১৯১৮। বয়স ১৯ বছর
বিএ পড়বার উদ্দেশ্যে জীবনানন্দ দাশ কলকাতায় এসে প্রাচীন ও অভিজাত প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন। আবাসিক ছিলেন অক্সফোর্ড মিশন হোস্টেলের। সত্যানন্দের সঙ্গে বরিশাল মিশনের সুসম্পর্কের সুবাদে জীবনানন্দ অক্সফোর্ড মিশন হোস্টেলে থাকার সুযোগ পেয়েছিলেন।
রবীন্দ্রনাথের বয়স ৫৭। আন্তঃপ্রাদেশিক ভাব বিনিময়ের ভাষা হিসেবে হিন্দিকে সমর্থন করে শান্তিনিকেতন থেকে কবি গান্ধীকে পত্র দিলেন। এও জানালেন যে, জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার পক্ষপাতী তিনি নন। অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমন্ত্রণ পেলেও শেষ পর্যন্ত কবির যাওয়া হল না। এ সময় চীনে পিয়ার্সনকে ব্রিটিশ পুলিশ গ্রেপ্তার করে ইংল্যান্ডে পাঠিয়ে দিল।
১৩ মে বড় মেয়ে বেলার মৃত্যু হয়। ‘ভানুসিংহের পত্রাবলী’ নামক পত্রগুলো কবি রাণু মুখার্জীকে লিখছেন। প্যাটেলের ‘অসবর্ণ বিবাহ বিলে’র সমর্থনে খোলা চিঠি লেখেন রবীন্দ্রনাথ। বিশ্বভারতীর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হল ২৩ ডিসেম্বর।
করাচির সেনানিবাসে ‘ব্যথার দান’ গল্পটি লিখলেন নজরুল।
কলকাতায় বিজ্ঞান কলেজ স্থাপিত হল। ‘মন্টেগো-চেমসফোর্ড রিপোর্ট’ প্রকাশিত হলে ভারতীয়রা অসন্তুষ্ট হয়। খিলাফৎ আন্দোলনের ব্যাপারে বাঙালি মুসলমানরা নিস্পৃহতা প্রকাশ করে।
প্রথম সর্বভারতীয় অনুন্নত শ্রেণির সম্মিলন অনুষ্ঠিত হয়। এই সম্মিলনের সূত্র ধরেই গান্ধীজীর ‘হরিজন আন্দোলন’ গড়ে ওঠে ।
রাশিয়ায় জার নিহত হন, কমিউনিস্টদের আত্মপ্রকাশ ঘটে। বলশেভিক গভর্নমেন্টের সঙ্গে জার্মানির সন্ধি হয়। ব্রিটেনে নারীর ভোটাধিকার স্বীকৃতি পায়।
জার্মানির বিমানবহর লন্ডন ও প্যারিস নগরে বোমাবর্ষণ করলে বহুলোক হতাহত হয়। জার্মানসৈন্য বেলজিয়ামের উপকূলভাগ ত্যাগ করে। ইংরেজসৈন্য সিরিয়ার আলেপ্পো নগর অধিকার করে। মিত্রবাহিনী কনস্টান্টিনোপল অধিকার করে। হাঙ্গেরি অস্ট্রিয়ার অধীনতা অস্বীকার করল। মিত্রপক্ষ জার্মানিতে প্রবেশ করল। অবরোধের ফলে জার্মানির অভ্যন্তরে বিপুল অব্যবস্থার সৃষ্টি হল। সমগ্র জার্মানিতে বিপ্লব হল। জার্মান-সম্রাট কাইজার দ্বিতীয় উইলিয়াম সপরিবারে হল্যান্ড পলায়ন করলেন। ইউরোপের সকল যুদ্ধক্ষেত্রেই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগুন নির্বাপিত হল।
এ বছর জন্মেছেন নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়, গোপাল ভৌমিক, ফররুখ আহমদ, তালিম হোসেন, সরদার জয়েনউদ্দীন।
পরলোক গমন করলেন স্বভাবকবি গোবিন্দ দাস, স্যার গুরুদাস বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের কারণে এ বছর কোনো নোবেল প্রাইজ দেওয়া হয়নি।
প্রকাশিত গ্রন্থ ও পত্রিকা : রবীন্দ্রনাথের ‘গুরু’, ‘পলাতকা’ প্রকাশিত হল। ইংরেজিতে বের হল ‘লাভার্স গিফ্ট অ্যান্ড ক্রসিং’, ‘মাসি অ্যান্ড আদার স্টোরিজ’, ‘স্টোরিজ ফ্রম টেগোর’, ‘প্যারটস্ ট্রেনিং’। প্রকাশ পেল জলধর সেনের ‘এক পেয়ালা চা’, শিবনাথ শাস্ত্রীর ‘আত্মচরিত’, যোগীন্দ্রনাথ সরকারের ‘ছোটদের রামায়ণ’, কাজী আবদুল ওদুদের ‘নদীবক্ষে’, শরৎচন্দ্র চট্টোপধ্যায়ের ‘দত্তা’, নিরুপমা দেবীর ‘শ্যামলী’
মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন সম্পাদিত ‘সওগাত’ পত্রিকা প্রকাশিত হল।