কালোঘোড়া – ১৯

উনিশ 

ইউরোপে জার্মানী ও ইতালীর হার আরম্ভ হয়েছে! রাজা ইমানুয়েল আত্মসমর্পণ করেছেন। জার্মানবাহিনী রোম অধিকার করে মিত্রবাহিনীকে বাধা দিচ্ছে। ওদিকে সোভিয়েট বাহিনী স্মলেনস্ক ও কিয়েভ পুনরধিকার করেছে। লেনিনগ্রাড অবরোধমুক্ত। লাল ফৌজ ওদিকে পুরানো রুশ পোলিশ সীমান্ত এবং এস্তোনীয়া সীমান্ত অতিক্রম করেছে। এদিকে বেসারেবিয়াও দখল করেছে। 

কিন্তু মিত্রপক্ষের এই জয়-সংবাদেও ভারতবাসী ঠিক বিশ্বাস করতে পারছে না। জার্মানী হারছে, এ কি করে সম্ভব? নিশ্চয় কোথায় একটা কি প্যাঁচ আছে। মিত্রপক্ষ এগুচ্ছে এগুক, কিন্তু হঠাৎ একসময় শেষ প্যাঁচে পড়ে কাবু হয়ে যাবে হয়তো। যুদ্ধে কে যে কোথায় হারে কিছুই বলা যায় না। গেল মহাযুদ্ধে জার্মানী প্যারিসের কাছে এসে হেরে গিয়েছিল। এবার মিত্রপক্ষ যদি বার্লিনের কাছে এসে হেরে যায়, তাতেই বা বিস্ময়ের কি থাকতে পারে? বিশেষ যুদ্ধের খবর পরিবেশনের ভার যখন ইংরেজের হাতে এবং আমরা নিজেরা যুদ্ধের কিছুই বুঝি না, তখন জয়-পরাজয় সম্বন্ধে সুনিশ্চিত হবার উপায় কোথায়? 

এমনি একটা অনিশ্চিত অবস্থার মধ্যে খবর এলো জাপানীরা ভারত সীমান্ত অতিক্রম করে মণিপুর রাজ্যে ঢুকে পড়েছে। 

খবর পাওয়া গেল ২২শে মার্চ। কিন্তু কবে যে তারা ঢুকেছে কে জানে। কে জানে বৃটিশ এবং মার্কিন সৈন্য ওদের ঠেকাতে পারবে কি না। যদি না পারে তাহলে ভারতবর্ষের কি অবস্থা হবে তা নিয়ে চায়ের দোকানে দোকানে তুমুল গবেষণা চলতে লাগলো। 

আশ্চর্য এই যে, যখন জাপানীরা সবে রেঙ্গুন দখল করলো তখন কলকাতা থেকে লোক পালাতে লাগল। যখন প্রথম বোমা ফেললে গোটা কতক মাত্র বোমা, কয়েকটি মাত্র দিনের জন্যে,—তখনও কলকাতা থেকে লোক পালানোর সে কি ধুম! আর এখন, যখন খবর এলো খাস জাপানী সৈন্য মণিপুরে প্রবেশ করে গেছে, তখন কলকাতার ইন্দুরটি পর্যন্ত নড়বার লক্ষণ দেখালো না! 

লোকেদের সাহস কি বেড়ে গেল? অথবা বার বার দু’বার ঠকে এবার তারা মৃত্যুর আগে ঠকতে রাজি হোল না? 

অথচ কী কষ্টেই না লোকেরা কলকাতায় রয়েছে! মোটরের গ্যারাজ, পানের দোকান, এঁদো আস্তাবল সর্বত্র খোপে-খোপে মানুষ বাসা বেঁধেছে! খাবারের কষ্ট, পানীয় জলের কষ্ট, অস্বাস্থ্যকর আবহাওয়া কিছুই গ্রাহ্য না করে মানুষ সহস্র অসুবিধা এবং দুঃখ-কষ্টের মধ্যে রয়েছে, তবু জাপানীদের আগমন সংবাদেও কেউ ভয়ও পেলে না, নড়বার নামও করলে না। 

নিত্য রকমের লোমহর্ষক গুজব ওঠে! সকালে-সন্ধ্যায়, অফিসে, চায়ের দোকানে, বৈঠকখানায় লোকে তা নিয়ে রসিয়ে গুলতানি করে। কিন্তু পালাবার কেউ নাম করে না। মিত্রপক্ষের আহত সৈন্যে হাসপাতাল ভর্তি হয়ে যাচ্ছে দেখেও কেউ ভয় পায় না। সবাই নিত্য নিয়মিত বাজার করে, অফিস যায়, রাত্রে বাড়ি ফিরে নিশ্চিন্তে নিদ্রা যায়। লোকেদের প্রাত্যহিক জীবনে বিন্দুমাত্রও পরিবর্তন দেখা গেল না। 

.

এই গোলমালে বজ্রমারুতি ফিরে এলো সদলবলে কলকাতায়। তারা গিয়েছিল আসাম সীমান্তে বৃটিশ ও ভারতীয় সৈন্যদের নাচ দেখিয়ে আনন্দ দেবার জন্যে,—অবশ্য সরকারী টাকায়। 

কিন্তু এখন তাদের নাচ দেখবার সময় নেই। সুতরাং বজ্রমারুতিকে ফিরে আসতে হয়েছে। 

কিন্তু নিঃশব্দে বসে থাকবার ছেলে বজ্রমারুতি নয়। সে এসেই নিউ এম্পায়ারে একটা নাচ দেখাবার আয়োজন করলে। টিকিট বিক্রির টাকা রেড ক্রসে দেওয়া হবে। সুতরাং টিকিট-বিক্রির ভাবনা নেই। দেশী-বিলাতী ছোট-বড় অফিসার থেকে কন্ট্রাক্টর, রায় বাহাদুর সবাই, আসুন না-আসুন, মোটা টাকার টিকিট কিনে ফেলেছেন। 

দু’খানা টিকিট শ্রীমন্তও কিনেছে। 

কিন্তু ওদের যাওয়া বুঝি হয় না। 

টিকিট শ্রীমন্তকে কিনতেই হত, কিনেছে। কিন্তু ললিত-কলার উপর বিন্দুমাত্র তার অনুরাগ নেই। সে নাচ দেখতে যাবে না। সুমিত্রারও একা যেতে ইচ্ছ করেনা।

অথচ বজ্রমারুতি তাকে বার বার আসবার জন্যে একদিন অনুরোধ করে গেছে। তার সঙ্গে সুমিত্রার সম্প্রতি পরিচয় হয়েছে। এবং দু’জনেরই দু’জনকে বেশ লেগেছে। 

বজ্রমারুতি ওর নাম নয়। পৃথক একটা পৈতৃক নাম ওর আছে। কিন্তু নাচ দেখিয়ে দেখিয়ে যত সে খ্যাতি পেয়েছে, ততই ছদ্ম নামটাই বিস্তৃতি লাভ করতে করতে আসল নামে পরিণত হয়েছে। 

ছিপছিপে লম্বা ছেলেটি। মাথায় বড়-বড় কোঁকড়া-কোঁকড়া চুল। তীক্ষ্ণ নাসা। দেহযষ্টিতে নারীসুলভ কমনীয়তা। কথায়-বার্তায়- হাসিতে একটা আশ্চর্য সরলতা। আসলে বজ্রমারুতি নামটা ওকে মোটেই মানায় না। 

এই সরলতাই বোধ করি সুমিত্রাকে আকর্ষণ করেছে। 

নিউ এম্পায়ারে যাওয়ার বাধা ঘটায় সুমিত্রা ভিতরে ভিতরে অত্যন্ত দুঃখ বোধ সুমিত্রাকে মুখভার করতে দেখে শ্রীমন্ত মনে মনে যাবার জন্যে কেবল প্রস্তুত হচ্ছিল, এমন সময় হেনরি এলো। 

ওকে দেখে সুমিত্রা উৎসাহিত হয়ে উঠলো। 

জিজ্ঞাসা করলে, যাবে?

হেনরি জিজ্ঞাসা করলে, কোথায়? 

—নাচ দেখতে। ওরিয়েন্টাল ড্যান্সিং। নিউ এম্পায়ারে। 

—যাব। তোমাদের নাচ আমি দেখিনি কখনও। সুতরাং এত বড় সুযোগ ছাড়া যায় না। কিন্তু আমার কথা শুনেছ? 

–না।

—ডেরা-ডাণ্ডা গুটোতে হবে এবার। ফ্রন্টে যাবার ডাক এসেছে। 

–সে কি আমি জানি? যেখানে হোক কোথাও নিয়ে গিয়ে ফেলবে,—বৰ্মায়, চীনে, 

সুমিত্রা মুহূর্তের জন্যে একটু অন্যমনস্ক হোল। তার শ্যামলী মুখের উপর দিয়ে হাল্কা এক টুকরো ছায়া খেলে গেল। চেয়ে দেখে, শ্রীমন্তর সাপের মতো চকচকে দৃষ্টি ওর মুখের উপর নিবদ্ধ। পুরু পুরু সমৃদ্ধ ওষ্ঠ-প্রান্তে একটুখানি হাসি। সে ঈর্ষার অথবা বিদ্রূপের বিচার করবার সময় সুমিত্রার নেই। 

চোখ ফিরিয়ে নিয়ে তাড়াতাড়ি হেনরিকে জিজ্ঞাসা করলে, কবে যাবে? 

—কালকেই। সেইজন্যে তোমাদের দু’জনকে লাঞ্চে নিমন্ত্রণ করতে এলাম। ওখান আমি তোমাদের নিয়ে কাটাতে চাই। মন্টি, কি বলো? 

শ্রীমন্তর মনের ভিতর ঈর্ষার কীট কামড়াতে সুরু করেছে। দুপুর থেকে রাত্রি ন’টা পর্যন্ত সুমিত্রাকে হেনরির হাতে ছেড়ে দিতে তার ইচ্ছে নেই। কিন্তু এই দুর্বলতা পাছে সুমিত্রার চোখে পড়ে, সেজন্যে সে সঙ্গে সঙ্গে শক্ত হোল। 

বললে, যেতে পারলে খুবই খুশি হতাম হেনরি। কিন্তু আজকে তো নয়ই, অন্য সময়েও নয়। 

সুমিত্রা গম্ভীরভাবে বললে, ওঁর একেবারেই সময় নেই হেনরি। ডান্সের টিকিট কেনা হয়েছে, অথচ ওঁর জন্যে আমার যাওয়া বন্ধ হচ্ছিল। ভাগ্যে তুমি এলে, তাই যাওয়ার আশা হোল। 

দুঃখের সঙ্গে হেনরি বললে, কিছুতেই যেতে পারবে না মন্টি? 

জোরের সঙ্গে ঘাড় নেড়ে শ্রীমন্ত বললে, না। আমাকে মাপ করো হেনরি। আমার মোটে সময় নেই। 

সময় না থাকলে আর উপায় কি? হেনরি একটা নিঃশ্বাস ফেলে সুমিত্রাকে জিজ্ঞাসা করলে, তাহলে তুমি যাচ্ছ তো? 

—নিশ্চয়।—সুমিত্রা যেন একটু অস্বাভাবিক জোরের সঙ্গেই বলল। শ্রীমন্তর দিকে চাইলেই না। 

—বেশ। আমি তাহলে এখন চললাম। ঠিক সাড়ে বারোটায় আসব এখন। কি বলো?

—তাই এসো। 

হেনরি চলে গেল। সুমিত্রা তাকে সিঁড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে ফিরে আসতেই শ্রীমন্তর ঘাড়ে যেন অনেক কাজ চেপে গেল। 

ব্যস্তভাবে জিজ্ঞাসা করলে, ক’টা বাজছে মিতা? 

মিতা? সুমিত্রার মনে হোল অনেক কাল পরে মূল শ্রীমন্ত যেন তাকে এই পুরাতন নামে ডাকলে। 

মুহূর্তের জন্যে সে থমকে গেল। 

তারপর শান্ত কণ্ঠে বললে, দশটা বেজে গেছে। তুমি কি এখনই বেরুবে? তাহলে স্নান করে নাও। আমি তোমার খাবার যোগাড় করি। 

সুমিত্রা তাড়াতাড়ি নিচে নেমে গেল। 

.

হেনরি ফিরে এলো ঠিক সাড়ে বারোটায়। 

শ্রীমন্ত বেরিয়ে গেছে কাজে। সুমিত্রা তৈরি হয়েই ছিল। হেনরি আসামাত্র বেরিয়ে পড়লো। অনেক দিন পরে তারা শুধু দু’জনে হোটেলে একটা নিরিবিলি কোণে খেতে বসলো। বিয়ে হওয়ার পর থেকে শ্রীমন্তকে না নিয়ে সুমিত্রা হেনরির সঙ্গে কোথাও বার হয়নি! এই প্রথম,—এবং হেনরি চলে যাচ্ছে, যদি চলে যায়, হয়তো এই শেষ। কে জানে, হেনরি আর ফিরবে কি না! 

অনেক দিন পরে সুমিত্রা একটা সিগারেট ধরালে। 

ওদের আলোচনা আরম্ভ হোল নাচ নিয়ে, ভারতের নৃত্য। হেনরি খুব উৎসাহের সঙ্গে নানা প্রশ্ন করতে লাগলো। সুমিত্রাও এ সম্বন্ধে যতটুকু জানতো, খুব উৎসাহের সঙ্গে বোঝাতে লাগলো। ইউরোপীয় নৃত্য সুমিত্রা দেখেছে। তার সঙ্গীত, তার ছন্দ, তার দেহভঙ্গির সঙ্গে ভারতীয় নৃত্যের কোথায় পার্থক্য যথাসম্ভব সে কথা সে বোঝাবার চেষ্টা করতে লাগলো। 

কিন্তু দু’জনেই বেশ বুঝতে পারছে, ওদের আলোচনায় যেন খেই হারিয়ে যাচ্ছে মাঝে-মাঝেই। দেহের রেখা, পায়ের তাল, হাতের লীলায়িত ভঙ্গি কল্পনার সামনে থেকে মাঝে মাঝে যেন মিলিয়ে যাচ্ছে। 

হঠাৎ এক সময় সুমিত্রা প্রশ্ন করলে, তোমার কালকে যাওয়াই ঠিক তাহলে।

হেনরি সোজা হয়ে বসলো। একটু হাসলে। বললে, এখন পর্যন্ত অন্য রকম কিছু তো শুনিনি। 

—কোথায় যাচ্ছ তাও জানো না? 

—না। তবে মনে হয় বর্মা ফ্রন্টে, যেখানে যুদ্ধ চলছে। কিন্তু ওসব আলোচনা আমাদের করা নিষেধ সুমি। সুতরাং ও আলোচনা থাক। 

হেনরি আর একবার হাসলে। 

সুমিত্রা জিজ্ঞাসা করলে, হাসছ যে, তোমার কি খুব আনন্দ হচ্ছে? 

—হবে না? দেশ ছেড়ে, আত্মীয়-স্বজন ছেড়ে, সাত সমুদ্র পেরিয়ে এলাম যুদ্ধ করতে। কিন্তু কোথায় যুদ্ধ? দেড় বছর ধরে এইখানে পড়ে রয়েছি। এ কি ভালো লাগে? 

—কিন্তু যুদ্ধের কত বিপদ সে তো জানো। 

—জানি বলেই তো উল্লাস। এসেছি প্রাণ দিতে, প্রাণ না দিয়ে ফিরে যাওয়াটা কি বিশ্রী দেখাবে না? 

সুমিত্রা শিউরে উঠলো। জিজ্ঞাসা করলে, তুমি কি তাহলে মরবার জন্যে যাচ্ছ হেনরি? 

হেনরি একটু অনিশ্চিত ভাবে হাসলো। হাত দুটো ঘষলে। বললে, অতখানি বলা বোধ হয় ঠিক হবে না সুমি। মরবার জন্যেই কেউ যুদ্ধে যায় না। তাহলে তো সে আত্মহত্যারই নামান্তর হয়। তবু মরবার প্রচুর সম্ভাবনা তো উপেক্ষা করা যায় না! তার জন্যে প্রস্তুত হয়েই যেতে হয়। 

হেনরি একটু থামলে। 

তারপর বললে, আমি আর ফিরে আসব না, তাই জেনেই আমাকে বিদায় দাও। এই কথা সানফ্রান্সিস্কোর একটি মেয়েকেও বলে এসেছিলাম, তোমাকেও বলছি। 

হেনরি ধীরে ধীরে একটি দীর্ঘশ্বাস ফেললে। 

সানফ্রান্সিস্কোর মেয়ের কথায় সুমিত্রা উচ্চকিত হয়ে উঠলো। জিজ্ঞাসা করলে, কেমন দেখতে সে? তার কোনো ফোটোগ্রাফ তোমার কাছে নেই? 

—ছিল, এখন নেই। ফেলে দিয়েছি। 

—কেন? 

—সে অন্য একটি ছেলেকে বিয়ে করেছে। না, না, তার আমি দোষ দিতে পারিনে সুমি! দু’বৎসর আমি দেশছাড়া। এর মধ্যে সন্তান-সম্ভাবনা হোলে বিয়ে করা ছাড়া উপায় কি বলো? 

সুমিত্রা হাসি ঢাকবার জন্যে মুখ ফেরালে। তা হেনরির দৃষ্টি এড়ালো না। তার নিজের ওষ্ঠপ্রান্তেও হাসির রেখা ফুটে উঠলো। 

তারপর বললে, জিগ্যেস করছিলে দেখতে কেমন? কিন্তু নারীর রূপ কোথায় বলো তো? তার দেহে? 

হেনরি হেসে ঘাড় নাড়তে লাগলো। 

সুমিত্রা জিজ্ঞাসা করলে, তবে কোথায়? 

–পুরুষের চোখে। 

সুমিত্রা বিস্মিত দৃষ্টিতে ওর দিকে চাইলে। 

হেনরি দৃঢ়কণ্ঠে বললে, আমার কথা বিশ্বাস করো সুমি। তোমার এবং তার দিকে চেয়ে আমি অনেকবার একথা ভেবেছি। জেনেছি, নারীর রূপ শুধু তার দেহে নয়, পুরুষের চোখে। আমার চোখে তুমি সুন্দর হয়ে ফুটে উঠেছ সুমি। সেই কথাটি বলবার জন্যেই এত আয়োজন। 

চক্ষের পলকে সুমিত্রার সমস্ত মুখ লজ্জায় আরক্ত হয়ে উঠলো। পুরুষের স্তুতিতে এমন করে আর কখনও সে আরক্ত হয়ে ওঠেনি। নববধূর এই লজ্জা তার স্বভাবের বাইরে। 

তা ছাড়া তার ভাগ্যই এমনি যে, আদিম মানুষই তাকে আকর্ষণ করে বেশি। তাকে আকর্ষণ করে শ্রীমন্ত, যার হৃদয়ের কোন বালাই নেই; তাকে আকর্ষণ করে হেনরি, যার কামনা অত্যন্ত স্থূল, অত্যন্ত মাংসল। হৃদয়ের আবেদন তার কাছে এসে পৌঁছুলো এই প্রথম। 

বড় ভালো লাগলো সুমিত্রার। তার মন যেন দুলে উঠলো। হোটেলের সুসজ্জিত হল কেমন রহস্যময় বোধ হতে লাগলো। তার নিজের চোখেও যেন রহস্য ঘনিয়ে এলো। এবং সেই রহস্যভরা চোখ দিয়ে সে নিঃশব্দে নির্নিমেষে চেয়ে রইলো হেনরির দিকে। 

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *