চৌত্রিশ
মাঝরাতের খানিক আগে হাতের বইটা বন্ধ করল রানা, বেরিয়ে এল ফার্মহাউসের বারান্দায়। উন্মুক্ত প্রান্তর থেকে ভেসে আসছে উষ্ণ, আর্দ্র হাওয়া। বারান্দার সিঁড়ির কাছে গিয়ে বাইরে নজর বোলাল ও। বাড়ির সামনের জমিন একটু ঢালু হয়ে নেমে গেছে প্রায় দু’শো গজ, ড্রাইভওয়েটা ঠিক তার মাঝ দিয়ে এগিয়েছে। চারদিকে ঘাসে ছাওয়া সমতল মাঠ। বিশাল প্রান্তরের ঠিক মাঝখানে নিঃসঙ্গ দাঁড়িয়ে আছে বাড়িটা, সবদিকেই অন্তত ছ’শো গজ খোলা জায়গা, ফলে গা-ঢাকা দিয়ে কারও পক্ষে বাড়ি পর্যন্ত পৌছুনো সম্ভব নয়। সন্দেহ নেই, এ-কারণেই ফাঁদ পাতার জন্যে জায়গাটা বেছে নিয়েছে লিয়ারি।
বাড়িটার বয়স অন্তত একশো বছর—বিবর্ণ চেহারা নিয়ে বহন করছে অতীতের স্মৃতি। উত্তরে ধীরে ধীরে প্রসারিত হচ্ছে টোপেকা নামের আধুনিক নগরী, হয়তো কয়েক বছরের ভেতরেই পৌছে যাবে এই বাড়ির লোকেশন পর্যন্ত। ব্যস্ত যে- সড়কের কথা বলেছে লিয়ারি, সেটা দক্ষিণে… দিগন্তের কাছে, পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত বিস্তৃত। যেন নিয়ন আর সোডিয়াম বাতি লাগানো একটা ফিতে। অ্যালি ওখানে আছে কি না, কে জানে। দশদিন হলো ফার্মহাউসে উঠেছে ও আর টিফানি, ওদের খোঁজ পেতে এত সময় লাগার কথা নয় মেয়েটার।
অন্ধকারে, রানার ডানদিকে ক্যাঁচকোঁচ করে উঠল বারান্দায় ঝোলানো দোলনাটা। স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে ঝট্ করে ওদিকে ঘুরে গেল ও, সবগুলো স্নায়ু টানটান হয়ে উঠেছে। পরমুহূর্তে ঢিল দিল পেশিতে। কেউ নেই। বাতাসে নড়ে উঠেছে প্রাচীন দোলনা—বাড়িটার সমান বয়স ওটার। বারান্দায় দাঁড়িয়ে আরও কিছুক্ষণ রাতের প্রকৃতি দেখল রানা, এরপর ফিরে গেল ভেতরে।
নিজের কামরায় ঘুমাচ্ছে টিফানি। একটা রুটিন করে নিয়েছে দু’জনে, যাতে যে-কোনও সময় অন্তত একজন জাগ্রত অবস্থায় থাকে। ফার্মহাউসে ওদেরকে রেখে যাবার সময় খুব বেশি কিছু বলে যায়নি লিয়ারি। শুধু কাছাকাছি থাকতে, এবং চোখকান খোলা রাখতে পরামর্শ দিয়ে গেছে। দু’জনকেই একটা করে সেলফোন দিয়ে গেছে—কন্ট্যাক্ট লিস্টে নিজের ফোন নাম্বার-সহ। বলে দিয়েছে, অস্বাভাবিক কিছু ঘটলেই যেন ওরা ফোন করে তাকে।
কিচেনে ঢুকল রানা। বিশাল প্যান্ট্রিতে মজুত করে রাখা হয়েছে অন্তত দু’মাস চলার মত শুকনো খাবার। অ্যাটাচড্ গ্যারাজে রয়েছে তিনটে অতিকায় ডিপ ফ্রিজ-মাছ, মাংস আর নানা ধরনের সবজিতে টইটম্বুর সেগুলো। গ্যারাজে দুটো গাড়িও আছে—একটা ফোর্ড এস্কেপ এস.ইউ.ভি, আর একটা শেভি ম্যালিবু সেডান। ফিউয়েল ট্যাঙ্ক ভরে রাখা হয়েছে, ইগনিশনে সারাক্ষণ ঝুলছে চাবি… যাতে জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত সটকে পড়া যায়। নিয়ম করে গাড়িদুটো স্টার্ট দেয় রানা, ব্যাটারি যেন বসে না যায়।
কাউন্টারের ওপর পড়ে আছে টিফানির ল্যাপটপ কম্পিউটার—চার্জ হচ্ছে। জিনিসটা আনতে বাধা দেয়নি লিয়ারি, ব্যবহারেও কোনও নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। সন্ধ্যায় ওতে ইমেইল চেক করছিল টিফানি, খানিক পর ল্যাপটপ বন্ধ করে বেরিয়ে গিয়েছিল বারান্দায়। দোলনায় বসে দোল খেতে শুরু করেছিল। স্ক্রিন ডোরের এপাশ থেকে ওর চাপা কান্না শুনতে পেয়েছে রানা, কিন্তু সান্ত্বনা দিতে যায়নি। কখনও কখনও মানুষকে একা থাকতে দিতে হয়। বারান্দায় ঘণ্টাখানেক বসে ছিল টিফানি, তারপর ঘরে ঢুকে চলে গেছে নিজের কামরায়। শুয়ে পড়েছে।
ল্যাপটপটা একপাশে সরিয়ে স্যাণ্ডউইচ বানাতে শুরু করল রানা। ফ্রিজ থেকে পনিরের একটা চাকা নিয়ে এল, ছুরি দিয়ে কেটে নিল দুটো পাতলা স্লাইস। ধারালো ফলাটার দিকে তাকিয়ে কয়েক মুহূর্তের জন্যে থমকে গেল ও। এখন যদি অ্যালি ওকে লক করে, তা হলে কী ঘটবে? কিছু কি টের পাবে? নাকি যন্ত্রের মত ধারালো ছুরিটা ঢুকিয়ে দেবে নিজের গলায়, বুকে বা পেটে? আনমনে মাথা নাড়ল ও, ছুরিটা সরিয়ে রাখল নাগালের বাইরে। প্লেটে স্যাণ্ডউইচ সাজিয়ে বেরিয়ে এল কিচেন থেকে।
চার ঘণ্টা পর টিফানি জেগে উঠলে নিজের কামরায় গেল রানা। পোশাক পাল্টে শুয়ে পড়ল বিছানায়। খোলা জানালা দিয়ে ভেসে আসছে ঝিঁঝি পোকার ডাক আর বাতাসে দুলতে থাকা ঘাসের মর্মর। তন্দ্রায় ঢলে পড়ল ও, আধো-ঘুমের ভেতর দেখতে পেল অ্যালিকে। মনে হলো, অ্যামারিলোর সেই অন্ধকার বাড়িটায় ফিরে গেছে ওরা, অ্যালি ঘুমাচ্ছে ওর কাঁধে মাথা রেখে। মুখের ওপর এলোমেলো ভঙ্গিতে পড়ে আছে চুল। অদ্ভুত এক মায়ায় মন ভরে উঠল রানার। নড়ল না, পাছে স্বপ্নটা ভেঙে যায়। ঘুমের অতলে তলিয়ে যাবার আগ পর্যন্ত দৃশ্যটা মনের চোখ ভরে দেখল ও।
.
‘ওটা আর্কটারাস,’ বলল টিফানি।
দু’রাত পর। বারান্দার সিঁড়িতে বসে আছে ও আর রানা, ঘনঘোর আকাশের দিকে তাকিয়ে নক্ষত্র দেখছে।
‘দেখে বোঝা যায় না, কিন্তু আর্কটারাস একটা দানব তারা,’ বলে চলল টিফানি। ‘আমাদের সূর্যকে যদি ওটার পাশে রাখো, মনে হবে বাস্কেটবলের পাশে একটা চেরি ফল রেখেছ।’
‘তুমি জ্যোতির্বিজ্ঞানও পড়েছ?’ জিজ্ঞেস করল রানা।
‘না,’ মাথা নাড়ল টিফানি। ‘তবে জ্যোতির্বিজ্ঞানে আগ্রহী একজনকে চিনতাম। সে মেয়েটাই আমাকে এরকম অনেক ছোটখাট তথ্য বলেছে।’
কিছুক্ষণের জন্যে নীরব হয়ে গেল সে। এরপর জানতে চাইল, ‘অ্যালি যখন তোমার সঙ্গে ছিল, কেমন লাগত তোমার?’
‘কী জানি,’ কাঁধ ঝাঁকাল রানা। ‘অন্যরকম একটা অভিজ্ঞতা। জীবনটা বদলে গিয়েছিল কয়েকদিনের জন্যে।’
বুকের কাছে দু’পা ভাঁজ করল টিফানি, দু’হাতে জড়িয়ে ধরল হাঁটুদুটো। থুতনি রাখল হাঁটুর ওপর। উদাস গলায় বলল, ‘অপরাধবোধের চেয়ে ভয়ঙ্কর অনুভূতি আর নেই। ঘুণের মত খেয়ে ফেলছে আমার ভেতরটা। এক মুহূর্তের জন্যে শান্তি দিচ্ছে না। বলে বোঝাতে পারব না, রানা, ফোর্ট ডেট্রিকের ঘটনার জন্যে আমি কতটা দুঃখিত… কতটা কষ্ট পাচ্ছি। অ্যালি যদি সেটা জানত!’
অদ্ভুত এক বেদনা ফুটে উঠেছে তার গলায়। সান্ত্বনার সুরে রানা বলল, ‘নিশ্চয়ই জানবে। ও তো মানুষের মন পড়তে পারে।’
‘তাতে লাভ হবে কোনও? ও কি আমাকে ক্ষমা করতে পারবে?’
এ-প্রশ্নের জবাব নেই রানার কাছে। অ্যালির কথা ভাবল, চোখের সামনে নিজের মমতাময়ী মাকে খুন হতে দেখেছে বেচারি। এ-ধরনের মানসিক আঘাত কাটানো সহজ নয়।
বাতাসের তোড় একটু বাড়ল। কেঁপে উঠে হাঁটুজোড়া আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরল টিফানি। রানা তাকাল ওর দিকে। ক্লান্ত মুখশ্রীর ভেতর কোথায় যেন অদ্ভুত কমনীয়তা লুকিয়ে আছে। বাতাসে কপালের ওপর লুটিয়ে পড়েছে এক গোছা চুল। রাতের আবছায়া পরিবেশে সেটাই যেন আবেদনময়ী করে তুলেছে ওকে। চোখ ফেরাতে পারছে না রানা।
ওকে অপলকে তাকাতে দেখে মুখ ঘোরাল টিফানি। চোখাচোখি হলো দু’জনের। টিফানির চোখে বিস্ময় ফুটল, পরক্ষণে লজ্জায় আনত হলো দৃষ্টি।
এক সেকেণ্ড পরেই পরস্পরকে চুমো খেতে শুরু করল ওরা—পাগলের মত। টিফানিকে শক্ত আলিঙ্গনে বেঁধেছে রানা, ওর পিঠ খামচে ধরেছে মেয়েটা। নিঃশ্বাসে যেন আগুনের হলকা। সিঁড়ির ওপর বিচিত্র ভঙ্গিতে শুয়ে পড়েছে দুজনে, ইঞ্চি ইঞ্চি করে উঠে এল সমতল বারান্দায়।
রানার বাহুবন্ধন থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিল টিফানি, হাঁটুতে ভর দিয়ে সোজা হলো, ব্যস্ত হাতে খুলতে শুরু করল জামার বোতাম। আর তখুনি সচেতন হয়ে উঠল রানা। সমস্ত উত্তেজনা মিলিয়ে গেল নিমেষে, পরিষ্কার হয়ে এল মাথা।
‘থামো!’ কর্কশ গলায় বলে উঠল ও।
থমকে গেল টিফানি। অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘কেন?’
‘বারো দিন…’ বলল রানা, ‘বারোটা দিন একসঙ্গে আছি আমরা। এর ভেতর কিছু ঘটেনি আমাদের ভেতর।
‘এখন ঘটছে। তাতে সমস্যা কোথায়?’
‘কিছু মনে কোরো না, টিফানি। তুমি সুন্দরী… কিন্তু একবারও তোমার প্রতি সেরকম আকর্ষণ অনুভব করিনি আমি।’
বিব্রত দেখাল টিফানিকে। ‘ইয়ে… আমি সেকথা বলতে পারছি না।’
‘আমাকে কাছে পেতে চেয়েছ তুমি? এভাবে?’
‘ঠিক তা নয়। কিন্তু, হঠাৎ এসব কথা কেন?
‘কী বলতে চাইছি সেটা ভেবে দেখো।’
এক মুহূর্তের জন্যে স্থির হয়ে রইল টিফানি। তারপরেই আঁতকে উঠল। ‘ওহ্ গড়!’
‘ঠিক ধরেছ,’ মাথা ঝাঁকাল রানা। ‘এইমাত্র যা ঘটল, সেটা তুমি-আমি নিজ থেকে করিনি। আমাদেরকে দিয়ে করানো হয়েছে।’
‘তার মানে…’
‘অ্যালি,’ থমথমে গলায় বলল রানা। ‘ও এসে পড়েছে।’
.
লাফ দিয়ে উঠে দাঁড়াল দু’জনে। অবিন্যস্ত পোশাক ঠিকঠাক করতে করতে পকেট থেকে সেলফোন বের করল রানা। কল করল লিয়ারির নাম্বারে। রিং হবার ফাঁকে দেখে নিল দক্ষিণের ঘেসো জমিটা—ওদিক থেকে আসার কথা অ্যালির। কিন্তু কাউকে দেখা গেল না। আকাশে চাঁদ নেই। ঘন অন্ধকারে ছেয়ে আছে প্রান্তর।
দু’বার রিং হলো। জবাব নেই। তৃতীয় রিঙেও রিসিভ করা হলো না কল।
উদ্বেগ ফুটল টিফানির চেহারায়।
চারবার রিং হলো।
পাঁচবার।
‘লিয়ারির কিছু হয়ে যায়নি তো?’ শঙ্কা প্রকাশ করল টিফানি। ‘ওকে হয়তো খুন করে এসেছে অ্যালি। আমাদেরকে সাহায্য করার কেউ নেই!’
চুপ করে রইল রানা। ষষ্ঠবারের মত বাজছে রিং।
সাত…
দরজা ঠেলে বাড়ির ভেতরে ঢুকে পড়ল রানা। বারান্দাটা বড্ড অরক্ষিত। কানে ঠেকিয়ে রেখেছে সেলফোন। ওকে অনুসরণ করল টিফানি।
আটবারের মত রিং হলো ওপাশে। সাড়া নেই কারও।
লাইন কেটে দিয়ে ফোনটা পকেটে রেখে দিল রানা। আর চেষ্টা করার প্রয়োজন নেই। চাইলে লিয়ারিই ফোন করতে পারবে ওকে।
লিভিং রুমে দাঁড়িয়ে আছে ও আর টিফানি। আলো নেভানো। জানালা দিয়ে প্রান্তরের অনেকটাই দৃষ্টিগোচর হয়। পাশে গিয়ে দাঁড়াল রানা।
‘প্রথমে তোমাকে লক করেছে ও, তারপর আমাকে, বিশ্লেষণের ভঙ্গিতে বলল টিফানি। ‘তোমাকে ওভাবে তাকাতে দেখে তাই অবাক হয়েছিলাম। এরপর তো আমার ওপরেই ভর করল। নিজেকে আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি।’
‘একসঙ্গে দু’জনকে লক করতে পারে না ও,’ রানা বলল। ‘তাই পালা করে আমাকে আর তোমাকে লক করেছে। কৌশলটা ভালই বেছেছে, এমন একটা কাজে জড়িয়েছে আমাদেরকে, যেটা একবার শুরু করে দিতে পারলে আর লকিঙের দরকার হয় না। নিজ থেকেই চলতে থাকে। গাড়ির ইঞ্জিনের মত।’
‘কিন্তু কেন? খেলতে চাইল আমাদের নিয়ে?
‘উঁহুঁ। আমাদের মনোযোগ ফেরাতে চেয়েছে, যাতে খোলা জায়গাটা নির্বিঘ্নে পেরোতে পারে… বাড়িতে পৌঁছুতে পারে।’
চেহারা ফ্যাকাসে হয়ে গেল টিফানির। অ্যালি কেন বাড়িতে ঢুকতে চায়, তা বুঝতে পারছে—ওকে নিজ হাতে খুন করার জন্যে!
নিঃশব্দে সায় দিল রানা। তবে একটা ব্যাপারে খটকা লাগছে। খুব অল্প সময়ের জন্যে ওদেরকে লক করেছিল অ্যালি, তারপরেই ক্ষান্ত দিয়েছে। কেন? এখন… এ-মুহূর্তে ওদেরকে লক না করার কারণ কী? ইচ্ছে করলেই ওদেরকে অচল করে বসিয়ে রাখতে পারে ও, করছে না কেন? জবাবটা জানা নেই রানার। অস্বস্তিতে ভুগতে শুরু করল। তাকাল সেলফোনের নিষ্প্রাণ স্ক্রিনের দিকে। অসহায় বোধ করছে।
‘আমরা এখন কী করব, রানা?’ ফিসফিসিয়ে জানতে চাইল টিফানি।
.
দক্ষিণ যুক্তরাষ্ট্রের দু’হাজার একত্রিশ মাইল ওপরে, মহাশূন্যে ভাসতে থাকা মিরাণ্ডা টোয়েন্টি সিক্স স্যাটেলাইট আচমকা চঞ্চল হয়ে উঠল। ক্যানসাসের টোপেকার উত্তরে, ঘাসে ভরা চারণভূমির দিকে তাক করল সব ইকুইপমেন্ট। মাইক্রোস্কোপিক অ্যাডজাস্টমেন্টে ব্যস্ত হয়ে পড়ল লেন্স প্ল্যাটফর্ম, ভিউয়িং ফ্রেম লক হলো পূর্ব-নির্ধারিত টার্গেটের ওপর। স্যাটেলাইটের অনবোর্ড কম্পিউটারে কমাণ্ড দেয়া আছে—টার্গেটের আশপাশে কোনও ধরনের মুভমেন্ট দেখা দিলেই এ-কাজ করতে হবে।
টার্গেটটা একটা চৌকোনা ফার্মহাউস, ঘাসে ঢাকা জমির মাঝখানে অবস্থিত। ঋতু ও এলাকাকে ধর্তব্যে রেখে দ্রুত একটা হিসেব কষল কম্পিউটার—ঘাসগুলো বুটেলুয়া গ্রাসিলিস প্রজাতির হবার সম্ভাবনা শতকরা ৯৭.৪৪১ ভাগ। সেই ঘাস মাড়িয়ে দুটো ছায়ামূর্তি পায়ে হেঁটে এগোচ্ছে বাড়িটাকে লক্ষ্য করে। মিরাণ্ডার অ্যানালিসিস বলছে, ওদের একজন প্রাপ্তবয়স্ক এবং অন্যজন অপ্রাপ্তবয়স্ক। দু’জনেই স্ত্রীলিঙ্গের মানুষ।
মিরাণ্ডা টোয়েন্টি সিক্সের কমিউনিকেশন মডিউল চালু হয়ে উঠল। বারো দিন, চার ঘণ্টা, সাতাশ মিনিট ও একচল্লিশ সেকেণ্ড আগে পাওয়া কমাণ্ড অনুসারে ইমেজ ডেটা পাঠাতে শুরু করল নিচের সিকিউর ডাউনলিঙ্কে।