• Skip to main content
  • Skip to header right navigation
  • Skip to site footer

Bangla Library

Read Bengali Books Online (বাংলা বই পড়ুন)

  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • সব বই
  • লেখক
  • সিরিজ
  • বইয়ের ধরণ
  • Login/Register
  • My Account →
  • বাংলা ডিকশনারি
  • বাংলা কৌতুক
  • বাংলা লিরিক্স
  • বাংলা রেসিপি
  • হেলথ টিপস এন্ড নিউজ

বাংলা নতুন/পুরাতন বইয়ের পিডিএফ ডাউনলোড/সন্ধান করতে আমাদের বাংলা পিফিএফ সাইটে ক্লিক করুন।

Bangla PDF

দ্য অ্যামিটিভিল হরর : অ্যা ট্রু স্টোরি – জে অ্যানসন

লাইব্রেরি » জে অ্যানসন, লুৎফুল কায়সার » দ্য অ্যামিটিভিল হরর : অ্যা ট্রু স্টোরি – জে অ্যানসন
দ্য অ্যামিটিভিল হরর : অ্যা ট্রু স্টোরি - জে অ্যানসন

দ্য অ্যামিটিভিল হরর : অ্যা ট্রু স্টোরি – জে অ্যানসন

অনুবাদ: লুৎফুল কায়সার 

প্রথম প্রকাশ : জুলাই ২০২৩ 

অনুবাদকের উৎসর্গ 

ওপার বাংলার প্রিয় ছোটভাই, লেখক ও গায়ক ‘শুভজিৎ বিশ্বাস’ কে। ছেলেটা হরর তেমন পড়ে না, এই বইটা পড়বে নাকি, কে জানে … 

.

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সকল প্রকার তাপমাত্রা মাপা হয় ফারেনহাইট স্কেলে। বইটি পড়ার আগে পাঠকদের এটি জেনে রাখা দরকার। 

.

ভূমিকা 

এই বইতে যে সমস্যাগুলোর কথা বলা হয়েছে তা কিন্তু একেবারেই নতুন নয়, সৃষ্টির শুরু থেকেই এসব আছে। যদিও বর্তমান সময়ের পাঠকদের এসব বেশি করে পড়া উচিত বলে আমি মনে করি, কারণ আজকাল খুব কম মানুষই এগুলো বিশ্বাস করে। সত্যি বলছি, পৃথিবীর একদম আদিম কাল থেকেই প্রতিটি সভ্যতার মানুষেরই অতিপ্রাকৃত অভিজ্ঞতা হয়েছে, অনেকে প্রাণও হারিয়েছে নৃশংস প্রেতদের হাতে। এদের ভয়ংকর ক্ষমতার সামনে সাধারণ মানুষ বলতে গেলে প্রায় অসহায়। কিন্তু তাই বলে মানুষ কিন্তু থেমে থাকেনি, নানান সভ্যতার মানুষ ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে রুখে দাঁড়িয়েছে অতিপ্রাকৃত আগ্রাসনের বিরুদ্ধে। মন্ত্র, চিহ্ন, তাবিজ, কবজ, পবিত্র পানি এবং নানান পবিত্র চিহ্ন মানুষকে সুরক্ষা দিয়েছে দুষ্ট প্রেতশক্তিদের হাত থেকে। 

আজকাল অনেক বিশেষজ্ঞই এসবের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। প্রাচীন কিছু সেমেটিক সভ্যতা, যেমন ব্যাবিলনীয় সভ্যতাতেও ডিমনদের অত্যাচারের অল্প কিছু কাহিনি ছড়িয়ে আছে। এই সভ্যতাগুলোর অস্তিত্ব নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলে না! কিন্তু প্রশ্ন তোলে ওই অতিপ্রাকৃত কাহিনিগুলো নিয়ে! বিশ্বাস করুন… সব সত্য। বর্তমানে আমাদের খ্রিষ্টধর্মে যে ‘এক্সরসিজম’ বা ‘প্রেত তাড়ানোর বিশেষ আচার’ পালন করা হয় তা বেশ পুরোনো, খ্রিষ্টধর্ম আসার কিছুকাল পর থেকেই এসব শুরু হয়। পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি ধর্মেই এমন আচার-অনুষ্ঠানের উল্লেখ আছে। 

বর্তমানে আমাদের আধুনিক পশ্চিমা সমাজে তিন রকমের চিন্তাধারার মানুষ রয়েছে। প্রথম, এরা বিজ্ঞানকে অন্ধভাবে অনুসরণ করে। মনে করে এই পৃথিবী আর জগৎ-সংসারের কোনো স্রষ্টা নেই, সবকিছুই এক যান্ত্রিক নিয়মে পরিচালিত হচ্ছে। এদের কাছে বিজ্ঞানই সব, বিজ্ঞানের বাইরের কিছু নিয়ে এরা মাথা ঘামায় না, মানতেও চায় না। 

দ্বিতীয়, এদের চিন্তাধারা প্রথম পক্ষের চেয়ে খানিকটা উদার। বিজ্ঞানমনা হলেও অবৈজ্ঞানিক বিষয়গুলোকে একেবারে উড়িয়ে দেয় না। এদের মতে বিজ্ঞান সবকিছুরই ব্যাখ্যা দিতে পারে, কিছু জিনিসের ব্যাখ্যা আগে দেওয়া হয়েছে… কিছু জিনিসের ব্যাখ্যা আমরা ভবিষ্যতে পাবো। অতিপ্রাকৃত ব্যাপারগুলোরও ব্যাখ্যা একদিন বিজ্ঞান দিয়ে দেবে। কিছুই বিজ্ঞানের বাইরে নয়। 

তৃতীয়, এরা প্রথম দুই পক্ষের চেয়ে একেবারেই আলাদা। এদের কাছে বিজ্ঞান শুধুই একটা ‘শাস্ত্র’ যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে সহজ করে, এর বেশি কিছু না। বিজ্ঞানকে অন্ধভাবে অনুসরণ করতে এরা নারাজ। এদের মতে কিছু জিনিসের ব্যাখ্যা বিজ্ঞান কখনোই দিতে পারবে না, ওগুলো সম্পূর্ণ বিজ্ঞানের আওতার বাইরে। মূলত এরা সবাই আস্তিক হয়। আমি নিজেও এই পক্ষেই পড়ি। পৃথিবীতে এমন অনেক ঘটনাই ঘটে যা কোনো যুক্তি মানে না, তর্কে সেইসব প্রমাণ করা অসম্ভব। কিন্তু সামনা-সামনি যারা দেখেছে তারাই বোঝে… এগুলো কত ভয়ংকর। 

এটা সত্য যে, মাঝে মাঝে কিছু মানুষ শুধু শুধুই লোকেদের মনোযোগ পাওয়ার জন্য উদ্ভট সব অতিপ্রাকৃত অভিজ্ঞতার কাহিনি বানায়। 

এই বইতে যে পরিবারের দুর্ভোগের কথা তুলে ধরা হয়েছে তারা কেউই এমন নন যে শুধুমাত্র লোক দেখানোর জন্য নাটক করবেন। তারপরেও তথাকথিত কিছু বিজ্ঞানমনা লোক এই বাড়ির ঘটনাগুলোকে ‘কুসংস্কার’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। এরা জানলে অবাক হবে যে বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি থাকা অনেকেই অ্যামিটিভিলের ওই বাড়িটা দেখে গেছেন, এটা নিয়ে লিখেছেন। তাদের কয়েক জনের সাথে আমার কথাও হয়েছে, বেশিরভাগই বলেছেন, “একদিন বৈজ্ঞানিকভাবেই এই বাড়ির রহস্য সমাধান সম্ভব হবে।” এদেরকে আমার চিরকালই বেশ ভালো লাগে। গোঁড়া ধার্মিকদের মতো, গোঁড়া বিজ্ঞানমনস্করাও হুটহাট সিদ্ধান্তে চলে আসে। ব্যাপারটা বেশ বিরক্তিকর। জে অ্যানসন খুবই অসাধারণভাবে বইটি লিখেছেন, প্রায় সবকিছুই নিখুঁতভাবে তুলে ধরেছেন তিনি, তবে হ্যাঁ এরপরেও আরও অনেক কিছুই লেখা যায়। আসলে এসব বিষয়ে আলোচনা করার অনেক ব্যাপার থাকে, তাই কোনো বই-ই পরিপূর্ণ হতে পারে না। 

তবে বইটি অসাধারণ। 

যেহেতু আমি ধর্মের লোক আর ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাসী, তাই আমার কাছে পরিবারগুলোর দুর্ভোগ হলো ঈশ্বরের পরীক্ষা, ঈশ্বর আমাদের ভালোবাসেন তাই নানান বিপদে ফেলে বিশ্বাসের পরীক্ষা নেন। তিনিই বিপদ দেন আবার তিনিই উদ্ধার করেন, তাঁর ইশারা ছাড়া একটা গাছের পাতাও নড়ে না। বলাই বাহুল্য ধর্মবিমুখ ব্যক্তিদের কাছে আমার কথাগুলো শুধুই ‘অন্ধবিশ্বাস’। দেখুন আমি বিজ্ঞানের বিরোধী নই, বিজ্ঞানের অবদানকে সবসময়ই স্বীকার করি। আর দিনের শেষে বিজ্ঞান আমাদের কী শেখায়? কোনো জিনিস ভালো করে বুঝে তারপরেই সিদ্ধান্ত নিতে, তাই না? তাহলে আপনারা এই বাড়িতে কখনও না এসে… কিছু না দেখে… সবকিছুকে অন্ধবিশ্বাস বলে কীভাবে উড়িয়ে দিতে পারেন? এসব তো বিজ্ঞান শেখায় না, তাই না? 

এই বই কোনো অন্ধবিশ্বাসকে উৎসাহিত করতে লেখা হয়নি। বরং লেখা হয়েছে কিছু নিরীহ আর নিষ্পাপ মানুষের দুর্ভোগকে সবার সামনে তুলে আনার জন্য। একবার চিন্তা করে দেখুন তো, আপনার পরিবারের কেউ যদি কোনো বিপদে পড়ে আর তা নিয়ে লোকে হাসি-তামাশা করে, তবে আপনার কেমন লাগবে? ঠিক তেমনই এই বইতে যে পরিবারের কথা রয়েছে, তারা যদি আপনার পরিবারের কেউ হতো? তাহলে? তাদের অভিজ্ঞতাগুলোকে ‘মনের ভুল’ বা ‘অন্ধবিশ্বাস’ বলে উড়িয়ে দিতে পারতেন? 

আজকাল কিছু মানুষ নিজেদের ভৌতিক অভিজ্ঞতা বলতে ভয় পায়। পাছে যদি লোকে হাসে? ইয়ার্কি করে? দয়া করে এসব করবেন না। ভৌতিক সমস্যায় আক্রান্ত মানুষকে সাহায্য করুন, তাদের কথা শুনুন, সাহায্য করতে না পারুন, বিদ্রুপ করবেন না। অতিপ্রাকৃত অভিশাপের করালগ্রাসে যে কত পরিবারের ক্ষতি হয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। লুৎজ পরিবারের দুর্ভোগের জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। 

দেখুন এটা যদি কল্পকাহিনি হতো, তবে এ নিয়ে বেশি ভাবার কিছুই ছিল না। তবে বইটি সত্য ঘটনার ওপর ভিত্তি করে লেখা। ভুক্তভোগী পরিবার, যে যাজককে তারা ডেকে এনেছিল, সবার বর্ণনা শুনেই বইটি লেখা হয়েছে। তারা হলফ করে বলেছেন যে তাদের বর্ণিত অভিজ্ঞতাগুলোর একটি কথাও মিথ্যা নয়। বইটি যদি কোনো অতিপ্রাকৃত বিশেষজ্ঞের হাতে পড়ে তবে ব্যাপারটা ভালোই হবে। তারা গিয়ে বাড়িটার রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করতে পারেন। 

পড়ুন আর ভাবুন। 

বিজ্ঞান আর ধর্ম দুটিরই দরকার আছে জীবনে। এটুকু ব্যক্তিগত অভিমত তো দিতেই পারি, তাই না? কোনো জিনিস বিজ্ঞানের চোখে অসম্ভব বলে সেটা আসলেই যে হতে পারে না, তা ধরে নেওয়া ঠিক নয়। প্রমাণ ছাড়া কিছু বিশ্বাস করা যেমন ঠিক নয়, তেমনই কোনো কিছু না দেখেই তা অবিশ্বাস করাও উচিত নয়। 

বইটিতে আমাকে ভূমিকা লিখতে দেওয়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। সারাজীবনে অনেক অতিপ্রাকৃত ঘটনাই দেখেছি, শুনেছি। তবে এই বইটি বেশ আলাদা। এমন ভয়ংকর কোনো ঘটনা কমই শোনা যায়। 

মনে রাখবেন একজন জ্ঞানী মানুষ তখনই ‘প্রকৃত জ্ঞানী’ হয় যখন সে নিজের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা উপলব্ধি করতে পারে। আর বুদ্ধিমানরা সব ধরনের চিন্তাধারাকেই সম্মান করেন। সবকিছু মানুষের হাতে নেই, বিজ্ঞান দিয়ে অনেক কিছুই নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। শয়তান কিন্তু মাঝে মাঝেই তার চিহ্ন রেখে যায়। 

রেভারেন্ড জন নিকোলা
নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র 

.

প্রারম্ভিকা 

৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৬। 

নিউইয়র্কের চ্যানেল ফাইভের রাত দশটার সংবাদে ঘোষণা দেওয়া হলো নতুন এক ধারাবাহিক অনুষ্ঠানের। এতে উপস্থিত থাকবেন সেইসব মানুষ যারা অপার্থিব ক্ষমতা থাকার দাবি করেন, এছাড়া অতিপ্রাকৃত অভিজ্ঞতা হয়েছে এমন লোকেদেরও আমন্ত্রণ জানানো হবে। এরপরেই পর্দায় ভেসে উঠল সাংবাদিক স্টিভ বাউম্যানের মুখ, যিনি লং আইল্যান্ডের অ্যামিটিভিলে অবস্থিত একটি বিখ্যাত ভূতুড়ে বাড়ি নিয়ে বলছিলেন। 

বাউম্যান জানান, ১৯৭৪ সালের ১৩ নভেম্বর, ওশান অ্যাভিনিউয়ের একটি পুরোনো ঔপনিবেশিক ধাঁচের বাড়িতে ভয়াবহ গণহত্যা সংঘটিত হয়। ১১২ নম্বর বাড়ি। রোনাল্ড ডিফেও নামের চব্বিশ বছর বয়স্ক এক যুবক বেশ শক্তিশালী রাইফেলের সাহায্যে নিজের মা-বাবা, দুই ভাই আর দুই বোনকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে। পরে অবশ্য ডিফেও ধরা পড়েছিল, বিচারে তাকে ছয় মেয়াদে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। 

তিনি আরও জানান, দুই মাস আগে বাড়িটা জর্জ আর ক্যাথলিন লুৎজ নামে এক দম্পতি আশি হাজার ডলার দামে কিনে নেয়। দু’জনেই বেশ আধুনিক মনস্ক, তাই এই বাড়িতে ঘটে যাওয়া নারকীয় হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে সবকিছু জানলেও তারা এটা কিনতে কোনো প্রকার দ্বিধা করেনি। তিন সন্তান ছিল তাদের, এদের খেলার জন্য একটা বড়ো বাড়ি তো দরকার, তাই না? সেই হিসেবে বেশ সস্তাতেই ওরা পেয়ে গেছিল বাড়িটা। ২৩ ডিসেম্বর বাড়িটাতে উঠে তারা। কিছুদিনের মধ্যেই ওরা বুঝতে পারে যে বাড়িতে কিছু একটা ঠিক নেই। এই বাড়িতে ওরা একা নয়! আরও অনেকেই আছে… যারা মানুষ না! বিদেহী আত্মা! খুবই ভয় পেয়ে যায় লুৎজ দম্পতি, বাচ্চাদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে উঠে ওদের মা-বাবা। মি. লুজের ভাষ্যমতে, “ওখানে সবসময়ই ভয়ংকর এক অস্বস্তি আমাদের ঘিরে থাকত, মনে হতো কারা যেন আমাদের দেখছে! দিনদিন যেন আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছিল ওই অতিপ্রাকৃত শক্তিরা!” 

