তেইশ
‘স্বাভাবিকভাবে হাঁটো,’ অ্যালিকে বলল রানা। ‘লোকে যেন ভাবে, গ্রোসারি কিনে বাড়ি ফিরছি আমরা, ব্যস।
টিফানি ক্যানট্রেলের পাড়ায় ঢুকেছে ওরা। যে-অ্যাপার্টমেন্টে উঠবে বলে ঠিক করেছে, সেটার উদ্দেশে হাঁটছে। হাতে মডেস্টো থেকে কেনা জিনিসপত্রের ব্যাগ। রাত হয়েছে বেশ, চারদিক অন্ধকার, সাইডওয়াকে মানুষজন নেই। শব্দ বলতে শহরের রাত্রিকালীন গুঞ্জন। কোথাও একটা বাসের ইঞ্জিন কেশে উঠল। ঘেউ ঘেউ করে ডাকল একটা কুকুর।
স্পিড লিমিটের পাঁচ কিলোমিটার ওপরে থেকে পুরো রাস্তা গাড়ি চালিয়েছে রানা। থেমেছে মাত্র দু’বার—একবার গাড়ির তেল নিয়েছে, দ্বিতীয়বার একটা হার্ডওয়্যার স্টোরে থেমে কিনে নিয়েছে তালা খোলার জন্যে কয়েকটা টুকিটাকি জিনিস। অ্যামারিলোয় পৌঁছেছে ওরা রাত সাড়ে বারোটায়। টিফানির বাড়ির আধমাইল দূরে একটা নির্জন পার্কিং লট খুঁজে নিয়ে সেখানে পার্ক করেছে গাড়ি। এরপর দু’জনে বাজারের ব্যাগ হাতে নিয়ে হাঁটতে শুরু করেছে।
কাঙ্ক্ষিত বাড়িটার সামনে পৌঁছে গেল ওরা একটু পরেই। সদর দরজায় তালা দেয়া—সেটাই স্বাভাবিক। তালা খোলার সরঞ্জাম সেজন্যেই কিনে এনেছে রানা। ব্যস্ত হয়ে পড়ল সেগুলো নিয়ে, একটু পরেই খুলে গেল দরজা। ভেতরে ঢুকে সিঁড়ি ভেঙে দোতলায় উঠে গেল দু’জনে। খালি অ্যাপার্টমেন্টটা ওখানেই। অ্যাপার্টমেন্টের দরজায় আরেকটা তালা খুলতে হলো, মিনিটখানেক পরেই ভেতরে ঢুকতে পারল ওরা।
খালি অ্যাপার্টমেন্ট যেমনটা হবার কথা, ভেতরটা তেমনই। কোনও ফার্নিচার নেই। দেয়ালে সম্প্রতি রঙ করানো হয়েছে, পেইন্টের গন্ধ ভাসছে বাতাসে। আর ভাসছে ফ্লোর পলিশের গন্ধ। বাতি জ্বালল না রানা, অ্যালি চলে গেল পূর্বদিকের দেয়ালের পাশে—টিফানির বাড়ির যতটা সম্ভব কাছে থাকতে চাইছে। এরপর দেয়ালে ঠেস দিয়ে চোখ মুদল।
অন্ধকারে ধীরে ধীরে চোখ সয়ে আসছে রানার। আলোর উৎস বলতে স্ট্রিটলাইটের আভা—জানালার কাঁচ ভেদ করে আসছে; আর কিচেনে লাগানো স্টোভের ডিজিটাল ডিসপ্লে।
‘এখান থেকে নিশ্চয়ই জনাপঞ্চাশেক মানুষের চিন্তা শুনতে পাচ্ছ তুমি,’ অ্যালিকে বলল ও।
মাথা ঝাঁকাল মেয়েটা। ‘হুঁ। মনে হচ্ছে যেন ভিড়ের হৈ- হল্লা থেকে নির্দিষ্ট একজন মানুষের কণ্ঠ খুঁজছি।’
‘রাত হয়েছে, ডা. ক্যানট্রেল হয়তো ঘুমুচ্ছে।’
‘আমার তা মনে হয় না। কেউ ঘুমালেও আমি তার মন পড়তে পারি। এ-মুহূর্তে ঠিক পাশের বাড়িটায় বেশ ক’জন মানুষকে রিড করতে পারছি। ওদিকে খানিকটা দূরে রয়েছে আরও কয়েকজন। কিন্তু মাঝখানটায় অনেকখানি জায়গা ফাঁকা। আমার ধারণা, ওটা ডা. ক্যানট্রেলের বাড়ি… ওখানে কেউ নেই।’
কাঁধ ঝাঁকাল রানা। ‘ডাক্তাররা তো আর বাঁধাধরা রুটিন মেনে কাজ করে না। অপেক্ষা করা যাক।’
নিঃশব্দে সায় জানাল অ্যালি।
‘আর কেউ আছে?’ জিজ্ঞেস করল রানা। ‘মানে, আমাদের শত্রুপক্ষের কোনও লোক?’
অনেকটা সময় জবাব দিল না অ্যালি। ভুরু কুঁচকে কিছু শোনার চেষ্টা করল। তারপর বলল, ‘বুঝতে পারছি না। মন্দ লোকেরা সবসময় মন্দ চিন্তা করে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আর দশটা সাধারণ মানুষের মতই হয় ওদের চিন্তাভাবনা।’
আরও কয়েক মিনিট চেষ্টা চালিয়ে গেল ও। এরপর চোখ খুলে সরে এল দেয়ালের পাশ থেকে।
লিভিং রুমের জানালাটা একদম রাস্তার ওপরে। ওটার পাশে গিয়ে দাঁড়াল রানা। পর্দার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিল বাইরে। রাস্তায় সন্দেহজনক কিছু দেখতে পেল না। একটু খেয়াল করতেই দেখতে পেল টিফানির সামনের পোর্চ। সিঁড়ির ওপর প্লাস্টিকের প্যাকেটে মোড়া একটা পত্রিকা পড়ে আছে।
জানালা থেকে সরে এল রানা। ব্যাগদুটো দরজার সামনে নামিয়ে রেখেছিল, ওখানে গিয়ে বের করে নিল ব্যাণ্ডেজ আর অ্যান্টিসেপটিক।
‘এদিকে এসো,’ অ্যালিকে ডাকল ও। ‘তোমার হাতের ব্যাণ্ডেজ বদলাবার সময় হয়েছে।
.
রাত আড়াইটা। এক ঘণ্টা হলো ঘুমিয়ে পড়েছে অ্যালি—পূর্বদিকের দেয়ালের গোড়ায় গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছে ও। বিছানা বা বালিশ নেই, কিন্তু ঘুমের কোনও অসুবিধে হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না। কোনও আওয়াজ করছে না ঘুমন্ত অবস্থায়, আচমকা নড়েও উঠছে না। ড্রাগের প্রভাব কেটে যেতে শুরু করেছে, অনুমান করল রানা।
স্বপ্নও দেখছে মেয়েটা—বুঝতে পারছে ও। চোখের পাতা নড়ছে, কপালে মৃদু ভাঁজ দেখা দিচ্ছে… সবই স্বপ্ন দেখার লক্ষণ। তবে রানার চোখে ঘুম নেই, বসে বসে অ্যালিকে পাহারা দিচ্ছে ও। চোখ জানালার দিকে। মাঝে মাঝে গাড়ির হেডলাইটের আভা দেখা যায় পর্দার ওপারে, কখনও বা নিচের সাইডওয়াক থেকে ভেসে আসে পদশব্দ। সে-রকম কিছু হলেই জানালায় গিয়ে টিফানির বাড়ির দিকে তাকাচ্ছে ও। তবে এখন পর্যন্ত ফিরতে দেখেনি ডাক্তারকে। পত্রিকাটা সিঁড়ির ওপর পড়ে আছে আগের মতই।
অ্যাপার্টমেন্টটা ইতিমধ্যে দেখে নিয়েছে রানা। মোট পাঁচটা কামরা: কিচেন, লিভিং রুম, একটা বাথরুম আর দুটো বেডরুম। দ্বিতীয় বেডরুমে রয়েছে একটা স্লাইডিং ডোর, সেটা পেরুলে বাড়ির পেছনদিকে একটা ছোট্ট ব্যালকনি ব্যালকনিটা সরু, দেখতে অনেকটা ফায়ার এস্কেপের মত, ইস্পাতের তৈরি; শুধু মই বা সিঁড়ি নেই, এটুকুই পার্থক্য। ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে সংকীর্ণ একটা গলি দেখতে পেয়েছে রানা—সামনের রাস্তার সমান্তরালে পূর্ব-পশ্চিমে বিস্তৃত। গলির দুই প্রান্ত দিয়ে তাকালে চোখে পড়ে আরও কিছু টাউনহাউস, তবে সেগুলো বসতবাড়ি নয়—রিয়াল এস্টেটের অফিস, ট্রাভেল এজেন্সি, কফি শপ, ইত্যাদি। ওগুলোর ফাঁকে রয়েছে বড় বড় গলি, মিশেছে দূরের রাস্তার সঙ্গে।
এ-মুহূর্তে সামনের জানালার পাশে দেয়ালে ঠেস দিয়ে বসে আছে রানা, যাতে না দাঁড়িয়েই পর্দা ফাঁক করে টিফানির পোর্চের দিকে তাকাতে পারে। চোখ কচলাল ও, গত আটচল্লিশ ঘণ্টায় ঘুমানোর সুযোগ পায়নি। কখন পাবে, তাও জানে না। মাঝে মাঝে নিজের অজান্তেই চোখের পাতা এক হয়ে আসতে চায়, তখন চোখ না কচলে, কিংবা উঠে হাঁটাহাঁটি না করে উপায় নেই।
আবছা শব্দ ভেসে আসছে বাড়িটার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। এয়ার-কণ্ডিশনার চলছে, গান বাজাচ্ছে কেউ ওপরতলায়। ভালমত কান পাতলে শোনা যায় হাসাহাসির চাপা আওয়াজ—রাত জেগে পার্টি করছে কারা যেন। জীবন চলছে জীবনের মত।
তোমার কখনও ইচ্ছে করে না?’
অ্যালির কণ্ঠ শুনে ঘাড় ফেরাল রানা। চোখ খুলেছে ও। একদৃষ্টে তাকিয়ে আছে ওর দিকে।
‘কীসের ইচ্ছে?’ জিজ্ঞেস করল রানা।
‘এসব ছেড়ে স্বাভাবিকভাবে বাঁচতে? পরিবার শুরু করতে?’
‘কী জানি। কখনও ভাবিনি।’ কথাটা মুখে বলল বটে, কিন্তু পরক্ষণে রানার মানসপটে ভেসে উঠল রেবেকার চেহারা। তাকে নিয়ে সংসার বাঁধতে চেয়েছিল ও, কিন্তু…
‘সরি,’ বলল অ্যালি। ‘ওকে খুব ভালবাসতে?’
বিব্রত বোধ করল রানা। এ-মেয়ের কাছে কিছুই গোপন করার উপায় নেই।
‘আমি বোধহয় অনধিকারচর্চা করে ফেলছি, তাই না?’ লজ্জিত গলায় বলল অ্যালি। ‘ক্ষমা চাইছি… আসলে, তোমাকে তো আগেই বলেছি, তুমি যা ভাবো তা আমি শুনতে পাই—না চাইলেও। আমারই ভুল, যা শুনছি তা নিয়ে প্রশ্ন করা উচিত হয়নি।
‘আমি কিছু মনে করিনি, অ্যালি। ঘুমাবার চেষ্টা করো।’
চোখ মুদল মেয়েটা। কয়েক সেকেণ্ড পর বলল, ‘তোমার আসলে খুব দ্রুত একটা বিয়ে করে ফেলা উচিত—তোমার ছেলেমেয়েরা খুব ভাল একজন বাবা পাবে। আমি সেটা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি!’
‘কী!’ যেন আকাশ থেকে পড়ল রানা।
আর কিছু না বলে উঠে দাঁড়াল অ্যালি, রানার পাশে এসে বসল, ওকে জড়িয়ে ধরে মাথা রাখল বুকে। মৃদু হেসে ওর চুলে হাত বুলিয়ে দিল রানা।
খানিক পর নিঃশ্বাস ভারী হয়ে এল অ্যালির। রানাকে জড়িয়ে ধরে পরম নির্ভরতায় ঘুমিয়ে পড়েছে মেয়েটা।
.
ভোর চারটা। ওপরতলার পার্টি থেমে গেছে। অ্যালির শ্বাস- প্রশ্বাস ছাড়া আর কোনও আওয়াজ নেই।
ঝিমুনি এসেছিল রানার, হঠাৎ সচকিত হলো। জানালার পর্দা আলোকিত হয়ে উঠেছে। একটা গাড়ি এসে থামল কোথাও। সাবধানে পর্দা সরিয়ে বাইরে উঁকি দিল রানা।
কালো একটা সেডান এসে থেমেছে টিফানির বাড়ির সামনে। দু’জন লোক ঝটপট নেমে পড়ল গাড়ি থেকে, সতর্ক ভঙ্গিতে দেখে নিচ্ছে আশপাশ। ড্রাইভার বসে আছে স্টিয়ারিং হুইলের পেছনে।
‘অ্যালি!’ চাপা গলায় ডাকল রানা। কাঁধ ধরে ঝাঁকুনি দিল মৃদু।
সঙ্গে সঙ্গে চোখ খুলল অ্যালি। শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল কয়েক মুহূর্ত, তারপরেই সচকিত হয়ে উঠল। ধড়মড় করে সোজা হয়ে বসল সে। জিজ্ঞেস করল, ‘এসেছে?’
জবাব না দিয়ে জানালার দিকে ইশারা করল রানা। পর্দা সরিয়ে বাইরেটা দেখে নিল অ্যালি, এরপর চোখ বন্ধ করে ধ্যানমগ্ন হয়ে পড়ল। যেন কিছু শুনবার চেষ্টা করছে।
‘বাড়ির সামনে দু’জন নেমেছে, গাড়িতে আছে আরেকজন,’ ফিসফিসিয়ে বলল রানা। ‘ওদেরকে পড়তে পারছ?’
মাথা ঝাঁকাল অ্যালি।
‘গাড়িতে আর কেউ আছে?’
মাথা নাড়ল অ্যালি
বাইরে তাকাল রানা। রাস্তা দেখা শেষ হয়েছে লোকদুটোর। এবার সিঁড়ি ধরে উঠে গেল দরজার দিকে, তালা খুলে ভেতরে ঢুকল। অ্যালি যেন অনুসরণ করছে ওদেরকে—লোকগুলোর মুভমেন্টের সঙ্গে আস্তে আস্তে ঘুরছে ওর মাথা।
‘ওদের চিন্তা থেকে মনে হচ্ছে চেকলিস্ট মেলাচ্ছে, বলল অ্যালি। ‘কিচেন-ক্লিয়ার… ফ্রন্ট বাথরুম-ক্লিয়ার… হলওয়ে—ক্লিয়ার…’
‘সিকিউরিটি সুইপের মত শোনাচ্ছে,’ রানা বলল। ‘বাড়ির মালিক আসার আগে শিয়োর হয়ে নিচ্ছে, ভেতরে কেউ ঘাপটি মেরে নেই।’
এর অর্থ, বডিগার্ড রয়েছে ডাক্তারের। ইন্টারেস্টিং!
ওদের মাইণ্ডরিড করে চলেছে অ্যালি। মানসচোখে লোকদুটোকে কল্পনা করল রানা—একটার পর একটা কামরা দেখছে তারা, নিচতলা থেকে ওপরতলা পর্যন্ত চেক করছে নিয়ম মেনে।
পাঁচ মিনিট পর বাড়ি থেকে বেরিয়ে এল লোকদুটো। পোর্চের তলায় সান্ত্রীর মত দাঁড়াল। সিঁড়ির ওপর থেকে সরিয়ে রাখল পত্রিকাটা। ড্রাইভার একাই গাড়ি নিয়ে চলে গেল বাড়ির সামনে থেকে। বিশ মিনিট পর আবার উদয় হলো ওটা। এবার পেছনের দরজা খুলে নামল একটা নারীমূর্তি। স্ট্রিটলাইটের আলোয় তার চেহারা দেখল রানা—হাসপাতালের ওয়েবসাইটে দেখা সেই ডাক্তার! তাকে দরজা পর্যন্ত এগিয়ে দিল দুই রক্ষী, তারপর আবার ফিরে গেল পাহারায়।
অ্যালি ইতিমধ্যে ডাক্তারের ওপর মনোযোগ নিবদ্ধ করেছে। কিছুক্ষণ কোনও কথা বলল না, সময় নিচ্ছে তার মন পড়ার জন্যে।
‘একটা ইমেইল লিখছেন উনি,’ একটু পর বলল ও। ‘লিলি নামে কোন্ এক রোগীর ব্যাপারে যেন। কী সব টার্ম ব্যবহার করছেন, ঠিক বুঝতে পারছি না। ওগুলো ওষুধের নাম হতে পারে।
কপালের দু’পাশ আবার দপ দপ করছে রানার—পাচ্ছে হিমশীতল সেই স্পর্শ। নিশ্চয়ই অ্যালির মাইগুরিডিঙের প্রভাব। ব্যথাটা অগ্রাহ্য করল। দেখা যাক, কতদূর কী জানা যায় ডা. ক্যানট্রেলের কাছ থেকে।
‘পাঠিয়ে দিয়েছে ইমেইল,’ খানিক পর বলল অ্যালি। চোখ খুলল না।
কয়েক মিনিটের নীরবতা। রানার মনে হলো, ধ্যানে বসেছে মেয়েটা। হঠাৎ চোখ মেলল। দেখে মনে হলো, কোনও কারণে চমকে গেছে।
উঠে দাঁড়াল অ্যালি। কোনও এক অমোঘ আকর্ষণে চলে গেল পূর্ব পাশের দেয়ালের কাছে। বিড়বিড় করল, ‘হোয়াট দ্য…’
রানাও উঠে দাঁড়িয়েছে। অ্যালির দিকে এগোতে যাবে, এমন সময় একটা শব্দ শুনে জমে গেল। ক্যাঁচকোঁচ করে উঠেছে কাঠ… ফ্লোরবোর্ডে পা ফেলছে কেউ। ঝট্ করে তাকাল শব্দের উৎসের দিকে।
অ্যাপার্টমেন্টের দরজার ওপাশ থেকে আসছে শব্দটা। কেউ হাজির হয়েছে ওখানে!