পনেরো
ফক্স ও রানা মিলে সরিয়ে ফেলেছে স্প্যানিশ আততায়ীর লাশ। এখন পাথুরে বাটির মত জায়গায় বসে আছে দু’জন। মনে মনে কথা গুছিয়ে নিচ্ছে রানা। উদাস হয়ে গ্রামের দিকে চেয়ে কী যেন ভাবছে ফক্স।
‘যাদের চাকরি করতে, তারা তোমাকে খুন করতে চাইল কেন?’ হঠাৎ করেই জানতে চাইল রানা।
‘চাকরি নয়, বলল ফক্স। ‘চুক্তিবদ্ধ কাজ। পরে বুঝলাম ওদের চেয়ে খারাপ কেউ হয় না। তাই পালিয়ে এলাম।’
‘কী কাজ করতে যে পালিয়ে যেতে হলো?’
‘জেনে কী করবেন? একবার সে-কাজে জড়িত হয়ে গেলে আর কখনও এই জীবনে অবসর নেয়া যায় না।’
‘অ্যালেক্যাণ্ডার লিয়োনেল কে?’ জানতে চাইল রানা। বিস্মিত চোখে ওকে দেখল ফক্স। ‘ওই নামে কাউকে চিনি না।’
মিথ্যা নাম বলেছে প্রৌঢ়, বুঝে গেল রানা। কয়েক মুহূর্ত পর বলল, ‘তুমি সরকারি এজেন্ট ছিলে?’
‘না,’ মাথা নাড়ল ফক্স। ‘সমস্যা জটিল হলে ওরা আমাকে ডেকে নিত।’
‘কী ধরনের সমস্যা?’ রানা আঁচ করেছে কাজটা কী ধরনের।
‘বলতে পারেন অন্যদের হয়ে ব্রিটেনের সমাজের আবর্জনা দূর করতাম।’
‘তা হলে কি ধরে নেব, তুমি ছিলে পেশাদার খুনি?’ চুপচাপ কাঁধ ঝাঁকাল ফক্স।
‘কখনও কখনও বাধ্য হয়ে বহুকিছুই করে মানুষ,’ বলল রানা।
‘আমার ছিল দক্ষতা। কখনও পেতাম এক লাখ পাউণ্ড তা ছাড়া, আমার দরকার ছিল বহু টাকা। ভেবেছিলাম প্রচুর টাকা হাতে এলেই এখানে ফিরব। কিন্তু কয়েকটা খুন করার পর বুঝলাম, আমি বোধহয় আর মানুষের পর্যায়ে নেই।’
‘তখন থেকে শুধু টাকার জন্যে খুন করতে লাগলে?’ মাথা দোলাল ফক্স। ‘এ-ছাড়া উপায়ও ছিল না। যদি মানা করতাম, সেদিনই শেষ হতো আমার জীবন।’
দক্ষ এক সৈনিকের অধঃপতনে মন খারাপ হয়ে গেছে রানার। কয়েক মুহূর্ত পর বলল, ‘কত দিন এসব করেছ?’
‘দু’বছরেরও বেশি,’ বলল ফক্স।
‘কারণ ছাড়া খুন করতে গিয়ে খারাপ লাগত না?’
মাথা দোলাল ফক্স। ‘যাদেরকে খুন করতাম, সবাই ছিল সমাজের অতি নোংরা জানোয়ার। তবুও ছিল বিবেকের দংশন। বারবার ভাবতাম, এ-ই শেষ, এরপর দূরে কোথাও গিয়ে ডুব দেব। তারপর ক’দিন আগে বুঝলাম, মরে গেলেও আর কাউকে পয়সার জন্যে খুন করব না।’
‘শেষ দিন আসলে কী হয়েছিল?’ জানতে চাইল রানা।
কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর বলল ফক্স, ‘ভাবলে এখনও অবাক লাগে। ওই পার্টিতে ছিল একদল নরপশু। তবে আমার কথা বাদ দিন, বস। আপনি নিজে আজকাল কী পেশায় আছেন?’
‘টুকটাক ব্যবসা,’ বলল রানা।
‘কী ধরনের? আমার মত মানুষ-শিকার করছেন না তো?’
‘না, ফক্স। আমি গোয়েন্দা সংস্থা খুলেছি।’
‘তবে তো ভালই,’ তিক্ত হাসল ফক্স। ‘আমারও উচিত ছিল ওই ধরনের কিছু করা। ভাল রোজগার হচ্ছে আপনার?’
‘চলে যাচ্ছে।’
‘অথচ, বস্, আজ পিস্তল হাতে এসেছেন আমাকে খুন করতে। আপনার অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল বলে মনে হচ্ছে না।’
‘তুমি কি জানতে চাও, কেন এখানে এসেছি?’
‘বলুন।’
প্রথম থেকে শুরু করল রানা। ‘অ্যালেক্যাণ্ডার লিয়োনেল নামের এক বদমাস সেদিন বিমানে আমার সিটের পাশে এসে থামল। নিজের ব্যাপারে কিছু না বলে আলাপের সুরে জানাল, ভাল করেই সে জানে আমার অতীত। দু’এক কথায় বুঝলাম, ব্রিটিশ মিনিস্ট্রির টপ-লেভেল রেকর্ডস্ দেখেছে সে। অত্যন্ত ক্ষমতাশালী কেউ না হলে সেটা পারত না। আমাকে বলল, একটা কাজ করে দিতে হবে। আমি ভাবছি, এ কে, কী চায়… তখনই বলল, তুমি দুনিয়ার যেখানেই লুকিয়ে থাকো, আমার কাজ হবে তোমাকে খুঁজে বের করে খুন করা। সে- সময়ে তার প্রস্তাবে রাজি না হয়ে কোন উপায় আমার ছিল না।’
তিক্ত হাসল ফক্স। বুঝেছি। আপনার ব্যবসা আসলে ভাল চলছে না। বড় অঙ্কের টাকা আপনার নাকের কাছে ধরতেই কাজটা হাতে না নিয়ে আর পারেননি।’
‘টাকার জন্যে নয়, ফক্স,’ বলল রানা। ‘আমাকে ফাঁদে ফেলেছে তারা। কাজটা না করলে খুন হবে আমার প্রিয় একজন মানুষ। আর সেটা ঠেকাতে হলে খুন করতে হবে তোমাকে। তারপর তাদের কাছে পাঠিয়ে দিতে হবে লাশের ছবি। আমার কথা কি বুঝতে পেরেছ, ফক্স?’
সতর্ক চোখে ওকে দেখল প্রাক্তন সৈনিক। ‘তো আমাকে খুন করতে কে বাধা দিচ্ছে, বস্? আমি তো নিরস্ত্র!’
মাথা নাড়ল রানা। ‘অন্য কোন উপায় খুঁজতে হবে। যাতে সব কুল রক্ষা পায়।’
‘আপনার সেই প্রিয় মানুষটা… সে কি মহিলা? তাকেই খুন করার হুমকি দিচ্ছে তারা?’
মাথা দোলাল রানা। ‘এদিকে হাতে আমার সময় নেই।’
‘অর্থাৎ আমাকে বাঁচিয়ে রাখতে গিয়ে মৃত্যুর মুখে ফেলেছেন ওই মহিলাকে। জটিল সমস্যা। অবশ্য আমাকে খুন করেননি বলে আমার কোন আপত্তি আছে, তা নয়।’
‘ফক্স, তুমি খুন হলেও থামবে না ব্ল্যাকমেইলিঙের এই চক্কর,’ বলল রানা। ‘তোমার কথা অনুযায়ী, একবার তাদের মুঠোয় ধরা পড়লে, আর কখনও মুক্তি মেলে না। যখন-তখন ডাকবে কাউকে খুন করতে। জেসিকার ঘাড়ের ওপরে ঝুলবে ধারালো কুঠারের ফলা। অথচ বেচারি জানবেও না, ওকে বাঁচাতে গিয়ে একের পর এক মানুষকে খুন করছি আমি।’
তো মেয়েটার নাম জেসিকা, তাই না, বস্?’
‘হ্যাঁ।’
‘খুব সুন্দর নাম, বস্।’
‘মানুষ হিসেবেও ও অসাধারণ,’ বলল রানা।
‘সুযোগ পেলে বিয়ে করবেন তাকে?’
‘আমরা এ-বিষয়ে কথা বলেছি,’ বলল রানা। ‘ঠিক করেছি পরস্পরের ব্যক্তিগত জীবনে কখনও নাক গলাব না।’
‘তা-ই হয়তো ভাল।’
‘রিটার সঙ্গে যোগাযোগ করেছ?’ জানতে চাইল রানা।
চট করে ওকে দেখল ফক্স। ‘আপনি ওর কথা জানলেন কীভাবে?’
‘তুমিই বলেছ কঙ্গোতে। ক’বছর আগে। ভুলে গেছ।’
মাথা দোলাল ফক্স। ‘সুযোগ হলে একবার গিয়ে দাঁড়াব ওর সামনে। যদি দেখি ওর মনে আমার জন্যে আর কোন ভালবাসা নেই, তো চলে যাব বহুদূরে কোথাও।’ চুপ হয়ে গেল নিঃসঙ্গ সৈনিক।
রানা জানাল না, ফক্সের জন্যে অপেক্ষা করছে মেয়েটি। অন্য প্রসঙ্গে গেল, ‘শুধু যে জেসিকা বিপদে আছে, তা নয়। আমাকে বড় ভাইয়ের মত ভালবাসে লক্ষ্মী এক মেয়ে, ওর নাম লিলিয়ানা। অ্যালেক্যাণ্ডার লিয়োনেল হুমকি দিয়েছে, তার কথামত কাজ না হলে খুন হবে মেয়েটা। এর অর্থ বুঝতে পেরেছ? বিনা দোষে তোমাকে খুন করতে পারব না। এদিকে জেসিকা ও লিলিয়ানাকেও নিরাপদ রাখতে পারব না। সেক্ষেত্রে আমি আত্মহত্যা করলে তখন ওদের মাথার ওপর থেকে সরে যাবে ধারালো খাঁড়া। কিন্তু আত্মহত্যা করার মত কাপুরুষের কাজ আমি করব না। তাই খুঁজছি এমন কোন উপায়, যার মাধ্যমে মেটাতে পারব সব ধরনের সমস্যা।’
‘সত্যি কি তেমন কোন উপায় আছে?’ বলল ফক্স।
ওর চোখে তাকাল রানা। ‘আমি শুধু একা বিপদে পড়িনি। তুমিও আছ মহাবিপদে। আমি চলে গেলেও অন্য কেউ আসবে তোমাকে খুন করতে।’
মাথা নাড়ল ফক্স। ‘আমার তা মনে হয় না, বস্।’
‘আমি কিন্তু তোমাকে খুঁজে নিয়েছি,’ বলল রানা।
‘তা ঠিক। কিন্তু আপনি তো আর সাধারণ কেউ নন। ওরা চাইলেও জানবে না আমি কোথায় আছি।’
‘অত নিশ্চিত হয়ো না,’ বলল রানা। ‘যারা জেসিকার ওপর চোখ রেখেছে, তারা তোমার বা আমার চেয়ে অযোগ্য, এমনটা না-ও হতে পারে।’
তিক্ততার ছাপ পড়ল ফক্সের মুখে। কয়েক মুহূর্ত পর বলল, ‘জানতে চেয়েছেন, কেন আমার ওপরে খেপেছে তারা। তো শুনুন। তাদের কথামত একজনকে খুন করতে গিয়ে ব্যর্থ হই। তখন অস্বাভাবিক কিছু ঘটনা ঘটে। সেগুলোর সঙ্গে আমার সরাসরি কোন সম্পর্ক নেই। কিন্তু তাদের পেতে রাখা ভিডিয়ো ক্যামেরায় ধরা পড়ি আমি। তারপর পালিয়ে না গিয়ে কোন উপায় ছিল না আমার।’
‘কী করেছিলে যে খুন করতে চাইছে?’ বলল রানা।
‘তাদের ব্যাপারে বহুকিছুই জেনে যাই,’ বলল ফক্স, ‘নিজের চোখে দেখেছি ভয়ঙ্কর কিছু ঘটনা।’
‘কী দেখেছ?’ জানতে চাইল রানা।
ঢোক গিলল ফক্স। বিকৃত হলো চেহারা। ‘বস্, আমরা কাঁধে কাঁধ ঠেকিয়ে যুদ্ধ করেছি। বহু ভয়ঙ্কর ঘটনার মাঝ দিয়ে গেছি। মুখোমুখি লড়াই করে শত্রুদেরকে খতম করেছি। তাদের সুযোগ ছিল আমাদেরকেও খুন করার। আমার কথা বুঝতে পেরেছেন? সমানে-সমানে সুযোগ ছিল দুই পক্ষের। কিন্তু সে-রাতে যা দেখলাম, ওটা ছিল নারকীয় যজ্ঞ।’
‘যজ্ঞ? সেটা কীসের রাত ছিল?’
‘মহাবিষুবের রাত। এবার একটা ভিডিয়ো আপনাকে দেখাব।’ হাত বাড়িয়ে হোল্ডঅলের চেইন খুলল ফক্স। রানা কিছু বলার আগেই মোবাইল ফোন নিয়ে পাসওয়ার্ড দিল। ‘ভিডিয়ো এনক্রিপ করেছি। নিজের চোখে দেখুন কী ঘটেছিল। আমি চাই না আর কেউ ওটা দেখুক।’
রানার হাতে মোবাইল ফোন দিয়ে গ্রামের দিকে চেয়ে রইল ফক্স। স্ক্রিনের দিকে মনোযোগ দিল রানা। ভিডিয়ো করা হয়েছে অন্ধকারে। কালো কিছু রেখা ছাড়া আর কিছুই দেখার নেই। রানা বলল, ‘মনে হচ্ছে লেন্সের সামনে কিছু আছে।’
‘গাছের ডাল,’ মুখ না ফিরিয়ে বলল ফক্স। ‘ছিলাম ঘন জঙ্গলে। দেখতে থাকুন। একটু পর সবই বুঝবেন।’
‘ভিডিয়ো করেছ কেন?’ জানতে চাইল রানা।
‘আপনি শুধু দেখুন। বহুকিছু বুঝে যাবেন।’
স্ক্রিন থেকে চোখ সরাল না রানা। একটু পর আগের চেয়ে পরিষ্কার হলো দৃশ্য। ফক্সের হাত নড়ছে বলে ক্যামেরা দুলে যাচ্ছে। রাতের দৃশ্য। দূরে লেক। চাঁদের আলোয় টলমল করছে কালো জল। লেকের মাঝে গাছে ভরা ছায়াময় এক দ্বীপ। ঢালু লন গিয়ে মিশে গেছে লেকের জলে। একটু দূরে বিশাল প্রাসাদ। ওটার জানালাগুলো অন্ধকার। চাঁদের আলোয় রাজকীয় বাড়িটার স্থাপত্য দেখার মত সুন্দর।
অবশ্য প্রাসাদ নয়, রানার মনোযোগ কেড়ে নিয়েছে লেকের তীর। লন মাড়িয়ে ওখানে গিয়ে থেমেছে অন্তত পঞ্চাশ বা ষাটজন লোক। পরনে গোড়ালি পর্যন্ত দীর্ঘ আলখেল্লা। মাথায় হুড। পাখির দীর্ঘ চঞ্চসহ মুখে কালো মুখোশ। চোখ সরু করে স্ক্রিনের দিকে চেয়ে রইল রানা। কেন যেন শিরশির করে উঠল ওর মেরুদণ্ড। বিড়বিড় করে বলল, ‘ব্যাপারটা কী?’
‘আমি নিজে দ্বিতীয়বার দেখব না,’ দূরে চেয়ে রইল ফক্স।
মোবাইল ফোনে রানা শুনছে বহু লোকের প্রার্থনার গুঞ্জন। জর্জিয়ান সন্ন্যাসীদের মত ল্যাটিনে কথা বলছে না তারা। ভাষা একেবারেই অচেনা। রানা জানতে চাইল, ‘সবাই দ্বীপের দিকে চেয়ে আছে কেন?’
‘একটু পর নিজেই বুঝবেন।’
কয়েক মুহূর্ত পর বিস্ফোরণের আওয়াজ হলো। অন্ধকার দ্বীপে জ্বলে উঠল আগুনের কুণ্ডলী। কমলা আলোয় দ্বীপের তীরে দেখা গেল বিশাল এক মূর্তি। ওটার মাথা আইবিস পাখির মুণ্ডের মত।
এদিকের তীরে সবার মুখে অদ্ভুত মুখোশ।
ফক্সের দিকে তাকাল রানা। ‘কোন নাটকের শুটিং?’
‘না। যা দেখছেন সবই বাস্তব। দেখতে থাকুন।’
দ্বীপে উপস্থিত হলো কয়েকজন। যুম হলো ক্যামেরা। তাতে ছবির মান খারাপ হলেও দেখা গেল প্রতিটি দৃশ্য। তীরের লোকগুলোর মতই দ্বীপবাসীদের পরনে আলখেল্লা। অবশ্য তৃতীয়জনের পরনে আলাদা পোশাক। সে হালকা- পাতলা গড়নের এক তরুণী। সাদা পোশাকের কাঁধে লুটিয়ে পড়েছে সোনালি চুল। তার দু’হাত শক্ত করে ধরেছে অন্য দু’জন। রানা বুঝল, মেয়েটা তাদের বন্দি। ড্রাগ দেয়া হয়েছে তাকে। টলমল করছে দাঁড়াতে গিয়ে। এবং এবার বোধহয় ঘটতে চলেছে অস্বাভাবিক কোন যৌনানুষ্ঠান। সে-কারণেই জানতে চাইল রানা, ‘ওই মেয়ে আসলে কে?’
‘আপনি জানতে চান মেয়েটা কে?’ বলল ফক্স, ‘কিন্তু আমি সেটা জানব কী করে?’
ভিডিয়ো দেখতে গিয়ে শিরশির করছে রানার ঘাড়। পেছনে বেদির সঙ্গে ঠেসে ধরা হলো মেয়েটাকে। অন্যদু’জন মূর্তির দু’দিকের আংটায় বেঁধে দিল তার কবজির দুই ফিতা। দাহ্য কিছু আগুনে পড়তেই গাছের মগডাল ছাপিয়ে ওপরে উঠল কমলা শিখা। চিৎকার করছে এদিকের তীরের সবাই। কোথা থেকে যেন দ্বীপে এল আরেকজন, তার পরনে লাল আলখেল্লা। মাথার মুকুটে মর্দা ছাগলের গিঁঠওয়ালা শিং। বামহাতে আনুষ্ঠানিক রাজদণ্ড, ডানহাতে দীর্ঘ ছোরা। ধারালো অস্ত্র নাটকীয়ভাবে তুলে প্রার্থনারত লোকগুলোকে দেখাল সে। এবার চলে গেল মেয়েটার কাছে।
ফক্সের কাছে জানতে চাইল রানা, ‘সত্যিই কি মেয়েটাকে এরা খুন করেছে?
‘করেছে,’ শুকনো গলায় বলল ফক্স।
ছোরার প্রথম টানে তরুণীর ঘাড় থেকে ছিটকে বেরোল টকটকে লাল তাজা রক্ত। রানার ইচ্ছে হলো ঝট্ করে চোখ সরিয়ে নিতে, কিন্তু নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করল ও। একটু পর আরেক পোঁচে তরুণীর কণ্ঠনালী ফাঁক করে দিল লাল আলখেল্লা। এই পর্যায়ে অন্যদিকে সরল ক্যামেরা। ছুটে চলেছে মোবাইল ফোন হাতে ফক্স। থেমে গেছে ভিডিয়ো।
‘আমি তখন ছুটছি দেয়ালের দিকে,’ বলল ফক্স। ‘বুঝে গেছি, পালিয়ে যেতে হবে পিশাচের কবল থেকে। এরপর প্রথম সুযোগে চলে এসেছি এখানে।’