১২
কালী মন্দির, রেসকোর্স ময়দান (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান)
২৫শে মার্চ, ১৯৭১
সময় : রাত প্রায় ১১টা
পাকিস্তান আর্মির মেজর ফয়সল শাহ গম্ভীর মুখে তার সামনে অন্ধকারে দাঁড়িয়ে থাকা মন্দিরটার দিকে তাকিয়ে আছে। তাকে ঠিক যেভাবে যেভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, অক্ষরে অক্ষরে সে তা পালন করেছে। তবে এই ব্যবস্থাটা তার মোটেও পছন্দ হচ্ছে না। বেশ কিছুদিন ধরে পাকিস্তানে থাকা অবস্থাতেই তারা গুজব শুনছিল যে, এইরকম কিছু একটা হতে যাচ্ছে। তবে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছিল না। গত সপ্তাহে যখন সে পূর্ব পাকিস্তানে আসার নির্দেশ পেল তখন আনন্দে নেচে উঠেছিল মনে মনে। বাঙালিদের সে মনেপ্রাণে ঘৃণা করে। এর সঠিক কারণ সে নিজেও জানে না। ওদেরকে তার কাছে দুর্বল ভঙ্গুর আর অসহায় ধরনের মনে হয়। সেই সাথে কেন জানি মুসলমান হিসেবেও তার কাছে ওদেরকে দুর্বল মনে হয়। তার মতে এদেরকে পায়ের নিচে পিষে রাখাটাই সবচেয়ে উত্তম। যাক অবশেষে যখন এরকম কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে তখন সে কি না বসে আছে এই অন্ধকার উদ্যানের ভেতরে। ইতোমধ্যে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ শুরু হয়ে গেছে। তবে এখনও পুরোদমে না। যত রাত বাড়বে এই হাভাতেদের আজ রাতেই শেষ করে দেওয়া হবে। আর গোটা অপারেশনটার একটা বড় অংশ পরিচালিত হতে যাচ্ছে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে। আধমরা বাঙালিদের যত উলটা-পালটা কাজকর্মের কেন্দ্র এই জায়গা। ওপর মহল থেকে তাই নির্দেশ, এই জায়গা আগে পরিষ্কার করতে হবে।
এখানে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে তার বিরক্ত লাগছে। তার মতে এক্ষুনি এই মন্দিরটাকে গুঁড়িয়ে দিয়ে এখান থেকে সরে পড়ে মূল অপারেশনে যোগ দেওয়া উচিত তাদের। তবে সে যার সাথে আছে এই লোক অত্যন্ত প্রভাবশালী। তার নির্দেশ অমান্য করার সাহস তার নেই। মেজর ফয়সর আড়চোখে একবার তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কর্নেল হাবিবের দিকে ফিরে তাকাল।
“স্যার, ফায়ার করব?”
“না, এখন না। এর ভেতরে একজন লোক আছে তাকে আমার জীবিত দরকার। আগে আমরা পুরো মন্দিরটাকে সার্চ করব। তারপর এটাকে গুঁড়িয়ে দেব। পুরো মন্দিরটাকে ভালোভাবে কর্ডন করা হয়েছে তো? নাকি আবার কোনো ফাঁকফোকর রয়ে গেছে?”
“না স্যার, চারপাশ থেকে একদম দেয়ালের মতো করে ব্লক করে দেওয়া হয়েছে পুরো মন্দির এলাকা। একটা মাছিও বেরোতে পারবে না,” ফয়সল জবাব দিল।
“একটা ফায়ার ওপেন করো। ওয়ার্নিং ফায়ার,” নির্দেশটা দিয়ে কর্নেল মনে মনে বলল, বাছা মনিরুজ্জামান তুমি যাবে কোথায়? এবার তোমাকে পেয়েছি হাতের মুঠোয়।
“আপনারা এদিক দিয়ে আসুন,” নারায়ণ ব্যানার্জি শক্ত করে মনিরুজ্জামানের একটা হাত ধরে বলল। “আপনাদেরকে আমি পেছনের একটা রাস্তা দেখিয়ে দিচ্ছি।”
মনিরুজ্জামান, আবু আর কবিরের দিকে তাকিয়ে ইশারা করল। তারা সবাই এখানে এভাবে ইঁদুরের মতো আটকে পড়বে এটা তার কল্পনাতেও আসেনি। ওদের দিকে তাকিয়ে দেখল আবু আর কবির দুজনের চেহারাই ভয়ে নীল হয়ে গেছে। ইশারায় ওদেরকে শান্ত থাকতে বলে মনিরুজ্জামান দ্রুতবেগে নারায়ণ ব্যানার্জির পেছন পেছন হাঁটতে লাগল।
“ব্যাপার কী? হঠাৎ করে আর্মি এভাবে এই মন্দির আক্রমণ করল?” মনিরুজ্জামান জানতে চাইল। “আপনার কী মনে হয়?”
“আপনি বুঝতে পারেননি বন্ধু, যুদ্ধের দামামা বেজে গেছে। ওরা উন্মত্ত পশু হয়ে যাবে এখন। কিন্তু আপনার জন্য সেটার চেয়ে বেশি চিন্তার ব্যাপার, তারা জানল কীভাবে আপনি এখানে?”
মনিরুজ্জামানের মনে পড়ল তাদেরকে অনুসরণ করতে থাকা গাড়িটার কথা। ওটা তাহলে মনের ভুল ছিল না।
“এখন আমরা কী করব?”
“ওরা যেহেতু আপনার পিছু নিয়েছে তার মানে ওরা এটার ব্যাপারে সব জানে এবং ওরা এটার শেষ না দেখে ছাড়বে না। এ থেকে বাঁচতে হলে ওদের আগেই আপনাকে জিনিসটা খুঁজে বের করে এ আওতার বাইরে চলে যেতে হবে।”
“আমরা যদি এখান থেকেই বেরোতে না পারি তবে আমি সেটার সমাধান করব কীভাবে?”
“ভয় পাবেন না। ঈশ্বর বলুন, আল্লাহ বলুন আর ভগবান বলুন, তাকে যে যেই নামেই ডাকুক না কেন, তিনি সবসময় ভালোর সাথেই থাকেন। আমি আপনাদের মন্দিরের পেছনের রাস্তা দেখিয়ে দিচ্ছি। ওদিক দিয়ে আপনারা বেরিয়ে চলে যাবেন আপনার অফিসে। জিনিসটা নিয়ে দূরে সরে পড়বেন।”
কথা বলতে বলতে ওরা ছুটতে ছুটতে মন্দিরের পেছন দিয়ে বেরিয়ে এলো। পরিষ্কার চাঁদের আলোয় পুরো পেছনের প্রাঙ্গণসহ খোলা মাঠোর অনেকটাই উন্মুক্ত। সেদিকে তাকিয়ে সবার ভয়ে আত্মা উড়ে গেল। মন্দিরের চারপাশেই পাকিস্তানি সৈন্য গিজগিজ করছে।
“হায় খোদা, আমাদের পালানোর সব পথ বন্ধ হয়ে গেছে,” আবু ফিসফিস করে বলে উঠল
মনিরুজ্জামান নারায়ণের দিকে তাকাল। ঠিক সেই সময় চারপাশ কাঁপিয়ে মন্দিরের ওপর একটা কামানের গোলাবর্ষণ হলো। সবাই মাটিতে শুয়ে পড়ল।
একটু ধাতস্থ হয়ে উঠে দাঁড়াতেই এক ভৃত্য দৌড়ে এসে খবর দিল, মন্দিরের সামনের গেট দিয়ে সৈন্যরা মার্চ করে ভেতরে ঢুকছে। সাথে সাথে সবার মুখ সাদা হয়ে গেল।
ট্যাংকের গোলার আঘাতে মন্দিরের একটা পাশ উড়ে যাওয়ার সাথে সাথে মেজর ফয়সলের মুখে হাসি ফুটে উঠল। এবার সে ধীরে ধীরে মজা পাচ্ছে। “স্যার এবার কী করব?”
