ঋগ্বেদ ০৮।১০২

ঋগ্বেদ ০৮।১০২
ঋগ্বেদ সংহিতা ।। ৮ম মণ্ডল সূক্ত ১০২

অগ্নি দেবতা। এই সূক্তের ভৃগুগোত্রোৎপন্ন প্রয়োগ ঋষি, অথবা বৃহস্পতির পুত্র অগ্নি নামক ঋষি, অথবা সহের পুত্র গৃহপতি ও বশিষ্ঠ নামক ঋষি।

১। হে দ্যোতমান অগ্নি! তুমি কবি, গৃহপতি, যুবা, তুমি হব্যদায়ী যজমানের উদ্দেশে মহা অন্ন প্রদান কর।

২। হে বিশিষ্ট দীপ্তিযুক্ত অগ্নি! তুমি জ্ঞাত হইয়া আমাদের বাক্যের দ্বারা দেবগণকে আনয়ন কর। আমরা স্তুতি ও পরিচর্যা করিতেছি।

৩। হে যুবতম অগ্নি! তুমি অতিশয় ধনপ্রেরক, তোমাকে সহায় লাভ করিয়া আমরা অন্ন লাভার্থ শত্রুগণকে অভিভব করি।

৪। আমি সমুদ্রমধ্যবর্তী শুচি অগ্নিকে, ঔর্ব্ব্য, ভৃগু ও অপ্নবাণের ন্যায় আহ্বান করি।

৫। বাতসদৃশ ধ্বনিবিশিষ্ট, পর্জন্যসদৃশ ক্রন্দনবিশিষ্ট, কবি, বলবান, সমুদ্ৰশায়ী অগ্নিকে আহ্বান করি।

৬। সবিতাদেবতা প্রসবের ন্যায়, ভগদেবতার ভোগের ন্যায়, সমুদ্রশায়ী অগ্নিকে আহ্বান করি।

৭। অহিংসনীয়গণের বন্ধু, বলবান্ বর্ধমান ও বহুতম অগ্নিকে, হে ঋত্বিগণ! তোমরা অভিগমন কর।

৮। এই অগ্নি, আমাদিগের কর্তব্যের রূপ নির্মাণ করেন, আমরা অগ্নির কাৰ্য্যদ্বারা যশোবিশিষ্ট হই।

৯। দেবগণের মধ্যে অগ্নিই মনুষ্যগণের সমস্ত সম্পদ লাভ করেন, তিনি অন্নের সহিত আমাদের নিকট আগমন করুন।

১০। হে স্তোতা! সমস্ত হোতৃগণের মধ্যে সর্বাপেক্ষা অধিক যশস্বী যজ্ঞে প্রধান অগ্নিকে এই যজ্ঞে স্তব কর।

১১। দেবগণের মধ্যে প্রধান ও অতিশয় বিদ্বান্ অগ্নি যাজ্ঞিক গণের গৃহে আদীপ্ত হন। পবিত্রকর, দীপ্তিযুক্ত, অনুনয়নকারী অগ্নিকে স্তব কর।

১২। হে মেধাবী! অশ্বের ন্যায় ভোগযোগ্য, বলবান, মিত্রের ন্যায় নিধনকারী অগ্নিকে স্তব কর।

১৩। হে অগ্নি! যজমানের জন্য প্রতি সকল ভগিনী সকলের ন্যায় তোমার গুণকীর্তন করতঃ তোমার সেবা করিতেছে, বায়ুর সমীপে তোমাকে অবস্থাপিত করিতেছে।

১৪। যে অগ্নির তিনটী অনাবৃত অবদ্ধ বহি আছে, সেই অগ্নিতে জল ও স্থান প্রাপ্ত হয়।

১৫। অভীষ্টবর্ষী ও দ্যুতিমান অগ্নির স্থান সুরক্ষিত এবং ভোগযাগ্য, তাঁহার দৃষ্টি ও সূৰ্য্যের ন্যায় মঙ্গলকর।

১৬। হে অগ্নিদেব! দীপ্তিসাধন ঘৃতের নিধানদ্বারা তৃপ্ত হইয়া জ্বালাদ্বারা দেবগণকে আনয়ন কর এবং যজ্ঞ কর।

১৭। হে অঙ্গিরা অগ্নি। দেবগণ মাতৃগণের ন্যায় কবি, মরণরহিত, হব্যবাহী ও প্রসিদ্ধ অগ্নিকে উৎপন্ন করিয়াছেন।

১৮। হে কবি অগ্নি! তুমি প্রকৃষ্টবুদ্ধিৰিশিষ্ট, বরণীয়, দূতস্বরূপ এবং দেবগণের হব্যবাহী, তোমার চারিদিকে দেবগণ উপবিষ্ট হইলেন।

১৯। হে অগ্নি। আমার গাভী নাই, আমার কাষ্ঠচ্ছেদক পরশু নাই। হে অগ্নি! এই সমস্তই আমি তোমায় দান করিয়াছি।

২০। হে যুবতম অগ্নি! তোমার উদ্দেশে যখন কোন কোন কাৰ্য্য ধারণ করি, তখন সেই সকল পর ছিন্ন কাষ্ঠ তুমি সেবা কর।

২১। তোমার জিহ্বা যে কাষ্ঠ সকল ভক্ষণ করে, যে কাষ্ঠ সকলকে তোমার জিহ্বা অতিক্রম করিয়া গমন করে, সে সমস্ত ঘৃতসদৃশ হউক।

২২। মনুষ্যকাষ্ঠদ্বারা অগ্নিকে প্রজালিত করতঃ মনের দ্বারা কৰ্ম্ম আচরণ করে ও ঋত্বিকগণদ্বারা অগ্নিকে সমদ্ধ করে।