1 of 2

১৯০২। বয়স ৩ বছর

১৯০২। বয়স ৩ বছর 

খুব ছোটবেলায় জীবনানন্দের লিভারের অসুখ হয়েছিল। প্রায় মর মর অবস্থা। কুসুমকুমারী মুমূর্ষু পুত্রকে নিয়ে নানা স্বাস্থ্যকর স্থানে গেলেন। ঘুরলেন লক্ষ্ণৌ, আগ্রা। সঙ্গে ছিলেন কুসুমকুমারীর পিতা চন্দ্ৰনাথ দাশ। 

রবীন্দ্রনাথের বয়স ৪১। নভেম্বরের ২৩ তারিখে অ্যাপেন্ডিসাইটিসে (রবীন্দ্রনাথের অনুমান ) রবীন্দ্রপত্নী মৃণালিনী দেবীর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ২৯। পত্নীবিয়োগের পর রবীন্দ্রনাথ নিরামিষাশী হলেন। মৃণালিনী দেবীর স্মৃতির উদ্দেশে রবীন্দ্রনাথ ‘স্মরণ’ কবিতাগুচ্ছ রচনা করেন। ৩৯ বছর বয়সে স্বামী বিবেকানন্দ মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর শোকসভায় রবীন্দ্রনাথ সভাপতিত্ব করেন; প্রধান বক্তা ছিলেন ভগিনী নিবেদিতা। ‘মন্দির’ গল্পের জন্যে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ‘কুন্তলীন পুরস্কার’ পেলেন। প্রথম ইলেকট্রিক ট্রাম চালু হল মার্চের ২৭ তারিখে, এসপ্ল্যানেড থেকে খিদিরপুর 

লর্ড কার্জন বিতর্কিত শিক্ষানীতি ঘোষণা করেন। জ্যোতিরিন্দ্রনাথ আকারমাত্রিক স্বরলিপির উদ্ভাবন করলেন। চা বাগানের অত্যাচারী ইংরেজদের বিরুদ্ধে মামলা করায় বিপিনচন্দ্র পাল আসাম থেকে বহিষ্কৃত হলেন। সতীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায় কর্তৃক ‘ডন সোসাইটি’ স্থাপিত। প্রমথনাথ মিত্রের উদ্যোগে ‘অনুশীলন সমিতি’ নামক একটি গুপ্ত সমিতি গঠিত হল। ঢাকায় প্রথম চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হল। জগন্নাথ কলেজের অডিটোরিয়ামে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। 

বঙ্গদেশের দ্বাদশ লেপ্টেনান্ট গভর্নর স্যার জন উডবার্ন কলকাতার লাটভবনে মারা যান। স্যার এন্ড্রু ফেজার উক্ত পদে নিযুক্তি পান। 

পাশ্চাত্য প্রত্নতত্ত্ববিদ মর্গান পারস্যের প্রাচীন রাজধানী সুমা থেকে প্রায় ৫ হাজার বছর আগের সম্রাট নমরুদের এক শিলালিপি আবিষ্কার করেন। এতে আইনের ২৮২টি ধারা লিপিবদ্ধ ছিল।

বুয়র দলপতিগণ আত্মসমর্পণ করলে বুয়র যুদ্ধের অবসান হয়। এ জন্যে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সর্বত্র শান্তি উৎসব পালিত হয়। এ বছর ব্রিটিশ সম্রাট সপ্তম এডওয়ার্ডের রাজ্যাভিষেক উৎসব সম্পন্ন হয়। 

ইংল্যান্ড ও জাপানের মধ্যে মিত্রতা চুক্তি সম্পাদিত হয়। ট্রান্স সাইবেরিয়ান রেলপথ খোলা হয়।

এ বছর জন্মেছেন মনীশ ঘটক, গোপাল হালদার ও ‘বাংলার পালাপার্বণ’ গ্রন্থের রচয়িতা চিন্তাহরণ চক্রবর্তী। মারা গেলেন স্বামী বিবেকানন্দ, এমিল জোলা। 

এ বছর সাহিত্যে নোবেল প্রাইজ পান জার্মানির থিওডর মমসেন (১৮১৭–১৯০৩)। রোমের ইতিহাস লিখে তিনি এই পুরস্কার পান। 

তাঁর সম্পর্কে নোবেল কমিটির মন্তব্য— 

‘The greatest living master of the art of historical writing, with special reference to his monumental work – ‘The History of Rome.’

তাঁর বিখ্যাত রচনা—’হিস্ট্রি অব রোম’। 

প্রকাশিত গ্রন্থ : গিরীন্দ্রমোহিনী দাসীর ‘অর্ঘ্য’, রজনীকান্ত সেনের ‘বাণী’ প্রকাশিত হল। প্ৰকাশ পেল হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর ‘মেঘদূত ব্যাখ্যা’। ম্যাক্সিম গোর্কির ‘লোয়র ডেপথস্’, জগদীশচন্দ্রের গবেষণাপত্র ‘রেসপন্সেস ইন দি লিভিং অ্যান্ড নন লিভিং’ আর আচার্য প্রফুল্লচন্দ্রের ‘হিস্ট্রি অব হিন্দু কেমিস্ট্রি’ বের হল। 

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *