২৫শে মার্চ – ২

কুয়ালালামপুর ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট, সেলানগর, মালয়েশিয়া
বর্তমান সময়, বিকেল প্রায় ৫টা

হোটেল হিলটনের বারোতলার জানালা দিয়ে বাইরে তাকালে ভিউটা খুবই চমৎকার। এখান থেকে কুয়ালালামপুর ইন্টারন্যশনাল এয়ারপোর্টটা মাত্র দুই ব্লক দূরে। দুই বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থায়নে নির্মিত পাশাপাশি অবস্থিত দুটো এয়ারপোর্টের সৌন্দর্য চেখে পড়ার মতোই। তবে হিলটনের জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে থাকা প্রফেসর আফতাবের এসবকিছুই চোখে পড়ছে না। সে গভীর চিন্তায় নিমগ্ন। প্রায় চার দশকের বেশি সময় ধরে বাস করা এই দেশটা এভাবে ছেড়ে চলে যেতে হবে, ব্যাপারটা এখনও সে কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। এই দেশটার প্রতি তার একধরনের মায়া জন্মে গেছে। যখন সে এই দেশে আসে তখন দেশটা তার নিজের দেশের চেয়েও অনেক অনুন্নত ছিল। আর এখন এই দেশ কোথায় চলে গেছে আর তার নিজের দেশ, ভাবতে গিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস তার বুক চিরে বেরিয়ে এলো। এই দেশেরই একজন হয়ে গিয়েছিল সে। তবে এখন আর উপায় নেই। এভাবে তার সবকিছু ভেঙে পড়বে সে ভাবতে পারেনি। সবকিছু পরিকল্পনা মাফিকই সাজানো ছিল কিন্তু…

দরজায় নক হতে সে ফিরে তাকাল। হাতের মার্টিনির গ্লাসটা নামিয়ে রেখে পিপ হোলে একবার দেখে নিয়ে দরজা খুলল। তার একান্ত বিশ্বস্ত বডিগার্ড। আজ প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় ধরে তার সাথে আছে।

“কাম ইন। সবকিছু রেডি?”

“জি, স্যার। আমাদের এখন রওনা দেওয়া উচিত। ফ্লাইটের আর খুব বেশি দেরি নেই।”

“তোমার কী মনে হয়, কিছু ঘটতে পারে?”

“স্যার প্রস্তুতি নেওয়াই আছে। দেখা যাক।” ছেলেটার ব্যক্তিত্বের এই অংশটা প্রফেসরের খুব ভালো লাগে, বেশি কথা বলে না, আগ বাড়িয়ে কিছু ভাববেও না কিন্তু কাজের প্রস্তুতি একদম শতভাগ।

প্রফেসর তার বডিগার্ডের সাথে নিচে নেমে এলেন। তার লাগেজ আগেই গাড়িতে ওঠানো হয়েছে। এখানে তাকে বিদায় জানানোর কেউ নেই। দীর্ঘদিনের পরিচিত প্রায় সবার কাছ থেকে তিনি কুয়ালালামপুর থেকেই বিদায় নিয়ে এসেছেন। সেটাও খুব গোপনে। বেশিরভাগ মানুষ আসলে জানেই না, তিনি চলে যাচ্ছেন। তবে যাদের জানা উচিত নয় তারা হয়তো বা ঠিকই জানে। প্রফেসর উঠে বসতেই গাড়ি ছেড়ে দিল।

বডিগার্ড তার পাশের সিটে বসল, আর সামনে ড্রাইভারের পাশে আরেকজন। এরা সবাই তার একান্ত বিশ্বস্ত লোকজন। গাড়ি ছাড়ার আগে ড্রাইভার জানালা দিয়ে হাত বের করে অদৃশ্য কারও উদ্দেশে খুব সামান্য করে হাত নাড়ল। প্রফেসর ব্যাপারটা খেয়াল করলেন। তার মুখে মৃদু একটা হাসি ফুটে উঠল। তার মানে প্রস্তুতি একদম ঠিক আছে। কিন্তু একটাই আফসোস দেশে তার সতীর্থদের সে সতর্ক করতে পারেনি। কারণ তার কভার ভেঙে পড়ার পর ওদের সাথে যোগাযোগ করার ঝুঁকি তিনি নিতে চাননি। মনে সামান্য আশা তার শত্রুরা হয়তো ওদের পরিচয় জানতে পারেনি। এখনও চিনতে পারেনি। ড্রাইভার গাড়ি ছেড়ে দিল।

.

একই সময়ের একটু আগে বাংলাদেশে….
ঢাকা, মিন্টু রোডের কাছাকাছি রাস্তায়

রাতের ডিউটি ইন্সপেক্টর ফজলুর সবসময়ই বিরক্ত লাগে। তার ওপর যদি লোকজনকে সার্চ করতে হয় তবে সেটা আরও বিরক্তিকর হয়ে দাঁড়ায়। কারণ ইদানীং লোকজন পুলিশকে ঠিক আগের মতো ভয়ও পায় না আর সমীহও করে না। বরং বিরক্ত হয়। আর যদি ভুলেও কখনো কোনো ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের মুখোমুখি হতে হয়, তবেই হলো, এদের মতো ত্যাঁদড় আর নেই।

এখানে তারা চারজন ডিউটিতে আছে আর একটা টহল জিপ। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অলস ভঙ্গিতে সিগারেটে টান দিচ্ছে, হঠাৎ সে দেখতে পেল ছোকরাটাকে। পরণে জিন্স, পায়ে লোফার আর গায়ে টি-শার্ট, মোবাইলে কথা বলতে বলতে রাস্তা পার হচ্ছিল, হঠাৎ পুলিশের গাড়ি দেখতে পেয়ে থমকে দাঁড়াল। কাদের মিয়ার কেমন যেন সন্দেহ হলো। সে ইশারায় কাছে ডাকল ছোকরাকে। ডাক দেওয়া মাত্রই ছোকরা ঘুরে দাঁড়িয়ে ভৌ-দৌড়।

সাথে সাথে কাদের মিয়াঁ বাঁশি বাজিয়ে দৌড় দিল জিপের দিকে। সে নিশ্চিত এই ছোকরা ইয়াবার ডিলার। সাধারণত ওরাই এই ধরনের আচরণ করে। তবে সে মনে মনে খুশি হয়ে উঠল এদের সাথে ভালো টাকাপয়সা থাকে। ধরতে পারলে টু-পাইস ইনকাম হবে।

ছোকরা জানপ্রাণ নিয়ে দৌড়াচ্ছে, জিপের লাইট পড়ে তার হলুদ টি-শার্ট চকচক করছে। দূরত্ব আর বেশি নেই যেকোনো সময় জিপ তাকে ধরে ফেলবে, হঠাৎ সে বাঁক নিয়ে একটা গলিতে ঢুকে পড়ল। জিপও তাকে অনুসরণ করে গলিতে ঢুকে পড়ল।

গলির ভেতরে ঢুকতেই নরক নেমে এলো পুলিশের গাড়ির ওপর। পাশ থেকে হেডলাইড অফ করা একটা বড় গাড়ি ভয়ংকর বেগে আছড়ে পড়ল জিপের ওপর। প্রচণ্ড ঝাঁকিতে জিপের পুলিশ চারজন যখন টালমাতাল একটা স্মোব বম্ব এসে পড়ল গাড়ির ভেতরে। তীব্র কাশির চোটে সবাই জ্ঞান হারাল কয়েক মিনিটের ভেতরে।

অন্য গাড়িটা থেকে নেমে এলো দুজন লোক। প্রথমেই টি-শার্ট পরা ছোকরাকে টাকা দিয়ে বিদায় করল। তারপর এগোল পুলিশের জিপটার দিকে ভেতরে চারজন পুলিশই অজ্ঞান। দ্রুতবেগে দুজন পুলিশের পোশাক খুলে চারজনকেই বেঁধে ফেলা হলো। ওদের দরকার দুজনের পোশাক আর এই জিপটা।

কাজ করতে করতেই একজন আরেকজনকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলল, “এই কারণেই তাড়াহুড়ো কাজ আমার পছন্দ না। স্রেফ তাড়াহুড়োর কারণে পুলিশের গাড়ি ছিনতাই করতে হলো।”

অপরজন দাঁবড়ে উঠল, “কথা কম বলো, কাজ করো। খুব দ্রুত খবর হয়ে যাবে। আমরা বড়জোর আধা ঘণ্টা সময় পাব। এর ভেতরেই কাজ সারতে হবে,” বলে সে মাথা উঁচু করে মিন্টু রোডের একটা বাড়ির দিকে তাকাল। ওই সিকিওরড এরিয়াতে নির্বিঘ্নে ঢুকতে হলে এছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।

.

প্রফেসর আফতাবের গাড়ি থেমে গেল এয়ারপোর্টের ড্রাইভওয়েতে এসে। প্রথমেই দুই বডিগার্ড নেমে গাড়ির দরজা খুলে দিল। প্রফেসর গাড়ি থেকে নেমে আসার আগে একবার ড্রাইভারের কাঁধে হাত বুলালেন, “ভালো থেকো,” বলে তিনি নেমে এলেন বাইরে। মনে মনে মৃদু আশা এখনও যেহেতু কিছু হয়নি তবে কিছু নাও হতে পারে। একজন পোর্টার নামিয়ে আনল তার লাগেজ। প্রফেসর দুই বডিগার্ডের সাথে রওনা দিলেন ভেতরের দিকে।

আক্রমণটা হলো একদমই হঠাৎ এবং খুবই সূক্ষ্মভাবে। আক্রমণটা হয়েছে প্রথমে বোঝাই গেল না। প্রফেসর তার দুই বডিগার্ডের সাথে মূল দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকছেন। হঠাৎ একদল কোরিয়ান বেরিয়ে এলো। বাচ্চাকাচ্চা মহিলা সহ বিশাল দল। তাদেরকে জায়গা দেওয়ার জন্য তারা একটু সরে দাঁড়াল। ওরা বেরিয়ে গেলে তারা ঢুকবে। হঠাৎ একজন যাত্রী লাগেজসহ হোঁচট খেয়ে পড়ে গেল একদম ওদের ওপর। প্রথমে ব্যাপারটা দুর্ঘটনাই মনে হলো কিন্তু সেই যাত্রীটি মাটিতে পড়েই প্রফেসরের একজন বডিগাডর্কে চেপে ধরল মাটিতে। একই সময়ে আরেকজন একপাশ থেকে লাফিয়ে পড়ল প্রফেসরের অন্য বডিগার্ডের ওপর। হতভম্ব প্রফেসর কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখতে পেলেন একজন মহিলা তার পার্সের ভেতর থেকে বের করে এনেছে একটা ছোট্ট সাব-মেশিনগান।

তার মুখ দিয়ে অস্ফুটে বেরিয়ে এলো, “ও মাই গড।”

.

মিন্টু রোডের একজন ভিআইপির বাড়ির গেটে একটা পুলিশ জিপ এসে থামল। ভেতরে দুজন পুলিশ। তারা একটা জরুরি চিঠি নিয়ে এসেছে। সেটা শুধুমাত্র মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের হাতেই দেওয়া যাবে। দুজনেরই প্রয়োজনীয় কাগজ চেক করে গেট থেকে ফোন দেওয়া হলো ভেতরে। গেটের গার্ডরা এতে অভ্যস্ত। কারণ প্রায়ই রাতবিরাতে এধরনের চিঠি বা জরুরি কাগজপত্র আসে। এমনকি সরকারি অতিথিও আসে কখনো কখনো। তারা জিপটাকে ভেতরে ঢোকার অনুমতি দিল।

জিপ চালিয়ে তারা সোজা চলে এলো মূল বাসভবনের সামনে। একজন আরদালি তাদেরকে পথ দেখিয়ে ভেতরে নিয়ে এলো বসার রুমে। দুজনেই বসে অপেক্ষা করছে এমনসময় মন্ত্রী সাহেব নেমে এলেন। একপাশের সোফায় বসে হাত বাড়ালেন কাগজের জন্য, তার পাশেই দাঁড়িয়ে আছে বয়স্ক আরদালি। একজন ভুয়া পুলিশ তার হাতে একটা খাম ধরিয়ে দিল। মন্ত্রী সাহেব খামটা খুলছেন অপর পাশ থেকে আরেকজন কোমরের পেছন থেকে সাইলেন্সার লাগানো একটা পিস্তল বের করে আনল।

.

মহিলা পার্সের ভেতর থেকে সাব-মেশিনগান বের করতেই প্রফেসর বুঝে গেলেন তার অন্তিম সময় উপস্থিত। আক্রমণটা ব্যর্থ হওয়ার কোনো কারণ ছিল না। তার দুই বডিগার্ডই তখনও দুজনের সাথে লড়ছে এবং প্রফেসর আক্রমণের মুখে পুরোপুরি অসহায়। কিন্তু সেটা ব্যর্থ হলো দুটো কারণে। এক. প্রফেসরের ইনস্ট্যান্স রিফ্লেক্স, দুই. তাদের ব্যাকআপ টিম। প্রফেসরের টিম আগেই জানত এরকম কিছু একটা হতে পারে কাজেই আগেই তাদের একটা অদৃশ্য ব্যাকআপ টিম প্রস্তুত ছিল।

মহিলা মেশিনগান বের করে গুলি করতেই প্রফেসর একপাশে লাফিয়ে পড়লেন। যদিও গুলির প্রথম ঝাপটা তিনি পুরোপুরি এড়াতে পারলেন না। মেশিনগানের একটা গুলি তার ডান কাঁধের একপাশ দিয়ে ঢুকে গুরুতর কোনো ক্ষতি না করেই বেরিয়ে গেল। মহিলা আবারও পড়ে যাওয়া প্রফেসরের দিকে সাব-মেশিনগান তাক করছে একপাশ থেকে লাগেজ ক্যারি করতে থাকা পোর্টার তার মাথা উড়িয়ে দিল।

অন্যদিকে মাটিতে ধস্তাধস্তি করতে থাকা এক বডিগার্ড তার আক্রমণকারীকে গুলি করে উঠে দাঁড়াল। অন্য বডিগার্ডের কপালটা এত ভালো না। সে তার কপালেই একটা বুলেটের ক্ষত নিয়ে ইহলোক ত্যাগ করল। উঠে দাঁড়ানো বডিগার্ড পিঠ ঝাঁঝরা করে দিল তাকে গুলি করা আক্রমণকারীর।

সংক্ষিপ্ত গোলাগুলিতে আক্রমণকারীদের তিনজন প্রাণ হারাল, বডিগার্ডদের একজন মারা গেল আর আহত হলেন প্রফেসর, তিনি আরও একটা বুলেট শরীরে গ্রহণ করেছেন। বাম পায়ের ঊরুতে। চারপাশের শোরগোল আর চিৎকারের ভেতরে বডিগার্ডরা এবং ব্যাকআপ টিম সাথে সাথে ঘিরে ফেলল প্রফেসরকে। প্রফেসর তখনও মাটিতে পড়ে বুকের ডান পাশ চেপে ধরে কাতরাচ্ছেন, তবে জ্ঞান হারাননি।

.

ভুয়া পুলিশ সেজে আসা খুনির দল কাজ সারল খুব দ্রুতগতিতে। মন্ত্ৰী মহোদয় কিছু বুঝে ওঠার আগেই মারা গেলেন। প্রথম খুনি কোমর থেকে পিস্তল বের করে সোফার কুশনের আড়াল থেকে দুটো গুলি করল তাকে। তার বুড়ো আরদালিও হতভম্ব ভাব কাটিয়ে ওঠার আগেই নিজের মাথার একপাশ হারাল। এরপর খুরিনা কাজটাকে পরিছন্ন একটা রূপ দিল খুব দ্রুত। তারা মন্ত্রী মহোদয়কে সেভাবেই সোফায় সুন্দর করে বসিয়ে তার ক্ষতের ওপর একটা কুশন চাপা দিয়ে হাতের কাগজটা তার দুই হাতে দিয়ে মেলে দিল, যাতে দূর থেকে দেখলে মনে হয় মন্ত্রী সাহেব কাগজটা পড়ছেন।

আর আরদালির স্থান হলো লাগোয়া বাথরুমে। তাদের স্রেফ দশ মিনিট সময় দরকার, এই দশ মিনিটে কেউ কিছু টের না পেলেই হলো। বাড়ির আর সবাই সম্ভবত এই সময় ঘুমিয়ে গেছে। সব পরিষ্কার করে কোনোরকম তাড়াহুড়ো না করে তারা বাইরে বেরিয়ে এলো। জিপে উঠে গেট পার হয়ে এলো বিনা আয়াসে।

কঠিন কাজ শেষ। এবার তাদেরকে যেতে হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিচার্স কোয়ার্টারে। সেখানেও তাদেরকে একইরকম আরেকটা অপরেশান চালাতে হবে। ঠিক একইভাবে তারা খুন করবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে। চুরি করা জিপ নিয়ে বেশিক্ষণ থাকা একদম ঠিক হবে না। তারা দ্রুত সেদিকে রওনা দিল।

.

আহত প্রফেসরকে নিয়ে তার গার্ডের টিম দ্রুত গাড়িতে উঠে গাড়ি ছেড়ে দিল প্রফেসর ব্যথায় কাতরাতে কাতরাতে ফোনে কথা বলতে থাকা বডিগার্ডের উদ্দেশে চিৎকার করে উঠলেন, “ওদেরকে খবর দাও। এক্ষুনি যোগাযোগ করো, সাবধান করে দাও।”

বডিগার্ড গম্ভীর মুখে জানাল, “স্যার, তাদের দুজনের একজনকেও পাওয়া যাচ্ছে না। সম্ভভত তারাও…”

“হায় খোদা…” প্রফেসর বিড়বিড় করে উঠলেন। “এভাবে সব শেষ হয়ে যাবে। চল্লিশ বছরের পরিকল্পনা… আফরোজাই এখন শেষ ভরসা।” সে বডিগার্ডের উদ্দেশে বলল, “কল আফরোজা…”

বডিগার্ড চমকে উঠল, “স্যার, আর ইউ শিওর?”

“ইয়েস, আমি শিওর, কল হার নাউ। টেল হার এভরিথিং।“

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *