স্যালভেশন অফ আ সেইন্ট – ২৯

অধ্যায় ২৯

মেগুরো স্টেশনে নিজের ডেস্কে বসে কেস ফাইল গোছাচ্ছিল উতসুমি, এমন সময় মামিয়া ভেতরে প্রবেশ করে ইশারায় ডাকলো তাকে। উঠে তার ডেস্কের দিকে এগিয়ে গেল জুনিয়র ডিটেক্টিভ

“ সেকশন চিফের সাথে কেসের ব্যাপারে কথা হলো আমার,” মামিয়া বলল। চেহারা গম্ভীর হয়ে আছে তার।

“গ্রেফতারের অনুমতি পেয়েছি আমরা?”

মাথা ঝাঁকিয়ে না করে দিল মামিয়া। “না, পাইনি। পাওয়ার সম্ভাবনাও নেই। আমাদের কাছে তো খুনিকে শনাক্ত করার মত পর্যাপ্ত আলামত নেই। ডিটেক্টিভ গ্যালিলিও’র কাজে বরাবরের মতন এবারেও অভিভূত সবাই, কিন্তু আদালতে প্রমাণটাই সবচেয়ে জরুরি।”

“আমিও সেটাই ভাবছিলাম,” হতাশ স্বরে বলল উতসুমি। “ইউকাওয়া যেমনটা বলেছিল তেমনটাই হচ্ছে।”

পুরো কাহিনী শোনার পর তো সবার চুল টেনে ছেড়ার অবস্থা। কে ফিল্টারে বিষ ঢুকিয়ে এক বছর অপেক্ষা করবে কাউকে খুন করার জন্যে?! এটা কি বিশ্বাস করা যায়? প্রথমে তো আমার কথা বিশ্বাসই করেনি কেউ। আমি নিজেই তো করিনি! এটাই একমাত্র সমাধান হতে পারে, কিন্তু মেনে নেয়াটা…কি আর বলবো।”

“প্রফেসর ইউকাওয়া যখন সব খুলে বললেন, আমিও বিশ্বাস করিনি প্রথমে।”

“মানুষের পক্ষে যে কি কি করা সম্ভব! আয়ানে আর প্রফেসর ইউকাওয়া, দু’জনই একই ধাঁচের কিন্তু। তাদের মাথায় কি আছে কে জানে,” মামিয়া বলল, চেহারায় বিরক্তিভাব স্পষ্ট তার। “আমাদের কাছে এর স্বপক্ষেও প্রমাণ নেই যে প্রফেসর একদম ঠিক কথাই বলছেন। আর যতক্ষণ শতভাগ নিশ্চিত হতে না পারছি, আয়ানে মাশিবা ধরা ছোঁয়ার বাইরেই রয়ে যাবে।”

“জুঞ্জি সুকুইয়ের ব্যাপারে তাদের সাথে কথা বলেছেন? আমি শুনেছি ফরেনসিকের লোকেরা হিরোশিমায় তার মা’র বাসায় গিয়েছিল?”

মাথা নাড়লো মামিয়া। “যে ক্যানটায় আর্সেনাস এসিড রাখা ছিল সেটা স্প্রিং এইটে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তারা যদি এটা প্রমাণও করতে পারে যে দুটো জায়গার আর্সেনাস এসিড একই উৎসের, তবুও সেটা আদালতে প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা যাবে না। তাছাড়া জুঞ্জি সুকুইয়ের সাথে যদি ইয়োশিতাকা মাশিবার আসলেও সম্পর্ক থেকে থাকে, তাহলে আসামী পক্ষ থেকে এটা দাবি করা হবে যে সে নিজেই বিষটুকু বাসায় এনে রেখেছিল।”

দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো উতসুমির বুক চিড়ে। “তাহলে আমরা কিভাবে প্রমাণ করবো অপরাধটা? কিছু একটা তো বলুন! যা করতে হয় করবো! প্রফেসর ইউকাওয়া যে বলছেন এটা একটা পারফেক্ট ক্রাইম, তা বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে আমার।”

“আমাকে এসব বলে লাভ নেই,” মামিয়া বলল গোমড়া মুখে। “আমি যদি সমাধান জানতামই, তাহলে আর এই বিপদে পড়তে হতো না। আমাদের কাছে একমাত্র প্রমাণ বলতে এখন স্প্রিং-এইটের ঐ রিপোর্টটা সেকশন অফিসের সবাই বলল ওটাকেই ভালোমতো কাজে লাগাতে।”

নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরলো উতসুমি। চিফ যা বলছে সেটার সাথে হাল ছেড়ে দেয়ার কোন পার্থক্য নেই।

“এখনই ভেঙে পড়ো না। আমি হাল ছাড়িনি, কিছু না কিছু তো পাবোই। পারফেক্ট ক্রাইম-বললেই হলো না কি?”

চুপচাপ মাথা নাড়লো উতসুমি। একবার বাউ করে বেরিয়ে এল চিফের অফিস থেকে। ঠিক বলেছেন, ভাবলো সে, সহজ নয় মোটেও। কিন্তু আয়ানে মাশিবা যা করেছে, তা সাধারণ কোন মানুষের পক্ষে করা রীতিমত অসম্ভব। আর সেজন্যেই তাকে কোনভাবে দোষী সাব্যস্ত করতে পারবো না আমরা, আর সবার থেকে আলাদা সে।

ডেস্কে ফিরে এসে পকেট থেকে মোবাইল ফোনটা বের করল উতসুমি। আশা করছিল কুসানাগি হয়তো গুরুত্বপূর্ণ কোন ভয়েস মেসেজ পাঠিয়েছে, কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি। শুধুমাত্র একটা মেসেজই এসে জমা হয়েছে, আর সেটা পাঠিয়েছে তার মা।

Post a comment

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *