1 of 2

১৯২৯। বয়স ৩০ বছর

১৯২৯। বয়স ৩০ বছর 

এ বছর খুলনার বাগেরহাট প্রফুল্লচন্দ্র কলেজে মাত্র মাস তিনেকের জন্যে অধ্যাপনা করেন জীবনানন্দ। ভালো না লাগায় চাকরি ছেড়ে দেন। সিটি কলেজের চাকরিটা যাওয়ার পর দেড় বছর বেকারজীবন কাটিয়েছেন জীবনানন্দ। তার পর সদ্য প্রতিষ্ঠিত বাগেরহাট কলেজে যোগদান করেন তিনি। কলেজটির প্রতিষ্ঠার পেছনে ‘হাভেলি পরগণা সোশ্যাল রি-ইউনিয়ন’ নামের এক সংঘের বিশেষ অবদান ছিল। এই সংঘের প্রধানরা আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়কে খুব ভালোবাসতেন। তিনি সংঘটির পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। পরবর্তীকালে তাঁর নামানুসারে বাগেরহাট কলেজের নাম হয় প্রফুল্লচন্দ্র কলেজ। 

প্রফুল্লচন্দ্র কলেজের ইংরেজির অধ্যাপক মনোরঞ্জন কর। করবাবু ছুটি নিয়ে কলকাতার বঙ্গবাসী কলেজে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁরই পদে অস্থায়ী ভিত্তিতে জীবনানন্দ যোগদান করেছিলেন। ২ মাস ২০ দিন মাত্র তিনি ওই কলেজে পড়িয়েছিলেন। স্বেচ্ছায় চাকরিটা ছেড়েছিলেন তিনি। 

প্রফুল্লচন্দ্র কলেজের প্রাকৃতিক পরিবেশ ছিল মনোমুগ্ধকর। কিন্তু কলেজের সঙ্গে যুক্ত মানুষদের ব্যবহার ভালো ছিল না। শেষ পর্যন্ত মানিয়ে নিতে না পেরে চাকরিটা ছাড়লেন তিনি। চাকরি ছেড়ে বরিশালে বাবার সংসারেই ফিরে গিয়েছিলেন তিনি। 

পরে কলকাতায় ফিরে প্রেসিডেন্সি বোডিং-এ বাস করতে থাকেন। এ সময় অর্থ রোজগারের প্রয়োজনে গৃহশিক্ষকতা করেছেন। চাকরির জন্যে বিভিন্ন স্থানে আবেদন করেছেন, কিন্তু তেমন কোনো চাকরির আশ্বাস পাননি। 

২৯ ডিসেম্বর দিল্লির রামযশ কলেজে ইংরেজির অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন জীবনানন্দ। পুরনো দিল্লি থেকে দূরে শুষ্ক অনুর্বর এক টিলা। ‘কালা পাহাড়’ নাম। পরবর্তীতে এই পাহাড়ের নাম হয় ‘আনন্দ পর্বত।’ বসতিহীন, বনজঙ্গলে সমাকীর্ণ, সাপখোপ-জন্তু জানোয়ার-চোরডাকাত অধ্যুষিত ওই ‘আনন্দ পর্বতে’ লালা রায় কেদারনাথ (১৮৫৯-১৯৪২) পিতার নামে রামযশ কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। চাকরিটা পান সে কলেজের তদানীন্তন উপাধ্যক্ষ সুকুমার দত্তের সহায়তায়; সুকুমার দত্ত অশ্বিনীকুমার দত্তের ভাইপো ছিলেন। সুকুমার দত্তের সঙ্গে জীবনানন্দ-পরিবারের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তাছাড়া বেকার এমএ পাস জীবনানন্দকে চাকরি দিলে তাঁর সুনাম বৃদ্ধি পাবে, এই বাসনায় সুকুমার দত্ত জীবনানন্দকে অধ্যাপনার চাকরিটা দিয়েছিলেন। 

সুকুমার দত্ত দাপুটে, কড়া প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। কবিতাও লিখতেন তিনি। মাঝে মধ্যে নিজের বাড়িতে সাহিত্য আসর বসাতেন। কবিতা লেখার সূত্র ধরে সুকুমার দত্তের সঙ্গে জীবনানন্দের একটা সখ্য গড়ে উঠতে পারত। কিন্তু আদতে তা হয়নি। রামযশ কলেজের অধিকাংশ অধ্যাপক ছিলেন বাঙালি। তাঁদের কাছ থেকেও জীবনানন্দ বিচ্ছিন্ন ছিলেন। জীবনানন্দ সুটবুট পরেন না, লাজুক প্রকৃতির অসামাজিক মানুষ। 

ক্লাসে দুর্বিনীত ছাত্রদের আয়ত্তে আনতে পারতেন না তিনি। ছাত্রদের পীড়ন সহ্য করতে হতো তাঁকে। তাঁর হিন্দি উচ্চারণ ছিল অপটু। বিড়ম্বিত জীবনানন্দ অত্যন্ত অসহায় বোধ করতেন রামযশ কলেজে। 

ক্লাসে গিয়ে বসার আগে পেছন থেকে অমার্জিত ছাত্ররা চেয়ার সরিয়ে ফেলত। পড়ানোর মাঝখানে ছাত্ররা হুলুড় করে উঠত। সহকর্মী অধ্যাপক ড. নিকুঞ্জবিহারী বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর পেছনে লেগে থাকতেন। জীবনানন্দকে ‘পোয়েট সাহেব’ সম্বোধন করে তিক্তবিরক্ত করে তুলতেন। অমার্জিত একজন ছাত্রের নাম ছিল–এ. হামিদ। 

মনোযোগী আগ্রহী ভদ্র ছাত্রও ছিল ক’জন। তাদের মধ্যে একজন—স্বরূপ সিংহ। শিক্ষক বোর্ডিং-এর নিজের কক্ষটিতে স্বেচ্ছানির্বাসনে থেকেও তিনি মুক্তি পাননি। ছাত্রদের অসহনীয় ব্যবহার, সুকুমার দত্তের অসন্তুষ্টি—এসব কারণে জীবনানন্দ বুঝে গিয়েছিলেন, দিল্লির রামযশ কলেজে তাঁর দিন শেষ হয়ে এসেছে। এই সময় তাঁর বিরুদ্ধে একটা সাংঘাতিক অভিযোগ উঠল, তিনি ‘দি স্টেটস্ম্যান’ পত্রিকা এবং বদলেয়রের কবিতা পড়েন। প্রভাস ঘোষ ছিলেন রামযশ কলেজের ইংরেজি বিভাগের একজন প্রভাবশালী অধ্যাপক। তিনি প্রেমচাঁদ রায় চাঁদ স্কলার ছিলেন। সুকুমার দত্তের সঙ্গে তাঁর দহরম মহরম ছিল। প্রভাস ঘোষের সঙ্গে জীবনানন্দের বাইরে বাইরে বন্ধুত্ব ছিল। কিন্তু ভেতরে ড. ঘোষ ছিলেন জীবনানন্দের ভীষণ অনিষ্ঠকারী। একদিন তিনি জীবনানন্দের কক্ষে ঢুকে তাঁর টেবিল থেকে ‘দি স্টেটস্ম্যান’ পত্রিকা আর বদলেয়রের কবিতার বইটা নিয়ে গেলেন। উপস্থাপন করলেন সুকুমার দত্ত ও রায় কেদারনাথের সামনে। বললেন— জীবনানন্দ স্বদেশপ্রেমী নন, নইলে কেন শাসকশ্রেণির পত্রিকা পয়সা দিয়ে কিনে পড়েন; তিনি অসদাচারী, নইলে কেন বদলেয়রের অশ্লীল কবিতা পড়েন। কলেজ কর্তৃপক্ষ এসব নোংরা অভিযোগগুলো গিলল। এবং জীবনানন্দকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিল। কিন্তু গভর্নিং বডির মিটিং না হওয়া পর্যন্ত তাঁর চাকরি ঝুলে থাকে। শেষ পর্যন্ত পনের দিনের বেতন না দিয়ে জীবনানন্দকে রামযশ কলেজ থেকে বিদায় করা হয়। 

এখানে সবাই তাঁর শত্রু ছিলেন এমন নয়। বন্ধুও ছিলেন কেউ কেউ। তাঁদের একজন হলেন—গোপালচন্দ্র ঘোষ। অন্যজন সুধীরকুমার দত্ত। তিনি দিল্লির রায়সিনা হোটেলে থাকতেন। সুধীরকুমারের সঙ্গে প্রায় প্রতি সন্ধ্যায় দেখা হতো জীবনানন্দের। প্রভাতকুমার দাস তাঁর ‘জীবনানন্দ দাশ’ গ্রন্থের ৪০ নম্বর পৃষ্ঠায় (তৃতীয় সংস্করণ, ২০১৩) লিখেছেন, ‘তাঁরই (সুধীরকুমার দত্ত) আগ্রহে দিল্লির পতিতাপল্লির অভিজ্ঞতাও সঞ্চয় করেছেন জীবনানন্দ। শুধু তাই নয়, সুধীর দত্তের আতিথ্যে-রাত্রিও কাটিয়েছেন।’ 

দিল্লির রামযশ কলেজে মাত্র মাস চারেক অধ্যাপনা করেন জীবনানন্দ। ১৯৩০-এর এপ্রিল মাস পর্যন্ত চাকরি করেন সেখানে। 

এরপর বরিশালে এলে পারিবারিক উদ্যোগে তাঁর বিয়ের আয়োজন করা হয়। ফলে জীবনানন্দ আর দিল্লি ফিরে যাননি। তাতে রামযশ কলেজের চাকরি যায়। পরবর্তী ৪/৫ বছর জীবনানন্দ বেকার জীবনযাপন করেন। 

বুদ্ধদেব বসু ‘বাংলা কবিতার ভবিষ্যৎ’ শিরোনামের একটি নাট্যাঙ্গিকের লেখায় জীবনানন্দের ‘কয়েকটি লাইন’ কবিতা থেকে উদ্ধৃত করে তাঁর কবিতার সরল নিরলঙ্কার ঘরোয়া ভাষার এবং ক্লান্ত উদাস সুরের বিশিষ্টতা তুলে ধরেন— 

‘তিনি যে একজন খাঁটি কবি তার প্রমাণ স্বরূপ আমি তোমাকে তাঁর একটি লাইন বলছি—’আকাশ ছড়ায়ে আছে নীল হয়ে আকাশে আকাশে।’ …আকাশের অন্তহীন নীলিমার দিগন্ত বিস্তৃত প্রসারের ছবিকে একটি মাত্র লাইনে আঁকা হয়েছে। একেই বলে Magic line. আকাশ কথাটার পুনরাবৃত্তি করবার জন্যই ছবিটি একেবারে স্পষ্ট, সজীব হয়ে উঠেছে; শব্দের মূল্যবোধের এমন পরিচয় 

খুব কম বাঙালী কবিই দিয়েছেন।’ [‘প্রগতি’, ভাদ্র ১৩৩৬] 

বুদ্ধদেব বসুর বক্তব্য যতীন্দ্রনাথ সেনগুপ্তের (১৮৮৭–১৯৫৪) পছন্দ হয়নি। তিনি বললেন—এটা হল ‘অক্ষমতাকে বাহবা দেওয়া।’ ‘বোধ’ কবিতা থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি লিখলেন যে, জীবনানন্দের ভাষা ‘ক্ষণিকার ভাষার উন্নত সংস্করণ। 

যতীন্দ্রনাথ লিখলেন— 

‘এ ভাষা সরল নয়, সহজ নয়; কারণ চেষ্টা করেও অর্থ বোধগম্য হয় না।’ 

[‘জীবনানন্দ দাশ : বিকাশ প্রতিষ্ঠার ইতিবৃত্ত’]। 

‘বোধ’ কবিতাটি বিষয়ে ‘শনিবারের চিঠি’র মন্তব্য- 

‘কবিতাটির নামকরণে বোধ হয় কিছু ভুল আছে, ‘বোধ’ না হইয়া কবিতাটির নাম ‘গোদ’ হইবে।’ 

‘প্রগতি’র ১৩৩৬ বঙ্গাব্দের ভাদ্র সংখ্যায় জীবনানন্দের ‘বোধ’ কবিতাটি ছাপা হয়। ‘শনিবারের চিঠি’র আশ্বিন সংখ্যায় কবিতাটি বিষয়ে অশালীন মন্তব্য লেখা হয় — 

‘বাংলার জনসাধারণ খবর রাখেন কিনা বলিতে পারি না, সম্প্রতি কিছুকাল হইতে ‘পূর্ববঙ্গ সাহিত্য’ নামক এক নূতন সুবৃহৎ এবং সম্পূর্ণ সাহিত্য গড়িয়া উঠিয়াছে। এই নব সাহিত্যেও হুইটম্যান শ্রীজীবনানন্দ (জীবানন্দ নহে) দাশের কিছু বাণী আমাদের মর্ম স্পর্শ করিয়াছে। এই সকল বাণীর প্রচার আবশ্যক। … কবির হৃদয়ের মাংসে যে কুঁজ ও গলগণ্ড ফলিয়াছে তাহা স্বীকার করা – বাণী বৈ কী!… চালকুমড়া ফলার মতো ইহা মাংস ফলার কবিতা।… সেদিন প্লানচেটে হুইটম্যানকে ডাকিয়া জিজ্ঞাসা করা হইয়াছিল, আপনি এখন কোথায় আছেন? অনেক সাধ্যসাধনার পর জবাব পাওয়া গিয়াছিল, কোথায় আছি বলিতে পারিব না। কিন্তু সম্প্রতি বড় লজ্জায় পড়িয়াছি। কারণ জিজ্ঞাসা করাতে তিনি বলিলেন, তোমাদের দেশের লেখকরা শ্রীজীবনানন্দ (জীবানন্দ নয়!) দাশগুপ্তের ও আমার নাম একত্র করিয়া আমাকে বড় লজ্জিত করিতেছে। তিনি মহাপুরুষ! তাঁহার মাথায় ভিতরে ‘বোধ’ কাজ করে – আমি সামান্য ব্যক্তি। তাঁহাদিগকে বারণ করিয়া দিলে ভালো হয়।’ 

রবীন্দ্রনাথের বয়স ৬৮। ব্রাহ্মসমাজের শতবার্ষিকী উপলক্ষে কলকাতায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ধর্ম-মহাসম্মেলনের উদ্বোধন করলেন রবীন্দ্রনাথ। 

১ মার্চ পুনরায় বিদেশ যাত্রা করলেন কবি, কানাডার জাতীয় শিক্ষা পরিষদের ত্রৈবার্ষিক সম্মেলনে শিক্ষা বিষয়ে ভাষণ দেওয়ার জন্যে। সঙ্গে গেলেন অপূর্বকুমার চন্দ ও সুধীন্দ্রনাথ দত্ত। কানাডা থেকে আমেরিকায় ফিরে বহু শহর ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষণ দিলেন রবীন্দ্রনাথ। কিন্তু পাসপোর্ট নিয়ে গণ্ডগোল হবার কারণে বিরক্ত হয়ে আমেরিকা ত্যাগ করলেন কবি। জাপান হয়ে কলকাতায় ফিরলেন জুলাই-এ। 

চট্টগ্রামের কাউলিতে গ্রাম্য ইউনিয়ন ক্লাব কর্তৃক নজরুল সংবর্ধিত হন। চট্টগ্রামে এসে হাবিবুল্লাহ বাহার ও শামসুন্নাহার—দুই ভাইবোনের আতিথ্য গ্রহণ করলেন নজরুল। বন্ধু মুজফ্ফর আহমদের জন্মস্থান সন্দ্বীপ যান। কলকাতার অ্যালবার্ট হলে নজরুলকে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হয়। এই সভায় সভাপতিত্ব করেন আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় ও প্রধান অতিথি হন সুভাষচন্দ্র বসু। এই সভার উদ্যোক্তা ছিলেন মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, আবুল কালাম শামসুদ্দীন, আবুল মনসুর আহমদ, হাবিবুল্লাহ বাহার প্রমুখ। 

এন্টালির ৮/১ পানবাগান লেনে জানুয়ারিতে নজরুলপুত্র সব্যসাচীর জন্ম। ডাক নাম— সানি, সান ইয়াৎ সেনের নামানুসারে নজরুল পুত্রের এ নাম রাখেন। 

ডিসেম্বরে (অগ্রহায়ণ ১৩৩৬) সংগীত সংকলন ‘চোখের চাতক’ প্রকাশিত হয়। নজরুল বইটির উৎসর্গ পত্রে লেখেন— 

‘কল্যাণীয়া বীণাকণ্ঠী শ্রীমতী প্রতিভা সোম জয়যুক্তাসু। 

লাহোর ষড়যন্ত্র মামলা হয় এবছর। পার্লামেন্টের মধ্যে ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ ধ্বনি দিলে ভগৎ সিং ও বটুকেশ্বর দত্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। লাহোর জেলে ৬৩ দিন অনশন করার পর যতীন দাসের মৃত্যু হয়। 

কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ তাঁর বিখ্যাত ১৪ দফা দাবি উত্থাপন করেন। ভারতীয় কংগ্রেস সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করে। 

কলকাতায় নিয়মিত বিমান উঠানামা ও এয়ারমেল সার্ভিস শুরু হয়। বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন পাস হয়। 

বিপ্লবীদের আক্রমণে কলকাতার পুলিশ কমিশনার চার্লস টেগার্ট ও ঢাকায় পুলিশ অফিসার মি. হডসন আহত হন। 

বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা শুরু হয়। অধিক ফলনে শস্যের দাম পড়ে যায়। শিল্পদ্রব্য বাজার হারায়। ইউরোপের নামজাদা কয়েকটি ব্যাংক ফেল করে। 

দুই কোটি ডলার ব্যয়ে উত্তর আমেরিকার শিকাগো নগরে ৪২ তলাবিশিষ্ট জগদ্বিখ্যাত নাট্যশালার নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়। 

এ বছর জন্মগ্রহণ করেন শামসুর রাহমান, শান্তিকুমার ঘোষ, কল্যাণ সেনগুপ্ত, গাজীউল হক, দ্বিজেন শর্মা, জাহানারা ইমাম, উৎপল দত্ত। 

পরলোক গমন করলেন অভিনেতা অমৃতলাল বসু। হোফমান স্টালের মৃত্যু হয় এ বছর। 

এ বছর সাহিত্যে নোবেল প্রাইজ পান টমাস ম্যান (১৮৭৪–১৯৫৫)। উপন্যাসকার। জার্মানির অধিবাসী তিনি। 

তাঁকে নোবেল প্রাইজ দেওয়ার কারণ হিসেবে নোবেল কমিটি লেখেন—

‘Principally for his great novel – ‘Budden Brooks’ which had won steadily increased recognition as one of the classic works of contemporary literature.’ 

টমাস ম্যানের বিখ্যাত গ্রন্থগুলো হল-’বাডেন ব্রুকস্’, ‘দ্য ম্যাজিক মাউন্টেন’, ‘ডক্টর ফস্টাস’, ‘রয়েল হাইনেস’, ‘ডেথ ইন ভেনিস’, ‘মারিও অ্যান্ড ম্যাজিসিয়ান’ ইত্যাদি। 

প্রকাশিত গ্রন্থ : রবীন্দ্রনাথের ‘যাত্রী’, ‘পরিত্রাণ’, ‘যোগাযোগ’, ‘তপসী’, ‘মহুয়া’ প্রকাশ পায়। ইংরেজিতে বের হয় ‘থটস্ ফ্রম টেগোর’। প্রকাশিত হয় জসীম উদ্দীনের ‘নকসী কাঁথার মাঠ’, অন্নদাশঙ্কর রায়ের ‘রাখী’, বুদ্ধদেব বসুর ‘সাড়া’, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পথের পাঁচালী’, জগদীশ গুপ্তের ‘অসাধু সিদ্ধার্থ’, নজরুলের ‘সন্ধ্যা’, ‘চক্রবাক’, সজনীকান্ত দাসের ‘পথ চলতে ঘাসের ফুল’। 

প্রকাশ পায় রবার্ট ব্রিজেসের ‘টেস্টামেন্ট অব বিউটি’, বার্নার্ড শ’র ‘দি অ্যাপল কার্ট’, রোমা রোলার ‘রামকৃষ্ণ জীবনী’। 

নরেন্দ্রনারায়ণ চক্রবর্তী সম্পাদিত ‘বিদ্রোহী আয়ারল্যান্ড’, ধীরেন্দ্রনাথ সিংহের ‘গল্পে ও চিত্রে ছেলেমেয়েদের কংগ্রেস’ নামক বই দু’টি নিষিদ্ধ হয়। 

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *