ঈর্ষা

ঈর্ষা

আচমকা খাটের পাশের টিপয়টায় রাখা মোবাইলটা বেজে উঠতেই মনীষা প্রায় হিস্টিরিয়া রুগির মতো ধরফড়িয়ে উঠে ফোনটা ছোঁ মেরে তুলে নিল, এক সেকেন্ডেরও কম সময়ের মধ্যে রিসিভ করে আড়চোখে পাশে অনেক কষ্টে ঘুমপাড়ানো মেয়ের দিকে তাকিয়ে চাপাস্বরে বলল, ”একটু ধর ছোট।”

ডাইনিং-এ এসে স্বাভাবিক গলায় মনীষা বলল, ”হ্যাঁ বল। আরে রিম্পিকে সবে অনেক কষ্টে ঘুম পাড়িয়েছি, এখন যদি আবার উঠে পড়ে, তাহলেই আমার সব কাজের দফারফা!”

ওপাশ থেকে মালবিকা বলল, ”বুঝেছি। আমি একবার ভাবলাম যে জামাইবাবুর ফোনে করি তারপর ভাবলাম জামাইবাবু যদি বাজারে যান? তাই তোকেই করলাম।” একমুহূর্তের জন্য দম নিয়ে আবার বলল, ”আর এদিকে এখানে যা নাটক হচ্ছে শুধু কাজ কেন, ঘুম খিদে সবকিছুরই এবার দফারফা হবে ছোড়দি!”

মনীষা প্রদীপের দিকে তাকাল। রোববারের দুপুর। খাওয়াদাওয়া সেরে প্রদীপ একরাশ খবরের কাগজ নিয়ে ডাইনিং-এর মাঝখানে উবু হয়ে বসেছে। এই গরমেও কাগজগুলো উড়ে যাবে বলে ফ্যান চালায়নি। এই এক স্বভাব মানুষটার, ছুটির দিন অন্তত দশখানা কাগজ আগাগোড়া খুঁটিয়ে না পড়লে প্রদীপের তৃপ্তি হয় না। মনীষার গা জ্বলে যায়। এই তো একটা ছুটির দিন, একটু গল্প করতেও তো ইচ্ছে করে? কিংবা একসাথে একটা সিনেমা দেখা বা টুকটাক ঘুরতে যাওয়া?

নিজের মনে গজগজ করতে করতে খটাস করে ফ্যানের সুইচটা অন করে সোফায় এসে জাঁকিয়ে বসল মনীষা, ”কেন রে, আবার কি নাটক শুরু হল?”

কাগজগুলো এই হঠাৎ হাওয়ায় হু হু করে উড়তে শুরু করে দিল ঘরময়। প্রদীপ আহত চোখে একবার তাকাতেই মনীষা চোখ দিয়ে প্রায় ভস্ম করার মতো ভঙ্গি করল। ওদিকে মালবিকা কাঁদোকাঁদো হয়ে বলে চলেছে, ”শোন, আমি আজ গেছিলাম। একে মান্তাসা আর হাতপদ্মতে হচ্ছে না, এবার বলছে প্রি-ওয়েডিং করবে। ডাক্তারের নাকি খুব ইচ্ছে। তুই ভাব একবার ছোড়দি! লোকে তো এবার আমাদের দিকে আঙুল তুলে প্যাঁক দেবে রে! রাস্তায় বেরনোই তো দুষ্কর হয়ে উঠবে দেখছি! তুই তো তবু দূরে থাকিস বেঁচে গেছিস, আমি কি করব বল তো? এক পাড়ায় বিয়ে হয়ে আরেক জ্বালা দেখছি!”

একদিকে প্রদীপের খচরমচর করে কাগজগুলো জোগাড় করার শব্দ, তার সাথে ফ্যানের আওয়াজে মনীষা ভালোমতো শুনতে পাচ্ছিল না, তার ওপর মালবিকার এই নাকি সুরে প্যানপ্যানানিতে বিরক্ত হয়ে ও একটা মৃদু ধমক দিল, ”আআআহ ছোট! ঠিক করে বলবি কি হয়েছে? প্রি-ওয়েডিংটা আবার কি জিনিস?”

মালবিকা ছোড়দির এই অবিশ্বাস্য অজ্ঞতায় কিছুটা ক্ষুণ্ণ হয়ে বলল, ”তুইও না ছোড়দি, সত্যি! প্রি-ওয়েডিং জানিস না? আজকাল খুব উঠেছে। বিয়ের আগে কোনো সুন্দর জায়গায় গিয়ে বেশ রোম্যান্টিক পোজে ফোটো তোলাটাকেই বলে প্রি-ওয়েডিং। আজকাল খুব উঠেছে। আরে দেখলি না বকুপিসির ছেলের বিয়ের অ্যালবামে?”

মনীষা বলল, ”ওহ, সেই মাঝগঙ্গায় নৌকার ওপর, ভিক্টোরিয়ার সামনে তোলা সিনেমার পোজে ছবিগুলো?”

মালবিকা বলল, ”ইয়েস। ওটাকেই বলে প্রি-ওয়েডিং। আর দিদি সেটাও করবে বলছে।”

মনীষার চোখ প্রায় ঠিকরে বেরিয়ে আসার উপক্রম হল, ”কিই-ই! দিদি ওইসব ফোটো তুলবে? মাথাটা কি একেবারে খারাপ হয়ে গেল রে? তু-তুই ঠিক জানিস? এবার তো যেতেই লজ্জা করছে রে! না না, এ কিছুতেই হতে পারে না! এত বাড়াবাড়ি আমি কিছুতেই বরদাস্ত করব না।”

আরও প্রায় আধ ঘণ্টা বাদে মনীষা যখন ফোনটা রাখল, প্রদীপ তখন একমনে রবিবাসরীয় পড়ছে। একবার আলগা চোখাচোখি হতে প্রদীপ মৃদু গলা ঝেড়ে বলল, ”ইয়ে, বলছিলাম, দিদির যখন একবার শখ হয়েছে, তাঁর যা ইচ্ছে তাঁকে করতে দাও না। আফটার অল, তোমাদের জন্যই তো উনি জীবনের এতগুলো বছর এত কষ্ট করেছেন, তোমাদের মানুষ করেছেন, ভালো বিয়ে দিয়েছেন, আর তারপরে যদি……।”

মনীষা কর্কশ সরে গলা ঝামটাল, ”চুপ করো, বাজে বোকো না তো! ভালো বিয়ে দিয়েছেন, ইইইহ! কি ভালো বিয়ে আমার হয়েছে রে! বিয়ের আগে কত বড় কথা শুনলাম, অমুক জায়গায় জমি, তমুক জায়গায় পুকুর, সরকারি চাকরি, হুহ! নামেই তালপুকুর, এদিকে ঘটি তো দূর, একটা চামচও ডোবে না। তোমার ওই প্রাইমারি স্কুলের যা মাইনে, সেটা সবাই জানে। বিয়ে হয়ে ইস্তক দিঘা পুরী ছাড়া কোথাও গেলাম না, সারাদিন বাড়িতে খেটে মরছি। মেয়েটাকে একটা ভালো স্কুলে ভর্তি করতে পারব কিনা তাও জানি না। ভালো বিয়ে দিয়েছে!”

প্রদীপ মনীষার এই ভেঙিয়ে ভেঙিয়ে বিদ্রূপ করাতে চুপ করে গেল। মনীষা আজকাল খোঁটা দিয়ে ছাড়া কথা বলতে পারে না। প্রদীপ চাইলেই বলতে পারে, তোমার নিজের কি যোগ্যতা যে এর থেকেও ভালো বর পাবে? ওই তো দুবারে ঘষটে ঘষটে মাধ্যমিকটা উৎরেছ! কিন্তু প্রদীপ কিছু বলল না। কথায় কথা বাড়ে, তিক্ততাও। আর তাছাড়া ইদানীং মনীষা আর ছোটবোন মালবিকার মেজাজ আরো তুঙ্গে। ও চোখ নামিয়ে খবরের কাগজের দিকে তাকাল। মনীষার যে কেন এত রাগ হচ্ছে ও কিছুতেই বুঝতে পারছে না। অথচ এই মনীষাই ওকে বিয়ের পরে পরে গল্প করেছে, ওদের তিন বোনের বাবা-মা যখন একটা বাস অ্যাকসিডেন্টে মারা যায়, তখন বড়দিদি মানসীরই বয়স ষোলো, ওরা দুজন একদমই ছোট। সেই অবস্থা থেকে টিউশনি করে, সকালবেলা সবার রান্না করে স্কুলে পাঠিয়ে কিভাবে ওদের দুজনকে বড় করেছে মানসী। এই মনীষাই আগে বলতো, ”দিদি আমাদের মা-বাবা দুটোই প্রদীপ।” কিভাবে সরকারি অনুদানে নার্সিং পড়ার সময় হস্টেলে দেওয়া ডিম, পাউরুটি লুকিয়ে রেখে দিত দিদি, বাড়ি নিয়ে আসত ছোট দুটো বোনের জন্য, সেই গল্প করতে করতে মনীষার চোখের পাতা অনেকবার ভিজেছে। সেই মনীষাই এত পালটে গেল কি করে!

প্রদীপের মনে পড়ল, দিদি বিয়ের কথা বলতে এসে প্রদীপের বাবাকে বিনীতভাবে বলেছিলেন, ”আমি অনেক কষ্ট করেছি, কিন্তু আমার দুই বোনের গায়ে কোনো আঁচড় লাগতে দিইনি জেঠু। আমার মেজবোন মনি মানে মনীষার পড়াশুনোয় অতটা মাথা নেই, কিন্তু ওর মন খুব ভালো। আমি তো সারাদিন বাড়ি থাকি না, ওই সব সামলায়। ওর মতো লক্ষ্মী মেয়ে হয়না জেঠু।”

মনীষার গজগজানিতে প্রদীপ চমকে তাকাল। মনীষা নিজের মনে বকে চলেছে, ”হু! এই পঁয়ত্রিশ বছর বয়সে এসে ওনার ইচ্ছে হয়েছে কনে সাজবেন। ন্যাকামি দেখে আর বাঁচি না! ভালো কথায় বোঝাতে গেলাম দিদি এই বয়সে আর বিয়ে কোরো না, অনেক সমস্যা হবে, তো আমার কথা সহ্য হবে কেন। আবার বলে কিনা, আমি তো তোদের দুজনের সব দায়িত্ব পালন করেছি বল। তোরা সুখী হয়েছিস, নিজেদের মতো সংসার করছিস, আমার আজকাল খুব একা লাগে। আর প্রবলেম হলে হবে, সত্যেনের তো কোনো অসুবিধা নেই। ও বলেছে বিয়ের পর আমরা ওর লন্ডনের বাড়িতে চলে যাব। আর হ্যাঁ, এমনি রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করলেও হতো, কিন্তু তুই আমার বোন, তোর কাছে বলতে লজ্জা নেই, ছোট থেকে একবার বেনারসি পরে সেজেগুজে বিয়ে করার খুব শখ রে আমার! ভগবান যখন এতদিন পরে সত্যেনকে পাইয়েই দিলেন, তাই ভাবলাম…! এএএহ! খুব শখ! প্রেম একেবারে উথলে উথলে পড়ছে এই বুড়ো বয়সে!”

প্রদীপ না বলে থাকতে পারল না, ”একজন মানুষ, যিনি তোমাদের জন্য তাঁর জীবনের অর্ধেকটা উৎসর্গ করলেন, এত স্নেহে ভালোবাসায় বড় করলেন, তিনি নিজে একটু সুখী হতে চান বলে তোমাদের এই রাগ? এই যে বলতে দিদি আমাদের মা, সব উবে গেল? ছি! তোমরা কি মানুষ?”

মনীষা আর পাশের ঘরে ঘুমনো রিম্পির তোয়াক্কা করলো না, বাজখাঁই স্বরে বলল, ”এই তুমি থামবে? না জেনে শুনে আজেবাজে বকবে না একদম। দিদি বিয়ে করবে তা নিয়ে আমার মতো না থাকলেও আমি মেনে নিয়েছিলাম, যাকগে দিদি যদি নিজে সুখী হয় হোক। হ্যাঁ আমার আর ছোটোর যেটা খটকা লেগেছিল, যে এতবড় নামকরা ডাক্তার, দেখতেও এত সুন্দর, সে হঠাৎ করে এত ভালো ভালো মেয়ে থাকতে দিদিকে বিয়ে করার জন্য পাগল হয়ে উঠবে কেন, এর পেছনে কোনো বদ মতলব নেই তো? যাকগে সেও না হয় মেনে নিলাম। কিন্তু দিদি কিরকম নির্লজ্জের মতো আমাকে আর ছোটকে ফোন করে বলছে যে মায়ের সব গয়নাই তো তোদের দুজনকে দিয়েছি শুধু মান্তাসা আর হাতপদ্মটা আমায় দিস! এ কি বেহায়াপনা! পঁয়ত্রিশ বছরের বুড়ো কনে, কোথায় চুপি চুপি কালীঘাটে গিয়ে বা রেজিস্ট্রি করে বিয়ে সারবে, তা নয়, লোক হাসিয়ে মান্তাসা হাতপদ্ম পরে বিয়ে করবে? বেহায়াপনার একটা সীমা আছে!”

প্রদীপ মনে মনে হাসল। মনীষা আর মালবিকার রাগটা কোন জায়গায় ও খুব ভালো করেই এখন বুঝতে পারছে। নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার, ওদের দুমবোনেরও বিয়ে হয়েছে অতিসাধারণ বাড়িতে। ও নিজে একজন প্রাইমারি স্কুলের মাস্টার আর মালবিকার বরের ছোট স্টেশনারি দোকান। সেখানে বলা নেই কওয়া নেই, দুম করে এই বয়সে দিদির জন্য এত ভালো একজন পাত্র ঠিক হলে সেটা হজম করাটা সত্যিই কঠিন। দিদি হোক বা যেই হোক, হিংসা সব দিকেই সমান। ড. সত্যেন গাঙ্গুলিকে প্রদীপ চেনে। অতবড় ডাক্তার হলেও খুব ভালো মানুষ, বহুদিন বিদেশে ছিলেন, গত এক বছর ধরে দিদি আর উনি একই হসপিটালে আছেন, সেই সূত্রে আলাপ। রামকৃষ্ণ মিশনের ছাত্র ছিলেন, এতদিন স্বেচ্ছায় বিয়ে করেননি, চ্যারিটি, হোম, এসব নিয়েই থাকতেন। দিদিকে ওঁর পছন্দ হয়েছে। হতেই পারে। দিদিও একজন ভালো মনের মানুষ। কিন্তু যাদের তিনি মানুষ করলেন, তারা ভালো মনের কি? এতদিন হয়ে গেল সংসার করছে মনীষার সাথে, মনীষার বদমেজাজ, পরশ্রীকাতরতা আর ঈর্ষা ছাড়া কিসের নমুনা পেয়েছে প্রদীপ?

প্রদীপ একটু কাশল, ”তোমাদের রাগটা কোন জায়গায়? দিদির এত ভালো বিয়ে হচ্ছে বলে, নাকি তোমাদের গয়না চেয়েছেন বলে?” উত্তরের অপেক্ষা না করেই প্রদীপ বলল, ”আর একটা কথা, সব গয়না তো চানওনি। তোমাদের মায়ের সব গয়নাই যে তোমাদের দুই বোনকে দিদি দিয়েছেন শুধু তাই নয়, নিজেও বিয়ের জোগাড়ের পাশাপাশি গয়না গড়িয়ে দিয়েছেন তোমাদের। সেসব তো কিছু চাননি উনি! চেয়েছেন কি? শুধু তোমার মান্তাসা আর মালবিকার হাতপদ্মটাই চেয়েছেন ওই দুটো ওনার নাম করে তোমাদের মা বানিয়েছিলেন বলে। খুব অন্যায় করেছেন?”

মনীষা চেঁচাল, ”এই বয়সে এমন ধিঙ্গিপনা দেখে লোকে তো আমাদের গায়ে থুতু দেবে, আমরা কি করব তখন? উনি তো বিশাল ফ্ল্যাটে বরের সঙ্গে থাকবেন, লোকজনের সঙ্গে সদ্ভাব তো আমাদেরকেই রেখে চলতে হবে? আর হিংসে? এতবড় কথা বলতে পারলে তুমি? দিয়ে আসিনি আমি মান্তাসাটা? বাকিগুলো নিজেই বলল ইমিটেশন পরবে, বললে ওইগুলোও মুখে ছুড়ে দিয়ে আসতাম!”

প্রদীপ মাথা নীচু করে ওর বহুদিনের অভ্যেসমতো দরকারি খবরগুলো কাঁচি দিয়ে কাটছিল, কি একটা উত্তর দিতে মুখ তুলে তাকিয়ে ও বরফ হয়ে গেল। মনীষা বসে আছে সোফায়, দরজার দিকে উল্টো মুখ করে। ওর ঠিক পেছনে, দিদি! হাতে একটা ব্যাগ, কখন এসেছেন?

ওর মুখ সাদা হয়ে গেল, মনীষাকে ও থামাতে গেল, কিন্তু মনীষা ওকে পাত্তাই দিল না, ”হু! এত শখ যখন করুক না বিয়ে। কার মনে কি আছে কে জানে? দেখবে হয়তো বিয়ের পর গিয়ে লন্ডনের বাড়ির কাজের লোক বানিয়ে রেখে দিয়েছে, আর ওখানে বউ-বাচ্চা সব রয়েছে। তখন বুঝবে ঠ্যালা! বুড়ো বয়সে কচি সাজার শখ বেরিয়ে যাবে! সেদিন ঝুমু পর্যন্ত ফোন করে জিগ্যেস করছিল, হ্যাঁ রে মানসীদি নাকি পার্লারে গিয়েছিল ব্রাইডাল প্যাকেজ বুক করতে? আমি লজ্জায় মুখ লুকোবো কোথায় তাই ভাবছিলাম। বুড়োবয়সে ভীমরতি!…” বলতে বলতে প্রদীপের হতভম্ব মুখটা দেখে মনীষা থমকে ওর চাউনি বরাবর পেছনে তাকাল। মনীষা চমকে উঠে উঠে দাঁড়াল, ”দি-দিদি! তুই! কখন এসেছিস? আসলে আমি…!”

মানসী বাঁ হাতটা সামান্য তুলে চুপ করতে বললেন। চোখদুটো অস্বাভাবিক লাল হয়ে জলে টলমল করছে, যেকোনো মুহূর্তে বৃষ্টি হয়ে নামবে। অস্ফুটে বললেন, ”রিম্পির জন্য একটা ফ্রক এনেছিলাম!”

প্রায় দিন পনেরো বাদে ড. সত্যেন গাঙ্গুলি আর তাঁর রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করা স্ত্রী মানসী যখন দমদম এয়ারপোর্টের লাউঞ্জে ঢুকছিলেন, প্রদীপের হাতে মানসী একটা ছোট বাক্স দিলেন। বললেন, ”ভালো থেকো প্রদীপ। রিম্পিকে ভালো মানুষ করো।”

সেদিনের পর বিয়েটা আনুষ্ঠানিকভাবে আর হয়নি। ক্যাটারারের লোক, ডেকোরেটররা একটু ঝামেলা করার চেষ্টা করছিল, ড. গাঙ্গুলি তাদের টাকাপয়সা মিটিয়ে দিয়েছিলেন। প্রদীপ তারপর বার দুয়েক বোঝাতে গিয়েছিল দিদিকে। মানসী কোনো কথা বলেননি।

এয়ারপোর্ট থেকে বেরিয়ে বাসে উঠে প্রদীপ বাক্সটা খুলল, পুরনো দিনের একটা মান্তাসা, সঙ্গে একটা ছোট্ট চিরকুট। ভাল থাকিস বোন।

**********

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *