3 of 3

১২৫. মুসাইলিমা কাযযাবসহ বনু হানীফা প্রতিনিধিদলের আগমন

মুসাইলিমা কাযযাব সহ বনু হানীফা প্রতিনিধিদল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আসে তারা আনসারদের এক মহিলা বিনতে হারিসের বাড়ীতে ওঠে যিনি পরবর্তী সময় বনু নাজ্জারের গ্রহিনী হন। মদীনাবাসী জনৈক ঐতিহাসিক জানিয়েছেন যে, বনু হানীফার প্রতিনিধিদল মুসাইলিমাকে কাপড়ে ঢেকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবাদের সাথে বসে ছিলেন। তাঁর হাতে ছিল একটা পাতা-ছাঁটা খেজুরের ডাল। ডালের মাথার দিকে কয়েকটি পাতা ছিল। কাপড়ে আচ্ছাদিত মুসাইলিমা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট পৌছে তাঁর সাথে কথা বললো এবং কিছু দান প্রার্থনা করলো। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, “তুমি যদি এই খেজুরের ডালটি আমার কাছে চাও তবে তাও আমি দেব না।”

ইবনে ইসহাক বলেন: ইয়ামামার অধিবাসী বনু হানীফার জনৈক বৃদ্ধ আমাকে মুসাইলিমার ঘটনাঅন্য রকম জানিয়েছেন। তিনি বলেন,

বনু হানীফার প্রতিনিধদল যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে দেখা করতে আসে তখন মুসাইলিমাকে উটের কাফিলায় রেখে আসে। প্রতিনিধিদল ইসলাম গ্রহণের পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জানায় যে, মুসাইলিমাও তাদের সাথে উপস্থিত হয়েছে। তারা বলে, “ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আমরা আমাদের এক সঙ্গীকে উটের কাফিলার রক্ষক হিসেবে রেখে এসেছি।” তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দলের অন্যান্য সদস্যকে যেরূপ উপঢৌকন দেন সেরূপ তাকেও দেন। তিনি এ কথাও বললেন “তোমাদের ঐ সঙ্গিটি তোমাদের চাইতে কম মর্যাদার লোক নয় যে, তাকে এখানে না এনে তোমাদের জিনিসপত্র পাহারা দিতে রেখে এসেছ।” অতঃপর প্রতিনিধিদল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছ থেকে চলে গেল এবং তাকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা দিয়েছিলেন তা তার হাতে পৌছিয়ে দিল। অতঃপর তারা ইয়ামামার পৌছা মাত্রই মুসাইলিমা ইসলাম ত্যাগ করলো এবং মিথ্যা নবুওয়অতের দাবী কের বসলো। সে বললো, “তোমারা যখন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আমার কথঅ উল্লেখ করেছিলে তখন তিনি কি বলেননি যে,, ‘সে তোমাদের চাইতে কম মর্যাদাশীল নয়।’এ কথা তিনি এ জন্যই বলেছেন যে, আমি যে তার সহকর্মী নবী তা তিনি জানেন।” এরপর সে তাদের কাছে নানা রকমের ছন্দবদ্ধ কথা বলে কুরআনের সাথে সাদৃশ্য প্রমাণ করার চেষ্টা করে। তার এ ধরনের একটি ছন্দবদ্ধ উক্তি হলো,

[আরবী *******]

“আল্লাহ গর্ভবতী মহিলাদের ওপর অনুগ্রহ করেছেন নেকনা তিনি তাদের পেট থেকে চলাচল করতে সক্ষম মানুষ বের করেছেন-নাড়ীভুঁড়ি ও তরল পদার্থের মধ্য থেকে।”

মুসাইলিমা তার গোত্রের জন্য মদ ও ব্যভিচার হালাল এবং নামায মাফ করে দেয়। এতদসত্ত্বেও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়াত সে স্বীকার করতে থাকে। বনু হানীফা গোত্র তার এ মনগড়া দাবী মেনে নেয়।

উপরোক্ত দুই রকমের বর্ণনার মধ্যে কোনটি সঠিক তা আল্লাহই ভাল জানেন।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *