মরণোত্তর

লোকটাকে দেখতে সুন্দর বলা যাবে
কিনা, এ বিষয়ে
মতভেদ থাকা
বিচিত্র কিছুই না। তবে সকলেই
সমস্বরে এ-কথা বলবে, তার কথা বলবার
ধরনে একটা কিছু আছে, যা সহজে
টেনে আনে ভিড়, ওর কথা
শোনে লোকে কান পেতে ঝাল মুড়ি, ছোলা ভাজা আর
চীনে বাদামের মজা চিবোতে চিবোতে। আজনবি
বহুদূর থেকে
এসেছে এখানে রহস্যের ঘ্রাণ নিয়ে। ছিল তার
পোশাক-আশাকে কিছু দূরত্বের ছাপ।
তাকিয়ে ভিড়ের দিকে পাখির ধরনে
যখন সে আকাশের দিকে
তর্জনী উঁচিয়ে বলল, এই দারুণ খরায় আমি
চোখের পলকে
নামিয়ে আনতে পারি শ্রাবণের ফুলঝুরি; এই
ভয়ানক পুষ্পহীনতায়
এক্ষুণি ফুটবে ফুল হরেক রকম,
যদি আমি ফোটাই আমার হাতে একটি বিশেষ
মুদ্রা, ভাইসব,
তখন অনেকে তার উচ্চারণে ধ্রুবতারার ঝলক দেখে
শিহরিত হলো, কেউ কেউ খুব জোরে
হেসে উঠে অবিশ্বাসী প্রকরণে হলো মনোযোগী।
চতুর্দিকে থমথমে নীরবতা। লোকটা হাতের
যাবতীয় মুদ্রা কী সহজে ফোটাল, অথচ তার
সকল উদ্যম ফলহীন
গাছের মতোই সে বিশাল জনসভায় থমকে
থাকে; দুয়ো ছুটে আসে তার
দিকে দশদিক থেকে, পাথর ও নুড়ি
ভীষণ ছুড়তে থাকে অনেকেই। রক্তাক্ত শরীরে
নিষ্প্রাণ সে পড়ে থাকে ভয়ানক ভেঙে-যাওয়া পুতুলের মতো।

যখন প্রান্তর
জনহীনতায় ফের রহস্যজনক হয়ে ওঠে,
তখন হঠাৎ নাচে খই বৃষ্টির এবং রঙ-
বেরঙের ফুল ফুটে ওঠে বন্ধ্যা মাটিকে হাসিয়ে।