মাত্র চার সপ্তাহ বাড়িটাতে ছিল লুজরা। তারপর অল্পকিছু পোশাক নিয়ে বাকি সব সরঞ্জাম রেখেই ওই বাড়িটা ছেড়ে দেয় তারা। বর্তমানে ওরা কোথায় থাকে তা জানা যায়নি, তবে কিছু সূত্রের মতে মি. লুজের এক বন্ধুর বাড়িতে আপাতত ভাড়া থাকছে ওরা। কারও মতে ইস্ট ব্যাবিলনে থাকে। 

এরপর বাউম্যান জানান, লুৎজরা বাড়ি ছেড়ে চলে তো গেল। কিন্তু ওদের অপার্থিব অভিজ্ঞতার কথা পুরো অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছিল। একবার পুলিশকে ফোন করেছিলেন মি. লুজ, স্থানীয় গির্জার যাজকও এসেছিলেন কয়েকবার, অতিপ্রাকৃত বিশেষজ্ঞদেরও একটি দলও ব্যাপারটা নিয়ে আগ্রহ দেখিয়েছিল। মূলত এভাবেই পুরো এলাকাই জেনে যায় যে বাড়িটা ভূতুড়ে। মি. লুৎজ বলেন যে মাঝে মাঝেই না-কি তারা অদ্ভুত সব কণ্ঠস্বর শুনতেন। ওগুলো কোনো মানুষের কণ্ঠ হতে পারে না! শুধু কি তাই? প্রায়ই মনে হতো যে তাদের মনের মধ্যে থেকেই কেউ কথা বলছে, প্ররোচিত করছে বাকিদের মেরে ফেলে বাড়িটা ফাঁকা করে দিতে! তবে কি রোনাল্ডকেও এমন কোনো শক্তিই প্ররোচনা দিয়েছিল অমন ভয়ংকর হত্যাকাণ্ড ঘটানোর জন্য? একবার একটা অদৃশ্য হাত না-কি মিসেস লুৎজকে ধরে নিয়ে গিয়ে এমন এক কক্ষে ফেলে যা বাড়িটার ব্ল প্রিন্টেও ছিল না! একদম গোপন একটা জায়গা। তাদের মতে এই বাড়িটাতে কেউ নিরাপদে থাকতে পারে না। 

বাউম্যান জানান তিনি বাড়িটার ইতিহাস ঘেঁটে দেখেছেন। ওই বাড়িতে এর আগে যতগুলো পরিবার ছিল সবার সাথেই কোনো না কোনো ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। শুধু কী তাই? পুরোনো যে বাড়িটা ভেঙে এই বাড়িটা তৈরি করে হয়েছিল সেটার ইতিহাসও ভালো না। ওতেও অনেক রকম ভয়ংকর ঘটনা ঘটেছে। 

এছাড়া বাউম্যান অনুসন্ধান করে এটাও জানতে পেরেছেন যে রোনাল্ড ডিফেওর আইনজীবী উইলিয়াম ওয়েবার ওশান অ্যাভিনিউয়ের ১১২ নম্বর বাড়িটার ওপর গবেষণা করার জন্য একদল বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি এটা প্রমাণ করতে চান যে ওই বাড়ির সাবেক বাসিন্দাদের উদ্ভট আচরণের পিছনে অন্য কোনো ব্যাপার রয়েছে এবং সেটা কোনোভাবেই অতিপ্রাকৃত খেল নয়। এমনটা যদি আসলেই পাওয়া যায়, তবে তিনি রোনাল্ডকে ছাড়িয়ে নিতে পারবেন। ভদ্রলোকের দৃঢ় বিশ্বাস যে তার মক্কেল রোনাল্ড একেবারেই নির্দোষ। 

এরপর পর্দায় ভেসে উঠে ওয়েবারের মুখ। ভদ্রলোক বলেন, “দেখুন ভূত-প্রেতে আমি বিশ্বাস করি কি না, সেটা এখানে বলার বিষয় নয়। কিন্তু পুরোনো বাড়িগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগ বেশ সাবধানে দিতে হয়। কারণ কিছু বিশেষজ্ঞরা না-কি প্রমাণ করেছেন যে বিশেষ গঠনের কিছু পুরোনো বাড়িতে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহারের ফলে মানুষের মনোবিকৃতি দেখা দিয়েছে। আমার মক্কেলও এমন মনোবিকৃতির শিকার। অনেক বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞ আমার কথাগুলো হেসে উড়িয়ে দিয়েছেন। তবে হাল ছাড়িনি, ব্যক্তিগত উদ্যেগে আরেকদল লোককে নিয়োগ দিয়েছি। তাদের কাছ থেকে রিপোর্ট আসার পর সেটা ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ দলের কাছে পাঠানো হবে। ওনারা যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত রায় দেবেন।” 

সবশেষে বাউম্যান বললেন, “স্থানীয় ক্যাথলিক গির্জা থেকেও যাজকেরা এসেছিলেন বাড়িটিতে। শুধু তাই নয় চ্যানেল ফাইভের কাছে খবর রয়েছে যে ডিসেম্বরে ভ্যাটিকান থেকে দু’জন বিশেষ দূতও এসেছিলেন। মূলত তাদের পরামর্শেই বাড়িটা ছেড়ে দেয় লুজরা। অনেক আলোচনা আর তদন্তের পর গির্জার ‘অতিপ্রাকৃত বিশেষজ্ঞ পরিষদ’ ঘোষণা দিয়েছে, “ওশান অ্যাভিনিউয়ের ১১২ নম্বর বাড়িটা এমন কিছু প্রেত শক্তির দখলে যাদের মোকাবিলা করা কোনো মানুষের পক্ষে সম্ভব না, তাই ওই বাড়িটাতে আর কারোই থাকা উচিত হবে না।’ আসলে কী রহস্য লুকিয়ে আছে ওই বাড়িতে? আসলেই কি ওখানে ভূত আছে?” 

যা-ই হোক, চ্যানেল ফাইভে এই খবরটি প্রচারিত হওয়ার দুই সপ্তাহ পর জর্জ আর ক্যাথলিন লুজ, ডিফেওর আইনজীবী উইলিয়াম ওয়েবারের অফিসে একটি সংবাদ সম্মেলন করে। নিজের কিছু বন্ধুদের লুৎজ দম্পতির ব্যাপারে বলেছিলেন ওয়েবার, ওই লোকগুলো আবার এই দম্পতিরও পরিচিত ছিল। ওদের মাধ্যমেই তিন সপ্তাহ আগে তাদের যোগাযোগ হয়। 

জর্জ লুৎজ সাংবাদিকদের বলে, “আমি আর একটা রাতও ওই বাড়িতে কাটাতে চাই না, দরকার হলে রাস্তায় থাকব, কিন্তু ওখানে আর না।” 

“আপনি কি তবে ওশান অ্যাভিনিউয়ের ১১২ নম্বর বাড়িটা বিক্রি করে দেবেন?” একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন। 

“না, এখনই না,” মাথা নাড়ল লুজ, “আর তাছাড়া যে বদনাম ছড়িয়েছে, ওটা কেউ কিনবে বলেও মনে হয় না। ইতোমধ্যেই কিছু অতিপ্রাকৃত বিশেষজ্ঞ আর পরামনোবিদ[১] ব্যাপারটা দেখছেন। ওনাদের প্রতিবেদন এলেই তারপর আমি সিদ্ধান্ত নেব।” 

সেদিন আরও অনেক কথাই হয়েছিল। 

পরেরদিন বেশ কয়েকটা খবরের কাগজ আর চ্যানেলে লুজদের সংবাদ সম্মেলন নিয়ে লেখা হয়। এবং এগুলো দেখেই লুৎজ পরিবার সাংবাদিকদের সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। মি. লুজের মতে, “আমাদের কথাগুলো অতিরঞ্জিতভাবে প্রকাশ করা হয়েছে, আমরা যা বলেছি তার অনেক কিছুই বাদ গেছে। চ্যানেল ফাইভের রিপোর্টেও অনেক ভুলভাল বলা হয়েছে। তাই আর 

কখনও কোনো সংবাদমাধ্যমের সাথে কথা বলব না।” 

এরপর বেশ কিছুদিন তারা অন্তরালেই ছিল। 

অনেক অনুরোধ করার পর ‘কেবলমাত্র প্রকৃত ঘটনার উল্লেখ থাকবে’ এই শর্তে তারা আমাদের এই বিষয়ে লেখার অনুমতি দিয়েছে। 

মূল কাহিনির সাথে বাউম্যানের রিপোর্টের বেশ কিছু পার্থক্য দেখতে পাবেন পাঠকেরা, সেগুলো ভালো করে খেয়াল করবেন। শুরু করা যাক সেই কাহিনি। 

—

[১. পরামনোবিজ্ঞান (ইংরেজি: Parapsychology) এমন একটি শাস্ত্র, যা অব্যাখ্যাত মানসিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করে। অবশ্য চিকিৎসাবিজ্ঞান এবং বিজ্ঞানের বর্তমান কোনও শাখাই এটিকে বিজ্ঞান বলে স্বীকৃতি দেয়নি। এই শাস্ত্রে বিশেষজ্ঞদের parapsychologist বা পরামনোবিদ বলা হয়। ]

Book Content

দ্য অ্যামিটিভিল হরর – ১
দ্য অ্যামিটিভিল হরর – ২
দ্য অ্যামিটিভিল হরর – ৩
দ্য অ্যামিটিভিল হরর – ৪
দ্য অ্যামিটিভিল হরর – ৫
দ্য অ্যামিটিভিল হরর – ৬
দ্য অ্যামিটিভিল হরর – ৭
দ্য অ্যামিটিভিল হরর – ৮
দ্য অ্যামিটিভিল হরর – ৯
দ্য অ্যামিটিভিল হরর – ১০
দ্য অ্যামিটিভিল হরর – ১১
দ্য অ্যামিটিভিল হরর – ১২
দ্য অ্যামিটিভিল হরর – ১৩
দ্য অ্যামিটিভিল হরর – ১৪
দ্য অ্যামিটিভিল হরর – ১৫
দ্য অ্যামিটিভিল হরর – ১৬
দ্য অ্যামিটিভিল হরর – ১৭
দ্য অ্যামিটিভিল হরর – ১৮
দ্য অ্যামিটিভিল হরর – ১৯
দ্য অ্যামিটিভিল হরর – ২০
দ্য অ্যামিটিভিল হরর – ২১
দ্য অ্যামিটিভিল হরর – ২২
দ্য অ্যামিটিভিল হরর – ২৩
দ্য অ্যামিটিভিল হরর – ২৪
দ্য অ্যামিটিভিল হরর – ২৫
দ্য অ্যামিটিভিল হরর – পরিশিষ্ট / শেষ কথা
লেখক: জে অ্যানসন, লুৎফুল কায়সারবইয়ের ধরন: অনুবাদ বই, ভৌতিক, হরর, ভূতের বই

Reader Interactions

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ডিকশনারি

কৌতু্ক / জোকস

লিরিক

রেসিপি

বিবিধ রচনা

হেলথ

Download PDF


My Account

Facebook

top↑

Login
Accessing this book requires a login. Please enter your credentials below!

Continue with Google
Lost Your Password?
egb-logo
Register
Don't have an account? Register one!
Register an Account

Continue with Google

Registration confirmation will be emailed to you.