ও ভাই কানাই কারে জানাই দুঃসহ মোর দুঃখ

ওরে যেতে হবে আর দেরি নাই

মম চিত্তে নিতি নৃত্যে কে যে নাচে

স্বপন-পারের ডাক শুনেছি

জাগ’ আলসশয়নবিলগ্ন

ওই সাগরের ঢেউয়ে ঢেউয়ে বাজল ভেরী

ওগো তোরা কে যাবি পারে

ও জোনাকী, কী সুখে ওই ডানা দুটি মেলেছ

সুন্দরের বন্ধন নিষ্ঠুরের হাতে

কাঁটাবনবিহারিণী সুর-কানা দেবী

আমিই শুধু রইনু বাকি

আমার ঘুর লেগেছে– তাধিন্‌ তাধিন্

আপন-মনে গোপন কোণে

তোমার আসন শূন্য আজি

দুয়ার মোর পথপাশে

তোমাদের দান যশের ডালায়

হ্যাদে গো নন্দরানী

আকাশে তোর তেমনি আছে ছুটি

আমরা না-গান-গাওয়ার দল রে

সারা বরষ দেখি নে

কমলবনের মধুপরাজি

সকাল-বেলার কুঁড়ি আমার বিকালে যায় টুটে

মোরা সত্যের ‘পরে মন আজি করিব সমর্পণ

নাহয় তোমার যা হয়েছে তাই হল

দূর রজনীর স্বপন লাগে

আঁধারের লীলা আকাশে

কোথায় ফিরিস পরম শেষের অন্বেষণে

মোদের কিছু নাই রে নাই

যাহা পাও তাই লও

এসো গো নূতন জীবন

পাগল যে তুই কণ্ঠ ভরে

আমাদের শান্তিনিকেতন আমাদের

সে কোন্‌ বনের হরিণ

ওরে মাঝি ওরে আমার মানবজন্মতরীর মাঝি

দেখা না-দেখায় মেশা

চাহিয়া দেখো রসের স্রোতে রঙের খেলাখানি

এবার যমের দুয়োর খোলা পেয়ে ছুটেছে সব ছেলেমেয়ে

মেঘেরা চলে চলে যায়

মধুর মধুর ধ্বনি বাজে

খেলাঘর বাঁধতে লেগেছি আমার মনের ভিতরে

না গো এই যে ধুলা আমার না

তোমার হল শুরু আমার হল সারা

চোখ যে ওদের ছুটে চলে গো

তুমি উষার সোনার বিন্দু প্রাণের সিন্ধুকূলে

রয় যে কাঙাল শূন্য হাতে

হায় হায় হায় দিন চলি যায়

আমি শ্রাবণ-আকাশে ওই দিয়েছি পাতি

ওঠো রে মলিনমুখ, চলো এইবার

গোপন প্রাণে একলা মানুষ যে

জীবন আমার চলছে যেমন তেমনি ভাবে

এমনি ক’রেই যায় যদি দিন যাক না

তুমি কি কেবলই ছবি

আকাশ, তোমায় কোন্‌ রূপে মন চিনতে পারে

সে কোন্‌ পাগল যায়

ওগো ভাগ্যদেবী পিতামহী

সন্ন্যাসী যে জাগিল ওই

আমার নাইবা হল পারে যাওয়া

আমার জীর্ণ পাতা যাবার বেলায় বারে বারে

কী পাই নি তারি হিসাব মিলাতে

আমারে বাঁধবি তোরা