এমন মানুষ রোজই দেখি

এমন মানুষ রোজই দেখি

এমন মানুষ রোজই দেখি, যারা আমায় আগে চিনতেন, ডেকে বলতেন
এই যে সুনীল, কেমন আছ, এসো চা খাও
এখন তাঁরা মুখ ফিরিয়ে শুকনো হাস্য, আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেন
কালো গহ্বর
ঘরে ঢুকলে অনেকে আজ জানলা দিয়ে বেরিয়ে যেতে হুকুম করেন…

বৃষ্টি হয়নি বিকেলবেলা, বিষম গরম, সে অপরাধে আমি হয়েছি মূল আসামি
মধ্যরাতে মাঠের মধ্যে দাঁড়িয়ে রইল ট্রেন, আমার ঘুম হল না
পাগলা হাওয়ায় উড়িয়ে নিল হলুদ রুমাল, একটি তারা খসে পড়ল
পুড়তে পুড়তে খসে পড়ল বনের মাথায়
এসব যেন আমারই দোষ, একটি মেয়ে সেই থেকে আর কথা বলে না
মুখের দিকে তাকাই, আমার বুকের ভিতর কাতর ক্ষমা প্রার্থনা
কথা বলিনি, মুখের দিকে নির্নিমেষে চেয়ে থেকেছি…

বয়েস হল তিরিশ পার, বাঁ জুলপিতে একটি সাদা শিকড়
আর কয়েকটা বছর মাত্র বেঁচে আছি
সবার মুখের দিকে তাকাই, বুকের ভিতর কাতর ক্ষমা প্রার্থনা
কথা বলি না, নির্নিমেষ চেয়ে থাকি
দুচার মাস কবিতা লেখা না হলে আমার মুখের কথাও
ভালো শোনায় না
যে সব পাপ করিনি, আমি তারও অগ্রিম ক্ষমা
চেয়েছি নিঃশব্দে।
এই পৃথিবী আমায় একটা বিশাল গর্ত খুঁড়তে বলেছিল,
এবার শেষ হল
আর পাঁচটা বছর বাঁচব, এখন আমি পোশাক বদলে
তৈরি হয়ে নিচ্ছি
গোপালপুরে সন্ধেবেলা শুয়েছিলাম সমুদ্রের পাড়ে
একলা চিত হয়ে
জলের শব্দ, নীল রঙের মধ্যে আমার দুহাত ছড়ানো
সেদিনই খুব মরে যেতে ইচ্ছে হল,
এমনভাবে আগে কখনও ইচ্ছে হয়নি!