সকালবেলায় আলোয় বাজে বিদায়ব্যথার ভৈরবী

ডাকব না ডাকব না অমন করে বাইরে থেকে

সখী তোরা দেখে যা এবার এল সময়

গোপন কথাটি রবে না গোপনে

তবু মনে রেখো যদি দূরে যাই চলে

শেষ বেলাকার শেষের গানে

তোরা যে যা বলিস ভাই আমার সোনার হরিণ চাই

আমি আশায় আশায় থাকি

বলো সখী বলো তারি নাম

তুমি যেয়ো না এখনি

কাঁদার সময় অল্প ওরে ভোলার সময় বড়ো

ও আমার ধ্যানেরই ধন

আমার নিখিল ভুবন হারালেম আমি যে

আকুল কেশে আসে চায় ম্লাননয়নে কে গো চিরবিরহিনী

কেন রে এতই যাবার ত্বরা

হায় রে ওরে যায় না কি জানা

না না ভুল কোরো না গো

কে দিল আবার আঘাত আমার দুয়ারে

জানি জানি হল যাবার আয়োজন

ওহে সুন্দর মম গৃহে আজি পরমোৎসব-রাতি

ভুল করেছিনু ভুল ভেঙেছে

নাই বা এলে যদি সময় নাই

আমার যাবার বেলায় পিছু ডাকে

কে আমারে যেন এনেছে ডাকিয়া

ডেকো না আমারে ডেকো না

জয় ক’রে তবু ভয় কেন তোর যায় না

কে বলে ‘যাও যাও’

সেদিন দুজনে দুলেছিনু বনে

যে ছিল আমার স্বপনচারিণী

কাঁদালে তুমি মোরে ভালোবাসারই ঘায়ে

কেন আমায় পাগল করে যায়

সেই ভালো সেই ভালো আমারে নাহয় না জানো

হায় হতভাগিনী স্রোতে বৃথা গেল ভেসে

আমার মনের কোণের বাইরে

যদি হল যাবার ক্ষণ

কাছে যবে ছিল পাশে হল না যাওয়া

কোন্‌ সে ঝড়ের ভুল ঝরিয়ে দিল ফুল

আমার প্রাণের মাঝে সুধা আছে চাও কি

নিশীথে কী কয়ে গেল মনে

তোমার মনের একটি কথা আমায় বলো বলো

মোর স্বপন-তরীর কে তুই নেয়ে

উদাসিনী -বেশে বিদেশিনী কে সে নাইবা তাহারে জানি

ভালোবাসি ভালোবাসি

আমি যাব না গো অমনি চলে

এবার মিলন-হাওয়ায়-হাওয়ায় হেলতে হবে

খোলো খোলো দ্বার রাখিয়ো না আর

তোমার রঙিন পাতায় লিখব প্রাণের কোন্‌ বারতা

সে আমার গোপন কথা শুনে যা ও সখী

আজ সবার রঙে রঙ মিশাতে হবে

কে বলেছে তোমায়, বঁধু এত দুঃখ সইতে

আমার দোসর যে জন ওগো তারে কে জানে

দিনশেষের রাঙা মুকুল জাগল চিতে

এ কী সুধারস আনে আজি মম মনে প্রাণে

এই বুঝি মোর ভোরের তারা এল সাঁঝের তারার বেশে

আছ আকাশ-পানে তুলে মাথা

ও যে মানে না মানা

আমার লতার প্রথম মুকুল চেয়ে আছে মোর পানে

না না গো না কোরো না ভাবনা

মান অভিমান ভাসিয়ে দিয়ে এগিয়ে নিয়ে আয়

দুঃখ দিয়ে মেটাব দুঃখ তোমার