গোপন সৈকতে – ৯

নয়

পরদিন সকালে, মুসা, রবিন আর সু কি এমাকে ক্যাফেটেরিয়ায় পেয়ে রাতের রহস্যময় বোটের শব্দের কথা জানাল।

‘তাহলে তো এটা রিপোর্ট করতে হয়,’ বলল এমা। সাঙ্ঘাতিক গম্ভীর দেখাচ্ছে ওকে। ‘রাতে কারও বোট নেয়ার অনুমতি নেই-এমনকী কাউন্সেলরদেরও।’ একটু থেমে, কফিতে চামচ নাড়ল। ‘আর তোমরা শিয়োর যে ছ’নম্বর বার্থটা খালি ছিল?’

হ্যাঁ-সূচক মাথা ঝাঁকাল সু কি।

‘বোটটা যে-ই নিয়ে থাকুক ফিরিয়ে দিয়েছে,’ বলল এমা। ‘আধ ঘণ্টা আগেই ডকে গেছিলাম। সব কটা বোটই আছে ওখানে।’

এসময় কিশোরকে পেছনে নিয়ে ছুটতে ছুটতে ক্যাফেটেরিয়ায় ঢুকল ডন।

‘আমরা চোরের নাগাল প্রায় ধরে ফেলেছি,’ বলল ও।

‘মনে হয় না,’ মুসার কণ্ঠে সন্দেহ। ‘কাল রাতেই হয়তো যা . নেয়ার নিয়ে ফেলেছে লোকটা, আর হয়তো দেখা দেবে না।’

নাস্তার পরে, ছেলে-মেয়েরা ডকে গেল তদন্ত করতে। হয়তো গত রাতে কোন সূত্র ওদের চোখ এড়িয়েছে। ডক ধরে ধীরপায়ে হাঁটছে ওরা, ছ’নম্বর বার্থে ডক করা পাওয়ারবোটটা তীক্ষ্ণদৃষ্টিতে দেখল ডন। একদম স্বাভাবিক দেখাচ্ছে ওটাকে-সাদা ফাইবার গ্লাস ফিনিশ, উড-গ্রেইন ড্যাশবোর্ড, নীলরঙা সিট…

সহসাই স্থাণু হয়ে গেল ও। এক সিটের ওপর পড়ে রয়েছে চকচকে কী একটা যেন। কী ওটা? হাতের তালুতে এঁটে যাবে এতটাই ছোট, সকালের রোদ পড়ে ঝিকোচ্ছে জিনিসটা। কিশোরের বাহু ধরে টানল ও জরুরী ভঙ্গিতে।

‘সিটটা দেখো!’ চাপা স্বরে বলল। ‘কী ওটা? আনতে পারবে?’

এক হাত দিয়ে ভারসাম্য ধরে রেখে বোটের ভেতর আলতো পা রাখল কিশোর। চকমকে জিনিসটা তুলে নিয়ে চোখের পলকে ডকে ফিরল।

‘কী ওটা?’ ডনের উৎসাহ ধরে না।

‘একটা সূত্র,’ বলে, মুঠো খুলল কিশোর। সবাই ওকে ঘিরে ধরল ছোট্ট, সোনালী সিগারেট লাইটারটা দেখতে। ওটায় আদ্যক্ষর খোদাই করা-এনএস। ‘হয়তো খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা সূত্র পাওয়া গেছে।’

‘খাইছে, এনএস,’ মুসা বলল চিন্তিত কণ্ঠে। ও আর রবিন দৃষ্টি বিনিময় করল।

‘নিল স্যাণ্ডার্স!’ একসঙ্গে বলে উঠল পরক্ষণে।

‘লোকটা আমাদের সন্দেহের তালিকায় এখন এক নম্বরে,‘ বলল ডন।

সেদিন বিকেলে, কাউন্সেলররা ক’জন ক্যাম্পারকে বেড়াতে নিয়ে গেল বার্ড আইল্যাণ্ডে। ছেলে-মেয়েরা বড় নৌকোয় আর এমা এক রো বোটে চেপে চলল ওখানে। পানি কেটে তরতর করে এগিয়ে যাচ্ছে এমার নৌকো, দেখে খুব মজা পেল ডন। এমা যাত্রাটা দারুণ উপভোগ করছে বোঝাই যাচ্ছে।

‘তুমি উইণ্ড-সার্ফিং ভালই রপ্ত করেছ,’ বলল নথি। ‘জ্যাক নানা খুব খুশি হবেন। উনি কাল আসছেন।’

‘কাল?’

‘এখানে তো আমাদের এক হপ্তা হয়ে গেল,’ মুসা মনে করাল ওকে। ‘অনেক অ্যাকটিভিটির মধ্যে ছিলাম বলে সময়টা চোখের পলকে চলে গেছে।’

‘অনেক কিছু শেখাও হলো আমাদের,’ বলল সু কি।

‘ইস, আর কটা দিন যদি থাকতে পারতাম!’ বলল ডন। ‘সত্যিকারের উইণ্ড-সার্ফার ব্যবহার করা হলো না আমার। ওই যে, যেগুলো পানিতে যায়।’

মুসা ওকে জড়িয়ে ধরল এক বাহু দিয়ে।

‘পরে কখনও, ডন।’

.

ডিনার শেষে, সবাই গান গাইল এবং ক্যাম্পফায়ার ঘিরে বসে মার্শম্যালো টোস্ট করল। সু কি আগে কখনও মার্শম্যালোর স্বাদ নেয়নি, ডন ওকে শিখিয়ে দিল কীভাবে আগুনে সেঁকতে হয় কাঠিতে গেঁথে।

‘মমম!’ প্রথম টোস্ট করা মার্শম্যালোটা খেয়ে তৃপ্তির সঙ্গে বলল সু কি। ‘দারুণ!’

মুসার মন খারাপ লাগছে, ক্যাম্পটাকে মিস করবে ও, বিশেষ করে এমাকে-ভাল খাতির হয়ে গিয়েছিল ওর সঙ্গে। এবং সবচাইতে বাজে ব্যাপার, প্রবাল-চুরির রহস্যটার কিনারা করতে পারল না ওরা!

‘তুমিও কি আমার মতই একই কথা ভাবছ?’ মৃদুস্বরে বলল রবিন। মুসা একদৃষ্টে আগুনের দিকে চেয়ে, ওর মুখের চেহারার অভিব্যক্তি বলে দিচ্ছে মনের কথা।

মাথা ঝাঁকাল মুসা।

‘সম্ভবত। প্রবাল চোরের কথা ভাবছি-কে সে, কী করতে চলেছে এর পর। রহস্যটার সমাধান না করেই চলে যেতে হচ্ছে আমাদের।’

দীর্ঘশ্বাস পড়ল রবিনের।

‘হুম। চোরটা নিশ্চয়ই কখনও না কখনও কোন ভুল করবে আর আমরা বিদায় নেয়ার পর এমা হয়তো ওকে পাকড়াও করবে।’

খানিক পরে, কাউন্সেলররা দ্বীপে হাইক করার প্রস্তাব দিল, কিন্তু ছেলে-মেয়েরা ক্যাম্পফায়ার ছেড়ে নড়তে চাইল না। তীব্র কমলা আভা ছড়িয়ে ইতোমধ্যেই অস্ত গেছে সূর্য, রাতের বাতাস সুরভিত আর মৃদুমন্দ।

‘কী শান্তি এখানে!’ বলে উঠল নথি। ‘আমি বসে-বসে তারা দেখতে চাই।

‘আর আমি চাঁদের আলো,’ বলল ডন। ‘পানিতে আলো পড়ে চিকমিক করে, দেখতে দারুণ লাগে।’

‘আমি ক্যাম্পফায়ার দেখব,’ বলল মুসা। ‘আমাদের পুরো এক প্যাকেজ মার্শম্যালো এখনও বাকি আছে!’

হেসে উঠল সবাই, এবং দলটা হাইক করতে লাগল সৈকত ধরে, ছেলে-মেয়েদেরকে পেছনে ফেলে।

দ্বীপটাকে দ্রুতই গ্রাস করছে অন্ধকার। আধ ঘণ্টা পরে, পানিতে আলো ঝলসাতে দেখে চমকে গেল ডন। দ্বীপের দূরপ্রান্তে জ্বলছে, তবে স্পষ্ট দেখছে ও, মিটমিট করছে বাতিটা। উঠে দাঁড়াল ও, কৌতূহলে ফেটে পড়ছে। এবার পরিচিত এক শব্দ কানে এল। ভট-ভট। ভট-ভট।

‘খাইছে, সেই বোটটা,’ রুদ্ধস্বরে বলল মুসা। ‘হ্যাঁ, ওটাই!’

পরমুহূর্তে উঠে পড়ল কিশোর আর অন্যরা।

‘এত নিশ্চিত হচ্ছ কীভাবে?’ প্রশ্ন কিশোরের।

‘কারণ সে রাতে আমরা এই বোটটার শব্দই পেয়েছিলাম, ‘ দৃঢ়কণ্ঠে জানাল মুসা।

‘সব পাওয়ারবোটের শব্দই তো একরকম,’ বলল কিশোর।

‘এটারটা আলাদা,’ জানাল মুসা, মাথা নাড়ছে। ‘একটু পরপরই ভট-ভট শব্দের একটা ভট মিস করে। আমরা এটার শব্দই শুনি সেদিন। ছয় নম্বর বোট।’

‘ঠিক,’ একমত হলো কিশোর। ‘এমা বলেছিল বোটটার ট্র্যান্সমিশনে সমস্যা আছে, তাই শব্দ বাদ পড়ে।’

‘এখন কী করব আমরা?’ আগ্রহী কণ্ঠে জবাব চাইল রবিন।

সহসাই ভট ভট শব্দটা থামল, এবং ছেলে-মেয়েরা নিথর দাঁড়িয়ে কান খাড়া করল।

‘শব্দটা থেমে গেল কেন?’ ফিসফিসে গলায় ডনের প্রশ্ন।

‘কে জানে—’ বলতে শুরু করে চুপ করে গেল মুসা। হঠাৎই বুঝে গেল কী হচ্ছে। ‘খাইছে, না!’ চেঁচিয়ে উঠল ও। ‘চোর বোটটা ডক করেছে। ও যদি আরও প্রবাল চুরি করে?’

‘এমা আর অন্য কাউন্সেলরদের জানাতে হবে,’ জরুরী কণ্ঠে বলল কিশোর। ‘এবং এক্ষুণি।’

‘ওরা তো গেছে বেশ কিছুক্ষণ হয়,’ বলল রবিন। ‘ওদেরকে এখন খুঁজে পাব কীভাবে?’

‘ভাগ হয়ে খুঁজব,’ বলল কিশোর। ‘মুসা, তুমি আর আমি রো বোটটা নিয়ে দ্বীপের অন্যপ্রান্তে যাব। তাতে অন্তত জানা যাবে কী ঘটছে, এমনকী হয়তো চোরটার দেখাও পেয়ে যেতে পারি।’

‘সু কি আর আমি ক্যাম্পারদের খুঁজে বের করব,’ বলল রবিন।

‘তীর ধরে হেঁটো না। অনেক সময় লেগে যাবে তাহলে,’ সতর্ক করল কিশোর।

‘আমরা জঙ্গলের ভেতর দিয়ে যাব,’ চট করে বলল সু কি। হাঁচড়ে পাঁচড়ে উঠে পড়ল। লম্বা প্যান্ট আর মজবুত জুতো পরায় মনে স্বস্তি পাচ্ছে।

‘আর আমি?’ বলল ডন। ‘আমি কী করব?’

‘তুমি আমাদের সাথে যাবে,’ বলে, কিশোর ওর হাত চেপে ধরল।

‘ভেতরে তিনটে লাইফ জ্যাকেট আছে,’ বলল মুসা, মিনিট্ দুয়েক পরে ওরা যখন রো বোটটির কাছে পৌঁছল। ছেলেরা ঝটপট পরে নিল ওগুলো এবং কিশোর মুসা আর ডনকে পেছনের সিটে বসতে সাহায্য করল। এবার মাঝের আসনে বসে দাঁড়জোড়া তুলে নিল।

ওরা যখন প্রায় দ্বীপের ওমাথায়, সৈকতের কাছাকাছি পৌঁছেছে, ডন তীক্ষ্ণ এক শব্দ পেল।

‘কীসের শব্দ ওটা?’ জিজ্ঞেস করল।

‘কোরাল বেডে হাতুড়ি চালাচ্ছে চোরটা,’ হতাশার সুরে বলল কিশোর। ‘শীঘ্রি কিছু একটা করতে হবে।’

রো বোটটাকে যথাসাধ্য নিঃশব্দে ভিড়িয়ে, পা টিপে-টিপে চলল জমাটবাঁধা বেলাভূমির ওপর দিয়ে। সাগরসৈকতে ঘুটঘুটে অন্ধকার, কিন্তু আচমকাই ওরা পানির কিনারায় এক আলোর নাচন দেখল—মাত্র ক’গজ দূরেই।

‘আলোটা নিজে-নিজেই নড়াচড়া করছে,’ ভীতকণ্ঠে বলল ডন।

‘না, লোক আছে,’ অভয় দিয়ে বলল মুসা। শক্ত করে আঁকড়ে ধরল ডনের হাত। ‘পানি থেকে উঠে আসছে কেউ এবং লোকটা কালো ড্রেস পরে আছে। তাই ওকে দেখতে পাচ্ছ না।’

‘লোকটা ওয়েটসুট পরা,’ ফিসফিসিয়ে বলল কিশোর। আরেকটু কাছিয়ে গেল ওরা। মুসা দেখল অবয়বটা ছিপছিপে এবং তার হাতে প্রবালের বড়সড় এক চাং। স্নরকেল মাস্কে মুখের বেশিরভাগটুকু ঢাকা।

‘কে ওটা?’ ডন প্রশ্ন করে, মুসার কাছ ঘেঁষে এল।

মাথা নাড়ল মুসা।

‘এখনও জানি না। দেখা যাক ব্যাটা কী করে।’

কৃষ্ণমূর্তি প্রবালখণ্ডটি তুলে রাখল কাছেই ডক করা এক পাওয়ারবোটে এবং ফিরে গেল পানিতে।

‘শয়তানটা আরও প্রবাল চুরি করবে!’ ক্রুদ্ধকণ্ঠে বলে উঠল মুসা। ‘ওকে ঠেকাতে হবে!’

‘হ্যাঁ, কিন্তু আমরা সাহায্য পাব কই?’ বলল কিশোর। ‘তোমরা এখানে থাকো, ওর চেহারাটা দেখার চেষ্টা করো। আমি রো বোটটা নিয়ে অন্যদের খুঁজতে যাই।’

‘জলদি, কিশোরভাই,’ তাগিদ দিল ডন।

‘চিন্তা কোরো না,’ ওকে আশ্বস্ত করল গোয়েন্দাপ্রধান।

রো বোটের কাছে তড়িঘড়ি ফিরল কিশোর, ঠিক সে মুহূর্তে পানি থেকে উঠল চোরটা। পাওয়ারবোটটিতে আরেক চাং পলা বোঝাই দিয়ে জিরিয়ে নিতে থামল মুহূর্তের জন্য।

‘ও কী করছে এখন?’ ফিসফিসে স্বরে প্রশ্ন করল ডন।

‘আল্লাহই জানে—’ বলতে গিয়ে থেমে গেল মুসা। কৃষ্ণবসন অবয়বটি স্মরকেল মাস্ক খুলেছে এবং মুসা সবিস্ময়ে শ্বাস চাপল। ওটা ক্যাথি অ্যালেন!

ডনের হাত পাকড়ে, একটু-একটু করে পিছাতে লাগল ও, এসময় ব্যথায় অস্ফুট চিৎকার ছাড়ল ডন।

‘খাইছে, ও শুনে ফেলবে তো,’ বলল মুসা। ও ক্যাথির চোখে ধরা পড়তে নারাজ।

‘সরি,’ ক্ষীণ স্বরে বলল ডন। ‘একটা শামুকের ওপর পা পড়েছিল।’

শব্দ লক্ষ্য করে ঝটিতি ঘুরে গেল ক্যাথির মাথা, কিন্তু ছেলেদেরকে দেখে ফেলার আগেই, বনভূমির ভেতর এক ছুটে ঢুকে পড়ল মুসা। ডনকে ও টেনে নিল প্রকাণ্ড এক বট গাছের আড়ালে।

হঠাৎই আঁধার ফুঁড়ে উদয় হলো একটা বাহু। ওটা কাঁধ চেপে ধরতেই ভয়ার্ত চিৎকার দিতে যাচ্ছিল মুসা।

‘ভয় পেয়ো না,’ শান্তস্বরে বলল কেউ। ‘আমি।’ কাছিয়ে আসতেই লোকটিকে চিনল ও।

‘নিল স্যাণ্ডার্স?’ সন্দেহের সুরে বলল মুসা।

এই রাতের আঁধারে জঙ্গলের ভেতর কী করছে লোকটা?

‘চিন্তার কিছু নেই,’ বললেন নিল। মুসা তাঁর কথায় বিশ্বাস করবে কিনা বুঝছে না।

‘কী হচ্ছে এখানে?’ আচমকা গমগম করে উঠল কিশোরের কণ্ঠস্বর।

‘আমরা এখানে!’ গলা ছেড়ে হাঁকল মুসা। কিশোর পরমুহূর্তে ওর পাশে এসে দাঁড়াল।

‘বোটে পা রাখতেই ডনের চিৎকার শুনি,’ জানাল কিশোর। এবার চাইল নিলের দিকে। ‘আপনি এখানে কী করছেন?’

‘তোমরা যা করছ তা-ই। প্রবাল চোরকে ধরতে এসেছি।’

ইতস্তত করল কিশোর। নিল ‘কি সত্যি কথা বলছেন? এখন অবধি তিনিও তো সন্দেহভাজনদের একজন।

‘উনি চোর নন!’ বলে উঠল ডন। ‘চোর ক্যাথি অ্যালেন। আমরা তাকে দেখেছি!’

‘কোথায় সে?’ নিলের প্রশ্ন।

‘সাগরতীরে,’ জানাল মুসা।

‘ওকে,’ বললেন নিল। পকেট থেকে ওয়াকি-টকি বের করে অল্প কিছু কথা বললেন। তারপর ছেলেদের দিকে চেয়ে স্মিত হাসলেন। ‘ওরা কিছুক্ষণের মধ্যেই ওকে পাকড়ে ফেলবে। গোটা দ্বীপ জুড়ে অফিসার ছড়িয়ে রয়েছে আমাদের।’

‘অফিসার?’’ মুসা রীতিমত বিস্মিত। ‘আপনি পুলিসের লোক?’

‘ডিটেকটিভ নিল স্যাণ্ডার্স,’ জবাব দিয়ে, ব্যাজ বের করে দেখালেন। ‘গত কিছুদিন ধরে গোপনে কাজ করছি আমি, চোরের পেছনে লেগে আছি। তবে রহস্যটার সমাধান তোমরাই করেছ, ‘ বললেন ওদেরকে। ‘জানতাম অপকর্মটা করছে ক্যাম্প কোরালেরই কেউ, কিন্তু কিছুতেই ধরতে পারছিলাম না কে।’

‘আমরাও পারিনি,’ বলল কিশোর। ‘আমরা এমনকী আপনাকেও সন্দেহ করছিলাম।’

‘পুলিস সময়মত আসবে তো?’ মুসার কণ্ঠে উদ্বেগ। ‘ও যদি পাওয়ারবোটে চড়ে ভেগে যায়?’

‘পারবে না।’ চিকন এক তার তুলে ধরল কিশোর। ‘স্পার্ক প্লাগ খোলা যেহেতু, বেশিদূর যেতে পারবে না।

হেসে উঠলেন নিল।

‘বাহ, তোমরা তো দেখি ঝানু গোয়েন্দা!’