3 of 3

১২৮. আমর ইবনে মা’দী ইয়াকরাবের নেতৃত্বে বনু যুবাইদের প্রতিনিধিদলের আগমন

আমর ইবনে মা’দী ইয়াকরাবের নেতৃত্বে যুন যুবাইদের একটি প্রতিনিধিদল রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে ইসলাম গ্রহণ করলো। ইতিপূর্বে আমর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খবর শুনে কায়েস ইবনে মাকশুহ মুরাদীকে বলেছিল, “হে কায়েস! তুমিতো তোমার গোত্রের সরদার। আমরা শুনতে পেলাম, মুহাম্মাদ নামক কুরাইশ বংশীয় এক ব্যক্তি হিজাযে নিজেকে নবী পরিচয় দিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে। আমাদেরকে নিয়ে তার কাছে চল, দেখা যাক সে যে দাবী করে, তা সত্য কিনা। যদি সত্যিই সে নবী হয় তাহলে তুমি অবশ্যই বুঝতে পারবে। আর আমাদের কাছে যদি প্রতিভাত হয় যে, সে সত্যিই নবী, তাহলে অনুসরণ করবো। আর যদি তা না হয় তাহলে তার জ্ঞানের দৌড় কতদূর, তা আমাদের জানা হয়ে যাবে।” কিন্তু কায়েস এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এবং তা নির্বুদ্ধিতা প্রসূত মত বলে আখ্যায়িত করে। এপর আমর ইবনে মা’দী ইয়াকরাব নিজেই সদলবলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গিয়ে ইসলাম গ্রহণ করে। এ খবর পেয়ে কায়েস ইবনে মকশুহ বললো, “আমর আমার বিরোধিতা করলো এবং আমার মত অগ্রাহ্য করলো। আচ্ছা মজা দেখাবো।” সে আমরকে ভীষণভাবে হুমকী দিল ও শাসালো।

[ইবনে হিশামের মতে উক্ত অভিযানে হামদানের নেতৃত্ব দিয়েছিল মালিক ইবনে হারিস হামদানী।]

তার জবাবে আমর নিম্নলিখিত কবিতা আবৃত্তি করেছিল:

“সা’নার ঘটনার দিন তোমাকে একটা সঠিক উপদেশ দিয়েছিলাম, তোমাকে উপদেশ দিয়েছিলাম আল্লাহকে ভয় করতে ও ন্যায়ের সাতে একমত হতে।

তুমি মৃত্যু হতে রক্ষা পেয়েছো সেই গাধার মত-যে তার খুঁটির ওপর গর্বিত।

সে আমাকে একটি ঘোড়ার ওপর পেয়েছে, যার ওপর বসে আমি তার গতিরোধ করতে সক্ষম।

আমি এমন বর্ম পরিহিত যা পাথুরে জমিতে অবস্থিত একটা স্বচ্ছ পানির পুকুরের মত প্রশান্ত।

সে বর্মে আঘাত খেয়ে বর্শা ঘুরে যায় এবং তার ভাল অংশ দূরে ছিটকে পড়ে।

যদি তুমি আমার মুকাবিলায় আস তাহলে দেখবে এক কেশর বিশিষ্ট সিংহের মুকাবিলায় এসছো।

তখন আমাদের দুর্দম যোদ্ধাকে বজ্রমুষ্ঠি ও উন্নত গ্রীবা (অর্থাৎ যুদ্ধের জন্য অধীরভাবে প্রস্তত) দেখতে পাবে।

যদি তার প্রতিদ্বন্দ্বী কোন সমবয়স্ক যোদ্ধা তাকে কাবু করতে চায় তাহলে সে-ই তাকে পরাজিত করে, তাকে পাকড়াও করে উর্ধে উৎক্ষেপ করে, অতঃপর ভুতলে নিক্ষেপ করে হত্যা করে, তার মগজ বের করে তাকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দেয়, অতঃপর তাকে গিলে কেয়ে ফেলে।

শিরকের অত্যাচারে তার দাঁত ও নখর কলুষিত।”

পরে ফারওয়া ইবনে মুসাইকের শাসনাধীন বনু যুবাইর গোত্রে আমর ইবনে মা’দী ইয়াকরাব রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইনতিকালের সময় পর্যন্ত অবস্থান করে। এরপর ইসলাম থেকে বিচ্যুত হয়। সত্য ভ্রষ্ট হওয়ার সময় সে নিম্নরূপ কবিতা আবৃত্তি করেঃ

“ফারওয়ার শাসন আমাদের কাছে নিকৃষ্টতম শাসন বলে মনে হয়েছে।

তাকে আমরা সেই গাধার মত পেয়েছি যে জরায়ুর ভেতরে নাক ঢুকিয়ে গ্রাণ নেয।

তুমি যদি এ শাসন দেখতে হে আবু আমর, তাহলে দেখতে পিশাচ ও বিশ্বাসঘাতক দিয়েই তার দল পরিপূর্ণ।”

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *