হিউজ গ্লাস ও গ্রিজলি ভাল্লুক

হিউজ গ্লাস ও গ্রিজলি ভাল্লুক

ইতিহাসে যেসব দ্বন্দ্বযুদ্ধের ঘটনা পাওয়া যায়, সেইসব ঘটনার নায়করা যে সবসময় যুদ্ধের রীতি নীতি পালন করেছে এ-কথা বলা যায় না। কারণ মানুষের বিরুদ্ধে মানুষই যে সব সময় দ্বৈরথ রণে অবতীর্ণ হয়েছে এমন কথা বলা যায় না। পশু ও মানুষের দ্বন্দ্বযুদ্ধও ইতিহাসে খ্যাতি লাভ করেছে একাধিকবার। ১৮৭৩ খ্রিস্টাব্দে হিউজ গ্লাস নামক এক বিখ্যাত সীমান্তরক্ষী ও অভিযাত্রী আমেরিকার রকি মাউন্টেন অঞ্চলে এক বিশালকায় গ্রিজলি ভাল্লুকের সম্মুখীন হয়েছিল। দৈর্ঘ্য-প্রস্থে বিরাট ওই ভাল্লুক ছিল নয় ফুট লম্বা। হিউজ তার বন্দুক ব্যবহার করার চেষ্টা করল। গুলি লাগতেই ভাল্লুকটা খেপে গিয়ে তেড়ে এল হিউজের দিকে। দ্বিতীয়বার গুলি চালানোর আগেই প্রকাণ্ড এক থাবার আঘাতে হিউজের বন্দুকটা দূরে ছিটকে পড়ল এবং ভাল্লুকের পরবর্তী চপেটাঘাত হিউজকে করল ধরাশায়ী। রক্তাক্ত ও অবসন্ন দেহ নিয়ে হিউজ টলতে টলতে উঠে দাঁড়াল। তারপর কোমর থেকে শানিত ছুরিকা কোষমুক্ত করে চতুম্পদ প্রতিদ্বন্দ্বীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। বার বার ছুরিকাঘাত করে হিউজ তার শত্রুকে ছিন্নভিন্ন করে ফেলার চেষ্টা করছিল। কিন্তু ভাল্লুকটা তাকে এমন ভীষণভাবে জড়িয়ে ধরেছিল যে, হিউজের মনে হচ্ছিল তার শরীরের হাড়গুলি বুঝি এখনই ভেঙে যাবে।

দেহের শেষ শক্তি জড়ো করে প্রাণপণে ছুরি চালাতে লাগল হিউজ…

হঠাৎ শিথিল হয়ে গেল ভাল্লুকের ভয়াবহ আলিঙ্গন, ধীরে ধীরে মাটির উপর লুটিয়ে পড়ল শ্বাপদের প্রাণহীন দেহ। হিউজ যুদ্ধে জয়ী হল বটে, কিন্তু ভাল্লুকের নখদন্ত তাকে প্রায় মৃত্যুর দুয়ার পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছিল। শরীরের মারাত্মক ক্ষতগুলি নিরাময় হতে বেশ সময় লেগেছিল; দীর্ঘ কয়েক মাস যন্ত্রণা ভোগ করার পর সুস্থ হয়ে উঠেছিল হিউজ গ্লাস।