকাব্যের ইতিহাস’, মোহিতলাল মজুমদারের ‘স্মরগরল’, যতীন্দ্রমোহন বাগচীর ‘মহাভারতী’। বের হল কীনস্-এর ‘জেনারেল থিয়োরি অব এমপ্লয়মেন্ট’, ‘ইন্টারেস্ট অ্যান্ড মানি’।