ঋগ্বেদ ০৬।৫৪

ঋগ্বেদ ০৬। ৫৪
ঋগ্বেদ সংহিতা । ৬ষ্ঠ মণ্ডল । সূক্ত ৫৪
পূষা দেবতা। ভরদ্বাজ ঋষি।

১। হে পূষা! তুমি আমাদিগকে এরূপ একটী বিচক্ষণ ব্যক্তির সহিত সঙ্গত কর, যিনি আমাদিগকে প্রকৃতরূপে পথ প্রদর্শন করাইবেন এবং বলিবেন “এইটীই সেই (১)।”

২। আমরা যেন পূষার অনুগ্রহে এরূপ ব্যক্তির সহিত মিলিত হই, যিনি সমস্ত গৃহ আমাদিগকে প্রদর্শন করাইবেন এবং বলিবেন “এই গুলিই সেই।”

৩। পুষার আয়ূধভূত চক্র বিনষ্ট হয় না। এই চক্রের কোশ হীন হয় না এবং ইহার ধার কুণ্ঠিত হয় না।

৪। বে ব্যক্তি হব্যদ্বারা পুষার পরিচর্যা করে, পৃষা তাহার কিঞ্চিন্মাত্র অপকার করে না এবং সেই ব্যক্তিই প্রধানতঃ ধন লাভ করে।

৫। পূষা যেন রক্ষা করিলার নিমিত্ত আমীদিগের ধেনুৰ্বন্দের অনুসরণ করেন; তিনি যেন আমাদিগের অশ্বগণকে রক্ষা করেন; তিনি যেন আমাদিগকে অন্ন প্ৰদান করেন।

৬। হে পূষা! তুমি রক্ষণার্থ সোমাভিষবকারী যজমানের গোগণের অনুসরণ করা এবং তদীয় স্তোত্ৰোচ্চারণকারী আমাদিগের ও ধেনুগণের অনুসরণ কর।

৭। হে পূষা! আমাদিগের গোধন যেন নষ্ট না হয়। ইহা যেন ব্যাঘ্রাদি দ্বারা নিহত না হয়। কূপপাত দ্বারা যেন বিনষ্ট না হয়। অতএব তুমি অহিংসিত সেই ধেনুগণের সহিত সায়ংকালে অগমন কর (২)।

৮। অস্মদীয় স্তোত্র শ্রবণকারী, দরিদ্র্যনাশক, অবিনষ্টধন, অখিল জগতের অধিপতি, পূষার নিকট ধন প্রার্থনা করিতেছি।

৯। হে পূষা! যৎকালে আমরা ত্বদীয় উপাসনায় নিযুক্ত থাকি, তৎকালে যেন কখনও হিংসিত না হই। সম্প্রতি আমরা তোমার স্তব করিয়া যেন সেইরূপ হই।

১০। পূষা যেন নিজ দক্ষিণ হস্তদ্বারা আমাদিগের গোধনকে বিপগ গমন হইতে নিবারণ করেন। তিনি যেন আমাদিগের নষ্ট গোধনকে পুনরানয়ন করেন।

————–
(১) অৰ্থাৎ সন্দেহ স্থলে যে ব্যক্তি পথ বা গৃহ নিণয় কারয় দিবে। কিন্তু সায়ণ অর্থ করিয়াছেন যে, সে ব্যক্তি অপহৃত দ্রব্য বাহির করিয়া দিবে। এ অর্থ অসঙ্গত।
(২) গোরক্ষকগণ সূর্য্যকে যে প্রকৃতিতে অবলোকন করিত, সেই প্রকৃতির সূর্য্যই পূষা। সুতরাং তাঁহার হস্তে প্রতোদ, তিনি পথ নির্দ্দেশ করেন, গো সকল রক্ষা করেন, নষ্ট পশু উদ্ধার করেন, ভ্রমণকারীদিগকে সৎপথে লইয়া যান, ইত্যাদি। ১।৪২।১০ ঋকের টীকা দেখ।