এবার আমরা ভেতরে ঢুকব। আমার ধারণা আর অপেক্ষা করে লাভ নেই। মনিরুজ্জামানের মতো লোকেরা মরতে ভয় পায় না। একই কথা বাকিদের জন্যও প্রযোজ্য। তোমার সৈন্যদেরকে বলো মন্দিরের চারপাশ যেন দেয়ালের মতো করেই নিশ্ছিদ্র করে রাখে,” বলে সে মেজরের দিকে ফিরে বলল, “আমি জানি তোমরা সবাই রক্তের নেশায় পাগল হয়ে আছ। কিন্তু খবরদার আমার আদেশ ছাড়া যেন কাউকে খুন না করা হয়। আমার একজন মানুষকে দরকার, সে যদি মারা যায় বা পালায় তোমার চামড়া ছিলে আমি জুতা বানাব।”
“জি, স্যার,” মেজর কুঁকড়ে গেল আদেশ শুনে। “অল ইউনিট…” সে ওয়্যারলেসে আদেশ জারি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল।
সৈন্যদের একটা অংশ মন্দিরকে ঘিরে দাঁড়িয়ে রইল আর বাকিদেরকে দুই ভাগে ভাগ করে ফেলা হলো দ্রুত। প্রথম গ্রুপটাকে নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করল মেজর ফয়সল। ভেতরে ঢুকে প্রথমেই ভেঙে ফেলা হলো সব মূর্তি। বাধা দিতে এসে বেঘোরে মরা পড়ল দুজন পুরোহিত। সাথে সাথে মেজর চিৎকার করে নির্দেশ দিল কাউকে না মারতে। সেই সাথে সে নির্দেশ দিল যাকে পাওয়া যাবে সাথে সাথে বন্দি করতে হবে। সৈন্যরা ভেতরে ঢুকে ইচ্ছেমতো তাণ্ডব চালাতে লাগল। সমস্ত মূর্তি ভেঙে ফেলা হলো। লুট করা হলো মূল্যবান সবকিছু। যাকে পাওয়া গেল তাকেই করা হলো বন্দি। মন্দিরের প্রতিটি কোণা অনুসন্ধান করে বের করে আনা হলো প্রতিটি মানুষকে।
মেজরের সৈন্যরা যখন ইচ্ছেমতো তাণ্ডব চালাচ্ছে দ্বিতীয় দফা সৈন্যদেরকে নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করল কর্নেল হাবিব। ভেতরে ঢুকেই সে প্রথমে মৃতদেহ দুটো চেক করে দেখল। না এরা না। তার অধীনের সৈন্যদেরকে সে নির্দেশ দিল প্রতিটা কোনা চেক করে বন্দিদেরকে নিয়ে সামনের প্রাঙ্গণে জড়ো করতে। মূল্যবান সবকিছু স্যৈনদেরকে লুট করার আদেশও দেওয়া হলো। কিছুক্ষণের ভেতরে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলো শত বছরের পুরানো মন্দিরের ভেতরটা।
মন্দিরের প্রাঙ্গণে সকল বন্দি পুরুষ এবং নারীদেরকে জড়ো করা হয়েছে।
কর্নেল হাবিব বন্দিদেরকে একে একে পরীক্ষা করা শুরু করল। এরা সবাই মন্দির এবং আশ্রমের সাধারণ সেবাদাস। যাদেরকে সে খুঁজছে তারা গেল কই?
মন্দিরের ভেতর থেকে সৈন্যদের শেষ গ্রুপটা বেরিয়ে এলো। তাদের সাথে একজন বন্দি। দেখার সাথে সাথেই কর্নেল তাকে চিনতে পারল। নারায়ণ ব্যানার্জি, এই মন্দিরের প্রধান পুরোহিত।
নারায়ণ ব্যানার্জিকে এনে তার সামনে হাঁটু গেড়ে বসিয়ে দেওয়া হলো। মেরে ফেলা না হলেও তার চোহারা ইতোমধ্যেই বেদম প্রহারে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কর্নেল হাবিব সৈন্যদের উদ্দেশে চিৎকার করে উঠল, “আর কেউ নেই?”
