আযদ গোত্রের একদল লোক সাথে নিয়ে সুরাদ ইবনে আবদুল্লাহ আযদী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে এসে ইসলাম গ্রহণ করলেন এবং খুব নিবেদিতপ্রাণ মুসলমান হলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে গোত্রের মুসলিম সদস্যদের আমীর নিযুক্ত করলেন এবং তাদের নিয়ে আশপাশের মুশরিক ইয়ামানী গোত্রগুলোর বিরুদ্ধে জিহাদ পরিচালনার নির্দেশ দিলেন।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশে জিহাদ করার লক্ষ্যে প্রথমে জুরাশ অীভযানে বের হলেন। ইয়ামানী গোত্র অধ্যূষিত এই শহরটি সে সময় ছিল প্রাচীর ঘেরা ও সুরক্ষিত। মুসলিম বাহিনী তাদেরকে আক্রমণ করতে ছুটে আসছে একথা শুনে খাশয়াম গোত্র ইয়ামনীদের সাথে যোগ দেয়। সুরাদের বাহিনী ইয়ামনী খাশয়ামীদেরকে প্রায় একমাস অবরোধ করে রাখে এবং তারাও জুরাশের ভেতরে থেকে প্রতিরোধ সৃষ্টি করে অক্ষত থাকে। অতঃপর সুরাদ তার বাহিনী নিয়ে ফিরে যান। তিনি যখন শাকার পর্বতের কাছে পৌছেন তখন জুরাশবাসী তাঁকে পরাজিত মনে করে তাঁর পশ্চাদ্ধাবন করে। যেই মাত্র তারা সুরাদের বাহিনীর ওপর আক্রমণ করলো অমনি তিনি তাদের ওপর আক্রমণ চালালেন এবং তাদের বিপুল সংখ্যক লোককে হত্যা করলেন। ইতিপূর্বে জুরাশবাসী দু’জন লোককে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য মদীনার পাঠিয়েছিল। একদিন আছরের পর তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট গিয়ে বসলে তিনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, “শাকার কোথায় অবস্থিত।” জুরাশবাসী লোক দুটি বললো, “ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমাদের অঞ্চলে একটা পাহাড় আছে। আমরা জুরাশবাসী তাকে ‘কাশার’ বলে থাকি।” রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “ওই পাহাড়টার নাম কাশার নয় শাকার।” তারা বললো, “শাকারের কি হয়েছে ইয়া রাসূলুল্লাহ?” তিনি বললেন, “সেখানে এই মুহুর্তে প্রচুর লোক নিহত হচ্ছে।”
লোক দুটি আবু বাক্র কিংবা উসমান রাদিয়াল্লাহ আনহুর নিকট হিয়ে বসলে তারা বললেন,, “রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমদের গোত্রের মৃত্যুর সংবাদ দিয়েছেন। তোমরা তাঁকে তোমাদের গোত্রের বিপদমুক্তির জন্য দোয়া করতে অনুরোধ কর।” তারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে অনুরোধ করলে তিনি এইরূপ দোয়া করলেন, “হে আল্লাহ, জুরাশবাসীর ওপর থেকে এ বিপদ দূর করে দাও।” অতঃপর তারা দুজন জুরাশ অভিমুখে যাত্রা করলো। সেখানে পৌছে তারা জানতে পারলো যে, সুরাদ ইবনে আবদুল্লাহ জুরাশবাসীকে ঠিক সেইদিন সেই মহুর্তে হত্যা করেছিলেন যেদিন এবং যে সময়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের কাছে ঐ ঘটনার কথঅ উল্লেখ করেছিলেন।”
জুরাশের প্রতিনিধিদল রাসূলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে ইসলাম গওহণ করলো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের শহরের চারপাশে পশু চারণের জন্য কয়েকটি সুরক্ষিত এলাকা নির্ধারণ করে দিলেন। ঘোড়া, উট ও চাষের বলদের জন্য আলাদা আলাদাভাবে এলাকা চিিহ্নত করা হলো এবং ঘোষণা করা হলো যে, ঐসব এলাকায় যে কোন লোকের পশু চরে বেড়াবে তা ধরে নেয়া বা খাওয়া কারো জন্য বৈধ হবে না।