“না, স্যার। ভেতরে আর কাউকেই পাইনি। একমাত্র এই লোকটাই মন্দিরের একদম পেছনের ঘরে একটা মূর্তির সামনে বসে ছিল।”
কর্নেল হাবিব ছুটে এসে মেজরের কলার চেপে ধরল, “তুমি ঠিক বলছ আর কেউ নেই? ভালো করে দেখেছ?” রাগে সে উন্মাদ হয়ে গেছে।
“জি, স্যার আর কেউ নেই। সমস্ত মন্দিরের প্রতিটা ধুলো আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি,” লজ্জা আর ভয়ে সে কুঁকড়ে গেছে। এত এত সৈন্যের সামনে এভাবে তার কলার ধরার কারণে এবং সেইসাথে সে শুনেছে এই লোক রেগে গেলে নাকি উন্মাদ হয়ে যায়।
কর্নেলের চেহারা হয়েছে দেখার মতো, “আবার যাও। আবার পরীক্ষা করো।” রাগে সে লাফানো শুরু করার মতো অবস্থা। সব আয়োজন ভেস্তে গেল।
“হুহ,” থুক করে মুখ থেকে দুইটা দাঁত সহ থুথু ফেলল নারায়ণ ব্যানার্জি সে খুকখুক করে হাসছে।
কর্নেল ছুটে এসে কলার ধরে তাকে একটানে দাঁড় করিয়ে ফেলল। “তুই সব জানিস। তুই এসবের জন্য দায়ী।”
“একদম ঠিক বলেছেন। আবার কেন আরও শতবার খুঁজলেও ওদের আর পাওয়া যাবে না। আপনার লোকগুলো একদম গাধা,” বলে সে মৃদু হাসতে লাগল।
কর্নেলের আর সহ্য হলো না, সে কোমর থেকে পিস্তল বের করে সোজা গুলি করল নারায়ণ ব্যানার্জির মাথায়। তারপর মেজরের দিকে ফিরে নির্দেশ দিল সবাইকে মেরে ফেল। মন্দিরটা ট্যাংকের গোলা দিয়ে উড়িয়ে দাও আর মেয়েগুলোকে দিয়ে দাও সৈন্যদেরকে। বলে সে সোজা হাঁটা দিল গাড়ির দিকে।
সাথে সাথে মন্দিরের প্রাঙ্গণে শুরু হয়ে গেল তাণ্ডব। পুরুষগুলোকে কচুকাটা করা হলো। নারীদেরকে ওখান থেকে আলাদা করে সৈন্যরা টানতে টানতে নিয়ে চলল মন্দিরের সেবাদাসদের বাড়িগুলোতে। কিছুক্ষণের ভেতরেই তাদের ওপরে পাশবিক নির্যাতন শুরু হয়ে গেল। ভেসে আসতে লাগল তাদের আর্তনাদ। সবশেষে গোলা দিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হলো শত বছরের পুরানো মন্দির।
.
মনিরুজ্জামান উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে মাটিতে প্রচণ্ড ঝাঁকি খেয়ে পড়ে গেল। দুহাতে সে কান ঢেকে ফেলেছে। আবু আর কবির এখনও উঠে আসেনি পানি থেকে। মনিরুজ্জামান উঠে দাঁড়িয়ে দেখল পুরানো মন্দিরটা মাটির সাথে মিশে যাচ্ছে। নিশ্চয়ই নারায়ণ ব্যানার্জি এতক্ষণে শেষ। লোকটা শেষ মুহূর্তে ফিরে না গেলেও পারত। পালাতে পারত ওদের সাথে কিন্তু একরকম স্বেচ্ছামৃত্যুই গ্রহণ করল মানুষটা। সে হাত বাড়িয়ে একে একে আবু আর কবিরকে টেনে তুলল পানি থেকে।
মন্দিরের ভেতরে ওরা যখন চারপাশ থেকে বন্দি হয়ে গেছে। নারায়ণ ব্যানার্জি সবাইকে ভয় পেতে বারণ করে তাকে অনুসরণ করতে বলে। ওরা তাকে অনুসরণ করে চলে আসে মন্দিরের একদম পেছন দিকের একটা ঘরে। এখানে কালীর একটা মূর্তি আছে। এটা তারা নিজেদের পূজার জন্য ব্যবহার করে। নারায়ণ ব্যানার্জি ওদেরকে হাত লাগাতে বলাতে মনিরুজ্জামান জানতে চায়, সে আসলে করছেটা কী?
জবাবে সে যা বলে বেশ বিস্ময়কর। এই মন্দিরের নিচ দিয়ে একটা পরিত্যক্ত সুয়ারেজ লাইন গেছে। লাইনটা এখন পরিত্যক্ত এবং শুকনো। বছর কয়েক আগে মেরামতের কাজ করার সময় তারা এই লাইনটা আবিষ্কার করে। লাইনটা বেশি লম্বা নয়। এটা মন্দিরের এই কক্ষ থেকে শুরু হয়ে পুকুর পাড় পর্যন্ত গিয়ে পুকুরের সাথে মিশেছে। এটার কথা তারা দুয়েকজন বাদে আর কেউই জানে না। এই কক্ষের দেবী মূর্তিটা সরালেই ওটাতে নেমে মোটামুটি সহজেই পুকুর পাড় পর্যন্ত চলে যাওয়া যাবে।
সাথে সাথে ওরা সবাই হাত লাগিয়ে ভারী মূর্তিটা সরিয়ে ফেলল। নিচে একটা ফোকর, কোনোমতে একজন নামা যায়। মনিরুজ্জামান নারায়ণ ব্যানার্জির সাতে হাত মিলিয়ে তাকে বলল, “আপনিও চলুন।”
“না বন্ধু তা হয় না। আপনারা চলে গেলে এটাকে আবার জায়গামতো বসাতে হবে। তা না হলে সব শেষ। আর আমার বেঁচে থাকার চেয়ে আপনাদের পালানোটা বেশি জরুরি। তবে বন্ধু আপনাকে একটা অনুরোধ করি, সত্যটাকে খুঁজে বার করুন,” বলে সে হাত নাড়ল।
মনিরুজ্জামানের বুকটা টনটন করতে লাগল। চেনা নেই জানা নেই মানুষটা ওদের জন্য অনেক করল। প্রথমে সে নামল, তারপর একে একে নামল আবু আর কবির। সেখান থেকে ওরা টানেল দিয়ে চলে আসে পুকুরে। মন্দিরের প্রাঙ্গণে যখন তাণ্ডব চলছে তখন ওরা পুকুরে গলা পানিতে ডুবে থাকে কচুরিপানার আড়ালে। এরপর সৈন্যরা চলে গেলে ওরা উঠে আসে। মনিরুজ্জামান ওপরে উঠে তার কোমরে গুঁজে রাখা প্যাকেটা চেক করল। পলিথিনে মুড়িয়ে রাখার কারণে ও অক্ষতই আছে। তবে টাকার বান্ডিলটা ভিজে গেছে আর পিস্তলটা সম্ভবত পড়ে গেছে পানিতে। কাপড় খুলে চিপে নিল সবাই।
মনিরুজ্জামান আবারও প্যাকেটটা ভালো করে পলিথিনে মুড়িয়ে কোমরে রেখে দিল, সেইসাথে টাকার আধভেজা বান্ডিলটাও। সে ফিরে তাকাল পশ্চিম দিকে। এবার তাদেরকে ওখানে যেতে হবে। কার্জন হলের ভেতরে তার অফিসে রাখা আছে নারায়ণ ব্যানার্জির পাঠানো জিনিসটা। ওটাকে উদ্ধার করতে হবে।